প্রথম যে বইমেলার কথা মনে পরছে, সেটা তে আমি আসলে যাই নি। আমি তখন ক্লাশ টু তে পড়ি। আমার মামা আর খালা বইমেলা থেকে ফিরলেন ইমদাদুল হক মিলন এর প্রিয়দর্শিণী ও হুমায়ুন আহমেদ এর নি নিয়ে।প্রিয়দর্শিনীর প্রচ্ছদ টা সেইরকম ছিলো। গোলাপ হাতে এক সুন্দরী নারীর হাত! তবে প্রথম কয়েকদিন ছোটদের সেই বই দেখারও আকসেস ছিলো না। তখন আমার পঠিত বইয়ের তালিকায় ছিলো শুধু সেবার ২ টাকার বই সিনডারেলা। আমি নি যখন উল্টেপাল্টে দেখছি, আমার খালা হাল্কা পচানি দিয়ে বল্লো এই বই তুই একমাসেও শেষ করতে পারবি না। এতো বড় অপমান আমি সহ্য করতে পারলাম না। পরের দিন সন্ধ্যার মধ্যে পড়ে শেষ করলাম। বইটার সবমিলিয়ে ৬০% ও বুঝেছিলাম নাকি সন্দেহ।কিন্তু সেই শুরু।
এরপর গত ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত একটা বইমেলাও মিস হয়নি। পারিবারিক ভাবে আমরা খুবি বইকেন্দ্রিক। বইমেলা যাওয়া আমাদের বড়ধরনের আয়োজনের ব্যপার ছিলো।সারাবছর ব্যাপী টাকা জমানো, যার সর্বোচ্চ পরিমান ১২৩ বা এইরকম কিছু। জানুয়ারীর শেষ দিক থেকে আম্মু আব্বু কে বার বার মনে করায়ে দেওয়া।এরপর কোন এক শুভ শুক্রবার সকাল থেকে আম্মু আব্বুর মাথা ঠান্ডা রাখা। দুপুর এ খাবার এরপর দুরুদুর বুকে প্রস্তুত হওয়া। মাথাপ্রতি আমাদের বরাদ্দ ছিলো ১টি বই।বুবু কিনতো হুমায়ুন আহমেদ এর বই, আমি জাফর ইকবাল, ছোটভাই রোবোকপ, আব্বু রবীন্দ্রনাথ, আম্মু মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা কোন বই। আম্মু আব্বুর নিজেদের জন্য কেনা বই কখনো পুরো পড়তে দেখতাম না। বাধ্য হয়ে আমাকেই পড়ার গুরুদায়িত্ব নিতে হত।আম্মু অবশ্য কোন এক স্কুল ছুটির দিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হুমায়ুন আহমেদ এর বইটা পড়ে শেষ করতো। পুরো পরিবার একসাথে বইমেলায় গেছি শেষ ২০০৮ এ।যেই আব্বু হাঁটতে হাঁটতে পায়ে ব্যাথা হলে ছোটবেলায় কোলে নিয়ে ঘুরতো, তাকে আমরা সবাই ধরে ধরে নিয়েগিয়েছিলাম। এরপর আম্মু আর আব্বু সামিয়ানার নিচে চেয়ারে বসে রইলো আগের মত।আমরা তিন ভাইবোন আগের মতো দিলাম রামচক্কর। ২০০৮ বুবু চলে গেলো ইউকে। পারিবারিক বইমেলা ভ্রমনের সেখানেই আপাত সমাপ্তি।
আমি মেয়ে হিসেবে যথেষ্ঠ ডানপিটে ছিলাম। ক্লাশ ৮ এ আমি, আর আমার প্রাণবান্ধবী দীপা ও তিথি সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা স্কুলের পর বইমেলায় যাবো। যতদুর মনে পরে এই সিদ্ধান্ত এর পিছনে কারন ছিলো ক্লাশ ৮ এ ছেলেদের যদি একা একা চলতেফিরতে দেওয়া হয়, আমরা কি দোষ করেছি? মতিঝিল স্কুল থেকে বাংলা একাডেমী পর্যন্ত পথ তখন পৃথিবী থেকে চাঁদের মতো দুর্গম ও অচেনা। যদিও আম্মু আব্বুকে বলে গিয়েছিলাম তবু বাসায় ফিরে পিটুনি খেলাম। মোটামুটি বছর পাঁচেক পিটুনি দিয়ে আম্মু টায়ারড হয়ে গিয়েছিল। অপ্রাসংগিক হলেও একটা কথা বলি, আব্বু আমাদের ৩ ভাইবোনকে কখনো পিট্টি দেন নি। আম্মু পুরাই উলটা। আমি আমার বিয়ের ২ দিন আগেও পিটুনি খেয়েছি আম্মুর হাতে। আম্মুর হাতে পিটুনি খাওয়া অবশ্য এমন কিছু কঠিন না। আম্মুকে ঠিকমতো খেপায় দিতে পারলেই হলো। আমি ও আমার ছোটভাই মাঝে মাঝে বিনোদোনের জন্যও তা করি। এইচ এস সি তে বইমেলার সঙ্গী ছিলো শর্মিষ্ঠা। এইচ এস সি পরীক্ষার আগের বইমেলায় আমরা জাফর ইকবাল স্যার ও তার ওয়াইফ কে অনেক যন্ত্রনা করেছিলাম মনে পড়ে। আমরা তখন সদ্য নিউরনে অনুরন এর পুরস্কার বিজ়য়ী, উনার সাথেও ওখানে পরিচয় হয়েছে। আমাদের মনে কত প্রশ্ন, সেইগুলো জিগেস করার জন্য কেন যেন আমাদের বইমেলাকে উপযুক্ত মনে হয়েছিলো।
এর পরেরবার বইমেলায় গেলাম পুরো হাঁসের মতো গ্রীবা উঁচিয়ে কারন আর কিছুই না, মাত্র বুয়েটে চান্স পেয়েছি। আমার এক মামা আমাকে কিছু টাকা দিয়েছিলেন। আম্নুর কাছ থেকে ৫০০ টাকা উদ্ধার করে মানিক সমগ্র কিনে ফেল্লাম। ইউনিভার্সিটির প্রথম ২/১ টা বইমেলায় গেলাম নিয়মমতো বিশাল বন্ধুবান্ধবের গ্রুপ নিয়ে। এরপর কাছের বন্ধুর সংখ্যা কমতে কমতে দাড়ালো ক্লাসের বাকি ৩ টা মেয়েতে রিকি, শারমিন ও লিটা। আমরা গেলেই কেনো জানি মিডিয়াগুলো আমাদের সাক্ষাৎকার নিত অথবা ছবি। কিন্তু ছবি বা সাক্ষাৎকারকে এখনো আলোর মুখ দেখতে দেখি নি।রিকির বই কেনা অতন্ত্য দর্শনীয় ছিলো। সে একটা বইয়ের প্রতিটা পাতায় হাত বুলাবে, দাম ছাড়া অন্য সব কিছু দেখবে, ২/৩ পাতা পড়বে, এর পর উলটা দিকে হাঁটা দিবে। যে বইটা কিনবে সেটা অবশ্য ধরেই ছুঁড়ে দিতো প্যাক করার জন্য। ফেব্রুয়ারীতে আমার জন্মদিন হওয়ায় আমি বন্ধু দের কাছ থেকে খুব সুন্দর বই উপহার পেয়েছি। উপহার সংক্রান্ত কথাবার্তা অবশ্য খুবি চাছাছোলা হত।আমিই উদ্যোগ নিতাম। জিগেস করতাম বাজেট কত। এরপর বাজ়েট এর ভিতরে সবচেয়ে ভালো বই খুঁজে বের করতাম। আরেকটা ছেলেমানুষী করতাম নিজেকে জন্মদিনের গিফট হিসেবে একটা বই দেওয়া।
সব নিয়মের অবশ্য ব্যাতিক্রম হয়েছে গত বইমেলায়। আমার বিয়ের পর প্রথম বইমেলা। বর কানাডায়। আমি ঢাকায়। পুরো সময়টা আমি ওর পছন্দের লেখকের বই ও অটোগ্রাফ এর জন্য লেখককে খুঁজে বেরিয়েছি।বইমেলায় নিজের পছন্দের বই কেনার ব্যপারে আমি কখনো এত কেয়ারলেস হই নি।এবার বইমেলায় যেতে পারছি না।কবে যেতে পারবো তাও জানি না।তবে জানি কোন এক রঙ্গিন বিকেলে আবার যাব- খুব প্রিয় একজনের হাত ধরে, যখন ও আকাশ, রাস্তা, গরম, মানুষের ভীড় নিয়ে বিরক্তি ও উপদেশমালা দিয়ে ভালোবাসা লুকোতে ব্যস্ত, দুরুদুরু বুকে…
(প্রথমবার লেখা তাই :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: )
৭৩ টি মন্তব্য : “বইমেলা….”
মন্তব্য করুন
দারুণ স্মৃতিচারণ ভাবী। পুরানো সেই দিনের কথা বেশ মনে করিয়ে দিলেন। কবে যে আবার বইমেলায় যাবো !! 😕
অফটপিকঃ ভাইয়া আর আপনি এখন কোথায় আছেন??
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
আসলে হয়েছে কি, ফেইসবুকে এক এক জনের বইমেলা সংক্রান্ত স্ট্যাটাস মেসেজ দেখলে অনেক মাথা গরম হয়, তাই ভাব্লাম লিখে ফেলি কিছু।যদি একটু ভালো লাগে
আমি কিংস্টোন থাকি, ও অটোয়া।তোমার কাছাকাছি মনে হয়, সময় করে চলে এসো।
ভাইয়া, একটু দূরে, তুলনামূলকভাবে আপনি কাছাকাছি আছেন। ঘন্টা আড়াইয়ের মতো ড্রাইভ। একদিন হুট করে গিয়ে হাজির হবো। 😀
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
অটোয়ায় কোথায় থাকে? কি করে?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
থাকে সমারসেট ও ব্রন্সন এর কাছে। ইউ অটোয়ায় বায়োমেডিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ এমএস করছে।
তার মানে, আমার বাসার কাছে। আমি সমারসেট ও প্রেসটনের কাছে থাকি।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সামারে অটোয়া যাওয়া হলে আপনার বাসায় বেড়াতে যেতে হবে তাহলে 🙂
আমি অবশ্য অটোয়ার রাস্তাঘাটের ব্যপারে কিছুই জানি না বলতে গেলে।শুধু বাস টার্মিনাল থেকে ওর বাসাটা চিনি
অবশ্যই আসবে তোমরা। ১২ লার্চ স্ট্রীট, প্রেসটনের ওপর। বাসার ফোন নম্বর ৬১৩৬৯৫০৬০৪। 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আপনি কোন ইউনিভার্সিটিতে?
কার্লটন ইউ
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আপনার ইউনিভার্সিটি অনেক সুন্দর!!
আমার টা, মানে কুইন্স ও খুবি সুন্দর।
আমি অনেক দিন থেকেই ভাবি, এটা কি বুয়েটের মেলিতা!!!!!!! যাক, আজ কনফিউশান দূর হল। কেমন আছ তোমরা দুজন?
আছি দুজন ভালো। আমি কিন্তু আপনাকে চিনতে পারি নি 🙁
কিরে তোর বয়স কত হইসে? :grr:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
:)) :))
লিখা সুন্দর হইছে মেলিতা, বইমেলার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল :dreamy:
থ্যাঙ্কু আপু।ভাইয়া কেমম আছে? আমার হ্যাসবেন্ড আমাকে নিয়মিত ফেইসবুকে আপনাদের ছবি দেখায়।আপ্নারা অনেক মজা করে ঘুরে বেড়ান।
ব্লগে লেখালেখির জগতে স্বাগতম। 🙂
যতদিন হলে ছিলাম, নিয়মিত বইমেলায় যেতাম। যেতাম দুপুরের একটু পরে, যখন লোকজনের ভীড় কম থাকত। ওখানে গিয়ে বইগুলো ছুঁয়ে দেখার মধ্যেও একটা অন্যরকম আনন্দ আছে।
এবার ইনশাল্লাহ অবশ্যই যাব।
আর ব্লগ লিখবো এইরকম আশা রাখি না।
এখন বইমেলায় ভয়ঙ্কর ভীড় হয়।গতবার তাই দেখলাম।বেড়ায়ে এসে একটা ব্লগ লিখে ফেলবেন প্রবাসিদের জন্য
চমৎকার স্মৃতিচারণ মেলিতা। প্রথম ব্লগ বলে ব্লগে স্বাগতম।
বইমেলায় গিয়ে আমার অভ্যাস হলো বই এবং লেখক সংক্রান্ত প্যাচাল জুড়ে দেওয়া যার বেশিরভাগই লেখকদের শোনার জন্য বেশ স্বস্তিদায়ক নয়। এটা নিয়ে আমাকে মাঝে মাঝেই ঠ্যাঙানির কাছাকাছি পৌছাতে হয়নি তাও নয়। এবার অবশ্য এখনও বইমেলায় যাওয়া হয়নি। ভার্সিটিতে হলে থাকতে চা খেতে বাইরে যাওয়ার স্টাইলে মেলায় যেতাম। এবার অবশ্য নিজের সময় আর যাওয়ার সঙ্গীর অভাবে এখনও যাওয়া হয়ে উঠেনি। তাও শান্তি দেশে আছি মেলায় যাবার সুযোগ আছে........ 😀 😀
থ্যাংকু।
আমিও তাই করি।শুধু বইমেলা না মোটামোটি সবক্ষেত্রে।মাঝে একবার এমন হয়েছিলো, আমি যার নামে মাত্র গিবত শেষ করেছি তাকে দেখতাম পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছে 🙁
প্রথম স্মৃতিচারণ ভাল্লাগসে। ভাবী, আপনারে দিয়া হবে। লিখে যান। 😀
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
থ্যাঙ্কু ভাইয়া।
প্রথম লেখা বলে মনেই হচ্ছে না, চমৎকার স্মৃতিচারণ। :boss:
নিয়মিত লিখুন ভাবী।
www.tareqnurulhasan.com
থ্যাঙ্কু ভাইয়া। আমার অবশ্য স্মৃতিচারণ না করে ভবিষ্যতচারনের ইচ্ছা আছে।
ভবিষ্যত নিয়ে আমি অনেক স্বপ্ন দেখিতো।
ইয়ে ভাবী,প্রথম ব্লগে কি জানি এট্টা নিয়ম আছে 😛
ম্যাশ ব্লগের শেষ লাইন পর্যন্ত পড়ছিস x-( x-(
ইয়ে বাদশা ভাই ,পড়ছি তো কিন্তু কেম্নে যানি চোখ এড়ায় গেছে ~x(
ইয়ে মাসরুফ,শেষ লাইনে কি জানি একটা আছে :grr:
হায় হায় পুরা ব্লগ পড়ছি এইটা মিস করলাম কেম্নে?!!!! 🙁 নাহ আমিই দেই এইবার :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll:
আহারে পুরা একদিন ধরে ফ্রন্টরোল দিচ্ছ, আমি খেয়াল করি নি 🙁 এইবার বাদ দাও
:shy: থেঙ্কু ভাবী
ভাবী চমৎকার স্মৃতিচারণ।
বেশ ভাল লাগছে।
বই মেলারে অনেক মিস্করি 🙁 🙁
লাস্ট গেসি ২০০৮ এর বইমেলায় :(( :((
থ্যাংক্স।আসলে বইমেলা যে অতীত হয়েগেছে, এইটা এখনো মেনে নিতে পারছি না 🙁
মেলিতা দারুণ স্মৃতিচারণ। মনটা তোমার দেশেই পড়ে আছে!! আর আমি দেশে থেকেও গত কয়েকবছর ধরে বইমেলায় যাই কোনোরকমে শেষ সময়ে। লোকের ভিড়, ঠেলা ধাক্কার ভয়ে। একরকম দুপুরের দিকে যাই। আগে থেকে তৈরি তালিকা হতে। বড় জোর এক ঘণ্টার মধ্যে কম্ম শেষ করে ভাগি!! অথচ আশি, নব্বইয়ের দশকে দিনের পর দিন মেলা না ভাঙা পর্যন্ত আড্ডা, ঘুরাঘুরি............ নাহ্ আসলেই দিন শ্যাষ!!
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
থ্যাঙ্কু ভাইয়া।প্রবাসজ়ীবনের প্রথম ৬ মাসতো, দেশের জ্যামগুলো পর্যন্ত মিস করি। গত ৪/৫ বছর আসলেই বইমেলার অনেক ঠেলা ধাক্কা করে চলতে হয়েছে, এমন কি বছর ২ আগে একবার ভেবেওছিলাম যে আর বইমেলায় যাব না। স্মৃতিচারণে আসলে শুধু সুখের কথাই মনে পরে।
মেলিতা কী সুন্দর সহজ ঝরঝরে অকপট কথ্ন! অনেক বই পড়া থাকলে বোধহয় মনের ভেতর একটা লেখক সত্ত্বা এমনি এমনিই জন্ম নেয়।
আমার কেন জানি দেশে থাকতে খুব একটা বই মেলায় যাওয়া হয়নি। বই কিনতাম নিউমার্কেটের বইপাড়া থেকে।
২০০৫ ফেব্রয়ারী মাসে দেশে যাওয়াতে আমার এই আশাটা পূরন হয়েছিলো। এর আগের ছয় বছরে কোন বাংলা বই পড়া হয়নি। তাই সেবার বুভূ্ক্ষের মতোন যাই দেখি তাই কিনি। পাশে নির্ঝর থাকাতে সুবিধা হয়েছিলো এই যে আমাকে কোন বোঝা টানতে হয়নি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ধন্যবাদ আপু। বইমেলা নিয়ে আমার অনেক সুখের স্মৃতি আছে।আমি ভবিষ্যতটাও সুন্দর আশা করি। আসলে এই লেখাটা কিছুটা ভবিষ্যতকথনের মতো।আমি ভবিষ্যত নিয়ে সুন্দর স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি।
সুন্দর স্মৃতিচারণ, ভাবি।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিকে নিজের বইমেলায় যাবার স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল। তখন টিউশনি করে আমার সংসার চলে। 🙂 তার উপর চা-সিগারেট খাওয়া। পকেটে বই কেনার পয়সা থাকতো না। তবু প্রতিদিন মেলায় যেতাম। স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পছন্দের কোন বই পড়া শুরু করতাম। দোকানদার কটমট করে তাকানোর আগ পর্যন্ত পড়েই যেতাম। তারপর পরদিন আবার অন্য কোন স্টলে সেই বইটারই বাকি অংশ পড়া শুরু করতাম , একই ভাবে। এইভাবে শুধু মেলায় স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে আমি অনেক বই শেষ করে ফেলেছি। 😛
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
কলেজে থাকতে সিদ্ধেশরী থেকে মালিবাগ রেইলগেট পর্যন্ত ১ মাস হেটে এসে ৬০ টাকা জমিয়ে জীবননান্দ দাশ এর শ্রেষ্ঠ কবিতা কিনেছিলাম।
রিকশাভাড়া বাঁচায়ে বই কিনার মজাটা আর জবলাইফে পেলাম না 🙁
মাঝে মাঝে হাতে টাকাপয়সা কম থাকা ভালো।
আর মেলার বই কিনার ব্যাপারে আমরা চরম এফিসিয়েন্সি অবলম্বন করতাম।বই মেলায় যাওয়ার আগেই কাজিনরা আলোচনায় বসতাম কে কোন বই কিনবে, কতদিন পর সেটা কার হাতে হাত বদল হবে ইত্যাদি। একবার শুধু ভুল সিডিউলের কারনে কালোজাদুকর ৩ কপি কিনা হয়ে গেছিলো।
আর মেলার স্টলের সামনে দাড়ায়ে আমি বিশেষ পাত্তা পেতাম না 🙁
কামরুল চাপা পিটাইসনা কইলাম,
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
বুর্জোয়াদের মতো কথা বইলেন না ফয়েজ ভাই। :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ভাবী, স্কুল এ থাকতে টিফিন এর টাকা বাচিয়ে বই কিনতাম। ওই বইগুলা এখনো আছে আমার কাছে, অনেক যত্নে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া। ওই বই গুলোর মধ্যে নাম, ঠিকানা এমনকি রোল নম্বর ও লিখে রাখতাম। পরে কিনা বই গুলো পড়ার পর কে নিলো(এবং ফিরত দিলো না) তাও খেয়াল থাকতো না
আপনের সংসার মানে? কেমনে কি? :-B
ক্যান, একজনের সংসার হয়না? :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
চমৎকার হয়েছে ভাবী... নিয়মিত লেখতে থাকুন... শুভ ব্লগিং
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
থ্যাঙ্কস আকাশ।আমি ০২ ব্যাচের বলে ০২ ব্যাচের সবাইকে তুমি করে বলি 😀 ।মাইন্ড করতে পারবে না কিন্তু।
কিজানি কতদুর কি লিখতে পারি। আমার পড়তে অনেক বেশি ভালো লাগে।
ইয়ে ভাবী... :shy: .আঁই ০৬ এর ছিবিল.....আন্নে কুন ভিবাগে চিলেন কন চেন দেহি......... :boss:
ইশশ...ভাবীগুলা এত্ত ভালোবাসা দিয়া বরের কথা লেখে... 😡 ..লেখা পইড়া খালি বুকের মধ্যে চিনচিন ব্যাথা করে। =((
হাপ্পি ব্লগিং ভাবীজান :party:
পিচ্চি পোলাপাইন বেশি পাইকা গেছে, চিঞ্চিনা ব্যাথা,না? যা ভাগ, ট্রান্সপোর্টেশন পড় গিয়া :grr:
:shy: ভাবী গো,ট্রান্সপোর্টেশন ই তো নিতাম চাই,তয় আন্নে যে কি ঘোর অমানিশার ইঙ্গিত দিতাছেন কিছুই ঠাওর করবার পারতেছি না! 😕 সময় থাকতে যদি আসল কাহিনী বুঝাই কইতেন....বড়ই উপকৃত হইতাম :dreamy:
আর ভাবী,চিঞ্চিন ব্যাথা :bash: এহন না হইলে আর কবে হইব? :-B স্বর্ণযুগ শ্যাষ হইয়া যাইতাছে মাগার স্বর্ণালীর দ্যাখা পাইলাম না তো....... =((
আমি সিএসসি এর স্টুডেন্ট ছিলাম। আমার এক কাজিন আছে তোমার ব্যাচমেট মেকানিকাল।
তোমারও দিন আসবে...চিন্তা কোরো না...
ইয়ে মানে ভাবী,সে কি হেতা না হেতী?.. 😡 ..যাউকগ্যা,খাস দিলে আমার লাইগ্যা দোয়া কুইরেন কিন্তু..... O:-) .
:(( অভাগা যেদিকে চায়
সাগর শুকিএ যায় =((
কেউ না কেউ সময় মতো ঠিকই আসবে 🙂
তোমার বয়ষটাকে অনেক মিস করি।
আরে ভাবী মাইন্ড করারা কি আছে এখানে... হাজার হোক ব্যাচমেট বলে কথা।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
কী সুন্দর ঝরঝরে স্মৃতিচারণ!
পড়তে খুব আরাম লাগলো।
চমৎকার!!
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
লজ্জা পেয়ে গেলাম কিন্তু ভাইয়া :shy:
থ্যাংকু।
চমতকার লিখেছেন ভাবী । আপনি যে মামুন ভাইয়ের বৌ এটাতো খেয়ালি করিনাই । ফেসবুকে আপনাদের কুকিং এ্যাডভেন্চারের ছবি দেখি মাঝে মাঝে । মামুন ভাইকে আমার শুভেচ্ছা দিযেন । মেলায় লাস্ট গেছি ২০০৩ এ । আবার কবে যাবো বলতে পারিনা । তবে তারেকের (কনফু) কল্যানে মেলার বই ঠিকই আমার হাতে এসে যাচ্ছে । আরো লিখবেন আশা করি 🙂
ধন্যবাদ ভাই। কানাডা আসার আগে আমি কিচেনের পাশের ঘর দিয়েও হাটতাম না 😀 আমি যে চুলাটুলা জ্বালাতে পারি তার প্রমান আম্মু কে দেখানোর জন্য মাঝে মাঝে ছবি আপলোড করতে হয়।
মামুন আঁতেলটা তো মনে হয় ক্লাসের বই আর চোথা ছাড়া কিছু কখনও পড়েনি। এখন আপনার সাথে থেকে যদি একটু উন্নতি হয় 😛
সুন্দর লেখা । আমি লাকি , তিন বছর পর এবার বইমেলা ঘোরার সুযোগ পাচ্ছি।
ভাইয়া ছবিটবি দেন কিছু...একা একা ঘুরছেন 😉 ?
হ্যাপি ব্লগিং 😀
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ধন্যবাদ ভাইয়া!
:khekz: =))
আমিও প্রিন্সিপাল স্যারের মত দুপুর বেলাতে যাই, ভীড় অসহ্য লাগে x-( আমাদের ব্যাচ, গুড 😀
টিভি ক্যামেরা দেখলেই পিছলে সরে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। কারন হাতের সামনে দুষ্ট ছেলে মিষ্টি মেয়ে টাইপ বই থাকলে অইটা নিয়ে শক্ত হয়ে দাড়ায়ে থাকতে হত। ফ্রেন্ডরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে গেলেও ঝারি দিত x-(
সারাদুনিয়ার ০২ ব্যাচ ই রক্স :gulli2:
শুভ ব্লগিং 🙂
দেরী হয়ে গেলো আপু, আমার পিসি নষ্ট হওয়াতে অনেকদিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
কেমন আছো?
ভাবী, আমি তোমার কমেন্টের জন্য ২ দিন ধরে অপেক্ষা করছি। অবশেষে পাওয়া গেলো 😀
খুবি দৌড়ের উপর আছি, ব্যস্ততা যে কবে কমবে 🙁
আমারও বই কেনা হয়নি তেমন। ভাগ্যিস, উপহার হিসেবে মানুষ বইই বেশি পছন্দ করে! 🙂
স্কুল কলেজেও উপহার হিসেবেও
আমাদের স্কুল থেকে নিয়ম ছিল ফেয়ার ওয়েলে পালামৌ দিবে
কাছের আত্নীয় স্বজনের মধ্যে আমরা ৬ জন এক স্কুলে পড়তাম তাই ... :grr:
তবে এই বইটার মত ভাল বই খুব কম পড়েছি।
চমৎকার লেখা ,ভাবী!বর ক্যাডেট না হইলে এত ভাল লিখতে পারতেন না 😀 :grr:
হুমম
তাই তো মনে হচ্ছে। :grr:
ধন্যবাদ।
তোমার লেখাগুলো কিন্তু আমার অনেক ভাল লাগে।তুমি বুয়েট এর মেকার?
উফফ ১-১ এ আগে সিএসসি তে মেকার কোর্সছিলো। আমি কোনরকমে পার হয়েছি।
লেখাটা দারুন নস্টালজিক। :boss:
ছোট্টবেলার সেই দিনগুলো হারিয়ে
খারাপ যে লাগেনা মনটা
সেই লাল-নীল-হলদে রাজা-রানী পুতুলে
ভরা ছিল জানালার কোনটা।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমি অবশ্য ঠিক স্মৃতিকথা হিসেবে লিখতে চাই নি, খুব সুন্দর স্মৃতিটাকে সামনের জীবনেও দেখতে চাওয়ার ইচ্ছা নিয়ে লিখেছি।
দারুন লাগলো।