এহসান ভাই আর কামরুল ভাইয়ের কল্যাণে ব্লগের সবাই এখন বোধ করি ফ্যান্টাসি ফুটবলের সাথে পরিচিত। আমরা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ওয়েবসাইটে যে ফ্যান্টাসি ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি, ইএসপিএন স্টার স্পোর্টসের ওয়েবসাইটেও তেমনি একটি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
এফসি ম্যানেজার নামের এই প্রতিযোগিতায় মূলত এশিয়ার দেশগুলোর ফুটবলামোদীরাই অংশগ্রহণ করে, তবে এই দেশগুলোর ইউরোপ প্রবাসীদের অংশগ্রহণও নেহায়েত কম নয়।
প্রতিযোগিতাটি চালু হওয়ার পর প্রথম কয়েক বছর দল গঠন করে ভরাডুবির পর ভেবে দেখলাম ফ্যান্টাসি ফুটবল ছেড়ে দেয়াই মনে হয় আমার জন্য ভাল হবে। কারণ, সবসময় দলের অবস্থান তলানিতে, আর এইসব হাবিজাবি কাজ কারবার করে সময়ও নষ্ট করছি বেশ।
এর মধ্যে ফেসবুকে আমার কিক অফের (ইএসপিএন এর একটি ফুটবল কুইজ প্রতিযোগিতা) ছবি দেখে আমাদের কলেজের ইসলাম ভাই (৯৩-৯৯) বললেন উনার ব্যাচমেট জাহিদ হাসান ভাই (বিসিসি) আর আল ফুয়াদ ভাই (সিসিসি) এর কথা।
ইসলাম ভাইয়ের কাছ থেকে শুনলাম এফসি ম্যানেজারে কোনো এক মাসের বিজয়ী হয়ে উনারা দুইজন সিংগাপুরে লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে এসেছেন।
এখানে বলে রাখি ২০০৮-০৯ পর্যন্ত এফসি ম্যানেজারের আট মাসের বিজয়ীরা নগদ ১০০০ ডলার জেতার পাশাপাশি সিংগাপুরে যেয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের টিকেটের জন্য।
সাথে সাথে দুইজনকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালাম ফেসবুকে। জাহিদ ভাইয়ের কাছ থেকে জানলাম মাত্র এক পয়েন্টের ব্যবধানে হেরে যেয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এর ফাইনালের টিকেট মিস করেছেন উনারা।
‘উইনিং ফর্মুলা’ জানতে চাইলে উনি এত সুন্দর করে আমাকে বোঝালেন যে আমি বুঝতে পারলাম ফ্যান্টাসি ফুটবলের হাত থেকে সহসা আমি মুক্তি পাচ্ছি না।
ফ্যান্টাসি ফুটবল ছেড়ে দেয়া তো দূরের কথা, আমি দ্বিগুণ উদ্যমে শুরু করলাম। জাহিদ ভাই তখন বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত। উনার কাছে টিপস চাইলে উনি ফোন নম্বর দিয়ে বললেন টিম সাজাতে বসলে ফোন দিও :hatsoff:
এইবার প্রতিযোগিতাটা সম্পর্কে একটা আইডিয়া দেই। পুরো সিজনটাকে দুইভাবে ভাগ করা হল।
দুইভাগে ভাগ হওয়া দুই ‘হাফ সিজন’ এর বিজয়ী আর জানুয়ারি থেকে সব রেজিস্টার্ড টিম নিয়ে শুরু হওয়া নকআউট কাপের বিজয়ী প্রত্যেকে জিতবে ২৫০০ ডলার। এই তিনজন সিংগাপুরে যেয়ে মুখোমুখি হবে গ্রান্ড প্রাইজের জন্য – চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের টিকেট।
আর সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল এই আট মাসের বিজয়ীরা পাবে ১০০০ ডলার করে।
সেপ্টেম্বরে খুব একটা সুবিধা করতে না পারলেও, অক্টোবরে সেকেন্ড রাউন্ডে আমি তিনে উঠে এলাম, কিন্তু মাস শেষে ১৬তম স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল। মন একটু খারাপ হল, কিন্তু যখন দেখলাম ওই মাসের বিজয়ী বাংলাদেশী মন ভাল হয়ে গেল।
বুয়েট থেকে পড়াশোনা শেষ করে ইশতিয়াক ভাই শীঘ্রই নরওয়ে যাচ্ছেন পিএইচডি করতে।
এর পরের মান্থলি কনটেস্ট গুলোতে তেমন সুবিধা করতে পারলাম না। আস্তে আস্তে জানুয়ারি মাস এল, শুরু হল নকআউট কাপ।
যেহেতু নকআউট কাপ, প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার দলের অর্ধেকই ঝরে গেল কোয়ালিফাইং রাউন্ডে। আমার ২৪ টা দলের ১২ নাই হয়ে গেল 🙁 (একজন সর্বোচ্চ ২৪ টা দল বানাতে পারে)
জাহিদ ভাই আগের বছর শেষ ষোলো পর্যন্ত গেসিলেন, উনি আমাকে বললেন আমিও নাকি চোখ বন্ধ করে শেষ ষোলো পর্যন্ত যাব।
এবং সত্যি সত্যি আমার টিম ফায়ারহাউস শেষ ষোলতে উঠে এল।
শেষ ষোলতে জাহিদ ভাইয়ের একটা টিমও ছিল, উনি জিতলে কোয়ার্টারে উনার সাথে দেখা হত আমার। কিন্তু উনি হেরে যান, তবে আমি ঠিকই প্রতিশোধ নিলাম জুয়াহগিলা নামের ওই দলটাকে হারিয়ে।
দেখতে দেখতে সেমিফাইনালেও জিতে গেলাম।
৯ই মে যখন ফাইনাল শুরু হয় তখন আমি আই.পি.এস.-৩ নামের দলটা থেকে ১৫ পয়েন্ট পিছিয়ে 🙁 এত কাছে এসে হেরে যাব মানতেই পারছিলাম না। তবে দুই ক্যাপ্টেনের দ্বৈরথই ম্যাচের গতি পাল্টে দিল। আমার ক্যাপ্টেন ছিল ল্যাম্পার্ড আর ওর ছিল আশলি ইয়ং। চেলসি জিতল ৮-০ তে, ল্যাম্পার্ড দিল ৩০ পয়েন্ট আর ইয়ং পেল -২। এই একটা ব্যাপারই আমাকে শিরোপা এনে দিল, আরেকবার পতপত করে উড়ল লাল-সবুজ পতাকা।
পুরোটা সময় আমার গুরু জাহিদ ভাই যেভাবে আমার পাশে ছিলেন আর যেভাবে উৎসাহ যুগিয়েছেন; মনেই হয় নাই এই লোকটার সাথে আমার কখনো দেখা হয় নাই সামনা সামনি। :salute: ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপ নিয়ে উনি এখন ইউরোপ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, জুলাইতে দেশে আসবেন।
সিংগাপুরের ছবি পরের পর্বে 😀
গোউউউউউল্লল্লল্লল 😀 B-)
গোল দিয়া লাভ নাই পিন্টু ভাই; এইবার সিঙ্গাপুর আমিই যামু। যাই ব্যাগটা গুছাই রাইখা আসি। B-)
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ওকে, চিকেন স্ট্যান্ড ক্যারি অন। 😡
😀
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
জটিলস 😮 :awesome:
থ্যাংকস দোস্ত 🙂
ছবি কই?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
দিব দিব 🙂
ইবার সিঙ্গাপুর আমিই যামু। যাই ব্যাগটা গুছাই রাইখা আসি। 😀
সাবাস হাসান ... :boss: :boss: :boss:
ধন্যবাদ ভাই 🙂
ফাকিবাজি পোস্ট হইছে এইটা। কোন ট্রিক্স শেয়ার তো করেই নাই, সিকোয়েন্সও উলটাপালটা হইছে।
মাইনাস রেটিং দিলাম
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
কি ট্রিক্স শেয়ার করুম বুঝতেছি না 😕
তাই তো বলি, তুই সিসিবি লীগের শেষদিকে এমন ডুব দিলি... আসল কাহিনি তো এখানে। অভিনন্দন দোস্ত। :hatsoff:
ট্রিক্সগুলো শেয়ার করিস :-B
থ্যাংকস দোস্ত 🙂
সত্যি কি তাই এহসান ভাই? 😛
'৯৬ রক্করে B-) B-) B-)
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:thumbup:
উরে গুঁইতো!!!!!ইডা কি দিলেন গো দাদা!!!!! :boss: :boss: :boss:
উরে গুঁইতো! মানে কি? 😕
চমৎকার একটা অর্জন হাসান। সিসিবি ড়ক্করে। 🙂
থ্যাংকস 🙂 আপনাদের কমেন্টের লাইগা বইসা ছিলাম এতদিন 🙁 এহসান ভাই এখনো এমুখো হন নাই, কামরুল ভাই আর রিবোন ভি ও না :((