” তৌবা ” শব্দের আভিধানিক অর্থ ‘ ফিরে আসা ‘ । যে কেউ, যে কোন অনিসলামিক কাজ থেকে অনুশুচনায় তাড়িত হয়ে ‘ দীন ‘ এর পথে ফিরে আসাই এই তৌবার মুক্ষ প্রতিপাদ্য ।এখানে একটা বিষয় পরিষ্কারঃ কৃত কর্মের জন্য আনুশুচনা বশতঃ অর্থাৎ বিবেকের দংশনে ফিরে আসতে হবে।কারো জোর বা প্রলোভনে সাময়িক ফিরে আসা নয় ! সৃষ্টিকর্তা পূর্ববর্তী সমস্ত কৃতকর্ম ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে বিচার করবেন যদি ঐ সকল অনৈতিক গর্হিত কাজ আর পরবর্তী জীবনে না করার অঙ্গীকার করা হয়।
এই হল ” তৌবা ” র ইসলামিক ব্যখ্যা ।
নিজের জীবনের গল্প শুরু করার আগে, আমাদের চেয়ে সিনিয়ার এক নেভি অফিসারের ছোট্ট একটা ঘটনা উল্লেখ করে নিতে চাই। সংগত কারনে ওঁর নামটা নাই উল্লেখ করলাম।অত্যন্ত চমৎকার একজন মানুষ। কাজের পরে জীবনটা আনন্দ উল্লাস, হৈ চৈ এ কাটাতে পছন্দ করতেন। ইন্টার মিডিয়েটের পর আমাদেরও হাতে অফুরন্ত সময় । পতেঙ্গা নেভির ওঁর ফ্ল্যাটটাতে প্রতিদিন পার্টি লেগেই থাকত !
পাকিস্তানী উত্তরাধিকার সূত্রে আমাদের ‘ মুসলিম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ‘ তখন মদ্যপান আনুমিত ছিল।যেটা পরবর্তীতে এরশাদ সাহেবের মুসলমানিকরনে বাদ পরে। ভাল-মন্দ এ বিচারে না গিয়ে,শুধু মাত্র তখনকার তরুণ বয়সীও আনন্দের যে সমস্ত উপকরণ তার সবই প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভাইদের কাছে মউজুদ থাকায় পার্টিও হত জমজমাট । জাহাজে কর্মরত অফিসাররা তার উপর আবার সিগারেট সহ শুল্ক বিহীন এই সব সুযোগ সুবিধা পেতেন যা আমাদের পঙ্গো পালের মত আকৃষ্ট করত।
সেই সময়ের একটা ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র ঘটনা । সন্ধ্যার পর, ছোট্ট মেয়েকে পেছনে নিয়ে ভাই বেরুলেন বন্দর টিলার বাজারের দিকে মোটর বাইকে চেপে । রাস্তা ক্রসিঙের পর ডিভাইডার বেশ উঁচু থাকায় আচমকা পা লেগে মোটর সাইকেল নিয়ে আছড়ে পরেন রাস্তায়, পেছনে থাকা মেয়ে ও পরে যায় রাস্তায়। বন্দর টিলার দিক থেকে দ্রুত গামী একটা ট্রাক দূর থেকে দেখেই ব্রেক করে । শুনেছি, মেয়েটার পা এর মাত্র ইঞ্চি খানেকের মধ্যে ট্রাকের চাকা এসে থামে। করুণাময়ের কৃপায় সকলেই বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু এই ছোট্ট ঘটনা ওঁর জীবনকে খোল নলচে বদলে দেয়।
উঁচু ভলিউমে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের পরিবর্তে কোরআন তেলওয়াত, পার্টি-খানাদানার স্থান মাস ব্যপি ‘নফল রোজা’ দখল করে নেয়।এরপর আজ ত্রিশটিরও বেশী বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, কিন্তু আর কোনই পরিবর্তন নজরে আসেনি। বছরের পাঁচটি দিন ব্যতিত সারা বছর রোজা, নামাজ ওঁর নিত্য সঙ্গী ।
মানুষের মন অত্যন্ত বিচিত্র ! কখন কোন পরিবর্তন, কি কারনে হবে স্বয়ং বিধাতা ছাড়া কার সাধ্য আছে বুঝার?
পুনশ্চ ঃ বসেছিলাম “সামিয়া” কে দেয়া একটি ওয়াদা রক্ষা করতে।’কি ভাবে ধূমপান থেকে রেহাই পেলাম’ এই ঘটনা লিখতে। কিন্তু সম্পূর্ণ ব্যাপারগুলি এত জটিল এবং পারশ্পরিক সম্পর্কযুক্ত যে কোনটা ফেলে কোনটা লিখি? যাক, আগামি পর্বে আশা করি লিখে ফেলতে পারবো !
এজন্যই বোধহয় মানুষকেই সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় বলা চলে আজিজ ভাই।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
বিশ্ব ভ্রমন্ডে সৃষ্টিকর্তা কত যে Variation সৃষ্টি করে রেখেছেন তার সঠিক তথ্য কখনই কেও খুঁজে পাবে না। শুধু মাত্র 'সাদা আর কালোর' মাঝেই হাজার রকম-ফেরের "ধূসর" রঙের সৃজন করেছেন!
"তোমরা আল্লাহ্ তাআলার কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে? (ফাবি আইয়ি আলা ই রব্বিকু মা তুকাজ্জিবান) - সুরা আর রহমান।
Smile n live, help let others do!
প্রথম "ফিরে আসা" ভালো লাগলো ভাই,
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। (সম্পাদিত)
ধন্যবাদ। আশা করছি তারাতারিই লিখে ফেলবো।
Smile n live, help let others do!
শেষ পর্যন্ত মানুষ বোঝা খুব কঠিন নয় আজিজ ভাই। কোনো কোনো মানুষ তো চরম বৈপরীত্য নিয়ে জীবনযাপন করে। আজ যে কমিউনিস্ট কাল সে তবলীগ! এর কারণ কিন্তু একটাই। আসলে কোনোটাতেই ওই নির্দিষ্ট মানুষটার গভীর জ্ঞান নেই।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
তোমার সাথে এব্যাপারে আমি শত ভাগ একমত। এবং আমার ধারনা - "কেন গভীর জ্ঞান নেই" ? কারন এটাই হয়ত সৃষ্টি কর্তার কারিগরি ! অতি চালাক কে দিয়েও চরম বোকামি তো শুধু তিনিই করাতে পারেন!
Smile n live, help let others do!
আমার মনে হয় মানুষ যা করে সেটা তার বেঁচে থাকার নিমিত্তেই করে। কেউ জ্ঞান সাধনায় আনন্দ পায়, কেউ এবাদত করে কিম্বা কেউ এমনি এমনি সময় পার করে - শেকড় যেদিকে টান দেয়। স্রষ্টার এতো বৈচিত্র্যময় সৃষ্টি দেখে মনে হয় স্রষ্টা নিজেই বৈচিত্র পছন্দ করে। বৈচিত্র ছাড়া তো সামান্য একটা প্রতিষ্ঠানকেই টেনানো যায় না - সেখানে সারাবিশ্ব টিকবে কি করে?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
" স্রষ্টার এতো বৈচিত্র্যময় সৃষ্টি দেখে মনে হয় স্রষ্টা নিজেই বৈচিত্র পছন্দ করে।" - অবশ্যই! তিনি বৈচিত্র্য পছন্দ করেন বিধায়ই আমরা সাদা, কালো, পীত, বাদামী কত বর্ণের, কত ভাষা ভাষী! বিস্ময়ে অবাক হয়ে কখনো দেখি ' মালয়েশিয়ার কাকাতোয়াদের রঙের কম্বিনেশন' অথবা সাগর গভীরের ' ড্রাগনেট ' মাছদের রঙের বাহার, বা মাটির উপরে ঘোড়াদের সাথে পানির জীব 'সি হর্সদের' সাদৃশ্য !
(Pls dont quote) আমার ধারণা ' স্রষ্টার ফেরেশতা সৃষ্টির একঘেয়েমি থেকে মুক্তির জন্যেই মানুষের সৃষ্টি'।বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ফেরেশতা কুল আল্লাহ রব্বুল আলামিন কে আকার ইঙ্গিতে ফরিয়াদ করেছিল, তারা তো স্রষ্টার সকল হুকুম-আহকাম অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে, তবে মানুশ্য জাতিকে সৃষ্টির আর প্রয়োজনই বা কি?
স্রষ্টার উত্তর জানা না গেলেও আমার ধারনা He was bored by the regimented 'Ferishta's. So He created us, with "BILLIONS OF VARIATIONS", which made the tiny world so interesting!
Smile n live, help let others do!
আমি দর্শকগ্যালারিতে বসে রইলাম ভাইয়া 🙂
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।
'নন্দলাল' বসিয়া বসিয়া রহিবা কি চির কাল? ( Sorry, 'নন্দলালী' হবে! )
Smile n live, help let others do!