আজিজুল হাকিম, এফ সি সি/১৯৭২~৭৮
ক্লাস সেভেন এর সময় টা মনে হয় সৌর বছর নয়। নেপচুন এর মত ৬০,১৯০ দিনে বছর অথবা প্লুটোর মত ৯০,৬১৩.৩০ দিনে বছর। আমাদের কিছুতেই দিন কাটে না । আর পানিশমেন্ট কোন ব্যাপারই নয়। নাক দিয়ে রক্ত ঝরলে বা লজ্জাবতী কাঁটায় পীঠ লালচে জখম হলে হসপিটাল এ একবার ঘুরে আসি, আধা ঘণ্টা… …-এক ঘণ্টার রেস্ট পাই। আবার যেই লাউ সেই কদু ।কুছ পরোয়া নেই ।আর উর্দু বাৎ ও ওস্তাদ দের কল্যাণে শিখেছি প্রচুর। কারন বাঙালী দের শাস্তি নাকি বিদেশী ভাষাতেই দিলে মানায়। ব্রিটিশ আমলে ইংরেজি ,পরবর্তীতে উর্দুতে । যাহোক ” বিপদ মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রাথনা …।এর মাঝেই নিজেদের বুঝতে চিন্তে শিখেছি । বন্ধু “বারকি ” সব চাইতে নিরীহ,শান্ত । তারপর রানা,খুরশিদ,শাহেদ। এবাদুল,কাদরি,আহমেদ দুষ্টামিতে মধ্যম রকম বলা যায় সাগরেদ বা Participant হিসাবে ভাল।বাকি রইলো নুর,আমি,আলাউদ্দিন, মোরশেদ,শাফাত ও হাসিব। চরম ভদ্র, ভাল ক্যাডেট বা Best Cadet সংক্ষেপে BC বা আমাদের কথ্য ভাষায় “বীচি” হলো হাসিব । আর আমরা বাকি কয়েকজন তার বিপরীত। পানিশমেন্ট, রেজওআন ভাই এর ঘটনা ব্যতীত আর যে ঘটনা গুলি মনে পরে তার মধ্যে কক্সবাজার ক্যাম্পিং এবং এক্সকারশন অন্যতম।
কক্সবাজার ক্যাম্পিং জীবনের একটা উজ্জল স্মৃতি। এখন যেখানে পর্যটন এর হোটেল গুলি হয়েছে (প্রবাল না সৈবাল) সেখানে বিশাল মাঠে সারি সারি ক্যাম্প পড়েছে ।হাউস এবং ক্লাশ অনুযায়ী। ফাজলুল হক হাউজ সর্ব পশ্চিম কর্নারে । সমুদ্রস্নান, স্যান্ড ভলিবল, ফুটবল, হাইকিং সব আনন্দের পর রাতে ক্যাম্পফায়ার করে পরিশ্রান্ত সব যার যার ক্যাম্প এ যেয়ে শুয়েছে। রাত এত বেশী নয়। আমাদের ভদ্র গ্রুপ তখন আল রেডী ঘুমে অচেতন। খবর এলো কোন ক্যাম্পে নাকি সাপ দেখা গেছে । সবাই সাবধান। এমনকী, আমাদের ডেয়ারিং গ্রুপও ভয় পেয়ে গেছি । সবাই বেশ আতংকিত। তারা ঘুমাতে যাবার আগে ক্যাম্প এর বাইরে চারি পার্শে একটু ভাল ভাবে সার্চ করে শুতে চায়। আমার কেন জানি আলস্যর কারনেই হয়তোবা এত ভয় লাগছিল না। আমি অলরেডি নিদ্রায় অচেতন গুড বয় রানা ,শাহেদ, খুরশেদের পার্শে শুয়ে রইলাম।অন্যদের বললাম ক্যাম্পের বাইরে চার পাশটা লাঠি দিয়ে বাড়ি-টারি দিয়ে একটু দেখে আসার জন্যে। ওরা ও ঠিক তাই করছিলো । ওরা বাইরে যখন আমার মাথার কাছে এলো, কি দুষ্টামি চাপলো জানিনা, লাঠির খোঁচা দেয়ার সাথে সাথে ভিতর থেকে ” ফুঁস ” করে শব্দ করলাম।
এটার ফলাফল যে এতো ভয়াবহ হবে, আমি কি তা জানতাম ? বাইরে “ওরে বাবারে , মা রে, মরলাম রে, স..স..সাপ” বলে যে যেদিকে পারলো লাফ ! একজন তার মধ্যে ক্যাম্প এর দড়িতে পা বাঁধিয়ে পড়ে হাত ভাঙলো। অবস্তা ভয়াবহ। আমার বিশ্বস্ত দুষ্টামির বন্ধুরাও আমার উপর মারাত্মক ক্ষেপে গেলো। সাথে সাথে এডজুটানট্ এলো। সবাই একবাক্যে বলল স্যার ভিতর থেকে “ফুঁস” শব্দ শুনে আমরা লাফ দিয়েছি। কে করলো এডজুটানট্ টর্চ দিয়ে প্রত্যেক এর মুখে আলো ফেলছে ।আমি তখন জীবন-মরণ এর মাঝা মাঝি । জীবনের শ্রেস্ত অভিনয় করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ঠোঁটের কোণে লালা লাগিয়ে, গভীর ঘুমের ভাণ করে পরে আছি।অল্প অল্প নাক ও ডাকছি । এডজুটানট্, সম্ভবত মেজর সালজার রাহমানের কাছে আমার ঘুম বিশ্বাস যোগ্য লাগায়, যতই বন্ধুরা আমাকেই দেখিয়ে বলছে, স্যার “ওইক্ষান” থেকে শব্দ এসেছে, স্যার কিছুতেই মানছেন না। না,না আজিজুল গভীর ঘুমে, ও এটা করতেই পারে না। শাহেদ বেটা কে উঠাও, এই দুষ্টামি নিশ্চয়ই ওর। সারা রাত বেচারা সাহেদ পানিশমেন্ট পেলো আর আমি জীবনের শ্রেস্ত অভিনয়ের বরকতে সুখ নিদ্রায় বিভোর থাকলাম। আল্লাহ্ আমাকে মাফ করুন। আমিন। (চলবে)
মজা পেলাম।
😀
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ভাই
আপনারা ভালই বদ ছিলেন।
হাঁ
হাঁ
হাঁ
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
হা হা হা হা :))
ভাইয়া, আপনি তো বিশাআআআআআআআআআআআআআআল পুংটা ছিলেন :)) (বেয়াদবী হইলে আগেই :frontroll: দিয়া দিলাম)।
গল্পটা ভাল ছিল।
:)) :)) :))
বাহ্, ভাইয়ারা তো দেখি ভালই দুষ্টুমি করতেন। আজকালকার ক্যাডেটরা আর এই রকম নাই। এরা এখন নষ্টামি করে। কলেজে মোবাইল নিয়ে যায়। স্যার ম্যাডাম দের টিজ করে। রাত বিরাতে চুরি করে। শহরে সিনেমা দেখতে যায়। স্যারদের মেয়েদের কিংবা পাশের এলাকার মেয়েদের সাথে টাংকি মারে। ছি: ছি: ছি: ইচ্ছা করে... :gulli2: :gulli2: :gulli2: কইরা দেই।
এইটা কি বললি ? :no:
ভুল বলি নাই। ক্লাশ টুয়েলভেএর কাহিনী মনে পড়ে যাচ্ছে। আমাদের একাডেমীর পাশ দিয়ে ছিল গ্রামের পথ। ঐ পথে প্রতিদিন ঠিক নির্দিষ্ট সময়ে এক সুন্দরী ৯ম কি ১০ম শ্রেনীতে পড়ে, আসা যাওয়া করত। আর পোলাপাইন সব সময় ধরে সেই পথে চেয়ে থাকত। মাঝে মাঝে চিৎকার করে ডাকত। .........আরো অনেক কাহিনী আছে। এ নিয়ে একটা পোষ্ট ই হয়ে যাতে পারে....... সাব্বির ভাল করে বলতে পারবে.........। সাব্বির, মনে পড়লে হাত তোল।
নাসির চৌধুরী FCC র একজন অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ছিলেন ,শহীদ "মুনির চৌধুরীর " ছোট ভাই এবং ফেরদৌসি মজুমদার এর বড় ভাই ।আমাদের অত্যন্ত প্রিয় ভাজন ছিলেন। দুইটা কারনে। একঃ স্যার একজন অমায়িক, ভদ্র, সদালাপী ভাল মানুষ ছিলেন। দুই ঃ স্যার এর একটা অনিন্দ্য সুন্দরী ষোড়শী কন্যা ছিল । কোন কারনে সে যদি কখনো আমাদের কারো দিকে তাকিয়ে একটু স্মিত হাসি দিত, সেই টার্ম টা সে স্বপ্নে ভেসে বেড়াতো ! একটা সম্পূর্ণ বছর আমি স্বপনে নয়, মেঘে ভেসে ভেসে মেঘের মধ্যেই বস বাস করেছি । হে হে হে!
Smile n live, help let others do!
আহা আহা ;;) ;;)
😀 😀 😀