হাউস পদক

সোহরাওয়ার্দী হাউসের ক্যাডেটঃ

২০০১ এর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। দ্বিতীয় দিনে ৪*৪০০ মিটার সম্পূরক দৌড়, বড়দলের। দৌড়ের এক কৃতি দৌড়বিদ কোন এক অজানা কারণে অংশ নিতে পারবেন না। খোঁজ খোঁজ রব উঠলো চারিদিকে। কাকে পাঠানো যায়- কাকে? কাকে? কাকে? হাউসের চালনে ওয়ালারা তখন শরণাপন্ন হলেন দ্বাদশ মানের এক ক্যাডেটের কাছে। তার বড় বড় দু’ পা দেখে চালনেওয়ালাদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি- তার মাঝে লুকিয়ে আছে অমিত সম্ভাবনার বীজ।

প্রথমদিন পয়েন্ট তালিকায় ভরাডুবির পর দ্বিতীয় দিন প্রভাত হতেই হঠাৎ করেই বিভিন্ন ইভেন্টে সাফল্যের ফল্গুধারা ঝরিয়ে দিতে লাগলো সোহরাওয়ার্দীয়ানরা। এর মাঝে চলে আসলো ৪*৪০০ মিটার সস্পূরক দৌড়ের ইভেন্ট। অমিত সম্ভাবনাময় সেই ভাই প্রস্তুত। তিনি থার্ড ম্যান- যথারীতি স্টার্টিং পয়েন্টে। আগের দুইজন মোটামুটি ভালো লীড নিয়ে তাকে বাটন প্রদান করলেন। হাউস তখন দ্বিতীয় স্থানে। রিলে বাটন পাওয়ার পর শুরু হলো সেই অবিশ্বাস্য দৌড়। ঝড়ের বেগে তিনি অতিক্রম করে গেলেন প্রথম স্থানে থাকা ফজলুল হক হাউসের প্রতিযোগীকে। ১০০ মিটারের মধ্যেই তিনি নিকটতম প্রতিযোগীকে ২০ মিটার পেছনে ফেলে চলে আসলেন হাউস টেন্টের সামনে…

এমন সময় আরেফিন ভাই বলে উঠলেনঃ- ” ঐ দেখ সোহরাওয়ার্দী হাউসের ক্যাডেট যায়। কোন প্র্যাকটিস লাগে না।”

দৌড়ে সেই ভাই কত তম হয়েছিল সেটা না বলি- তবে এরপর থেকে আর কেউ সোহরাওয়ার্দী হাউসের ক্যাডেট হতে চায় নি…

আল-রাজী পদকঃ

যোগ্যতাঃ- ব্যক্তিগত তিনটে ইভেন্টেই প্রথম স্থান অধিকার করার সম্ভাবনা।
ফলাফলঃ তিনটিতেই ষষ্ঠ।

দুই ক্যাটাগরিতে এই পদক প্রদান করা হতো। আল-রাজী গোল্ড, আল- রাজী সিলভার।

যার নামে নাম করণ করা হয়েছে- এই পদক, তিনি ছাড়াও আমাদের আরিফ একবার আল-রাজী সিলভার পদক অর্জন করে ফেললো। পরবর্তীতে গোল্ড পাওয়ার ভয়ে সে তার তৃতীয় ইভেন্টে যাওয়ার কথা মাথাতেও আনে নি। আর একজন জুনিয়র শুভ্র। অতিসাহসী শুভ্র অর্জন করলো আল-রাজী গোল্ড।

প্রিন্স পদকঃ

একই বছরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার কাহিনী। মধ্যম দলের ৪*৪০০ মিটার সম্পূরক দৌড়ের প্রাকটিস। আমাদের কাজী ফোর্থ ম্যান। শেষের ৫০ মিটার তাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্যই জন্যই হোক কিংবা টাইমিং কমানোর জন্যই হোক, সোহরাওয়ার্দী হাউস ক্রীড়া অধিনায়ক প্রিন্স ভাই ট্রাকের বাইরে থেকে কাজীর সাথে দৌড় শুরু করলেন…

কিন্তু না!! ক্ষিপ্রতার সাথে দৌড়ালেও পঁচিশ মিটার পরেই ক্লান্ত কাজীর দশ মিটার পেছনে পড়ে যাওয়া প্রিন্স ভাই দৌড় বন্ধ করে, কিছুই হয়নি এমন ভাব করে অন্যদিকে হাঁটা শুরু করলেন। সেই থেকে প্রিন্স পদকের সূচনা। পরবর্তীতে একজনেরই এই পদক পাওয়ার সৌভাগ্য হয়। সে আমাদের ব্যাচের আলম।

৩,০৬৯ বার দেখা হয়েছে

২৭ টি মন্তব্য : “হাউস পদক”

  1. মুসতাকীম (২০০২-২০০৮)

    মজা পাইলাম 😀 😀 😀


    "আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"

    জবাব দিন
  2. তাইফুর (৯২-৯৮)

    সাবাশ ব্যাটা ইকবাল ... লেখা ভাল হইসে। 😀
    (এ্যাথলেটিক্স'এর অনেক গল্প মনে পইরা গেল)


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  3. তৌফিক

    ।১।

    সিনিয়ারদের নামে বদনাম করার জন্য কেয়ামত পর্যন্ত :frontroll: ক্যারি অন।

    ।২।

    কোন ব্যাচের ভাইরে তুই? হাসনাইনদের ব্যাচ নাকি ছক্কু আরেফিন, শুভেন্দুদের ব্যাচ। হিসাব মিলাইতে পারতেছিলাম না, সাহায্য করিস।

    ।৩।

    ডিসক্লেইমারঃ

    আমি ২০০১ সালে সোহরাওয়ার্দী হাউসের ক্যাডেট ছিলাম, আমার লম্বা লম্বা পা ও আছে। মাগার আমি কোনদিন ৪ * ৪০০ তে যাই নাই। অবশ্য সেই এথলেটিক্সে ৫ মিনিটের নোটিশে ৪০০ মিটারে যাইতে হইছিল। ফলাফল, পায়ে ক্র্যাম্প বান্ধায়া ৬ষ্ঠ, সেই প্রথম ট্র্যাক, সেই শেষ।

    ।৪।

    অনেক কথা মনে করায়া দিলি রে ভাই। আছিস কেমন? লেখা থামাইস না। 🙂

    জবাব দিন
  4. আল্রাজী ভাই আর্প্রিন্স ভাইয়ের্সাম্নে পড়িস্না যেন ভুলেও... তাইলে কেয়ামত পর্যন্ত রগ্রা :frontroll: :frontroll: :frontroll: চলবে

    লেখা পুরা গুল্লি হৈছে :gulli: :gulli: :gulli: :gulli2: :gulli2: :gulli2: :khekz: :khekz: :khekz:

    জবাব দিন
  5. শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

    আমাকে একবার অমিত সম্ভাবনাময় হিসাবে ৪০০ মিটার প্রতিবন্ধক দৌড় প্রতিযোগিতায় পাঠানো হয় এবং ফলাফল যথারীতি ৬ষ্ট, শুধু তাই না ৫ম ব্যক্তির সাথে দুরত্ব প্রায় ৫০ মিটার(তখন আমি ১১শ ক্লাশে)। পরবর্তি বছর আমাকে আবারও একই ধারণার বশবর্তী হয়ে পাঠানো হোল পোল্ভল্ট নামক একটি অসাধারন ইভেন্টে যাতে আমি ৬ষ্ট হলে মনে হয় খুশি হতাম, হলাম গিয়ে disqualified, অবশ্য দ্বাদশ ক্লাসের এই লজ্জা ঢাকতে পেরেছিলাম ৬ষ্ট হব নিশ্চিত হয়ে যে ইভেন্টে(লাফ-ধাপ-ঝাপ) নাম দিয়েছিলাম তাতে ৩য় হয়ে।

    জবাব দিন
  6. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    আর আমরা হইতাম অষ্টম, দুঃখটা বুঝ :(( :((

    যাহোক, সমসাময়িক ধারায়,
    ইকবাল স্বাগতম। 🙂
    লেখা খুবই মজা হয়েছে। 😀

    কিন্তু তুমি কোন পদক পাইছিলা সেইটা বললানা। 🙁


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  7. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    ইকবাল, ভাই তোমাকে ব্লগে স্বাগতম... :clap:

    আমারে একটা জিনিস বুঝাও- তোমার পুরো নাম দিছ 'শাহরিয়ার'...আবার ক্যাডেট নাম 'ইকবাল'...!!! 🙁
    শাহরিয়ার নামটার মধ্যে কি ইকবাল লুকানো অবস্থায় আছে??? :-/
    অনেক ভাবে খুঁজেও বের করতে পারলাম না... :bash: [নিকোলাস কেজ(ন্যাশনাল ট্রেজার!)-ও মনে হয় বের করতে পারবেনা... :-B )


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  8. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    পুরান দিনগুলার কথা মনে হয়া গেল। তৌফিক ভাইরে ম্যানেজ কইরা রাখিস। বাইচান্স যদি আল রাজী ভাই আর প্রিন্স ভাই জানতে পারে তাইলেই শেষ। হাড্ডিগুড্ডি কিন্তু আস্ত থাকবো না... 😛

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।