১.
‘দ্রব্যমূল্যের দুঃসহ চাপ প্রশমনের লক্ষ্যে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখার ব্যবস্থা করা হবে। দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সময় মতো আমদানির সুবন্দোবস্ত, বাজার পর্যবেক্ষণসহ বহুমুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মজুতদারি ও মুনাফাখোরি সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে, চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে। ‘ভোক্তাদের স্বার্থে ভোগ্যপণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ’ গড়ে তোলা হবে। সর্বোপরি সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্য কমানো হবে ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
এই কথাগুলো আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার থেকে নেয়া। এই ইশতেহার আমি হাতের কাছেই রাখি। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে অঙ্গীকার কতখানি রাখতে পারলো তার বিচার করা সম্ভব কেবল ইশতেহার বিশ্লেষন করেই।
২.
আন্তর্জাতিক বাজার এখন অনেকখানি সংযত। বিশেষ করে ২০০৭ ও ২০০৮ সালের তুলনায় বাজার যথেষ্ট স্থিতিশীল বলা যায়। কিছু পণ্যের দাম বাড়লেও তা আগের মতো লাফ দেয়নি। শেষ ফসল বোরো ভাল হয়েছে। দেশের মধ্যে সরবরাহের কোনো সংকট নেই। সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়েও কোনো অভিযোগ নেই। তারপরেও বাজার স্থিতিশীল বলা যাবে না।
এটিকে আমি বলছি বাজার ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা। আর এর দায় পুরোটাই বাণিজ্যমন্ত্রীর। সরকার প্রধান হিসেবে এর দায় প্রধানমন্ত্রীকেও নিতে হবে। বাজার নিয়ে আসলে সরকারের কোনো পরিকল্পনাই ছিল না। বাণিজ্যমন্ত্রী অনেক কথাই বলেছেন, এখনও বলছেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো পরিকল্পনা দেখতে পাওয়া যায়নি।
৩.
বাণিজ্যমন্ত্রী একের পর এক বৈঠক করেছেন। অনেক ধরণের ব্যবসায়ীদের এসব বৈঠকে থাকতে হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী কেন মনে করলেন মুখের কথাতেই কাজ হবে তা ঠিক বুঝতে পারলাম না। জরুরী অবস্থার সময় ভয় দেখিয়ে যা করা যায়নি, এখন মিষ্টি মিষ্টি কথা বা নসিহত করে তা সম্ভব কী করে হবে?
বাণিজ্যমন্ত্রীর সমস্ত মনোযোগ ছিল খুচরা পর্যায়ের ব্যবসার উপর। কিন্তু পণ্য কোথা থেকে আসছে, কী দামে আসছে, কতটা আসছে, কয় হাত ঘুরে আসছে সেদিকে কোনো নজরই ছিল না। খাদ্যমন্ত্রীর বলার পর বাণিজ্যমন্ত্রীর মনে পড়েছে পরিবহন চাঁদাবাজির কথা। আগে কেন মনে পড়লো না?
৪.
৭ মাস ধরে শুনে আসছি টিসিবি যথেষ্ট পরিমাণ পণ্য আনবে এবং তাতে বাজার স্থিতিশীল থাকবে। বাণিজ্যমন্ত্রী কী একবারও টিসিবিকে ডেকে জানতে চেয়েছেন যে, তাদের এই ক্ষমতা আছে কীনা। বহু বছর ধরে টিসিবি কোনো পণ্যই আমদানি করে না। তারা যা করে তা হচ্ছে আউট সোর্সিং। সুতরাং টিসিবিবে নির্ভর থাকতে হয় অন্যের উপর।
টিসিবির অদক্ষতার একটা উদাহরণ দেই। ১০ হাজার টন চিনির জন্য তারা টেন্ডার দিল। টিসিবি এই তথ্যটাই জানে না যে, সাড়ে ১২ হাজার টনের নীচে চিনি জাহাজে উঠে না। পরে নতুন করে টেন্ডার দেওয়ার পর সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজের অর্ডার দেওয়া হল না। কারণ, একজন বড় ব্যবসায়ী কাজটি পাননি। দরপত্র খোলার দিনই নাকি তিনি বলেছিলেন কিভাবে এই চিনি আসে তা তিনি দেখে নেবেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিসিবি নিয়ে অনেক বাগাড়ম্বর করেছেন টিসিবির ক্ষমতা ও দক্ষতা সামান্যতম বৃদ্ধি না করেই। টিসিবির নিজস্ব তথ্য চাইলেও তারা চেয়ে থাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দিকে। পৃথিবীর সবচেয়ে ভীতু মানুষগুলো কাজ করে টিসিবিতে। টিসিবির কোনো যোগ্যতাই নাই যথেষ্ট পরিমাণ পণ্য আমদানি করে বাজারে হস্তক্ষপে করার। অথচ দিনের পর দিন এই আশার কথা শুনিয়ে ফারুক খান চরম পরিহাস করেছেন মানুষের সাথে। কাল শুনলাম তিনি বলছেন, টিসিবি বেশি পণ্য আনতে পারেনি। এর দায় টিসিবির না, বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের, মন্ত্রীর।
৫.
টিসিবি আবার ডিলার নিয়োগ দিয়েছে। প্রথম চিঠিতে বলা ছিল স্থানীয় সাংসদের সুপারিশ লাগবে। পরে এই ধারাটি তুলে দিলেও বাস্তবে দলের লোকজনই নিয়োগ পেয়েছে। দোকান নেই, তেল ও চিনি রাখার জায়গা নেই-কিন্তু তারা ডিলার। এর দায়ও নিতে হবে বাণিজ্যমন্ত্রীকে।
৬.
গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে কিন্তু আমাদের জানা আছে কি করতে হবে। বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের কাছে থাকতে হবে আন্তর্জাতিক মূল্য, উৎপাদন পরিস্থিতি, আমদানির পরিমাণ, সরবরাহ পরিস্থিতি ও চাহিদার পরিমাণ। আমি নিশ্চিত করে জানি এসব তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই।
আমরা জানি চিনি, ভোজ্যতেল, গম, ডালসহ বেশ কিছু পণ্য নিয়ন্ত্রণ করে হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী। কারা সকলেই তা জানে। এই ব্যবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য কিছুই করেনি বাণিজ্যমন্ত্রণালয়।
কৃষকের হাত থেকে একজন ভোক্তার কাছে পণ্য আসতে ৮ থেকে ১০ হাত ঘোরে। আর এর মধ্যে দাম বাড়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। কৃষক ও ভোক্তার এই দূরত্ব কমাতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ নিয়েও কিছু করেনি।
বাজারে পণ্য তালিকা টানাতে হবে। যদি না টানায়, বা টাঙানো তালিকার চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে? কোনো শাস্তি নেই। তাহলে বাজার তদারকি দল কি নিয়ে বাজারে নামবে?
তাহলে কী করে আশা করবো সরকার বাজার স্থিতিশীল করতে পারবে?
৭.
অর্থনীতিতে কবওয়েব থিউরি নামে একটি কথা আছে। মোদ্দা কথা হলো একবছর যদি ভাল উৎপাদন হয় এবং কৃষকরা ভাল দাম না পায় তাহলে পরের বছর উৎপাদন কম হবে।
বোরো মৌসুমে ভাল দাম পায়নি কৃষকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামি মৌসুমে ধান উৎপাদন কম হবে এবং তার কিছু লক্ষ্মনও দেখা যাচ্ছে। যেমন, এবার আমন-আউশের বীজ বিক্রি কম হয়েছে। সুতরাং ভবিষ্যত নিয়ে দুঃশ্চিন্তার যথেষ্ট কারণ আছে।
ভারতে এবার খরা। উৎপাদন কম হয়েছে। ভারতকেই এবার আমদানি করতে হবে বলে দেশটির অর্থমন্ত্রী বলেছেন। চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞায় গতবার চালের দাম উঠেছিল ১ হাজার ডলার। সুতরাং এখন থেকেই সাবধান হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
৮.
সব কিছু মিলিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা-ভাবনার যথেষ্ট কারণ আছে। ব্যর্থতা ব্যবস্থাপনারই বেশি। এই ব্যর্থতা থেকে বের না হতে পারলে এর দায় আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে।
এই ফারুক খান লোকটার গোঁফ থেকে শুরু করে কথাবার্তা, কাজ কর্ম কোনটাই আমার পছন্দ না। এই ব্যাটা সারাদিন টিভিতে ইন্টারভিউ দেয়া ছাড়া আর কোন কাজ করে বইলা আমার মনে হয় না।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
একটু আগে হাতিরপুল বাজারে গেছিলাম। তারপর আপনার পোস্ট পইড়া টিসিবির ওয়েব সাইট ঘুরতে গিয়া একটা মজার জিনিস দেখলাম।
টিসিবির ওয়েব সাইটে প্রতিদিনের বাজার দর দেয়া আছে ।
দামের যে লিস্ট দেয়া আছে ওই দামে কেউ আমারে বাজার থেইকা যে কোন কিছু কিনা দিতে পারলে পুরা মাস আমার বাসায় তারে দাওয়াত খাওয়ামু কথা দিলাম। 😀
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
দাওয়াতের মেন্যু কি কামরুল ভাই?
নায়িকা আসব তো 😛 । তাইলে প্লেনে টিকিট কিনি
দাওয়াত খাওয়ামু কইছি, নায়িকা খাওয়ামু কই নাই কিন্তু 😛
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
প্রতিদিনের বাজার দরে নাযিকাগো রেট নাইক্কা.............. :-B
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
তুই কার বাজার দর জানতে চাস? ;;;
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ওই যে..বাধাকপির মত কান, গাজরের মত নাক, পটলের মত চোখ...কি যেন নামটা??? ~x( ~x( ~x( ~x( ~x(
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
সবজি বেগমের কথা বলতেছিস? :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
;)) ;)) ;)) ;)) ;))তাইলে চিনা ফালাইলি :khekz: :khekz:
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
:khekz: :khekz:
:shy: :shy: আচ্ছা কামরুল ভাই, ডিজুসের এ্যাডে (অচেনা বন্ধুদের সাথে গল্প করার ওইটা) "হাই আমি নাতাশা, তোমার সাথে গল্প করতে চাই" এই মাইয়াটা ক্যাডা কন তো? :shy: :shy:
ক্যান ওইটারেও কি 'খাপো' বলবি নাকি? :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
:shy: :shy: ছি সবার সামনে এইগুলা কি কন শরম পাই তো :shy:
অফ টপিক- বস নামটা জানি কি?
বানিজ্যমন্ত্রীর প্রত্যেকটা বিষয় নিয়া (ইনক্লুডিং পিলখানা) :just: বাকাওয়াজ করা ছাড়া কোন কাম নাই। :duel:
:(( ফারুক খান তো জেসিসি না তাইলে গাছ কাটেন ক্যাআআআআআআন? :((
গাছ কাটা যে কোন কাম না আব্দুল্লাহ ভাই সেটাই দেখাইলেন......... ;;;
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
:khekz: :khekz:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ধন্যবাদ শওকত ভাই।
জবাবে দীর্ঘশ্বাস শুধু !
ইনশাআল্লাহ এসব থেকে উত্তরণের কোন পথ হয়তো আসবে একদিন।
সংযমের মাসে খোদা যেন সকলকেই হেদায়েত করেন এ কামনা করি।
সৈয়দ সাফী
এটা যেন একটা অবিচ্ছেদ্য চক্র। প্রত্যেক সরকারই নানারকম আশ্বাস দেন, শেষে কিছুই বাস্তবায়িত হয় না! 🙁
আমরা একটা ইনফিনিটি লোপের মধ্যে আছি। :((
এই কথাটা খুবই যথার্থ। ক'দিন আগে চ্যানেল আইতে 'মাটি ও মানুষের কৃষি 'অনুষ্ঠানে দেখলাম ঈশ্বরদী'র কিছু এলাকায় চিচিংগার কেজি পঞ্চাশ পয়সা! কৃষক হাটে এনে ভ্যান ভাড়াও পায় না, কেউ রাগে ক্ষোভে চিচিংগার মাচা ভেঙ্গে ফেলেছে, রাস্তায় ফেলে দিয়েছে সেখানে ঢাকায় শান্তি নগর বাজারে চিচিংগার কেজি ২৮-৩২ টাকা। আর ফারুক খান x-( কে নিয়ে কিছু বলার নাই! যাত্রাপালার সং, নিধিরাম সর্দার।
আরে ভাই, তুমি লাউ-কদূ-কলাগাছ যারে তারে ধইরা তো কইতে পারোনা না "তুমি আইজ থেইক্কা মন্ত্রী"।
অর্থনীতির "অ" বুঝে না, বাজার ব্যবস্থাপনা বুঝবো ক্যামনে? এইটা কি "জনসভা" নাকি, আধা-ঘন্টা চাপাবাজি আর এর পরে হাততালি?
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
সবই বুঝলাম সমাধান কি? জরুরী অবস্থায় যখন পারেনাই, এখন কি সডিচ্ছা আছে কিছু করার । কোথায় যেন পড়েছিলাম - দেশ আজ চলছে এক অদ্ভুত উটের পিঠে । এই উট টা থামেনা কেন ?
:thumbup: :thumbup: :hatsoff: :hatsoff:
Life is Mad.