বাংলাদেশ স্কয়ার

সিভিল মিলিটারি কো-অপারেশনের (CIMIC) আওতায় লাইবেরিয়ায় ইউএন মিলিটারি কন্টিনজেন্টসমূহ কর্তৃক বিভিন্ন স্হাপনা নির্মান করা হয়েছে। এগুলো মূলত খেলাধুলা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরীর জন্য স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজে ব্যবহৃত হয়। আমাদের নিকটতম যেই স্থাপনাটি আছে সেটার নাম BLYC – “বাংলাদেশ লাইবেরিয়া ইয়ুথ সেন্টার” । এখানে আছে একটা ফুটবল মাঠ, বাচ্চাদের খেলার জন্য একটা বড় পার্ক আর একটা ট্রেনিং সেন্টার। ফুটবল মাঠে স্থানীয় টিমগুলো ফুটবল খেলে। আমরা এখানে কম্পিউটার, সেলাই শিক্ষা ইত্যাদি পরিচালনা করি। এর একটা অংশে আছে “শান্তি অঙ্গন” (PREMISE OF PEACE) নামে একটি মনুমেন্ট।

আর এর সবকিছু মিলিয়ে পুরো জায়গাটার নাম “বাংলাদেশ স্কয়ার”। এখানের দর্শনীয় বিষয় এই “শান্তি অঙ্গন”।

এর সম্পর্কিত কিছু তথ্য:

১. ১৬ ডিসেম্বর ২০০৬ তারিখে “শান্তি অঙ্গন” উদ্বোধন করেন লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি এবং মিশন সমন্বয়ক এলান ডস।

২. ১১ এপ্রিল ২০০৭ তারিখে বাংলাদেশ-লাইবেরিয়া দুই দেশের মৈত্রীর প্রতীকস্বরূপ “শান্তি অঙ্গন”কে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট ম্যাডাম এলেন জনসন স্যারলিফকে হস্তান্তর করা হয়।

৩. শান্তির এই স্মৃতিস্তম্ভ উৎসর্গ করা হয়েছে লাইবেরিয়ার জনগণকে যারা যুদ্ধের কারণে তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের যারা ২০০৩ সাল থেকে অদ্যবধি এই দেশে শান্তি পুনঃস্থাপনের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

৪. “আর নয় যুদ্ধ” স্মৃতিস্তম্ভের দু্ইপাশের ভাঙ্গা অস্ত্র সেটাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।

৫. কালো রঙের স্তম্ভ লাইবেরিয়ান জনগনের দুঃখ দুর্দশাকে নির্দেশ করে।

৬. শান্তির প্রতীক সম্বলিত মাঝখানের লম্বা সাদা স্তম্ভটি বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের শান্তি রক্ষার অক্লান্ত প্রচেষ্টাকে নির্দেশ করে।

৭. উড়ন্ত সাদা কবুতর লাইবেরিয়ায় শান্তি স্থাপনের প্রতীক।

ইউএন ডে, পিস কিপারস ডে উদযাপনসহ নানান অকেশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান এখানেই আয়োজিত হয়। দেশী বিদেশী যে কোন ভিজিটর আসলে “বাংলাদেশ স্কয়ার” অবশ্য পরিদর্শিত একটা স্থান। তখন বিভিন্ন দেশের মানুষের সামনে এই দেশের জাতীয় পতাকার পাশাপাশি যখন বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকাকে সগৌরবে উড়তে দেখি তখন বড় ভালো লাগে।

ছবি পরিচিতি:

১. “শান্তি অঙ্গন” স্মৃতিস্তম্ভ।
২. শান্তি অঙ্গনের সামনের মেঝেতে শান্তির প্রতীক।
৩. জাতিসংঘ ও লাইবেরিয়ার পতাকার পাশাপাশি উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা। পিছনে ট্রেনিং সেন্টার।
৪. ফুটবল মাঠ ও পার্কের কিয়দংশ।

১০ টি মন্তব্য : “বাংলাদেশ স্কয়ার”

  1. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    সায়েদ মামা, দারুন গর্বের একটা কাহিনি শোনালি।
    শান্তি অঙ্গনের সামনের মেঝেতে শান্তির প্রতীক সহ পুরো কমপ্লেক্সটার কনসেপ্টই চমৎকার। যাদের নিরলস প্রচেষ্টায় আমাদের জন্য গর্বের গল্পগুলো রচিত হচ্ছে তাদের সবাইকে :salute: :salute:

    অফটপিক: লাইবেরিয়ার একজন বিখ্যাত ফুটবলার ছিলোনা জর্জ উইয়াহ? পরে মনে হয় রাজনীতিতে নেমে পড়েন।এখনকার প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন স্যারলিফকের কাছেই না পরাজিত হয়েছিলো উইয়াহ?


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

  2. আরে এইটার ডিজাইনার ব্রিঃ জেঃ জিয়া (এখন মেঃ জেঃ জিয়া), এই মুহুর্তে পাংগা লাগাইতে গ্যাছে আহসানের সিলেটে। এর লাইগ্যা আহসান ব্লগে নাই।

    খবরের খবর হইতেছে উনি মির্জাপুর এর এক্স-ক্যাডেট। আমাগো কেরু ফ্যামিলির।