বন্য’র এই লেখাটি যেদিন পড়েছিলাম সেদিন অকারনেই মন বিষন্ন হয়ে গিয়েছিল। আজ এতগুলো বছর পার করে এসে আবারও অকারনেই বিষন্ন হয়ে আছে মন। হতচ্ছাড়া মন, নিজের কথাই নিজে শুনতে চায় না। কলেজ জীবন শেষ করে সবাই সেই কবেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি। কর্মক্ষেত্র, পড়াশোনা জ়ীবনযুদ্ধের তাগিদে সবাই ছুটে চলেছে যার যার পথে। কিন্তু ৫১ একর জমিতে ৬ বছরে ৫০ টি জীবন যে বাঁধনে বাঁধা পড়েছে, তা যে কখনও ছিড়বে না সেটা কেউ মুখ ফুটে না বললেও সবাই উপলদ্ধি করি ।
আজ জুনা’দা তার ফেসবুকে দারুন একটা স্ট্যাটাস দিলেন দেখলাম ,
“আমার কাছে বন্ধু দিবস একটাই-৩০ এপ্রিল (কলেজে যাবার দিন)। অন্য কোন বন্ধু দিবস মানি না”
কয়টা মানুষ আছে এই পৃথিবীতে যারা বুক ফুলিয়ে এই কথা বলতে পারবে ?
আমিও একটা দিয়েছিলাম,
“making a million frnd is not a miracle…miracle is making 1 frnd who’ll stand beside u,when millions are against u”
তখন সিলেট ক্যাডেট কলেজের আদনান একটা মন্তব্য করেছিল যে,
“আমার চিন্তা নাই, আমার ১ টা না , উনপঞ্চাশটা দোস্ত আছে !!”
এই মন্তব্যটা দেখে আমার মনে হচ্ছিল, বন্ধুত্বের এই প্রাপ্তিটাই আমাদের হয়ত অন্য অনেকের থেকে আলাদা করে দেখিয়ে দেয়, আমরা কতটা সৌভাগ্যবান।
আসলেই……এই ক্যাডেট কলেজে না পড়লে কি কখনও এইভাবে বলতে পারতাম ? কামরুল ভাই কি এভাবে তার রুমমেট বা ক্লাসমেটদের নিয়ে লিখতেন ? কলেজের স্মৃতিতে আমরা যতটা না কাতর হই , তার চেয়ে বেশী কাতর হই সেই মুখগুলোর জন্য, যাদের জন্য ৬ টা বছরের একটি একটি দিন আমাদের স্মৃতির ডায়েরীতে বাঁধা পড়েছে জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনগুলো হিসেবে।
বন্ধুত্বের সংজ্ঞা আমি শিখেছি ক্যাডেট কলেজ থেকেই, আর এটাও শিখেছি যে এই নির্ভুল সংজ্ঞাটা দিয়ে শুধু মাত্র গুটিকয়েকটি মানুষকেই সংজ্ঞায়িত করা যায়। এবং আমি সত্যিই তৃপ্ত। এর থেকে বেশী কিছু আমার পাবার নেই, এইটুকু পাবার অধিকারই আমার কাছে অনেক অনেক বেশী মনে হয়।
আজও যে কোন আড্ডায়, যে কোন গল্পে সব গিয়ে কিভাবে কিভাবে যেন সেই ৫১ একর আর তার মাঝে ৫০ টি প্রানের উচ্ছলতার কাহিনীতে গিয়েই শেষ হয়, তারপর হয়ত থেমে থেমে দীর্ঘশ্বাস পড়ে…. কিন্তু এই দীর্ঘশ্বাস প্রাপ্তির, এই দীর্ঘশ্বাস পূর্নতার।
আজ বিশ্ব বন্ধু দিবসে সবাই সবাইকে এস.এম.এস, ফেসবুক বিভিন্ন মাধ্যমে বন্ধুত্বের অভিনন্দন জানাচ্ছে, আমারও অনেক মানুষের অভিনন্দন পাওয়া হয়ে গেছে, পেয়েছি মেসেজ, পেয়েছি ফোন, কিন্তু প্রতিবারই শুধু এটাই ভেবেছি……..
“আমার জন্য তো বন্ধু দিবস ছিল সেই ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সালে ক্যাডেট কলেজের সীমাবদ্ধ গন্ডীর মধ্যে পার করা ৬ টি বছরের প্রতিটি দিন, প্রতিটি রাত। ”
কারন তোরা ছিলি প্রতিটা মুহুর্তে আমার পাশে, ছায়ার মত। আজ হয়ত তোরা পাশে নেই, কিন্তু তোদের ছায়া রয়ে গেছে। আর এই ছায়াই রয়ে যাবে চিরকাল, যখন হয়ত তোদের কে কাছে পাব না, সেই ৬ টি বছরে যেমন পেতাম….এই ছায়াই থেকে যাবে যখন সুর্যটাও ডুবে যাবে, সব আলো নিভে যাবে। এটাই তো জীবনের সবচেয়ে সেরা প্রাপ্তি, যখন আর সব জায়গা থেকে ফিরে আসতে হবে, তখন জানব যে এটুকু ছায়া এখনও অবশিষ্ট আছে………তোরা তোরাই……ছিলি, আছিস এবং থাকবি……..
বেশ আবেগ ঘন লেখা।
একটু ডিফআরেন্ট এঙ্গেল থেকে বলি। আমার কাছে মনে হয় কলেজের সেই ৯৫ একর জায়গার প্রই যে ভালোবাসা কিংবা তার সাথে আমার ব্যাচের বাকিদের প্রতি ভালো লাগা তার চেয়ে বেশি ভালো লাগা অন্য এক জায়গায় আছে...। সেটা হলো সময়ের জন্য ভালো লাগা।আমার ভালো লাগার বন্ধুগুলো সেই ৬ বছরে দেখে আসা সেই সময়ের "তারা"। সময়ের সাথে বদলে যাওয়া বন্ধুটিকে আমি কতটুকু ভালো বাসি এই প্রশ্নের উওর কি আমরা জানি?
@ লেখক, ডোন্ট টেক ইট আদারওয়াইজ। আমার কাছে মনে হয় মানুষ কোন জায়গার গন্য কাঁদে না কোন স্থানের জন্য কাণনদে না কাঁদে সময়ের জন্য.......। তারপরেও আমি অফটপিক নলে ফেললাম কিনা বুঝলাম না। তবে বন্ধু বললে আমার চোখে সবার আগেই ক্যাডেট কলেজের কাছের মানুষগুলোর কথাই চোখে ভাসে ..।
কথা সত্যি।
সত্যি মিথ্যা জানি না ভাই,
লেখাটা লিখেছিলাম ২০০৫ এ ফেলে আসা সেই বন্ধুদের নিয়ে.......তাদের নিয়ে ভাবনাটা আজও বদলায় নি, তারা বদলে যাক বা না যাক।
পাঁচ তারা।
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
থেঙ্কু 🙂
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
:hatsoff:
🙂
ওয়াক্কা ওয়াক্কা :grr:
Awesome... just awsome.... :boss: :boss: :hatsoff: :hatsoff:
ধইন্যা আর ভালবাসা 😡
:clap: :clap: :clap:
দোস্ত মনের ভাব আরো জমাট হয়ে গেলো রে এখন :(( পাচ্ছে।
আমরা কলেজ থেকে আসার দিন কেঁদেছিলাম।তখন বুঝেছিলাম যে এই কান্না কলেজের বিল্ডিং কিংবা স্যার ম্যাডামদের জন্য না বা কলেজে আর আসবোনা সেজন্যও না...শুধু সেই প্রাণের মানুষগুলার জন্য ছিলো সে কান্না যাদের সময়ে অসময়ে ইচ্ছা হলেই আর দেখতে পারবনা।
:(( :hug: :((
আবার ফিরে যেতে চাই :((
সিস্টেম পাইলে আমারেও কইস 🙁
হুম....এই কথা আসলেই বলার চেয়ে বেশি বোঝার ব্যাপার।
ভালো লিখছ।
ধন্যবাদ ভাই....আসলেই, এটা শুধু বোঝাই যায়
জয়তু ক্যাডেটস :salute:
বেশ ক'বার পোষ্টটা পড়েছি। মন্তব্য পাইনি। বসে বসে ফেসবুকে আমাদের ইনটেকের গ্রুপ থেকে পুরানো ছবি গুলো দেখলাম খানিকক্ষণ। আসলে কিছু কিছু স্মৃতি বোধহয় বেঁচে থাকাটাকে আরো সতেজ, উপভোগ্য করে তোলে। এটা তেমনই কিছু।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
হুমমমম
রেজুরে মনটাই ভালো করে দিলি........ 🙂
আপনি তো ভাই অনেক ভাগ্যবান...... 🙂
আপনার মত বন্ধু হইতে পারাটা অনেক কঠিন :boss:
ব্যাপক হইছে দোস্ত। এত সুন্দর কইরা কথাগুলা লিখস ক্যামনে রে?
রঞ্জনা আমি আর আসবো না...
এক্কেবারে সত্যি কথা 🙁 :((
দারুন লিখেছিস... :thumbup:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
থেঙ্কু দাদা 😀
অসাধারণ। দারুণ আবেগ পুরো লেখা জুড়েই।
আসলে এমন এক্টা বয়স থেকে ক্যাডেট কলেজে আমরা বন্ধু হই যখন স্বার্থের চিন্তা ছিলোনা, জীবনের প্যাচ ছিলো না। ছিলো শুধু এিন্ট পার্টি কলেজ প্রশাসন। তাতে সুবিধাই হয়। বন্ধুত্বটা জমাট বাঁধে আরো দ্রুত, হয়ও একদম সলিড।
লেখার জন্য ফাইভইস্টার :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
অনেক ধইন্যা......
আমি নিজেও ধন্য 😀
ক্যাডেটকলেজের বন্ধুত্ব নিয়ে আমার আবেগটাকেই যেন প্রকাশ করে দিলেন ভাইয়া । তপুর বন্ধু গানটা শোনার সময় শুধু মনে হয় গানটা আমাদের জন্যই ।যখন এফ এম এ গানটা হয় ,তখন আমি আমার টেবিলমেটকে মেসেজ দেই ,আবার আগে শুনলে সে দেয় ।দুজন বাংলাদেশের দু জায়গায় থেকে এক গান শুনি আর ক্যাডেট কলেজের বন্ধুত্বটা নতুন করে উপলব্ধি করি ।
এই কারনেই সিসিবি তে ঢুকতে ইচ্ছা হয় না।ইমোশনাল কইরা দেয় এই জাতীয় পোষ্ট...বালা হইছে।
সিম্পলি অসাধারণ :clap: :clap: :clap:
ভাল অইচে...... ভাই আপনি তো জটিল লিখেন। এতদিন পাশে থাইকা ও বুজলাম না। :boss: :boss: :boss:
proud to be an ex PCC.............
হুমম :gulli2: