ঢাকার বন্ধুর ফোন এল।
– কিরে, তুই নাকি ইউনুসের জন্যে ‘ফাইট’ করছিস।
– ঠিক ইউনুসের জন্যে না। আমার জন্যে।
অপর দিক থেকে খানিকক্ষন চুপচাপ।
– তাহলে ঠিক আছে।
– ঢাকার লোকের চিন্তাধারা কোন দিকে?
– সবাই আছে যায় যার তালে। এদিকে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলেছে প্রতিদিন। জানিনা কোন দিকে যাচ্ছে।
– তোর তো কোন অসুবিধা নেই। বাবার দেওয়া ধানমন্ডির এক বিঘা জমির উপর বিরাট এপ্যার্টমেন্ট কমপ্লেক্স করেছিস।
– এখন নেই, তবে ভবিষ্যতে কি হয় কে জানে।
– চিন্তা করিস না, এমনিতেই বেশী দিন বাঁচবি না।
– তা ঠিক।
ফোন রেখে চিন্তা করলাম – আমি কি সত্যিই ইউনুসের জন্যে প্রতিবাদ করছি, না হঠাৎ করে মুখ থেকে যেটা বেড়িয়ে এসেছে সেটাই ঠিক – নিজের জন্যেই এই প্রতিবাদ?
ফিরে গেলাম ২০ বছর আগের এক দিনে। বাসে করে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে সিডনী যাচ্ছি। ৭০০ কিলোমিটার দূরত্ব। যদিও আমার প্লেনের রির্টান ফ্লাইট ছিল মেলবোর্ন থেকে সিডনী হয়ে ঢাকা। আমার ওখানকার বন্ধু, যার বাড়ীতে উঠেছিলাম, সেই প্রফেসর বললো – “তুমি তো সব সময় নতুন দেশ আর নতুন মানুষ দেখতে পছন্দ কর, তাই প্লেনের বদলে বরং বাসেই যাও।” তাই করলাম। প্রায় ৮ ঘন্টার জার্নি। পাশের সীটের মহিলা কিছুক্ষন পরেই আমার সাথে আলাপ জুড়ে দিল। রাস্তার পাশের বিভিন্ন জিনিস কোনটা কি সেটা চিনিয়ে দিতে লাগলো। সে আমাকে জানালো এক ইন্ডিয়ান ছেলের সাথে তার প্রেম এবং কয়েক মাসের মধ্যে বিয়ে করতে যাচ্ছে তাকে। বুঝলাম আমার চেহারা দেখে সে অনুমান করে নিয়েছে যে আমিও ইন্ডিয়ান। আগের রাতের কথা মনে পড়ল। আমার এক অস্ট্রেলিয়ান বন্ধুর বাড়ীতে রাতে খেতে গিয়েছিলাম। তার স্ত্রী ও স্কুলে পড়া মেয়ের সাথে পরিচয় করে দেবার সময় আমার বন্ধু তাদেরকে জানালো যে আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। কারও চোখে তেমন অতিরিক্ত আগ্রহ দেখলাম না। পরে মেয়েটাকে জিজ্ঞাসা করলাম – “তুমি কি বাংলাদেশের নাম শুনেছে?”
মাথা নেড়ে অম্লান বদনে জানালো আগে কখনো শোনেনি বাংলাদেশের নাম। আসলে শুনবেই বা কেন? কিই বা অবদান আছে পৃথিবীতে বাংলাদেশের? আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধের আগে মেয়েটা জন্মালে হয়তো বা শোনার একটা কারন থাকতে পারতো। কিন্তু ২০ বছর আগে তো জন্ম হয়নি তার। আমি নিজেই কি এখনো জানি কোথায় বেলিজ বা বেনিন, অথবা কোথায় বা ডোমিনিকা বা কিরিবাতি? এগুলি সবই স্বাধীন দেশ।
তাই আমার বাস যাত্রী সঙ্গিনী যখন প্রশ্ন করলো – “তুমি ভারতের কোন দিকে জন্মেছো?”
বললাম – “পূর্বে, বাংলাদেশের যশোর শহরে।”
সে হয়তো ধরে নিলো বাংলাদেশ ভারতের কোন একটি রাষ্ট্র। আর কিছু জানতে চাইল না সে। অবশ্য এটাও ঠিক যে আমি যখন জন্মেছি তখন যশোর ভারতেরই অংশ ছিল। পরে যখন আমরা পাকিস্তানী হলাম এবং ক্যাডেট কলেজে পড়তাম তখন আমাদেরকে শেখানো হতো এক জন পাকিস্তানী সৈনিক দুই জন ভারতীয়ের সৈনিকের সমান এবং সেটা বিশ্বাস করতে শিখেছিলাম।
অবচেতন মনে এটা গেঁথে গিয়েছিল। কেউ যদি আমাকে ইন্ডিয়ান মনে করতো তখন বেশ ‘রিয়্যাক্ট’ করতাম। মনে আছে একবার সিঙ্গাপুরে এক সেমিনারে যোগ দিতে গেছি। এশিয়া-প্যাসিফিকের বিভিন্ন দেশের লোকেরা এসেছে। আমি বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি। দুপুরের ব্রেকে কয়েক জন মিলে এক সাথে খেতে যাচ্ছি। লিফটে করে নীচে নামার সময় কোরীয় প্রতিনিধি আমাকে প্রশ্ন করলো – “সাইফ, তোমাদের দেশের খাবার কেমন? ইন্ডিয়ান খাবারের মত কি?”
– তা বলতে পারো কিছু মিল আছে, যেমন তোমাদের খাবারের সাথে জাপানী খাবারের মিল।
চুপসে গেল কোরীয় প্রতিনিধি। এক সময় জাপান দখল করেছিল কোরিয়াকে। কোরীয় ইতিহাসে এটা তাদের গ্লানির ইতিহাস। জাপানীদেরকে তাই খুব সহজভাবে দেখেনা তারা। আমি যে ইচ্ছা করে তাকে এই খোঁচাটা দিলাম তা বুঝতে বাকী রইল না অন্য কারো।
থাই প্রতিনিধি মহিলা আমার বিশেষ পরিচিত ছিল। সে তার স্বামী ও সন্তানসহ ঢাকায় এসে আমাদের বাড়ীতে থেকেছে এবং আমার পরিবারের সাথে যশোর, খুলনা, সুন্দরবন, ইত্যাদি বেড়িয়েছে। এক সময় সে আমাকে এক পাশে টেনে নিয়ে বললোঃ
– তুমি যে এতটা ‘রিয়াক্ট’ করবে তার কথায় সেটা কিন্তু আমি আশা করিনি। সেতো তোমাকে আঘাত করার জন্যে বলেনি। সরল মনে তোমারদের দেশের খাবার সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। জানই তো বাংলাদেশের ব্যাপারে বাইরের লোকে খুব কম জানে।
বুঝলাম আমার এভাবে ‘রিয়াক্ট’ করা আসলেই উচিৎ হয়নি।
– সত্যি ওভাবে ‘রিয়াক্ট’ করা আমার উচিৎ হয়নি। আসলে কেউ আমাকে ইন্ডিয়ান মনে করলে আমার ভাল লাগে না।
– কিন্তু তুমি কি ‘রেস’ হিসাবে ‘ইন্ডিয়ান’ নও? তোমার জাতিয়তা বাংলাদেশী, কিন্তু ‘এথনিক্যালি’ তো তুমি ‘ইন্ডিয়ান’। যেমন ধরো আমার কথা। আমি জন্মগত ভাবে থাই এবং আমি আমার দেশ ও রাজাকে ভীষন ভালবাসি। কিন্তু আমার রেস হচ্ছে ‘চাইনীজ’।
চিন্তায় পরলাম – এ ভাবেতো আমি চিন্তা করে দেখিনি।
ছোট বেলায় নিজেকে পাকিস্তানী মনে করে ভীষন গর্ব করতে শিখেছিলাম। ‘৬৫ সালে যখন যুদ্ধের মধ্যে আমরা কয়েকজন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে যেয়ে ‘আই এস এস বি’ পরীক্ষা দিচ্ছি তখন জানলাম লেখার টেষ্টে আমাদের মধ্যে আমিই নাকি সব চাইতে বেশী নম্বর পেয়েছি। ইন্টারভিউ-র সময় বোর্ডের মেম্বার এক জন নেভাল কমোডর আমাকে প্রশ্ন করলেনঃ – “ধরো যদি আমরা তোমাকে অফিসার হিসাবে না নেই, কি করবে তুমি?”
একটুও চিন্তা না করে বললাম – “স্যার, এখন আমার দেশ যুদ্ধে লিপ্ত। যদি অফিসার হিসাবে যোগ দিতে না পারি, তাহলে আমি একজন সাধারণ জওয়ান হিসাবে যোগ দিতে চাই।”
এ কথাগুলি কিন্তু ঐ সময় আমি সত্যি বিশ্বাস করে বলেছিলাম। অথচ সামান্য ৫/৬ বছরে কতটা বদলে গেল। প্রচন্ড ঘৃনা করতে শিখলাম পাকিদেরকে এবং তাদের সংশ্লিষ্ট সব কিছুকে।
যুদ্ধকালীন সময়ে কোন মতে গ্রাম থেকে জীবন হাতে নিয়ে পালিয়ে ঢাকাতে তখন আমার এক বড় বোনের বাসায় উঠেছি। একদিন দেখি আমার গানের ভক্ত ছোট ভাগ্নি রেডিওতে পাকিস্তানের মেহেদি হাসানের গান শুনছে। তাকে বললাম এখনি এই গান বন্ধ করো। সে অবাক হলো।
– কেন মামা? মেহেদি হাসানের গানতো খুব ভাল।
– যদি বন্ধ না করো তাহলে আমি এখনই তোমাদের বাড়ি থেকে চলে যাব।
– মামা গানটা শেষ করি তার পরে বন্ধ করবো।
আমি আর কথা না বলে বের হয়ে গেলাম সেই বাড়ী থেকে আমার বোনের শত অনুরোধ উপেক্ষা করে।
আশি শতকের মাঝামাঝি সময়ের এক ঘটনা। বিখ্যাত ‘গান্ধী’ সিনেমাটা দেখার জন্যে লন্ডনের সোহো এলাকার একটা সিনেমা হলে গেছি। হাউস-ফুল। তবে দু’ঘন্টা পরের শোতে টিকেট পেলাম। সময় কাটাবার জন্যে হেটে হেটে সোহোতে ঘুরতে থাকলাম। সোহো তখন লন্ডনের ‘রেড লাইট ডিস্ট্রিক্ট’ হিসাবে পরিচিত। আমাকে একাকী ঘুরতে দেখে এক সাহেব দালাল আমার পিছু ধরলো। আমি যেখানে যাই, সেও আমার পিছু পিছু ঘু্রতে থাকলো। প্রথমে ভদ্রভাবে আমার সাথে আলাপ করছিল এবং আমিও যেমন সাধারনত সবার সাথে সুন্দর ভাবে আলাপ করি তাই করছিলাম। তার প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলাম যে আমার দেশ বাংলাদেশ। কিছুটা আলাপ করার পর সে জিজ্ঞাসা করলো আমার কোন মেয়ের দরকার আছে কিনা। এসব ব্যাপারে আমি একটু বোকা, না হলে প্রথমেই বুঝে নেওয়া উচিৎ ছিল লোকটার উদ্দেশ্য কি। কোন মেয়ের দরকার নেই বলাতেও দেখি লোকটা আমার পিছু ছাড়ছে না। আমার সাথে সাথে ঘুরতে লাগলো। কি ভাবে তাকে ভদ্র ভাবে আমার সঙ্গ ছাড়তে বলা যায় ঠিক করতে না পেরে ভাবলাম বাঙ্গালী স্টাইল ধরি। কোন কিছু কিনতে না চাইলেও যখন দোকানীর পিড়াপিড়িতে আমরা খুব কম একটা দাম বলি যাতে দোকানী আগ্রহ হারায়, তাই করার চেষ্টা করলাম।
– কত লাগবে?
– একশো পাউন্ড।
– পাঁচ পাউন্ডে পাওয়া যাবে না?
প্রচন্ড ক্ষেপে যেয়ে লোকটা আমাকে গালাগালি শুরু করে দিল।
– ইউ ব্লাডি ‘প্যাকি’… ইত্যাদি।
অন্য কিছুতে আপত্তি ছিল না, কিন্তু আমাকে ‘প্যাকি’ বলাতে আপত্তি ছিল আমার। আমি তাকে তখনো বোঝাতে চেষ্টা করলাম যে আমি ‘প্যাকি’ না, আমি বাংলাদেশী।
দেশপ্রেম কি এমনই অন্ধ ভাবাবেগে চলে?
অবশ্য স্বাধীনতার পর এক এক করে যা হচ্ছিল দেশে তাতে দেশপ্রেম বাড়াতে পারছিলাম না। মুজিবের অবর্তমানে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেবার পরে তাজউদ্দিনকে দূরে সড়িয়ে দিলেন মুজিব। তার তোশামোদকারীদের কাছে টেনে নিলেন। নিজেকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বদলে সর্বক্ষমতাধারী প্রধান মন্ত্রীর পদে বসালেন। স্বাধীনদেশে দুঃর্ভিকে শুধু সামান্য ভাতের অভাবে লোকজন রাস্তা-ঘাটে এসে ‘স্বাধীন ভাবে মরতে’ থাকলো। তার নিজের দলের বাইরে তখন অন্য তেমন কোন বিরোধী দল ছিল না। তবু তিনি সব দল বাতিল করে দিয়ে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী কৃষক শ্রমিক লীগ’ (বাকশাল) গঠন করলেন এবং সেই দলে সবাইকে যোগ দেবার জন্যে আদেশ দিলেন। তখন অবশ্য আমি রাগ দেখাইনি ‘আওয়ামী’ শব্দটা বাংলা শব্দ না বলে।
‘৭৫-এ তার এবং পরিবারের নৃশংস হত্যাকান্ডের পর তার সেই কাছের লোকেরাই ‘ঐতাহাসিক কারনে’ সবাই আবার শপথ নিয়ে নতুন সরকারে যোগ দিলেন। সেদিন কোন প্রতিবাদ মিছিল দূরে থাক, নীরবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাউকে কাঁদতে দেখিনি। হত্যাকারীদের পুরস্কারিত করে বিভিন্ন দেশে পাঠানো হল রাষ্ট্রদূত করে। অন্যায় ভাবে আইন সংশোধন করে হত্যাকারীদের আইনের উর্দ্ধে তুলে দেওয়া হল।
মুজিব যে পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন সেই পথে একের পর একজন এলেন এবং গেলেন। গরীব আগের মতই গরীব রয়ে গেল। ঐ সময় বাইরের যে দেশেই গেছি গভীর ভাবে খেয়াল করলে দেখেছি সবাই যেন আমাদেরকে কেমন একটু করুন চোখে দেখছে। ইন্দোনেশিয়া, মালায়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনস, জাপান, কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা এমনকি মায়ানমারেও দেখলাম উন্নতির জোয়ার এসেছে।
ঐ সময়ের এক ঘটনা মনে আছে। আমি এক ডাচ কোম্পানীর প্রতিনিধির সাথে বগুড়া গেছি গভীর নলকূপ সংক্রান্ত এক প্রজেক্টের কাজে। আমরা সার্কেট হাঊজে উঠেছিলাম। খাবার জন্যে কাছের এক সাধারন হোটেলে যেয়ে খেতে খেতে গল্প করছি। আমার স্বভাবমত বলে চলেছি বাংলাদেশের অতীব সম্ভাবনার কথা। দরকার শুধু ইনভেস্টমেন্টের জন্যে ক্যাপিটাল। বললাম – এই জন্যেই আমাদের এত বেশী দরকার বিদেশী সাহায্যের। চুপচাপ শুনে গেলেন আমার কথা। তারপর বললেনঃ
– তোমাদের দেশের মত অবস্থা শুরুতে প্রায় সব দেশেই ছিল। যতক্ষণ না তোমরা নিজে থেকে তোমাদের ভাগ্য উন্নয়নের কাজে হাত না দেবে, ততক্ষন উন্নতি আসবে না। তোমরা শুরু করো, দেখবে বাইরের সাহায্যের হাত এগিয়ে আসবে।
আমরা বন্ধ জালনার পাশের এক টেবিলে বসে ছিলাম। হয়তো নিয়মিত পরিস্কার হয়নি, জালনাতে বেশ বড় একটা মাকড়শার জাল ছিল। সেদিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বললেন – “এটা পরিস্কার করতে নিশ্চয় বিদেশী সাহায্যের দরকার হয় না।”
তার এই কথাটা আমি কখনো ভুলতে পারিনি। এই স্বনির্ভরতার কাজটিই প্রফেসর ইউনুস নিজের পকেটের ২৭ ডলার দিয়ে শুরু করেছিলেন জোবরা গ্রামে। যার ফলে বিগত ৩৫ বছরে একে একে সাহায্যের অনেক হাত এগিয়ে এসেছে। বর্তমান পৃথিবীতে অনেক সন্মানীয় ও পূজনীয় ব্যক্তি তিনি এখন। একমাত্র দুর্ভাগা বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্য সব দেশে সন্মানের সাথে উচ্চারিত হয় তার নাম।
ইউনুসের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। এখনো পদ্ধতিগত উন্নতির অনেক কিছু করার আছে। আমার অনেক বন্ধু আছে যারা সকাল-বিকেল ইউনুস ও তার সৃষ্ট গ্রামীন ব্যাংকের ত্রুটি তুলে ধরে। এ ব্যাপারে অনেকে থিসিস লেখে, ‘পিএইচডি’ পাবার আশা করে। কিন্তু আমি নিজের অভিজ্ঞতায় জানি – নতুন একটা কিছু চিন্তা করা এবং তার থেকে নতুন কিছু করা অনেক কঠিন। এর চাইতে অন্যের করা কাজে খুত খুঁজে বের করা অনেক সহজ। তাই আমি তাদেরকে বলি – যখনি কোন ত্রুটি চোখে পড়ছে তখন কিভাবে সেগুলির উন্নতি করা যায় সেদিকে নজর দাও না কেন? আর যদি নিজে থেকে গরীবদের অবস্থা উন্নয়নের জন্যে কিছু করতে পার – কে বাধা দিছে তোমাকে?
বিলাতের প্রায় ৯০% ‘ইন্ডিয়ান রেস্তোরার’ মালিক বাংলাদেশী। কিন্তু ব্যাবসায়িক কারনে তারা নিজেদেরকে ‘ইন্ডিয়ান’ বলে পরিচয় দিতে বাধ্য হয়। তেমনি অনেক সময় কেউ আমাকে “তুমি কি ইন্ডিয়ান” বললে এক দুই বার বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করার পর যখন দেখেছি সে জিজ্ঞাসা করছে “কোথায় এটা? আফ্রিকাতে?”, তখন বরং মাথা নেড়ে তার ভুল ধারনাকে আর বদলাতে চেষ্টা করিনি।
কয়েক বছর আগের ঘটনা। আমেরিকাতে কয়েকজন স্থানীয় বন্ধু মিলে খেতে গেছি। কার কি খাবার পছন্দ এই নিয়ে কথা হছে।
এক জন জিজ্ঞাসা করলো – সাইফ, তোমার কি খাবার পছন্দ।
– খাবার নিয়ে আমি তেমন মাথা ঘামাই না। একটা হলেই হল।
– তা ঠিক। তোমাদের দেশে তো খাবারের অভাব আর দুর্ভিক্ষ প্রায় লেগে থাকে। একটা কিছু পাওয়াটাই তো অনেকের কাছে অনেক। ফলে তেমন বাছবিচার না করাটাই হয়তো তোমার অভ্যাস হয়ে গেছে।
প্রশ্নকারী যে আমাকে আঘাত করার জন্যে বলেছে, তা নয় – এই ছিল মোটামুটি বাংলাদেশ সম্পর্কে বাইরের ধারনা। আর এই ধারনা হবেও বা না কেন? বাংলাদেশ ছিল পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশ। জন সংখ্যার প্রায় অর্ধেক দরিদ্রসীমার নীচে বাস করে। যখনই কোন সাইক্লোন বা বন্যায় ভেসে যায় বাংলাদেশ, তখন এখানকার বিভিন্ন চ্যারিটি প্রতিষ্টান বাংলাদেশের দূর্গতদের জন্যে সাহায্যের আহবান জানায় সাধারনের মধ্যে। এই ছবিটাই লোকের মনে গেথে থাকে। ‘গুড উইল’ কালেকশন সেন্টারে ‘হেল্প বাংলাদেশ” লেখা ব্যানার ঝুলেছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে সামান্য যতটুকু তারা টিভি বা কাগজে পড়েছে তার থেকেই এই ধারনা গড়ে নিয়েছে তারা। ধারনাটা খুব একটা মিথ্যা ছিল না। ফলে আমি বাংলাদেশের বলাতে কেউ যদি আমার দিকে করুনার চোখে তাকাতো তাহলে তাকে দোষ দিতে পারিনা।
এর পর একটা বিরাট পরিবর্তন এলো প্রফেসর ইউনুসের নোবেল শান্তি পুরস্কার পাবার পর। অন্য সব বাংলাদেশীদের মত আমিও খুশী হলাম। ‘কাট এন্ড পেষ্ট’ করে এই খবর আমার সহকর্মী ও সুপাভাইজারকে পাঠালাম। আমেরিকাতে এ পর্যন্ত ৩০০-এর বেশী ব্যক্তি নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। এর মধ্যে শান্তিতে পেয়েছেন ২০ জনের বেশী। তাদের মধ্যে আছেন থিয়েডর রুজভেল্ট, উড্র উইলসন, মার্টিন লুথার কিং, জিমি কার্টার, ইত্যাদি। সেই কাতারে যুক্ত হলেন ‘আমাদের’ প্রফেসর ইউনুস। সহকর্মীরা শুভেচ্ছা জানালেন। এ যেন আমারই পাওয়া। গর্বে ভরে গেল মনটা।
থাইল্যান্ডের সেই বন্ধু ফোন করে শুভেচ্ছা জানালো, যেন পুরস্কারটা আমিই পেয়েছি। তার ছেলে নাকি মাকে বলেছে – “চল, আমরা আঙ্কেলকে কনগ্রাচুলেশন কার্ড পাঠাই। খুশীর ভাব দেখলাম তাদের কথায়। এশিয়ান হিসাবে যেন আমার গর্বের অংশিদার হতে চাইছে। যখন আমার কিছু ছিল না তখন আমিও তো বরীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের বাংলা ভাষার লেখা তার কবিতা ইংরেজীতে লিখে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বলে গর্ব করতাম। এই মুহূর্তে আমার মন বড় হয়ে গেছে এই খবরে। তাদেরকে বললাম – “এ সন্মানের ভাগিদার তো তোমরাও, কারন সমস্ত এশিয়ার জন্যে সম্মান নিয়ে এসেছেন তিনি।” শুনে খুশী হল তারা।
এর পর থেকে খেয়াল করে দেখতে থাকলাম লোকজন বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করলে বলছে ইউনুসের কথা। আমেরিকার টিভিতে তার অনেক ইন্টারভিউ দেখতে থাকলাম। পৃথিবীর গোটা ২০ দেশে শুরু হলো গ্রামীনের ধরনের ব্যাংক। অথচ সাদা-মাটা তার পোষাক পরিচ্ছদ। কথা বার্তায় মার্জিত। নিজেই স্বীকার করলেন কখনো ব্যাংকার হবার কথা চিন্তা করেননি।
কয়েক মাস আগের কথা। এক রেস্তোয়ার বসে এক বন্ধুর সাথে খাচ্ছি এমন সময় আমাকে দেখে পাশের টেবিল থেকে এক ভদ্রলোক উঠে এলেন। প্রশ্ন করলেনঃ
– তুমি কি প্যাটেল?
– প্যাটেল যদি তোমার কাছ থেকে টাকা পায়, আর তুমি যদি সেই টাকা ফেরত দেবার জন্যে প্যাটেলকে খুঁজছো, তা হলে আমার প্যাটেল হতে আপত্তি নেই।
হেসে ফেললো লোকটা। প্রশ্ন করে জানলাম সে বিভিন্ন স্থানে কি করে ব্যবসা থেকে আরও বেশী করে মুনফা করা যায় সেটার উপর লেকচার দিয়ে বেড়ায়। ‘মুনাফা’ একটা মূল্যবান শব্দ আমেরিকান কালচারে। কিছুক্ষন পরে জানতে চাইল কোথা থেকে এসেছি আমরা।
– আমরা বাংলাদেশের লোক। – গর্বের সাথে বললাম।
– ওহ, তোমরা প্রফেসর ইউনুসের দেশের লোক।
নতুন করে সন্মান দেখলাম তার চোখে। তার ধারনা বিশ্ব ধনী বিল গেইটস, ওয়ারেন বাফেট থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্ট ওবামা ও আরও অনেকে প্রফেসর ইউনুসের চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ। তার ধারনা আমেরিকা এবং বর্তমান পৃথিবীতে যে অর্থনৈতিক দূর্যোগের ঝড় বয়ে গেল, সেটা হয়তো হতো না যদি ইউনুসের ‘সোশ্যাল বিজনেস’-এর ভাবধারা কিছুটা অনুসরন করতো করপোরেট আমেরিকা।
বর্তমানে প্রফেসর ইউনুসকে নিয়ে যেসব কান্ড কারখানা চলেছে বাংলাদেশে সেটা আমার কাছে খুবই দুঃখজনক। ব্যাক্তিগত ভাবে ইউনুসকে আমি চিনিনা, জানিনা। ‘বুড়া’ হবার কারনে ‘তার চাইতেও বুড়া’ আর একজন তাকে ‘অন্যায় ভাবে’ চাকুরীচ্যুত করার চেষ্টা করছে, তা নিয়েও আমার বিশেষ মাথা ব্যাথা নেই। ‘অন্যায়’ বললাম এই জন্যে যে ‘প্রফেসর ইউনুস গ্রামীন ব্যাংকের একজন কর্মচারী’। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সোজাসুজি এক্তিয়ার থাকার কথা না কোন এক জন বিশেষ কর্মচারীর চাকুরীচ্যুতির ব্যাপারে। খুব বেশী হলে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রামীনের বোর্ডকে অর্ডার দিতে পারে তাদের কোন কর্মচারীর বয়েস সংক্রান্ত কোন আইনের খেলাপ হলে সেটা শোধরাবার জন্যে অথবা কেন শোধরানো হয়নি জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া এবং উপযুক্ত সময় দেওয়া সেই চিঠির উত্তর দেবার জন্যে।
অন্য ভাবে দেখলে বলতে হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক যখন বিগত ১০ বছর ঘুমিয়ে ছিল এবং বয়েস নিয়ে মাথা (মাথা আছে কিনা সেটা নিয়ে এখন আমার সন্দেহ হচ্ছে) ঘামায়নি, এখন এমনকি প্রয়োজন হলো যে আইন মানার জন্যে এই মায়া কান্না শুরু হয়েছে? দরকার হলে ঐ আইনের একটু পরিবর্তন করলেও বা ক্ষতি কি? এটা তো প্রথম না। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির বয়েস বাড়ানোর সময় কি করা হয়েছিল? এমনকি শুধু এক জন চিফ জাস্টিসের চাকরীতে ফিরে আসার সুবিধা করে দেবার জন্যে শাসনতন্ত্র সংশোধন করা হয়েছিল – সে উদাহরণ আছে বাংলাদেশে।
অথবা ‘কনফ্লিক্ট রিজোলিউশনের’ আরও অনেক পন্থা আছে। হাসিনা যদি একদিন প্রফেসর ইউনুস এবং মুহিত ভাইকে চা খেতে ডেকে আলাপ আলোচনা করে একটা সুন্দর সমঝোতাতে আসতেন তাহলে কি তিনি ছোট হয়ে যেতেন??
হার্ভাডের প্রফেসর হেনরী গেইট ও থানার হাবিলদারের মধ্যে যখন বাদ-বিবাদ হলো তখন ওবামা এই দুই জনকে হোয়াইট হাউসে ডেকে নিয়ে ঠান্ডা বিয়ার খাইয়ে ঠান্ডা করেছিলেন। হাসিনা পুত্র জয় নিশ্চয় ব্যাপারটা জানে। সে কি মাকে এরকম ভাল কিছু বুদ্ধি দিতে পারতো না? না হয় গরম চায়ের বদলে ঠান্ডা ঘোল পরিবেশন করা যেত।
গল্প শুনেছি ইউরোপের এক দেশে ভ্রমনের সময় হাসিনাকে যে রিসিভ করছিল সে উৎসাহের আতিশয্যে বলে ফেলেছিল – “আপনি প্রফেসর ইউনুসের দেশ থেকে এসেছেন, আমাদের শুভেচ্ছা গ্রহন করুন।” শুনে নাকি হাসিনার মুখ কালো হয়ে গিয়েছিল। আরও শুনেছি বিদেশের কোন পাবলিক সভাতে দেখা হলে ইউনুসের সালামের উত্তরে তিনি নাকি দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেছেন। জানিনা কতটা সত্যতা আছে এতে। আমার হাসিনা ভক্ত বন্ধুরা হয়তো এর প্রতিবাদ করবেন। বাদ প্রতিবাদে যাবার উদ্দেশ্য নয় আমার। আমি শুধু বোঝার চেষ্টা করছি যখন আমেরিকাতে নির্বাচনের আগে হিলারী ওবামার এত প্রতিপক্ষ ছিলেন, অথচ তাকেই সেক্রেটারী অফ স্টেট বানালেন ওবামা। বুশের আমলের ডিফেন্স সেক্রেটারী গেইটসকে একই পদে রেখে দিলেন। এতে তার লাভ হয়েছে না ক্ষতি? এর থেকে কি হাসিনার শেখার কিছু নেই?
এই মুহূর্তে ৫০ হাজারের বেশী বাংলাদেশী শ্রমিক সব কিছু হারিয়ে দুঃসহ জীবন কাটাচ্ছে লিবিয়াতে। যদি হাসিনা তার নির্বাচনের পর ইউনুসকে সাথে রাখতে পারতেন, তাহলে কি পারিবারিক বন্ধুত্বের কারনে হিলারীর সাহায্যে এই আটকে পড়া বাংলাদেশীদেরকে আমেরিকার সাহায্যে আরো একটু তাড়াতাড়ি দেশে ফেরত আনা যেত না? জাতির স্বার্থের চাইতে নিজের স্বার্থটা সব সময় বড় করে দেখতে হবে??
মিনেসোটা থেকে আমার বন্ধু পলের ফোন পেলাম।
– সাইফ, “হিংসা” মানে কি?
– এ শব্দ তুমি কোথা থেকে শিখলে?
– নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক আর্টিক্যাল থেকে।
লেখাটা আগেই আমার চোখে পড়েছে।
– তা হলে তো ওখানেই নিশ্চয় দেখেছো তার মানে।
– কি হচ্ছে তোমাদের দেশে?
– আমাকে আর লজ্জ্বা দিচ্ছ কেন।
– আই এম সো সরি, মাই ডিয়ার ফ্রেন্ড।
– আমারও খুব দুঃখ হচ্ছে। ভাবছি আইনত যখন আমি আমেরিকার নাগরিক, এখন থেকে সেই পরিচয় শুধু দেবো।
– আচ্ছা, এই দু’জনের মধ্যে ‘ইন্টেলেকচুয়াল লেভেল’ কি ভাবে তুলনা কর? তোমার দেশের ভাবমুর্তি যে কতটা নেমে এসেছে এই ঘটনায়, তা কি তোমাদের প্রধানমন্ত্রী বোঝার ক্ষমতা রাখে? ‘ন্যাশন্যাল প্রাইড’ শব্দটার মানে কি তোমাদের প্রধানমন্ত্রী জানে না? এখন আমি বুঝি কেন তোমার মত লোকেরা দেশ ছেড়ে চলে এসেছে।
আমার বহু দিনের বন্ধু পলের সাথে আর তখন কথা বলতে ইচ্ছা করলো না।
পরে ঢাকাতে এক বন্ধুকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করলামঃ
– আচ্ছা বলতো, ইউনুস আর হাসিনা মধ্যে তুলনা করবি কি ভাবে?
– তুলনা হয় না।
– কেন?
– আরে কোথায় হিমালয় পর্বত আর কোথায় ছাগলে ঘাস খায়।
– এটা কি রকম তুলনা হল? একদিকে পর্বত আর অন্য দিকে ছাগল?
– তাই তো বলেছিলাম, তুলনা হয় না।
এদিকে ছাগলে তো সব ঘাস খেয়ে ফেললো…
আমিও এত শত অর্থনীতি বুঝি না, কিন্তু
এটা বোঝার জন্য কোন অতিমানব হওয়ার দরকার পড়ে না।
আমরা ছাগল এর হাত থেকে সবুজ বাংলাদেশ এর মুক্তি চাই .......... 🙁 (সম্পাদিত)
Proud to be a Cadet,
Proud to be a Faujian.
দেশের সব সবুজই তো ছাগল খেয়ে ফেলল......
🙁
এটা আমার কাছে শতাব্দীর সেরা জোক...
তবে ডঃ ইউনূসকে নিয়ে কিছু বলার যোগ্যতা রাখি না, কারণ ওনার পদ্ধতি সম্বন্ধে আমার কোন ধারণ নেই, যদিও ধারণা পাবার বেশ ইচ্ছে আছে।
এ লেখাটা রাজনৈতিক ভাবে কাউকে ঘায়েল করার জন্যে লেখা না। শুধু মনের দুঃখটা অন্যদের সাথে শেয়ার করার জন্যে লেখা। কেউ এতে আঘাত পেলে বা দুঃখ অনুভব করলে আমি দুঃখিত। লেখার সবটাই নিজের অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া।
ধন্যবাদ।
একটা মজার কথা মনে পড়ল ভাইয়া, কোন এক সেনাপ্রধান তার নিজের মেয়েকে সেনাবাহিনীতে ঢুকানোর জন্য মেয়েদের মিনিমাম হাইট রিকোয়ারমেন্ট কমিয়ে দিয়েছিলেন, কারন তার মেয়ে খাটো ছিল একটু। সেই বছরের পরে হাইট রিকোয়ারমেন্ট আবার বাড়িয়ে ফেলা হয়।
সেনাবাহিনীর ছেলেরা এটা কনফার্ম বলতে পারবে হয়ত।
তবে আমি কোনভাবেই আমার নিজের দেশ একেবারে ছাড়তে রাজি নই, দেখা যাক কতদিন এটা ধরে রাখতে পারি।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
অহনতরি যখন দেশ ছাড়তে পারস নাই, তয় তুই আজীবন এই দেশেই থাকবি। বান্ধা পইড়া গেছস! :))
এটা ঠিক বললি না, দেশ ছাড়তে চাইলে দুই বছরের একটা প্রিপারেশন নিয়ে যেকোন সময় যেকেউ একটু চেস্টা করলেই ছাড়তে পারে, আর পরিবারের ভিতরে যেহেতু গ্রীন কার্ডের অবারিত সরবরাহ আছে, আর কিছু না হোক ফ্যামিলি কোটা তো বরাদ্দ হয়ে আছেই, অন্য কোন যোগ্যতা ছাড়াই।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
আমার কথাটা ধরতে পারস নাই। বান্ধা পইড়া গেছস। চেষ্টা করলে সবই হয়। তাও তোর চেষ্টা করতে ইচ্ছা করবে না।
উপ্স সরি দোস্ত, আজাইরা ঝাড়ি দেয়ার জন্য, 🙁
আসলে বিদেশ যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে এত প্রশ্নের সম্মুখীন হই পারিবারিক ভাবে, তাই এই ধরনের কিছু উঠলেই রফিকের মত ব্যাট চালাই দেই, আন্ধা-ধুন্ধা, নেভার মাইন্ড 😀
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ফয়েজ,
ইন্টারেস্টিং তথ্য।
কিঞ্চিৎ ভিন্ন মত। মনে কষ্ট নিয়েন না ভাইয়া।
তার বর্তমান কালের অসম্মানের সুচনা বাংলাদেশে নয়, নরওয়েতে। বাংলাদেশেও তার নাম সম্মানের সাথে উচ্চারিত হয়। ভিন্ন মনা সবখানেই আছে।
এ জন্যই তো কেউ কেউ চেষ্টা করে যাচ্ছে, যাতে দরিদ্র লোকেরা ক্ষুদ্র ঋণের গ্রাসে নিজেদের সব কিছু না হারায়। যেখানে
সেখানে এই কাজ কি গরীবদের অবস্থা উন্নয়নে কিছু করতে পারার মধ্যে পড়বে না?
সম্পূর্ণ একমত। এটি কর্পোরেট আমেরিকার জন্য লাগসই। দরিদ্র বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতি, অন্ততঃ এ পর্যন্ত তাই সাব্যস্ত।
আমার ভুল হতে পারে। আমিতো জানি বাংলাদেশের সকল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বাংলাদেশ ব্যাংক আইনের আওতায় যেকোন পরিচালনা পর্ষদকে ভেঙ্গে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারে। শুধু যেকোন ব্যাংক নয়, বরং যেকোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের এইরূপ একছত্র আধিপত্ত আছে বলেই জানতাম। আর এর দ্বারাই বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার উপর জনগণের আস্থা রক্ষা করে আসছে।
অত্যন্ত বাজে কাজ, বাংলাদেশের জন্য বাজে উদাহরণ। আর কত দিন? (মাথা আছে কিনা, এটা নিয়ে আমারও সন্দেহ আছে)
এক সমান। অন্ততঃ পার্থক্য কম।
নঈম, বন্ধু আমার, কেমন আছো তুমি?
মেনে নিলাম ডঃ ইউনুসের কাজে অনেক অনেক সমস্যা আছে, কিন্তু এটা কি আরও স্ট্র্যাটেজিক্যালি ডিল করা যেত না? সরকার কি গ্রামীন ব্যাংকের ব্যাপারে আসলেই আন্তরিক? নাকি ব্যক্তি ইউনুস কে হ্যারাস করার জন্য এইসব কাজ করছে? শেখ পরিবার ছাড়াও অন্য কেউ বিখ্যাত হচ্ছে বাংলাদেশে এটা কি সহ্য হচ্ছে না তাদের? বিশ্বের কাছে এখন আর মুজিবের বাংলাদেশ নেই, বাংলাদেশ হয়ে গেছে ইউনুসের বাংলাদেশ, এই ভীতি কি কাজ করছে না? তোর কাছে প্রশ্ন রাখলাম। বিবেক কে পরিস্কার করে সোজা ভাষায় উত্তর দিয়ে যাবি এখানে।
বর্তমান বিশ্বে কর্পোরেট কালচারকে বাদদিয়ে তুই কিছু করার চিন্তা করছিস নাকি? আমাকে বলে দিস কবে তুই গ্রামে গিয়ে কাজ করবি, তোর অতি প্রিয় প্রান গ্রুপের কর্পোরেট চাকুরী ছেড়ে দিয়ে। আমি সেদিন পার্টি দিব আমাদের সিসিবি এবং ক্যাডেট গ্রুপে। নাকি আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসে ফোন করেই তোর মহান দায়িত্ব শেষ বলে মনে করবি।
দরিদ্র্যতা নিয়ে কেউ কথা বললেই কেমন জানি সন্দেহ লাগে, মনে হয় সে নির্ঘাৎ অস্কার কিংবা নোবেল পাবার জন্য কাজ করছে। তোর দরিদ্রতা নিয়ে কথা বলাও কেমন যেন সন্দেহজনক লাগছে। কোন প্ল্যান থাকলে বলে ফেল, আমরা আর কিছু না হোক ফেসবুকে শেয়ার করি। পুরুস্কার কিছু জুটলে গর্ব করতে পারবো তোর বন্ধু হিসেবে। দয়া করে শুধু শুধু "ব্লগ ফাটানি" বন্ধ কর।
একটা জিনিস কি, "অন্যায়" কে সবসময় "ন্যায়" দিয়ে প্রতিরোধ করতে হয়, "অন্যায়" কে "অন্যায়" দিয়ে প্রতিরোধ করাও আরেকটা অন্যায়। যা গ্রামীনে হচ্ছে। বিচক্ষনতা এমন এক জিনিস, যা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না, পারিবারিক ভাবে অর্জন করা যায় না। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী বা পুরুস্কারের সংগে এর কোন সম্পর্ক নেই।
শুধু তর্কের খাতিরে তোর এই ফ্যাচফ্যাচানি একদম ভালো লাগল না।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
=)) তোর রাগ দেখে :pira: এতো রাগের কি আছে, বল? যারে লিখলাম `মনে কষ্ট নিয়েন না' উনি কিছু লিখলেন না। আর তুই এখানে রাগে কাইত।
ড: ইউনুস পাইলো, বাকীরা পাইলে দোষ কি?
মনের গভীরে ঘা দিলি রে। মনে বড় আশা, একদিন গ্রামে যাব, গ্রামেই বসবাস করবো। ওটা বোধহয় আর হবে না। বান্ধা পইড়া গেছি। নয়তো আমার চোখের সামনে ভাসে একটা ছোট গ্রামের বাড়ী, বড় উঠান, চারিদিকে গাছপালা। এইধর তোর বাড়ীর চারদিকে অনেক অনেক গাছ, আম, জাম, কাঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে, আপেল, কমলা, টমেটো, ডাব, সুপারি, খেঁজুর, আঁতা, বেল, কুমরো, মরিচ, কামরাঙ্গা, বড়ই, ইত্যাদি। ... নাহ আর বলতে ভাল লাগছে না। আসলে এখন আর সাহস হয় না।
মনে পড়ে তোর, একসময় আমরা কত কি প্ল্যান করতাম। আহা, ক্যাডেট কলেজেই ভাল ছিলাম, জীবনটা ঐখানে থাইমা থাকলে ভাল হইতো।
ভাল কথা, তোর প্রথম প্যারার সাথে পুরোপুরিই সহমত :thumbup:
বলছিস তুই, দেখ তাহলে কিন্তু তোর বিয়ে করা হবে না :grr:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
অই, আপনারা কি শুরু করছেন? সব ব্লগে গিয়া দুই বন্ধু মিল্যা ঝগড়াঝাটি?? পোলাপান তো ভয় খায়া যায়...
পোলাপানগো ভয় খাওয়ানো জন্য আপনাগো ব্যাঞ্চাই...বিশেষত স্টিকি ফয়েজ ভাইয়ের। (সম্পাদিত)
আমার ব্যাঞ্চায়া লাভ নাই, আমি ব্যান খাই না, :grr:
তুমি সিনিয়রের রুমে উঁকি ঝুকি মারার জন্য দশটা মটর সাইকেল চক্কর আর দুইটা লাক্স সাবান আধা বালতি পানিতে গুলায় নিয়া আস, কুইক x-(
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
এদিকে ছাগলে তো সব ঘাস খেয়ে ফেললো…
নঈম,
তোমার মত মতামত আমার আরও অনেক বন্ধুর। তবে আমার লেখাটা কিন্তু ঠিক প্রফেসর ইউনুসের কাজের সাফাই করে না।
আমি আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে যা দেখেছি এবং যা বুঝেছি সেটাই তুলে ধরেছি।
তোমার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ। একটু ঘাটাঘাটি করলে তোমার অনেকগুলি প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে আশা করি।
Thank you. A good piece of writing, very appreciable.
সাইফ ভাই,
খুব আগ্রহ নিয়ে আপনার লেখা পড়ি, আজকাল সিসিবিতে লেখার পরিমাণ অনেক কম।
আপনার মেলবোর্ণ থেকে সিডনী ভ্রমন মনে ধরলো, আমার নিজের ইচ্ছা ট্রেন-এ যাবো, দেখা যাক হয় কিনা।
এবার অন্য প্রসঙ্গে একটু বলি,
বাংলাদেশ কে অস্ট্রেলিয়ার মানুষ চেনে (আমার গন্ডীতে) ডঃ ইউনুস আর আশরাফুল এর জন্য। এখন যাদের সাথে কথা হয় তারা গ্রামীন ব্যংক নিয়ে ২টা প্রশ্নই করে শুধু,
ক) গ্রামীন এর দাবি নিয়ে অনুযায়ী তাদের রিটার্ন রেট ৯৬-৯৮ শতাংশ, অর্থাৎ এটা রিস্কফ্রী ভেঞ্চার, সেক্ষেত্রে সুদের হার এত বেশী ক্যানো?
খ) কখন দারিদ্র সীমা অতিক্রম করবে, অর্থাৎ কখন গ্রামীন তার ঋণগ্রহীতাদের ঋণ দেয়া বন্ধ করবে? যেহেতু ব্যাংকের মূলনীতি হচ্ছে দরিদ্রদের ঋণ দিয়ে স্বাবলম্বী করা তাহলে এটা আশা করা স্বাভাবিক যে একটা সময়ে তাদের আর ঋণ দরকার হবেনা, কিন্তু এই থ্রেশহোল্ড লিমিট টা কখনো গ্রামীন জানায়না, ফলে তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে এখন অনেক বেশী সন্দেহ কাজ করে।
আমি নিজে সবসময় মনে করি, গ্রামীন ব্যংক একটা সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কয়ার ফার্মা যেরকম ওষুধ বিক্রি করে সেইভাবে গ্রামীণ দারিদ্র বিক্রি করে, নিঃসন্দেহে এটা একটা নতুন পণ্য, কাজেই বাজারে এটার চাহিদা বেশী।
একজন বাংলাদেশী যখন সফলভাবে ব্যবসা করে তাকে নিয়ে আমি অবশ্যই গর্ব করি, কিন্তু মনে রাখি তিনি ব্যবসায়ী, মহাপুরুষ না।
অন্য একটা কথা আসলো ব্লগ-এ, ডঃ ইউনুস এর সাহায্যে লিবিয়া থেকে আটকে পড়া বাঙ্গালীদের নিয়ে আসা প্রসঙ্গে, প্রেসিডেণ্ট থাকা অবস্থায় বিল ক্লিন্টন বাংলাদেশে এসেছিলো কিন্তু ডঃ ইউনুস এর জন্য (আমি যতদূর শুনেছি), কিন্তু তাতে বাংলাদেশ এর কোনো কূটনৈতিক লাভ কি হয়েছিলো?
আইন সংশোধন নিয়ে কিছু কথা হলো, আচ্ছা আমরা কি এমন করতে পারি যে কিছু কিছু মানুষ এর জন্য আইন প্রযোজ্য হবেনা, এরকম একটা আইন মনে হয় দরকার এখন। ক্যানো আমরা এভাবে ভাবতে পারিনা যে আইন আসলেই সবার জন্য সমান।
সবশেষে আরেকটা কথা, হেনরী কিসিঞ্জার নোবেল শান্তি পুরষ্কার পায় ১৯৭৩ এ, আমরা কি তাকেও শান্তির দূত বলবো?
রেশাদ,
ধন্যবাদ তোমার খোলামনের প্রশ্নগুলির জন্যে। যদি একটু খেয়াল করে দেখো, তবে দেখবে প্রফেসর ইউনুসকে সাপোর্ট করার জন্যে এ লেখা না। এ ব্যাপারে বিভিন্ন প্ত্র-পত্রিকায় ও ব্লগে অনেক লেখা হচ্ছে। আমার ফেসবুক পেজে তার কিছু লিঙ্ক দেওয়া আছে। আমার লেখাটা একজন সাধারন খেটে খাওয়া প্রবাসী বাংলাদেশীর মনের ভিতরের কিছুটা দুঃখ তোমাদের সাথে শেয়ার করার জন্যে।
তুমি যে দু'টি প্রশ্ন করেছো তার উত্তর আমার চাইতে অন্য অনেকে হয়তো ভাল ভাবে দিতে পারবে। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এটুকু বুঝি যে গ্রামীনের সুদের হার বেশী বলে যে প্রচারনা চালনা হচ্ছে তার মধ্যে কিছু অসততা আছে। আমেরিকাতে সুদের হার কত বলতে পারবে? এটা প্রায় সম্পূর্ণ নির্ভর করছে কে টাকা নিচ্ছে আর কে টাকা দিচ্ছে। নীচের ছবিটা দেখোঃ
এখানে বলা হয়েছে বর্তমান সুদের হার ৩০%, তবে তারা আমাকে এক বছরের বেশী ০% হারে টাকা দিতে চাচ্ছে, যেহেতু আমি অনেক বছর চেষ্টা করে আমার ক্রেডিট রেটিং ভাল রেখেছি। কিন্তু বহু সাধারন আমেরিকান বাধ্য হয় এই দূর্দিনে এই হারে সুদ নিতে বেচে থাকার জন্যে। এক সময় আমারও এই রকম অবস্থা হয়েছিল।
বাংলাদেশে গ্রামীনের সুদ কিন্তু সরকার ২৭% সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। সব চাইতে বড় কথা কাউকে কি জোর করে গ্রামীনের লোন নিতে বাধ্য করা হচ্ছে??
আমি সেদিন লন্ডনে আমার বন্ধু (ফৌজিয়ান) মেজবার সাথে কথা বলছিলাম এই ব্যাপার। মেজবা বাংলাদেশে এক জন সিনিয়ার ব্যাংকার ছিল, এখন বিলাতে অবসর জীবন কাটাচ্ছে। তোমার মত প্রশ্ন আমি তাকে করেছিলাম। সে কয়েকটা জিনিস মনে করিয়ে দিল। এক সময় ছিল যখন গ্রামের মহাজনরা এই সুদের ব্যবসাতে নিযুক্ত ছিল। মেজবার নিজের দেখা অভিজ্ঞতার গল্প। মহাজন ২৫ টাকার লোন দেবার সময় খাতককে জানিয়ে দিল এই ২৫ টাকা শোধ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসে ৫ টাকা করে সুদ দিতে হবে। এছাড়াও ২৫ টাকা থেকে ৫ টাকা প্রথম মাসের কিস্তি হিসাবে কেটে রেখে ২০ টাকা দেওয়া হল তার হাতে। গ্রামীন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান আসার পর মহাজনরা প্রায় বিদায় নিয়েছে। গ্রামীন যে আইডিয়াল সেটা আমি বলছি না। এ ব্যাপারে অন্য জায়গাতে আমি বলেছিঃ This is also what I believe - "Microfincance is no panacea, and more research needs to be done to find out what works and what doesnt, but organisations like Grameen Bank and BRAC have probably done more good for Bangladeshis than the whole of Bangladesh’s political class." (সম্পাদিত)
ঋণ সম্পর্কে এই লেখাটি আম্র পছন্দ হয়েছে তাই যোগ করলামঃ
ঋণ, রাজনীতি আর নোবেল প্রাইজ
ইউনূস সাহেবকে নিয়ে আমার বাড়তি উচ্ছ্বাস নেই। আমি যেই শহরে থাকি সেই শহরে উনি কয়েকবার এসেছেন। আমি একবার কথাও বলেছি উনার সাথে। সুদের হার নিয়ে প্রশ্ন করেছি ওনাকে, ওনার উত্তর ছিল ঝানু ব্যাংকারের মত। হিসেব কষে আমাকে বুঝালেন যে গ্রামীন ব্যাঙ্ক অন্যদের চেয়ে বেটার। কিন্তু ওনার নোবেল প্রাপ্তিতে আমিও খুশি হয়েছি, আর দশজন বাংলাদেশির মত।
ঋণ খারাপ না ভালো এই প্রশ্নের উত্তর সহজ। ঋণ খারাপ, খুবই খারাপ। কিন্তু বাপের টাকা না থাকায় ঋণ করেই পড়েছি। চাকরি করে শোধ করেছি ঋণ। ঋণ করে বাড়ি কিনেছি, গাড়ি কিনেছি...শোধ করে যাচ্ছি...ঋণ ভালো না হলেও জীবনে ঋণ করতে হয় প্রায় সবাইকেই। সবাই ঋণের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারে না, কেউ ঋণ করে পড়াশোনা বা ব্যবসা করে স্বচ্ছলতা আনবে আবার কেউ ঋণের টাকায় ঘি খাবে। কারো ব্যবসা ফেল বা লে-অফ হয়ে ঋণখেলাপি হবে। এটা ঋণের সহজ সত্য।
ইউনূসকে সুদখোর বললে দেশে যত ব্যবসায়ী বা ব্যাঙ্কার আছে সবাইকে মহাজন বলতে হয়- কেননা সুদ সবাই খাচ্ছেন। অনেক রিটায়ার্ড সরকারী কর্মকর্তাও সঞ্চিত টাকাগুলোর সুদেই চলছেন। এই সুদ ব্যাঙ্ক দিচ্ছে কিভাবে? ওরা তো দাতব্য প্রতিষ্ঠান নয়।
ইউনূস সাহেবের আইডিয়াটা ইউনিক, উনি যাদের ঋণ দিয়েছেন তারা সাধারণ বিচারে ঋণ পাওয়ার "যোগ্য" নয়। ধনী-গরীব নির্বিশেষে ঋণকারীর চরিত্র প্রায় একই। ঋণ পাওয়ার পরে ওদের মধ্যে কেউ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবে অথবা কেউ তলিয়ে যাবে ঋণের অতলে। কিন্তু ঋণ অবশ্যই অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখে। কিন্তু সাইড এফেক্ট ছাড়া নয়।
অপরিনামদর্শী ঋণগ্রহণ মার্কিন অর্থনীতিকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। এই ব্যাপারে ব্যাঙ্কের চেয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে দোষারোপ করা হয় অনেক বেশি। এটা যথার্থ, কেননা সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে অনেকটাই রেগুলেটরি। যদি অন্যায্য আচরণ হয়, সেটা প্রতিকার করা। গ্রামীন ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেক। গ্রামীন ব্যাঙ্ককে সংশোধন করা অথবা এর অনিয়ম নিয়ে একটা গ্রহনযোগ্য তদন্ত করা যেত, কিন্তু মহাজোট সরকার সেটা করেনি এবং হয়ত করবেও না। এই সরকারের সেই মেধা আছে, সেটাও মনে হয় না। ব্যাংকের প্রধানের "চাকরি নট" করে আর যাই হোক ক্ষুদ্রঋণের ভুক্তভোগীদের উপকার হয় না।
ইউনূস সাহেবের বহিষ্কারকে অনেকে রাজনৈতিক প্রতিশোধ বলেছেন কেউ কেউ। উনি ১/১১ পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে এসেছিলেন, মার্কিনিদের পছন্দের লোক, বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতায় আমেরিকা আর সামরিক শাসন চায় না, এই ধরনের “সুশীল” শাসকই তাদের পছন্দ। এটা আমি মানতাম, কিন্তু ইউনূস সাহেবকে পদচ্যুত করে আর চার-পাঁচটা মামলা দিয়ে তাঁর কী রাজনৈতিক ক্ষতি হোলো সেটা কেউ খুলে বলেলনি। আর ইউনূস সাহেব ছাড়াও মার্কিনিদের আরো পছন্দের লোক আছে দেশে। বাকিরা সবাই কেন সরকারের কোপানলে নেই?
৭০ বছর বয়েসে কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাড়া শুধু মার্কিনিদের সমর্থনে তিনি ফেসবুক আর সেনাসমর্থিত বিপ্লব করে ফেলবেন এটা মনে হয় না। আরব দেশের বাস্তবতা আর আমাদের বাস্তবতা এক নয়, আমাদের দেশের মানুষ শাসককুলের ভুলের পরিণাম তাদেরকে অচিরেই ধরিয়ে দেয়, সেটা ভোটে হোক আর রাজপথেই হোক। ইউনূস সাহেব সেটা বুঝেন বলেই ১/১১ পরে তিন মাসের বেশি রাজনীতি করেন নি।
ক্ষুদ্রঋণের ভুক্তভোগীদের ত্রানের জন্য নয়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল নয়, তাহলে ইউনূস সাহেবের এই পদচ্যুতি কেন?
শান্তিতে নোবেল প্রাইজ কোনো মহার্ঘ্য বস্তু নয়, অশান্তি তৈরি করে সেটাতে দুই ফোঁটা জল ঢেলে অনেকেই শান্তির নোবেল বাগিয়েছেন। আবার সারাজীবন মানুষের জন্য কাজের স্বীকৃতি হিসেবে মাদার টেরেসাও পেয়েছেন এই পদক। শান্তির নোবেল বিতর্কের উর্ধ্বে নয়। ইউনূস সাহেব নোবেল পাওয়ার পরে উনাকে দেশের পত্রিকাগুলো নব্যুওয়াত প্রাপ্তির পথে ঠেলে দিয়েছে, ঠিক যেমনি বাংলাদেশ দল একটা খেলায় জিতলে তাদের আকাশে তোলা হয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর খেলা নিয়ে মাথাব্যথা নেই, শোনা যায় উনি পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তির জন্য নোবেলের তদবীর করেছিলেন। উনার প্রধান উকিলও মনে করেন ইউনূসের আগেই শেখ হাসিনার নোবেল পাওয়া উচিত ছিল।
পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তির ব্যাপারে উনি নোবেল পেতে পারেন, এখনো পারেন। ভবিষ্যতে শান্তি আনব, এইজন্য বাকিতে নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন ওবামা, সেই তুলনায় পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি আনা অনেক সলিড কাজ। তবে শেখ হাসিনা নোবেল পাওয়ার আগে ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তিটা ভালো হয়নি ওনার জন্য। মালিকের ছেলের আগে বুয়ার ছেলে বৃত্তি পেলে বুয়ার “চাকরি নট” হতে পারে।
তাই কী হচ্ছে আসলে? (সম্পাদিত)
সাইফ ভাইয়ের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা গেল কেন তিনি বিশ্বের দরবারে "দেশের ভাবমূর্তি"র জন্য আবেগা্ক্রান্ত, চিন্তিত। এটা শুধুমাত্র তার একার নয়, এই অভিজ্ঞতা আরো অনেক প্রবাসী বাঙ্গালীর। ক্ষুদ্রঋণ এবং ডঃ ইউনূস দেশের এই ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন বলে সাইফ ভাই এবং তারমত আর সব প্রবাসী বাঙ্গালী ক্ষুদ্রঋণ এবং ডঃ ইউনূসের পক্ষাবলম্বন করবেন, স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার এটাই একমাত্র ধরণ নয়, বাংলাদেশীদের মধ্যে আরো নানা ধরণের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে ক্ষুদ্রঋণ এবং ডঃ ইউনূসকে নিয়ে।
এই যেমন ধরেন যে ব্যক্তি কোনদিন দেশের বাইরে, এমনকি তার গ্রামের বাইরেও যায়নি, সে কিন্ত দেশের বাইরে 'ভাবমূর্তি' বিষয়টা কি তা নিয়ে একেবারেই সংস্লিষ্ট নয়। অথচ, সে নিত্যদিন প্রতিবেশীদের সাথে চলাফেরা করে, তাদের সব বিষয়-আশয় সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখে। তার কাছে ক্ষুদ্রঋণ কিন্তু মহাজনী ঋণেরই একটা প্রাতিষ্ঠানিক ভার্সনমাত্র। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লোকজন যারা সিডরাক্রান্ত হয়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে সর্বশান্ত হওয়ার পর আবার ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায়কারীর ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে, তাদের কাছে ক্ষুদ্রঋণ এক বিভীষিকার নাম।
আমারও একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করিঃ
ছোটবেলায় আমাদের বাড়ী ছিল গ্রামের বাজার আর স্কুলের একপাশে, আরেক পাশে আমাদের একঘর প্রতিবেশী। তাদের ছোট ছেলেটা আমার সব থেকে কাছের বন্ধু। একটা মাছ ধরা, বাসা থেকে ঘুঘুর বা্চ্চা পাড়া, বিশাল শিমূল গাছের তলায় গিয়ে ফুল কুড়ানো, ইত্যাদি ছিল আমাদের নিত্যদিনের খেলা। সন্ধ্যার পর স্কুলের মাঠে বিছানা পেতে চিৎ হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা গোণা ছিল আমার আব্বার নিবেচনায় আমাদের সবথেকে 'বাজে অভ্যাস' (কারণ, আম্মার কাছে ধরা পড়লে ঝাড়িটা তাকেই খেতে হতো)। এইবার দেশের গিয়ে দেখি আমার সেই বন্ধু ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। উপরি হিসেবে বাজারে তাদের জমিটার একাংশ বিক্রিও করতে হয়েছে। এখনো তাকে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছি। কিন্তু আমি জানি সে এখন শুধু তারাই গোণে না, নিজের আশু দৈন্যের জন্য দশ্চিন্তাও করে...............
ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে আমার অভিজ্ঞতার বেশির ভাগই এমন। কিন্তু আমি এটাও মানি যে, আমার অভিজ্ঞতা জাষ্ট একটা দিক, ক্ষুদ্রঋণের আরো অনেক দিক আছে, ভালোয়-মন্দে মিলিয়ে। এই যেমন, সাইফ ভাই এবং তার মতো আরো অনেক প্রবাসী বাংলাদেশীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।
প্রবাসী বাংলাদেশীদের (ক্ষুদ্রঋণ আর যাদের মাঝে সহস্র মাইলের ফারাক) অভিজ্ঞতার সাথে দেশের অভ্যন্তরের গ্রামাঞ্চলের (ক্ষুদ্রঋণ যাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের অংশ) অভিজ্ঞতার পার্থক্যটা গোনায় ধরলেই একটা প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় যে, 'ফ্রেন্ডস অফ গ্রামীন ব্যাংক' নামের সংগঠন ক্ষুদ্রঋণের মাঠপর্যায়ে (বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে) গড়ে না উঠে কেন বিদেশে জন্ম নিচ্ছে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ,
মাইক্রোক্রেডিট সম্পর্কে তোমার প্রতিটা কথার সাথে আমার অমত করার কিছু নেই। আমার লেখা কিন্তু মাইক্রোক্রেডিট নিয়ে না - এ কথা আগেও অনেক বার বলেছি। মহাজন ব্যবসা থেকে গ্রামীন এবং অন্য আরও কিছু প্রতিষ্ঠান অনেকের জীবনে নতুন কিছু সরার সুযোগ এনে দিয়েছে। কেউ 'কিছুটা' সফল হয়েছে আবার অনেকে হয়নি। আমি সত্যি সত্যি আশা করবো তুমি এবং তোমার মত নতুন প্রজন্ম এমনি নতুন কিছু নিয়ে আসবে অন্যদের উন্নতির জন্যে।
সারা দুনিয়াতে নিয়ম হচ্ছে যাদের অনেক আছে তারা আরও অনেক মূলধন জোগাড় করতে পারে। কিন্তু নিচে পরে থাকলে উপরে ওঠা কঠিন।
আমার লেখা যে ইউনুসের চাইতে হাসিনার এই বালখিল্যতার প্রতি বেশী নজর দিচ্ছে সেটা যদি দেখেও সে ব্যাপারে তুমি কিছু বলতে না চাও, তা হলে আমার বলার কিছু নেই।
মাহমুদ,
আবার বলছি আমার লেখা কিন্তু ক্ষুদ্রঋণ-এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা নয়। ওটা যথা সময়ে তুমি এবং তোমার প্রজন্মের বিভিন্ন উজ্জ্বল উত্তরসুরীরা করবে যখন তোমারা এর চাইতে ভাল কোন পন্থা উদ্ভাবন করবে এবং সাড়া দুনিয়াকে আবার তাক লাগিয়ে দেবে।
সাইফ ভাই, লেখা নিয়ে আমার কিছু বলার নাই। একটা ব্যাপার সবখানে দেখলাম, এই ড. ইউনূস এবং মাইক্রোক্রেডিট বিষয় দুটো আলোচনায় আসলে সবকিছু মিলে কেমন একটা ভজঘট পাকায় যায়।
কেমন আছেন আপনি?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী,
কথাটা ঠিক বলেছো। আমার কাছে মূল বিষয়টা হচ্ছে - একটা মানুষ তার জীবনের দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তিলে তিলে একটা প্রতিষ্টান যখন সার্থক ভাবে গড়ে তুলেছেন তখন তাকে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করা কোন দূর দৃষ্টি সম্পন্য নেতার পক্ষে শোভা পায়না।
'ডানন' একটা নাম করা ফরাসী খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা, তার কোয়ালিটি কন্ট্রোল বাংলাদেশের যে কোন খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্টানের চাইতে কম হবে ভাবার কোন কারন নেই। তাদের তৈরী 'দই' ভাল না বলে ফুড সাব-ইন্সপেক্টরকে দিয়ে থানায় প্রফেসর ইউনুসের বিরুদ্ধে মামলা করা কি ভাবে দেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করবে সেটা আমি বুঝিনা।
আমি আগেও বলেছি ইউনুসের জন্যে আমার এই প্রতিবাদ নয় - জাতি হিসাবে আমাদেরকে এ ভাবে বিশ্বের চোখে ছোট করার জন্যে হাসিনার উচিত জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া।
মজার ব্যাপার হলো এই মাইক্রোক্রেডিটের সাফল্য নিয়ে এত মাতামাতি, হই চই কিন্তু এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে কোন পরিসংখ্যান ভিত্তিক গবেষনা নেই , কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ নেই ! যা আছে তা হলো কিছু ঘটনা ভিত্তিক স্ট্যান্টবাজি রিপোর্টিং , তত্ত্ব সর্বস্ব মাথা চাপড়ানো, ময়দানী ভাষণ আর ময়দানী ভাষনের ডিজিটাল ভার্সন ব্লগ ভাষন। তাহলে কি ধরে নেব মাইক্রোক্রেডিটের ব্যর্থতা খালি বই পুস্তকে আর সফলতা মাঠে ময়দানে ?
মাইক্রোক্রেডিট যদি দাদন ব্যবসার নতুন রুপ হয় তাহলে সরকার নিজেই তো দাদন ব্যবসায়ী। গ্রামীন ব্যাংকের মালিকানার কিছু অংশ তো সরকারেরও। গ্রামীন ব্যাংকের সুদের হার যদি উচ্চ হয় তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক কেন এতদিনেও সুদের হারের উপর কোন গ্রহনযোগ্য সীমারেখা বেঁধে দেয়নি ? বাংলাদেশ ব্যাংক যদি যাকে ইচ্ছা গদিচ্যুত করতে পারে তাহলে সুদের হারের গ্রহনযোগ্য সীমারেখা বেঁধে দেওয়ার এখতিয়ার বাংলাদেশ ব্যাংকের নেই ?
মাইক্রোক্রেডিট অসফল হলে ভালো কথা। তাহলে দেশে মাইক্রোক্রেডিট ব্যবসাই বণ্ধ করে দেওয়া উচিত। শুধু একা ইউনুসকে সরিয়ে দিলে তো মাইক্রোক্রেডিট ব্যবসা বণ্ধ হয়ে যাবে না। গ্রামীন ব্যাংকের মতো আরো শত শত এনজিও তো এদেশেই ব্যবসা করছে। বরং গ্রামীন ব্যাংকের চেয়ে সেসব এনজিওর সুদের হার কম এমনটা শুনিনি। অন্য সবাই যদি ব্যবসা করে তাহলে শুধু ইউনুসকে সরিয়ে কি লাভ হলো ?
ঋণ আদায়ের পদ্ধতি নিয়ে যদি মাইক্রোক্রেডিটের সমালোচনা করা হয় তাহলে এব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাই তো যথেষ্ট। মাহমুদ ভাই সিডরের পরে ক্ষুদ্র ঋন গ্রহীতাদের বাড়ি ছেড়ে পালানোর কথা বলেছেন। তখন তো সরকার সব এনজিওগুলোকে একটা সময় বেঁধে দিয়েছিল যে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঋণ আদায় বন্ধ রাখতে হবে। সুতরাং মাইক্রোক্রেডিটের সমালোচনার চেয়ে তো মাইক্রোক্রেডিটেরর ব্যবস্থাপনা ঠিক করা বেশি জরুরী।
মাইক্রোক্রেডিটের সব কিছু পারফেক্ট না হতে পারে, ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতে পারে। সময়ের সাথে সেটা সংশোধন করাটাই তো যুক্তিযুক্ত। অথবা মাইক্রোক্রেডিটের বিকল্প কিছুও খুঁজে বের করাটাও জরুরী। যে পুঁথিগত সমালোচনা কোন বিকল্পের সন্ধান দিতে পারে না সেই সমালোচনা পুঁথির মলাটে বন্দী থাকাই ভালো।
মান্নান,
আমার যতটুকু মনে আছে '৮০-'৯০ সালে সাধারণ কমার্সিয়াল ব্যাংকে সুদের হার ছিল ১৮% এবং এর উপরে আন-অফিসিয়াল ফি দিতে হত (যাতে সময় মত ফাইল নড়া চড়া করে, এল সি খুলতে দেরী না হয়, ইত্যাদি) আরও বেশ কিছু। সুদের হার তখনই কমবে যখন প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং ক্যাপিটালের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। সরকারের কাজের সচ্ছতা এবং 'আইনের সত্যি কারের শাষন' যখন সবার বিশ্বাস করবে (শুধু ইউনুসের বয়েসের বেলায় আইন দেখানো হবে আর অন্য সময় না, এটা হয় না)।
গ্রামীনে পিছনে আদা-জল খেয়ে না লেগে সরকারের পি কে এস পি এবং আরও কয়েক শত প্রতিষ্টান গড়ে তুলে সেগুলোতে কম সুদে এবং ভাল ভাবে চালালেই তো গ্রামীনের গ্রাহক আর পাওয়া যাবে না।
যা হোক মান্নান, আমি যতটুকু বুঝেছি আমার অধিকাংশ ঢাকার বন্ধুর কাছে এ ভাবে দেখতে ভাল লাগে না। ইউনুসের পক্ষে কিছু বলা আর হাসিনার বিপক্ষে বলা যেন এক জিনিস। আমি পরিস্কার দেখতে পারছি যে মুজিবের মত হাসিনাও কে তার শুভাকাংক্ষী এবং কে তাকে নীচে ঠেলে ফেলছে - সেটা বোঝার ক্ষমতা লোপ পেয়েছে।
এখনো সময় আছে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে, দেশের এই সংকট মুহূর্তে ব্যাক্তি স্বার্থের উর্দ্ধে উঠে - খাদ্য, জ্বালানী, আন-এম্পয়মেন্ট ইত্যাদি জরুরী বিষয়ে মনযোগ দিতে।
তোমরা অনেকে হয়তো তখন জন্মগ্রহন করোনি, তাই এই স্মৃতি ভুলে প্রফেসর ইউনুসের কাজের ভুল আর বয়েস নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছো। কিন্তু পাশ্চাত্বের প্রাচুর্যের মধ্য থেকেও আমার কানে এখনো ভেসে আসে - "মা, একটু ভাত হবে? ভাত না হলে একটু ফ্যান?"
সেই দিনের থেকে আজ প্রফেসর ইউনুস আমাদের জন্যে যেটুকু সন্মান বিশ্ব-দরবারে অর্জন করে দিয়েছেন, তাকে আমরা ছিন্ন-ভিন্ন করতে আজ উঠে পরে লেগেছি। ধন্য বাংলাদেশ, ধন্য এই জাত...
"মাত্র ২৭,০০০ মারা গেছে, মিলিয়ন মিলিয়ন তো না খেয়ে মরেনি" - মুজিব (১৯৭৪)
আমার কিছু প্রশ্ন আছে,
যেই প্রধানমন্ত্রী শেয়ার বাজার নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন "আমি কিছু বুঝি না" উনি মাইক্রো-ক্রেডিট এর অলিগলি বুঝলেন কিভাবে !
আর বুঝলেনই বা যদি, বাংলাদেশ এ কোন কালে ৭ দিনের নোটিশ এ কোন কিছুর ফয়সালা হয়েছে !
উনার এত তাড়াই বা কেন !
৩০% সুদ ভাল না খারাপ এই প্রশ্নের উত্তর যারা সুদ নেয় ঊনাদেরকেই করা উচিত। কিন্তু আমাদের স্বনামধন্য কৃষি ব্যাঙ্ক এ গেলে যে টাকা পেতে পেতে ফসল তোলার সময় হয়া যায় এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোন মাথা ব্যাথা নেই কেন !!!!
সন্দেহজনক বেপার নয় কি ........... :-B
বেশী কথা বার্তা না বলাই ভাল, পরে বাংলাদেশ এ গেলে দেখব যুদ্ধাপরাধী লিস্ট এ আমার নাম ঝুলতেসে ........... :no: :no: :no:
Proud to be a Cadet,
Proud to be a Faujian.
পবন,
প্রশ্নটা কাকে করলে? ছাগলের উত্তরতো জানো, যাই জিজ্ঞাসা করো একই উত্তর - "ব্যাহ ব্যাহ ব্যাহ"... (সম্পাদিত)
:)) :)) :)) :))
:boss: :boss: :boss:
:pira: :pira: :pira: :pira: :pira:
:just: ::salute::
Proud to be a Cadet,
Proud to be a Faujian.
পাবন তোমার প্রশ্ন গুলো খুব ভালো লাগলো একদ্দম আমার মনের কথা 🙂
সাইফ ভাই, এ ব্যাপারে আমার অবস্থান তো জানেনই। গ্রামীণ ব্যাংক, ক্ষুদ্রঋণ ও ড. ইউনূস- এ বিষয়গুলো আমি ইতিবাচকভাবেই দেখি এবং এ নিয়ে বলি প্রকাশ্যেই। আওয়ামী লীগ ড. ইউনূসের চরিত্রহনন আর গ্রামীণ ব্যাংককে ধ্বংস করতে চাইছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোঁজার জন্য সার্চ কমিটি বানাচ্ছে! খুঁজে একজন আওয়ামী লীগার বের করবে যে গত তিন দশকে গড়ে উঠা গর্বের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করবে। এর জন্য আজ না হোক আগামী নির্বাচনে ওদের জবাব পেতে হবে। কষ্টটা হলো, এদের বদলে আগামীতে আমাদের খন্দ. দেলোয়ার-তারেক-কোকো-গিয়াস মামুনদের মতো আরো কিছু অসাধারণ নেতাকে মেনে নিতে হবে!!
আজ প্রায় তিন ঘণ্টা বসে দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য শুনলাম। এদের বেশির ভাগই ক্ষুদ্রঋণ ও দারিদ্র পরিস্থিতি নিয়ে গত তিন/চার দশক ধরে কাজ ও গবেষণা করছেন। কিছু সাম্প্রতিক গবেষণার খবর পেলাম, এগুলো সংগ্রহ করে পড়তে হবে। আশা করি আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ দেশের দারিদ্র বিমোচনে আদৌ কোনো ভূমিকা রাখছে কিনা, তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়েই তেমন একটা লেখা দিতে পারবো।
ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে সমালোচনার মূল জায়গা ব্যবস্থাপনায়। সূদের হার নিয়ে সমালোচনা আছে। কিন্তু একজন অর্থনীতিবিদ হিসেব করেই দেখালেন আয়-ব্যয় সমান সমান করে সূদের হার ধরলেও এটা হবে ২৩ শতাংশ। অধ্যাপক এম এম আকাশ এ বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে জানালেন। তাদের গবেষণাও এমন তথ্য্ই পাওয়া গেছে। ক্ষুদ্রঋণ রেগুলেটরি অথরিটি সূদের হার সর্বোচ্চ ২৭% ঠিক করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কম সূদ নেয় গ্রামীণ ব্যাংক, ২০% এটাও সবাই স্বীকার করলেন।
আমরা যারা ক্ষুদ্রঋণের বিরোধীতা করি, চিৎকার-চেচামেচি করি গরীব মানুষ ঋণের জালে অষ্টেপৃষ্টে আটকে যাচ্ছে বলে হা-হুতাশ করি- তারা আসলে কি চাই? গরীব মানুষ ঋণ না পাক? নাকি তাদের ত্রাণের উপর নির্ভরশীল করে রাখা হোক। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাবে ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের নিট সঞ্চয়ের পরিমাণ জেনে বিষ্মিত হয়েছি। ১৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা! বিশ্বাস হয়? ক্ষুদ্রঋণ যদি অধিকাংশের উপকারই না করে ওরা খেয়েদেয়ে, জীবনযাপনের মান বাড়িয়ে সঞ্চয় করছে কি করে? তাদের হাতে কি ভূত এসে টাকা দিয়ে যাচ্ছে??
সব কিছু দেখে শুনে মনে হচ্ছে কার্ল মার্কসের ভাষায় বলি, "আওয়ামী লীগ ভূত দেখছে, ক্ষুদ্রঋণ আর ইউনূসের ভূত।"
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু,
তোমার টিভি ইন্টারভিউ দেখলাম। ভাল লাগলো। অন্যদের সম্পর্কে কথা বলে সময় নষ্ট করে লাভ নেই। এ পর্যন্ত আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি বিদেশে বসবাস করা অধিকাংশ বাঙ্গালী সরকারের এই ধরনের কার্যকলাপে খুবই মর্মাহত। সামান্য কিছু গোড়া 'আওয়ামী সমার্থক আছে' যাদের ডিকশনারীতে 'লজিক' বলে কোন শব্দের অবস্থান নেই।
বাংলাদেশের অধিবাসীরা তো খোদার বিশেষ সৃষ্টি। পৃথিবীর অন্য কারোর সাথে তুলনা হয় না। জাপানের এই দূর্যোগের পর সেখাঙ্কার এক বন্ধু আমাকে জানিয়েছে তার দেশের অন্য মানুষদের কথা ভেবে সে এখন ঘরের লাইট না জ্বালিয়ে কম্পুউটার স্ক্রিনের আলোতে কাজ চালাচ্ছে, সারাদিন রুমের হিটার চালায়নি (১৯ ডিগ্রী) এবং সারাদিনে একবার মাত্র খাদ্য গ্রহন করেছে।
চিন্তা করো তো ঢাকাতে এমন কিছু হলে আমরা কি করতাম? এই সুযোগে কে কারটা কেড়ে নেবে সেই চিন্তায় সবাই ব্যস্ত হত। কোন দূর্যোগ ছাড়াই তো মনে হচ্ছে আমরা সেই কে কার থেকে কি কেড়ে নেবে সেই প্রচেষ্টায় উঠে পরে লেগেছি।
:clap: :clap: :clap: অসাধারণ
নিজেদের কথা ভেবে বড় কষ্ট লাগে। আমরা কবে এরকম হবো! :dreamy:
::salute::
খুব ভাল লাগলো লেখাটা পড়ে। 🙂 🙂
ডঃ ইউনুস এর ভূল খুজলে পাওয়া তো যাবেই। কিন্তু একটা কথা মনে রাখা উচিত যে ওনার জন্য আমাদের দেশ এর অনেক সম্মান এসেছে। খুব কম সময় ই কিন্তু কেউ দেশের জন্য এমন occasion আনতে পেরেছে। এটার মূল্য আমাদের দেয়া উচিত। নাহলে ভবিশ্যতে কেউ এমন কিছু করার সাহস বা আগ্রহ পাবেনা।
মোফরাদ,
ধন্যবাদ তোমার মন্তবের জন্যে। এ জন্যে দুঃখটা আরও বেশী হয় যে কিছুদিন আগেও যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করতো হাসিনা ও খালেদার মধ্যে কাকে ভোট দিবে তুমি, তবে প্রথম জনকে নির্বাচিত করতাম।
বাংলাদেশ এবং সমস্ত পৃথিবী এই মুহূর্তে এক বিরাট পরিবর্তনের মধ্যে যাচ্ছে। সরকারের সকল মনযোগ এবং কার্য পরিচালনা হওয়া উচিত সেই সব সমস্যার দিকে। চাল, ডাল ও তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে, লিবিয়াতে ৫০/৬০ হাজার বাংলাদেশী খুবই অসহায় অবস্থায় কাটাচ্ছে, জাপানের সুনামিতে হয়তো ভেসে গেছে এক উল্লেখজনক সংখ্যক বাংলাদেশী যারা সেনডাই এলাকাতে থাকতো, যারা মারা গেল তারাতো বেচে গেল কিন্তু তাদের উপর নির্ভরশীল দেশে তাদের আত্মীয়-স্বজন - তাদের খোজ কে করছে? তেমনি ভাবে মধ্যপ্রাচ্যের এবং পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশীরা চাকরি হারাচ্ছে। এর প্রভাব কি দেশে পরবে না?
আমার আমেরিকান বন্ধু পলের কথাই ক্রমাগত মাথার মধ্যে ঘুরছে - "তোমার দেশের ভাবমুর্তি যে কতটা নেমে এসেছে এই ঘটনায়, তা কি তোমাদের প্রধানমন্ত্রী বোঝার ক্ষমতা রাখে? ‘ন্যাশন্যাল প্রাইড’ শব্দটার মানে কি তোমাদের প্রধানমন্ত্রী জানে না? এখন আমি বুঝি কেন তোমার মত লোকেরা দেশ ছেড়ে চলে এসেছে।"
সাইফ ভাই আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো।
ক্ষুদ্রঋণ কিছু মানুষের এত কাজে লাগে সেটা মাঝেমাঝে বুঝি।
খ্রাপ ক্রেডিট স্কোরের কারণে ক্রেডিট কার্ড/ওভারড্রাফট না পাওয়ার কারণে, যখন কিছু টাকার জন্য পে ডে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় তখন বোঝা যায়।
৪০-৫০% এমনকি ৮০-৯০% সুদেও লোন এর অফার আসে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে।
নাজমুল,
অনেক ধন্যবাদ তোমার দেওয়া তথ্যগুলির জন্যে। এখনকার বিতর্ক কিন্তু আর ক্ষুদ্রঋণ বা সুদের হার নিয়ে না।
একটা দেশের সরকারের বালখিল্যতা দেখে নিজেকে সেই দেশের মানুষ বলে পরিচয় দিতে কষ্ট হয়।
সরি ভাইয়া, আমিও এটা সব কমেন্টস এবং আপনার লেখা পড়ে ভুঝতে পারসি।
কিন্তু লেখার সময় আবার এই বিষয়টা চলে আসছে 😛
এটা আসলেই সরকারের অনেক বড় একটা বোকামি
সাইফ ভাই - বাংলাদেশে স্বপ্নের পেছনে ছুটে চলা মানুষের সংখ্যা খুব একটা নেই। তাই স্বপ্ন দেখা মানুষগুলো শেষ পর্যন্ত সব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করুক মনে প্রানে এই কামনা করি।
আমাকে যে জিনিষটা এখন খুব আতংকিত করে তা হলো তরুন সমাজ অন্যকে ঘৃনা করার মাধ্যমে নিজের জাতীয়তাবাদী পরিচয়টা সবার সামনে তুলে ধরে। কিন্তু এটা তো একটা হিটলারী পনহা। এটা যে কোন শুভ ফল বয়ে আনতে পারে না সেটা বলার মতো কোন অভিভাবকও আমাদের দেশে নেই। ধর্মীয় মৌলবাদ ্দূর হয়ে যদি তার জায়গায় রাজনৈতিক মৌলবাদ কিম্বা জাতীয়তাবাদী মৌলবাদ গেঁড়ে বসে তাহলে আর লাভটা কী হলো?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
শান্তা,
তরুনদের আর দোষ কি - তারা তাদের নেতা-নেত্রীদের কাছ থেকে শেখে এসব। সভ্য হতে সময় লাগে, শিক্ষা লাগে। ডিগ্রী পেলে শুধু একটা কাগজ আসে হাতে, শিক্ষা তাতে সব সময় আসে না।
এত কিছু বুঝি না কিন্তু বাংলাদেশরে কেন ইন্ডিয়ার কথা বলে পরিচয় দিতে হবে .......মানলাম ইউনুস ভালো কিছু করে নাই ..........ইউনুস ছাড়া আমাদের কোনো বিখ্যাত লোক নাই কেন ............যারা জীবনের কিছুটা সময় বাইরে কাটাই আসছে একমাত্র তারাই বুঝবে কতটা কষ্ট লাগে যখন কেও বলে বাংলাদেশ এইটা আবার কি ???????ইউনুস ছাড়া অন্য কোনো লোক কি আছে যে আমরা বলব ওর দেশের লোক .............এটা খুবই কষ্টের কথা যে এক জন লোক খুঁজে পাওয়া যাই না আমাদের পরিচয় দেওয়ার .......ভিয়েতনাম ,,মিয়ানমার এরাও পরিচয় দিতে পারে কিন্তু আমরা পারি না ..................আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বললাম ....যখন কেও বাংলাদেশরে চিনে না খুব খারাপ লাগে ...................কিন্তু আবার অবাক ওওও লাগে যে ভাবে দেশ চলছে মনে হই না কোনদিন কিছু হবে ............................
আশরাফ,
মন খারাপ করো না ভাই। আমি তোমার দুঃখ বুঝি। একটা জিনিস মনে রেখো - মিথ্যা দিয়ে চিরদিন সত্যকে ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায় না। গোয়েবলস থেকে শুরু করে আরও অনেকে চেষ্টা করেছিল, শেষ পর্যন্ত কেউ সফল হয়নি।
সত্যের জয় হবেই হবে।
আশরাফ ভাই,
কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবস্থা আরো ভয়ঙ্কর ...... 🙁
[যদিও এটা খালি নিউ ইয়র্কের বেলায় খাটে]
যদি কেউ জানতে চায় আমি কোথা থেকে এসেছি, জিজ্ঞাসা করে -
"Are from India ?" [পাকিস্তান কইলেও কইতাম আমি লম্বা আর নাম আসিফ !] 😡
আর উত্তরে যদি বলি বাংলাদেশ,
বেশীরভাগ সময় এই শুনতে হয়
"HELL NO ! Bengalis Can't Speak English That Well !" :(( :(( :((
তখন ব্যাটার মুখে ঘুষি মারতে ইচ্ছা হয় কিনা বলেন ! :chup: :chup: :chup: :chup:
কিন্তু বইসা বইসা আঙ্গুল চুষা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না ....... :bash: :bash: :bash:
Proud to be a Cadet,
Proud to be a Faujian.
x-( তুমি যখন কথা কও তখন কি ওরা কানে আঙ্গুল দিয়া থাকে, জিগাইতে পার না? :grr:
আরে ভাই অরা কাস্টুমার !
আমি আবার দুকানে কাম করি কিনা ...... B-) B-) B-)
আর হেরা কি বাংলা আর হিন্দির ডিফারেঞ্ছ বুঝে নাহি .......... :((
Proud to be a Cadet,
Proud to be a Faujian.
খুবই মজার দুইটা ভিডিও পেলাম ইউটিউবে। একটা ভিডিওতে দেখা গেছে " Caught in Micro debt" নামে নরোয়েজিয়ান ডকুমেন্টারিতে যে সুফিয়া বেগম ( ড: ইউনুসের প্রথম লোন গ্রহনকারিনি ও পরবর্তীতে ড: ইউনুসের বই ও আমেরিকার ডকুমেন্টারীতে সাফল্যের গল্পে উল্লেখিত) এর অভাবের তাড়নায় খুব করুনভাবে মৃত বলে উল্লেখ করা হয়েছিল তার আসল পরিচয় মোটেই নরোয়েজিয়ান সাংবাদিক বের করতে পারেনি। যে সুফিয়া বেগমের বোন নুরুন্নাহারের বক্তব্য নরোয়েজিয়ান ডকুমেন্টারিতে প্রচার করেছে সে মোটেই ড: ইউনুসের উল্লেখিত সুফিয়া খাতুন নয়। মনে হয় নরোয়েজিয়ান সাংবাদিক আসল সুফিয়া খাতুন এর সাথে অন্য সুফিয়া খাতুনকে গুলিয়ে ফেলেছ। নুরুন্নাহার বেগমকে যখন ড: ইউনুস উল্লেখিত সুফিয়া খাতুনের ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এটিই তার মা কিনা , নুরুন্নাহার নিশ্চিত করেছে ছবির মহিলা তার মা নয়।
ভিডিওটি এখানে :
দ্বিতীয় ভিডিওতে গ্রামীন ব্যাংকের সুদের হার যে ৪০% বলে উল্লেখ করা হয়, David Roodman, Senior Fellow at the Center for Global Development আরো কিছু ফ্যাক্টর হিসাব করে দেখিয়েছেন যে আসল সুদের হার ২০% এর কাছাকাছি । তার সাক্ষাতকারটি এখানে :
বেশ ইন্টারেষ্টিং লাগলো ভিডিও দুটো দেখে।
মান্নান,
আমিও ২দিন আগে এই ভিডিওগুলো দেখেছি। মজাই লাগলো। একটা সত্যের দুইটা চেহারা থাকতে পারে না। কিন্তু সেটাই হচ্ছে। প্রথম আলোর গোলটেবিলে একাধিক অর্থনীতিবিদ বলছিলেন, অনেকে বলে কর্মসংস্থানের নামে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে গ্রামের দরিদ্ররা যৌতুক দিচ্ছে, ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিচ্ছে, চিকিৎসার জন্য খরচ করছে। কিন্তু এই সমালোচকরা ভাবেন না, ওই ঋণটা না নিলে সে হয়তো তার শেষ সম্বল জমি বা ভিটামাটিটা বিক্রি করে ফেলতো। এই ঋণটা উৎপাদনে না লাগলেও গ্রহীতার শেষ সম্পদ রক্ষা করছে। এরপর গ্রহীতা ওই ঋণ শোধ দেওয়ার জন্য নানা উদ্যোগ নিচ্ছে।
খেলাপি গ্রহীতার ঋণ আদায়ে বাড়াবাড়ির অভিযোগ গণমাধ্যমে আসে। গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক বা কোনো এনজিও খেলাপি গ্রহীতা ঋণ আদায়ে বাড়ির চাল খুলে নিচ্ছে, এদের চাপে কেউ কেউ আত্মহত্যা করছে, কেউ কেউ ভিটামাটি বিক্রি করে আরো নিঃস্ব হচ্ছে, এমন অভিযোগও আছে। প্রথমতঃ প্রায় দুই কোটি ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতার মধ্যে এই হার কতো? ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে সেই ২০০৪ সালে নির্বাচন কাভার করতে গিয়ে দেখেছি, ফসল মার খাওয়ায় বছরে শ শ কৃষক আত্মহত্যা করছে। বাংলাদেশে ১০ বছরেও ১০০ জন খেলাপি ঋণগ্রহীতা তালিকা কি কেউ দিতে পারবে? কিছু ব্যর্থ ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতার কেস স্টাডি দিয়ে পুরো বিষয়টাকে সমালোচকরা নাকচ করতে চাইছে। সফলদের কেস স্টাডিগুলো তারা দেখেও না দেখার ভান করছে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে আড়াল করছে। দ্বিতীয়তঃ এই বাড়াবাড়ি কী প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ফল? নাকি নিচের পর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পারফরমেন্স ধরে রাখার অত্যুৎসাহী চেষ্টা? গ্রহীতাকে ক্ষুদ্রঋণ নিতে হলে গ্রুপের সদস্য হতে হয়। কেউ খেলাপি হলে গ্রুপের বাকিদের উপর ঋণ পরিশোধের চাপ আসে। অনেক সময় গ্রুপ সদস্যরাও বাড়াবাড়ি করেন। তৃতীয়তঃ এখানে সরকারের ভূমিকা কি? নাকি দারিদ্র বিমোচনের পুরো দায়-দায়িত্ব সরকার গ্রামীণ ব্যাংক ও এনজিওদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে! সরকার বাইরে দাঁড়িয়ে দেখবে, ফল ভালো হলে কৃতিত্ব নেবে, খারাপ হলে সমালোচনা করবে, রক্তচোষা বলে গালি দেবে? এই বাধ্য হওয়া খেলাপিদের রক্ষার জন্য কেন সরকার বীমা পদ্ধতি চালু করছে না?
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আপনার সাথে সম্পূর্ন একমত। মাইক্রোক্রেডিটের যতগুলো অসুবিধার কথা বলা হয় সবগুলোই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা দিয়ে জয় করা যায়।
আর যে সমালোচনা কোন বিকল্প সমাধান দিতে পারে না, সেই সমালোচনা গ্রহন করার কোন মানেই হয় না।
স্যার, চমৎকার লিখেছেন। অবশ্য আপনার লেখা বরাবরই অনবদ্য ও সুখপাঠ্য। তবে নিচের প্যারাটা পড়ে থমকে গেলাম।
সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকান্ডের পর প্রতিবাদ একেবারেই হয়নি, তা নয়। বরগুনা, কিশোরগঞ্জ, খুলনা সহ দেশের নানা জায়গায় তীব্র প্রতিবাদ হয়েছিল। শুধু মিছিল মিটিং নয়, খুনীদের অবৈধ শাসনকে তোয়াক্কা না করে কয়েকদিন বরগুনা শহর দখলে রেখেছিলেন সে শহরের মানুষেরা। আর সেইসব বিক্ষোভ প্রতিবাদে নেতৃত্বে ছিলেন একজন মানুষ--তখনকার বরগুনার মহকুমা প্রশাসক জনাব সিরাজ উদ্দিন। এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে যে কেউ নিচের পোষ্টখানা দেখতে পারেন -
একটি বিতর্কিত বিষয়: বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আসলেই কি কোন প্রতিবাদ হয়নি?
১৫ আগষ্ট হত্যাকান্ডের পরপরেই ঢাকায় কার্ফু দিয়ে রাখা হয়েছিল একাধিক দিন। রাজপথে ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া ১৯৭৫ সালে তো টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আজকের মত এত ভালো ছিল না। বেতার ছিল মূল ভরসা। সেটাও তো দখল করে রেখেছিল খুনীরা। তাই এক জায়গার খবর আরেক জায়গায় পৌছানো নিশ্চয়ই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার ছিল। সুতরাং এই সব স্থানের প্রতিবাদের কথা তাৎক্ষনিকভাবে অন্য স্থানে যায় নাই এটা বলাই বাহূল্য। এছাড়া ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় সেই সময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বঙ্গবন্ধুর নাম নেয়াও নিষিদ্ধ করে রেখেছিল খুনীদের সরকার। আওয়ামী লীগের সাধারন নেতা কর্মীদের উপর চলছিল নির্যাতনের রোলার স্টিমার। এমন কি আরও পরে ১৯৭৬ সালের ২৩ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর বাসভবনস্থ অফিসের কর্মকর্তা মুহিতুল ইসলাম লালবাগ থানায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা রুজু করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এজাহারের বিবরণ শুনে মামলা না নিয়ে ডিউটি অফিসার মুহিতুল ইসলামের গালে থাপ্পড় মেরে বলেছিল ‘তুইও মরবি, আমাদেরও মারবি’। তাই বলা যায়, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রতিবাদ হয়েছে - তথ্যপ্রমান তাই বলে।
ধন্যবাদ আবারও আপনার পোষ্টটির জন্য।
সাফিউর আহমেদ,
দেখেন মানুষ যাকে বেশী ভালবাসে তার সামান্য ত্রুটিও বড় বেশী করে লাগে তার মনে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমার দু'ই চাচাকে হারিয়েছি, আমার বাবা তার সারা জীবনের সঞ্চয়ের টাকায় কেনা তার প্রিন্টিং প্রেস ব্যবসা হারান, আমি নিজে অল্পের জন্যে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। আমি আর দশ জন সাধারণ মানুষের মত এক জন কর্মজীবি মানুষ। তাই নিজের অভিজ্ঞতায় যা দেখেছি তাই লিখেছি।
হ্যা, আমার দেখার বাইরেও অনেকে নিশ্চয় নিরবে কেঁদেছে। বাঙ্গালীর মন অনেক নরম। তবে আমার অনুযোগ সেই সময়ের মন্ত্রী সভাতে যারা আবার অংশ নিয়েছিল। যারা পাকি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করতে পিছপা হয়নি, তারা ডালিম, ফারুক, ইত্যাদির ভয়ে একটা ভদ্র প্রতিবাদও করল না, এটা আমার মনে লেগেছে। বিশেষ করে যখন দেখছি একই ধরনের লোকেরা আবার হাসিনার পাশে জড় হয়ে প্রফেসর ইউনুসকে হেয় করার চেষ্টা করছে।
নীচের লেখাতে আমার তখনকার মনভাব খোলা মনে প্রকাশ করেছি, সময় পেলে পড়ে দেখতে পারেনঃ
আপনার মন্তব্য তথ্যগুলির জন্যে অনেক ধন্যবাদ রইল। শুভেচ্ছা রইল।
ভাত রেঁধে পাতে বাড়া যত সহজ, তার চাইতে সহজ বাড়া ভাতে ছাই দেওয়া। আর বাংগালী এইটা খুব ভালো পারে। এই কারনে সারা জীবন বাংগালী ছাই মাখা ভাতই খাবে।
শিশির,
কেমন লাগে যখন দেখিঃ
The Los Angeles Times article ends with a kicker that is none too flattering to Bangladeshis:
A joke making the rounds in Bangladesh has it that in hell, every other nationality is kept in guarded cells but the one housing Bangladeshis remains unguarded.
“Why is that?” someone asks the devil.
He replies, “Because if anyone tried to leave, hingsha ensures the others would pull them back.”
[Source: The New York Times]
ভাই, লা জওয়াব। আমি পুরাই হতাশ। সবকিছু নিয়ে। সত্যি বলতে কি, শুধু রাজনীতি নয়, প্রত্যেকটা সেক্টরেরই একই অবস্থা। আর বাস্তবতা হল, আমাদের চরিত্রের রূপক হচ্ছে আমাদের রাজনীতিবিদরা। দায়ভার আমাদেরই। যতদিন আমরা শুধরাতে চেষ্টা না করবো, ততদিন জাতীয় নেতারা যেমন ছিলো তেমনই থাকবে। কেননা তারা তো আমাদের মধ্য থেকেই। তবে চেষ্টা যে চলছে না তা নয়। তবে মোমেন্টাম যতটুকু হলে পরিবর্তন সম্ভব, ততটুকু হচ্ছে না, এইটাই বেশী হতাশার। আর আমার ধারণা সবার আগে চরিত্র এবং মানসিকতা উন্নয়ন প্রয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের।
@সাইফ ভাই,
ভুল কিছু বলেন নাই। ভুল কিছু লিখেন নাই।
আশ্চর্্য লাগে যখন দেখি শুধু তর্কের খাতিরে তর্ক হয়। তা-ও মত প্রকাশের সাধিনতার নামে। সবার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি। ড: ইউনুস কখনও কিন্ত বলেন নাই যে গ্রামীন ব্যাঃক কোন চ্যারিটি। ক্যাপিটালিজম কে মেনেই উনি ভিন্ন ধারার একটা ব্যাবস্থা তৈরীর চেষ্টা করেছেন। ক্ষুদ্র ঋণের যে সুদের হারের কথা বলা হচ্ছে, সে ব্যাপারে আমাদের আরেকটু ভেবে গবেষণা করে বলা উচিৎ।
গ্রামীণ ব্যাংক কিন্ত বিশেষায়িত হলেও একটা ব্যাংক। আদায়কৃত অর্থ ও মুনাফাই কিন্ত একে আরও সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।
আমরা নিজে কিছু করিনা বা করতে পারিনা। আর যে কয়টা মানুষ কিছু করার চেষ্টা করে তাকেও আমরা কিছু করতে দেইনা।
ধন্যবাদান্তে,
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শাওন
প্রাক্তন ক্যাডেট , সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ১৯৯৫-২০০১
["যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি"]
ছাগলে নয় ছাগলের পালে সব ঘাস খেয়ে ফেললো…
ইউনুস সর্ম্পকে বলি আবু শাহরিয়ারের একটি কথা “বামনদের দেশে উচ্চতাই বড় দোষ”
আর ছাগলের পালে প্রতিদিন নতুন মুখ যোগ হচ্ছে নিচের লিংক দেখুন
শ্রদ্ধেয় রাহাত খান, এভাবেও মিথ্যাচার করা যায় !
এদের সর্ম্পকেই বুঝি কালী প্রসন্ন সিং হুতুম পেচা্র নকশায় লিখেছিলেন “আমাদের মাঝে অনেকে এমন আছেন যারা সতীনের বাটিতে গু গুলে খেলে যদি সতীনের বাটি নষ্ট হয় তবে না হয় একটু গু গুলে খেলেনই ”
লেখাটা আগেও পড়েছি একবার। তখন কোন কমেন্ট করিনি। আজ আবার এলাম নতুন মন্তব্যগুলো পড়তে এবং ড.ইউনূস ও মাইক্রোক্রেডিট নিয়ে সবার ধারণার প্রকৃত অবস্থাটুকু জানতে।
অনেকের মধ্যেই বেশ কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। হয়তো এটা তাঁদের দোষ নয়। কেননা বিরুদ্ধ সমালোচকদের উদ্দেশ্যমূলক ভুল তথ্য প্রচারের কারণে এই বিভ্রান্তিগুলো সৃষ্টি হয়েছে। আমি মাঝেমধ্যে প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন করে যৎকিঞ্চিৎ লেখালেখির চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার কথা অন্যেরা শুনবে কেন, হোমড়া-চোমড়া ব্যক্তিত্বদের কথা অবিশ্বাস করে ? তবে সত্য কতদিন আর চাপা দিয়ে রাখা যাবে ! আমরা সে সময়ের অপেক্ষা করছি। মহাকালের কাছে সবি নস্যি। দুঃখ শুধু ততদিনে নির্দোষেরা ভোগান্তিটুকু পেয়ে যান।
অনেক ধন্যবাদ সাইফ ভাই। নিজের উপলব্ধিগুলো আশাকরি এভাবে কুণ্ঠাহীন লিখে যাবেন, সে কামনা করছি।
রণদীপম,
এখানে এসে মন্তব্য রাখার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। সাধারনত বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজের এক-দুই শত প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী এখানকার নিয়মিত পাঠক-পাঠিকা। দেড় হাজারের বেশী মানুষে এখানে এসে এই দীর্ঘ লেখাটি আগ্রহ ভরে পড়েছেন দেখে অবাক হলাম। লেখার সময় অনেকটা একটানা লিখে গিয়েছিলাম বেশী কিছু চিন্তা না করে - মনের দুঃখটা অন্যদের সাথে সহভাগ করে নেবার জন্যে।
গত রাতে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পাঠানো এক মহিলার লেখা পড়ে মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল - "দেশ ক্রমে আবার আগেকার অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থাতে ফিরে যাবে, কারন দেশের যুব সমাজ শিখবে এই দেশে ভাল কিছু করলে তার জন্যে শাস্তি পেতে হয়। তারা শিখবে যে তারা কেউ যদি পরিশ্রম করে, ভাল কাজ করে, অন্যকে সাহায্য করে, লক্ষ্যাধিক মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনে, এমন কি নোবেল শান্তি পুরস্কার এনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে - সরকারের পরশ্রীকাতরতা, হীনমন্যতা এবং বালখিল্য কার্যক্রমের কারনে তাদেরকে নীচে টেনে নামিয়ে আনতে পারে।
কোন তরুন-তরুনী আর সুন্দর আগামী দিনের প্রত্যাশা করতে পারবে না। কোন সক্ষম মানুষ তার উত্তরসূরীদের জন্যে আর উন্নত জীবনের স্বপ্ন আশা করতে পারবে না। হয়তো সেই স্বপ্নের দেখা মিলবে শুধু বিদেশের মাটিতে - মধ্য-প্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া বা ইউরোপে। বাংলাদেশ আরও গরীব হতে থাকবে নানা ভাবে।"
এই হতাশা থেকে বের হয়ে আসার কি কোন উপায় নেই?
শুভেচ্ছা রইল।