জীবনে যে কতবার লিখছি এই কথাটা তা গুনে শেষ হবে না। তো যাদের কাছে এতগুলা চিঠি লিখলাম তাদের নিয়ে লিখতে বসছি আজ। আমার জীবন কালে আমি সাড়ে তিন জন প্রিন্সিপাল পাইছিলাম।
এক.) মাহবুবুর রহমান ফারুক স্যারকে পাইলাম গিয়া সেভেনে। তখন ক্লাশ এইটের ঠেলাতেই জানডা আলজ্বিভ ধরে ঝুলত, কখন জানি বাইর হইয়া যায় অবস্থা। প্রিন্সিপাল তো ভিন গ্রহের কথা। তখন মনে করতাম হাউস মাস্টারই সবকিছু কলেজের। এইটে ওঠার পরও বিভিন্ন কম্পিটিসনে পুরস্কার হাতে তুলে দেয়া, প্রিন্সিপাল ইন্সপেকশন আর প্যারেড ছাড়া প্রিন্সিপাল স্যারের তেমন কনো কাজ দেখতে পাইতাম না। নতুন যোগ হইছিল শুধু ফল্ট কইরা ধরা খাইলেই লিখতে হইত “বরাবর, প্রিন্সিপাল, পাবনা ক্যাডেট কলেজ, পাবনা।” এইটের শেষ দিকে আইসা বোঝা শুরু করলাম আসল বিষয়। দেখলাম লিডিং ব্যাচ মিছিল করতেছে কলেজে। এথলেটিক্সের ফাইনাল ছাড়া ঐ একবারই মিছিল দেখছিলাম কলেজে। প্রথমে স্লোগান ছিল “প্রিন্সিপালের গদিতে আগুন জ্বালো এক সাথে”। হঠাৎ বুঝলাম গদি আগুনে পুড়ে গেছে। কারন শুনলাম স্লোগান থেকে গদি গায়েব হয়ে গেছে, গদির ওপর প্রিন্সিপাল যেটা রাখে সেখানটায় আগুন দিতে চাচ্ছে তখন ভাইয়ারা। কিছু দিন পর যখন নাইনে তখন স্যার চলে গেলেন রিটায়ারমেন্টে। মজার শুরু তার পর থেকেই…
দেড়.) মাহবুব স্যার চলে যাওয়ার পর শুনলাম আর্মি থেকে প্রিন্সিপাল আসতেছে। এসেই নাকি টাইট দিয়া শোয়াইয়া ফেলবে সবাইকে। কনো একটা কারনে সেই প্রিন্সিপাল আসতে তিন-চার মাস দেরি হল। সেই অন্তবর্তী কালিন সময়ে ভারপাপ্ত প্রিন্সিপাল হলেন ভিপি ফরহাদ উদ্দিন স্যার। ভাল মানুষ। সুন্দর চলতেছিল। কিন্তু স্যারের শরীরটা সুন্দর চলল না। স্যার গেলেন বাইপাস সার্জারি করাইতে। এবার সিনিয়ারিটি অনুসারে প্রিন্সিপাল হইল চ্যাম্পিওন হাউসের হাউস মাস্টার বজলুর রশীদ স্যার। এবং আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাইলাম যে, প্রিন্সিপালের কত ক্ষমতা। স্যার মাস খানেক দায়িত্বে ছিলেন। এর মধ্যে কলেজের মোট ক্যাডেট সংখ্যা ৬-৭ জন কমাইয়া ফেললেন। স্যার মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন দুষ্ট গরুর চেয়ে শুন্য গোয়াল ভাল। সারাদিন টেনশনে থাকতে হইত। কিছু করলেই কলেজ আউট। সবচেয়ে বিপদে পরল ডিউটি ক্যাডেট, প্রতিদিন রাতে প্যারেড স্টেটমেণ্টে সেদিন মোট ক্যাডেট কতজন আছে লিখতে গিয়া । ভয়ংকর একটা মাস। সেই টার্মের লাস্টের দিকে বাঘের ভয়ে রাত হইল। কম্পিউটার ল্যাবে টার্মেন্ড পরীক্ষার প্রশ্ন পাওয়া গেল। ছেলেপেলে প্রশ্ন লিখে নিয়ে আসল। পাবনা ক্যাডেট কলেজের ইতিহাসের ভয়ংকরতম সময়ে যখন কলেজ প্রিফেক্ট ইমরান(১৮তম ব্যাচ) এবং প্রিন্সিপালের দায়িত্বে বজলুর রশীদ আমরা ধরা খাইলাম। দায় নিয়া সুলতান, মঞ্জুর আরো কয়েকজনের সাথে ধরা খাইলো মুসফিক। টার্মের শেষ দিন ডিনারের টাইমে মুসফিক কে কলেজ প্রিফেক্ট এসে বলল “মুসফিক ক্যাডেট লাইফের শেষ ডিনারটা করে নাও।”
তো যাই হোক, মুসফিকতো আর কলেজে আসতেছে না। এটা প্রিন্সিপাল চিঠি দেয়ার আগেই আমরা ধরে নিলাম। কলেজে গিয়ে ওর জিনিসপত্র কিভাবে ভাগাভাগি করব প্লান করতেছি। যেহেতু কাছের বন্ধু, ভাগ করার দায়িত্বটা আমিই নিব ভাবতেছি। ছুটির ভিতর মুসফিক ফোন দিছে, দাত কেলাইয়া বলতেছে দোস্ত নতুন পিসি কিনছি। বললাম তোর বাপতো বিশাল ভাল মানুষ। ছেলে কলেজ আউট হইছে এই খুশিতে পিসি কিনা দিছে। ও যেটা বলল তাতে দুইজনই দুশ্চিন্তায় পরে গেলাম। কলেজ থেকে চিঠি গেছে, ১০০০/- টাকা জরিমানা আর এবারের মত সতর্ক করা হল। নিচে সাইন “লেঃকর্নেল রেজাউল করিম, প্রিন্সিপাল, পাবনা ক্যাডেট কলেজ।”
চলবে………………
:)) :)) :)) :)) =))
খেয়া (২০০৬-২০১১)
🙂
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
তুই তো ব্যাপক খারাপ।
না ভাইয়া আসলে ওর জন্য স্মৃতি জাদুঘর বানাইতে চাইছিলাম আর কি। 😀 😀
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
:just: =)) =)) =))
শেষের দুইটা লাইনে ব্যাপক মজা পাইছি।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
থ্যাঙ্কস ভাইয়া।
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
সেই রকম বিনোদন... 😀 😀
আছেন কেমন ভাই??
বাইচা আছি এটুকু শিওর। তোর কি অবস্থা?
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
মজা পাইলাম খুব। তবে আমরা যে ক্লাস সেভেনের জান ধরে টানাটানি করতাম এ ব্যাপারে বেশ সন্দেহ আছে
" দেখলাম লিডিং ব্যাচ মিছিল করতেছে কলেজে। এথলেটিক্সের ফাইনাল ছাড়া ঐ একবারই মিছিল দেখছিলাম কলেজে। প্রথমে স্লোগান ছিল “প্রিন্সিপালের গদিতে আগুন জ্বালো এক সাথে”। হঠাৎ বুঝলাম গদি আগুনে পুড়ে গেছে। কারন শুনলাম স্লোগান থেকে গদি গায়েব হয়ে গেছে, গদির ওপর প্রিন্সিপাল যেটা রাখে সেখানটায় আগুন দিতে চাচ্ছে তখন ভাইয়ারা।"
............... =)) 😉
ভাই এইটে থাকতে তৌহিদ ভাই, ইয়াকুব ভাই, তাজুল ভাই, সালেম ভাই, নাইম ভাই, জাহিদ ভাই কলার ধইরা এমন ঝাকি গুলা দিত প্রতিদিন এখনো আমাবশ্যার রাতে বুকে ব্যাথা করে। :(( :(( :((
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
এই চুপ চুপ এভাবে বলেনা। তুই তো দেখি লজ্জা শরমের মাথা খাইছস। কোথায় একটু প্রশংসা করবি নাতো হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দেওয়ার পায়তারা করতাছস
ভাই বজলুর রশিদ স্যার কে আমরা কলেজে প্রিন্সিপাল হিসেবে পেয়েছিলাম । একদিন রাত ২ টার সময় বজলুর রশিদ স্যার হাউস চেক করতে আসলেন সবাই রে ঘুম থেকে ডেকে তুলে । একজন ক্যাডেট ঘুম থেকে উঠে বাংলায় কথা বলেছিল জন্য তিনি ওই ক্যাডেট এর গালে থাপ্পর দিয়ে বলেছিলেন ,
হমমম...
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
:grr: :grr:
:clap:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:grr:
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
ভাইয়া FGCC'র প্রথম ভিপি ছিলেন বজলুর রশিদ স্যার......আমি কলেজ হসপিটাল এর উদ্বোধনী ক্যাডেট ছিলাম......উনি পর দিন বাসায় লেটার পাঠিয়েছিলেন যেন আমাকে নিয়ে যায় আমার প্যারেনটস...... ~x(
যাই হোক
:pira: :pira:
(সম্পাদিত)
শোনো এটা তো কিছুই না, ওনার ছেলেও ক্যাডেট। আমাদের সময় কথিত ছিল, স্যার পারেন্টস ডে তে গিয়ে, কিছু খাবার দিয়ে আসছে, তারপর কলেজে রিপর্ট করে আসছে যে তার ছেলে খাবার নিয়ে হাউসে গেছে। এবং সেই কেসটাতে আবার ঐ পোলার প্যারেন্টস কল হইছে।
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
কঠিন একটা সময় ছিল .........।। =))
জ্বি ভাইয়া।
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
হাসতে হাসতে জান খারাপ হয়ে গেল।
:)) :khekz:
"মরনের বীথিকায় জীবনের উচ্ছ্বাস,
জীবনের যাতনায় মৃত্যুর মাধুরী"
🙂 🙂 🙂
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
খুব ভাল লাগল .........।। :)) :)) :)) :)) :)) :)) =)) =))
দয়ারি
🙂 🙂
মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ
"দেখলাম লিডিং ব্যাচ মিছিল করতেছে কলেজে।":)) 😀 B-) 😛
“প্রিন্সিপালের গদিতে [No.......it was (HOGA!!!! :)) )] আগুন জ্বালো এক সাথে”।