কি লিখি

আসলেই, কি লিখি! মাথাটা দিন দিন কেমন জানি খালি খালি লাগে। সকাল বেলা অফিসে ঢুকে সবার আগে এককাপ কফি না ধরাইলে (বিড়ি ছারছি আইজ ৯ মাস, অহন কফিই ধরাই, কপাল…) মাথার জট খোলে না। তারপরে ব্লগে ঢুকে মনে মনে আবার ভাবি , কি লিখি! প্রায় এক মাস আগে কাম্রুল ইয়াহু মেসেঞ্জারে নক কইরা জিগায় লেখা দেই না ক্যান। আমি যথারীতি বিশাল ভাব নিয়া কই “ভাইরে, ম্যালা বিজি। প্রোডাক্টের রিলিজ সামনে, ম্যালা কাম। দম ফালানোর সময় নাই। তয় দিমু”। যেন কি এক বিশাল লেখক!

প্রোডাক্টের রিলিজ আসলেই ছিল। এখনো কিছু কাজ বাকি, কিন্তু তত বিজি না। তারপরও লেখার সময় কেন যেন পাই না। আজকে অফিস থেকে বাসায় আসার সময় গাড়িতে বসে ভাবছিলাম ঘটনাটা কি! আগে তো ম্যালা ত্যাল ছিল, গেল কই।

আমার অনেকগুলো অভ্যাসের মধ্যে একটা গাড়িতে বসে ঘুমাতে না পারা। নিজে যখন চালাই তখনকার কথা বলছি না, যখন অন্য কারও গাড়িতে। যেমন ঢাকায় যখন বাসার ড্রাইভার চালায়, বাসে যখন চড়ি। মনে হয় চোখ বুজলেই কোন একটা অ্যাক্সিডেন্ট হবে আর আমি চোখ খুলে রাখার কারনে কোন এক অলৌকিকভাবে নিজেকে বাচাতে পারব। এখন সেই জিনিসটাই মনে হয় অন্যভাবে হয়। বাসায় এসে মেয়েকে নিয়ে মেঝেতে চাদর পেতে ছেড়ে দেই। সাড়ে পাঁচ মাসের আমার আম্মাটা লিভিং রুমের এক কোনা থেকে আরেক কোনায় গড়াতে থাকে। মাঝে মাঝে চারপায়ে ভর দিয়ে মাথা তুলে আমার দিকে তাকায়, ছোট্ট একটা হাসি দেয় তারপর আবার গড়াতে শুরু করে। আর আমি ফ্লোরে শুয়ে শুয়ে গড়ানো দেখি। চোখ বুজতে ভয় লাগে। আমার আম্মাটা ব্যাথা পাবে তার জন্য নয়। ও ধুপধাপ প্রায়ই পড়ে। একদিন রাতে তো সাড়ে তিন ফুট উচু বিছানা থেকে রাত তিনটার সময় ধুপ করে পড়ে গেল। আমি চোখ বুজি না যেন কিছুই মিস না হয়। দুই সেকেন্ড বুজলেই তো আমার মা টাকে দুই সেকেন্ডে জন্য দেখব না। তাই আমি সব ভুলে তাকিয়ে থাকি। ও গড়ায়, চার পায়ে মাথা তুলে পিছন ফিরে তাকায়, সোফার কোনায় মাথা গুজে কার্পেট চাটে, আর আমি চোখ খুলে রাখি।

সময় কিভাবে যায় তার হিসাব রাখি না। বউ খালি বলে কবে যে একটু বড় হবে আর তার একটু শান্তি হবে। আমি বলি, না, বড় হবার কোন দরকার নেই। আমি যেন ওই দুইফুট লম্বা, ১২ পাউন্ড, গড়াগড়ি করা, সব কিছু ভুলিয়ে দেয়া, চারপেয়ে জিনিসটার দিকে তাকি থাকতে পারি সব ভুলে সারা জীবন।

অফ টপিকঃ পিচ্চি গত দুই সপ্তাহ ধরে নানার বাড়ি। তাই এখন ছবির দিকে তাকিয়ে থাকি।

DSC02217

৩,১৮৫ বার দেখা হয়েছে

৩৩ টি মন্তব্য : “কি লিখি”

  1. রুম্মান (১৯৯৩-৯৯)

    🙂


    আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
    ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
    ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
    সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
    ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
    আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।

    জবাব দিন
  2. তানভীর (৯৪-০০)

    অ-নে-ক-দি-ন পর মরতুজা ভাই! কেমন আছেন?

    WIF এর পেইজটাতে ঘুরে আসলাম, বিস্তারিত পড়ার সুযোগ এখনও হয়ে উঠেনি। আমাদেরকে যদি এইটা নিয়া হালকা জ্ঞান দিতেন তাইলে ভালো হইত বস!

    ভাতিজীর হাসিটা মাশাল্লাহ খুব সুন্দর। আরও অনেক বড় হয়ে উঠুক আমাদের মামণি। 🙂

    জবাব দিন
  3. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    আমি মামনিটারে আদর দেয়ার জন্যে এই পোস্টে আসছি।

    আপনার সাথে আমার কোন কথা নাই। দেখা হইলেও কথা কমুনা। আপনি খুব খারাপ লোক। খুব খারাপ।


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  4. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    বস, এখন চিন্তা কইরা দেখেন আর ২৪-২৫ বছর পরে বিয়া শাদি দিয়া এই জানের টুকরাডারে পরের বাড়ি পাঠায়া দিতে হবে। চিন্তা করেন আর দেখেন মেজাজটা কেমন বিলা হইতে থাকে ...

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।