কলেজে কাটানো দিনগুলিতে অনেক স্যারদের আদর-ভালবাসা বুঝতে পারিনি, যেটা বুঝতে পেরেছি কলেজ থেকে বের হবার দিন বা এরও অনেক পরে। সেইসব কিছু সৃতি তুলে ধরার চেষ্টা।
আমাদের ব্যাচের বি সেকশনের ফর্ম মাষ্টার ছিলেন আমাদের অনেক শ্রদ্ধেয় ও বন্ধু-সুলভ মিজান স্যার। বন্ধু-সুলভ কেন? কারণ আমাদের অনেকের গার্ল ফ্রেন্ড এর কাছে লিখা প্রেমপত্র ও বিভিন্ন অকেশান এর সময় কার্ডও আমরা স্যারকে দিয়ে কিনিয়ে পোস্ট করিয়েছি। আমার মনেহয়, মনেহয় বললে ভুল বলা হবে। আমি হলফ করে বলতে পারি যে, আমাদের ব্যাচের একটা ছেলেও স্যার এর অবদানকে কোনদিন ভুলতে পারবেনা। স্যারের সাথে আমাদের আরও একটা গভীর মিল আছে তাহলো আমাদের ব্যাচের যেদিন ক্যাডেট হিসেবে জন্ম, ঠিক সেইদিনই স্যারের কলেজের শিক্ষক হিসেবে জন্ম(মানে স্যার ও ঐ দিন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ক্যাডেট কলেজে)। এই ঘটনা লিখতে গিয়ে সবার আগে যে ঘটনা মনে পরছে যখন আমরা ক্লাস ১০ কিংবা ১১ এ। এখানে একটা ব্যাপার আগেই বলে রাখি। আমাদের ব্যাচের ছাত্রদেরকে স্যাররা বলতেন- “তোরা কবে কলেজ থেকে যাবি আর আমরা একটু শান্তি পাব। ” এবং মিজান স্যারকে নিয়ে সবাই অনেক হাসা হাসি করতো। আপনার ফর্মের ছেলে এটা করেছে ওটা করেছে বলে।
তখন ক্রস-কান্ট্রি মাত্র শেষ হয়েছে।
ক্রস-কান্ট্রির সময় আমাদের আরেফিন রিটার্ন টোকেন নিয়ে পিছনের পকেটে রেখে আবার কলেজের পথে দৌড়চ্ছে। উল্লেখ্য যে তখন কলেজ থেকে যে হাফ-প্যান্টগুলো দেয়া হত তার ঐ একটা মাত্রই পকেট ছিল। ও কলেজের পথে দৌড়চ্ছে আর দৌড়চ্ছে কিন্তু পথ আর শেষ হচ্ছে না। ও অনেক ক্লান্ত হয়ে ওর পিছনের পকেটে রাখা গ্লুকোজের প্যাকেট বের করে কিছু গ্লুকোজ খেয়ে ইস্টেমিনা সঞ্চয় করে নিল। কিছুদূর যাবার পর হটাত ওর পেছনের পকেটে হাত দিল টোকেনটা চেক করার জন্য। পকেটে হাত দিয়ে ওর দৌড় থেমে গেল। টোকেনটা পাচ্ছেনা, কই গেল? কই গেল? তখন ও বুঝতে পারল যে গ্লুকোজ বের করার সময় ওটা ওর পকেট থেকে পড়ে গেছে। কি করা যায় ভাবতে ভাবতে, যেখান থেকে টোকেন দিচ্ছিল সেইদিকে কুড়িগ্রামের একটা বাস যাচ্ছিল তার পেছনে ছাদে ওঠার সিঁড়িতে উঠে পড়ল। যখন ও দেখতে পেল টোকেন দেবার জায়গা, সেখান থেকেও আরও কিছুদূরে গিয়ে ও নামতে সফল হল। কিন্তু ঘটনা যা ঘটার তা ঘটে গেল। টোকেন দেবার ঐখানে দাঁড়ানো স্যার ও স্টাফরা ওকে দেখে ফেলেছে। যাই হোক ও আবার টোকেন নিয়ে কলেজে আসলো, কিন্তু ওকে ডিস-কোয়ালিফাই করা হল।
ঐ দিন অথবা তার ২-১ দিন পরের ঘটনা, আমরা কয়েকজন টিফিন ব্রেকের সময় স্যারদের রুমের বাইরে অপেক্ষা করছি লতিফা ম্যাডামের জন্য। ভিতরে আরিফ স্যার, সরকার স্যার সহ আরও কিছু জুনিয়র স্যাররা সবাই মিলে মিজান স্যারকে বলছে-“কি ব্যাপার মিজান ভাই আপনার ফর্মের ছেলে এইটা কি কাজ করলো? শেষমেশ গাড়ীর ছাদে করে ক্রস-কান্ট্রি? ” এই বলেই সবাই স্যারকে নিয়ে হাসতে লাগলো। হটাত মিজান স্যার টেবিলে থাপ্পড় দিলেন আর বলে উঠলেন –“আমার ফর্মের ছেলে দেখেই পারছে আপনাদের ফর্মের কোন ছেলেতো পারেনাই”। একথা শুনে সবাই একদম চুপ হয়ে গেল।
সেই দিনের এই ঘটনা আমাদের ফর্মের প্রতি তার ভালবাসারই বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু হতে পারেনা।
:thumbup: :thumbup:
খেয়া (২০০৬-২০১১)
ইসলাম, ভাল লিখেসিস। কিন্তু তুই কম জালাস নাই। শফিক স্যার এর পেছনে তুই কালি দিসিলি মনে নাই? পরের লেখাতে এগুলু লিখিস।
Mamun Boss,
আস্তে আস্তে সব আসবে। স্টক শেষ হলে তোদের কাছে চাইব ...।
Islam, CCR (1996-2002)
ভাল লিখসিস।
স্যারকে ::salute::
আমাদের ফর্ম মাস্টার স্যারও অনেক ভালো ছিলেন। জানি না অন্য ব্যাচের ছাত্রদের সাথে তিনি কেমন ব্যবহার করতেন। কিন্তু, আমরা তাকে যথেষ্ট একজন ভালো মানুষ একজন ভালো শিক্ষক হিসেবে পেয়েছি। তিনি হলেন বাংলার জনাব আহ্সানুল কবির স্যার। স্যারের ছেলে আদনান আমাদের সাথে পড়ত।
আমাদের আরেক ফর্মের ফর্ম মাস্টার ছিলেন আরো ভালো। রসায়নের জনাব বাতেন স্যার। উনার ছেলে রবিন ও আমাদের সাথে পড়ত।
তাদের কথা কখনও ভুলতে পারবো না। তাদের জন্যও রইল ::salute::
আমরাও স্যারকে পেয়েছি। নিতান্তই ভাল মানুষ ।।
Islam, CCR (1996-2002)
স্যারদের কাছে ঋণের শেষ নাই। থাক...থাকলাম নাহয় কিছু মানুষের কাছে ঋণী হয়ে...
আমাদের ফর্ম টীচার ছিলেন ম্যাথের সাইফুল ইসলাম স্যার।নেহায়েত ভাল মানুষ উনি। যেদিন কলেজ থেকে চলে আসি আমরা, আমরা ঠিক করেছিলাম,কেও কাঁদব না ( যদি ও লাস্ট পর্যন্ত সবাইই কেঁদে দিসিলাম ) । লাইন ধরে যখন সব টিচারদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিলাম, সাইফুল স্যার আমাদের সামনে এসে কেঁদে ফেলেন । কিচ্ছু না বলে দূরে গিয়ে দাঁড়ান।
আসলেই কলেজের স্যার ম্যাডামদের ভালবাসার কাছে আমরা চির ঋণী ই হয়ে থাকব ।
:just: ::salute::
ধন্যবাদ দোস্ত।
Islam, CCR (1996-2002)
Islam, good to see you and your writing.
Looking at the rearview mirror, it makes the eyes watery when i think of many of the great teachers. In our case i am sure many of our batchmate will agree that 20th Intake B form's form master Gulshan Ara madam, who earned a deep respect in our heart almost like the mother in mannville, which she tought us with such a passion.
keep it up bro. what are you doing now?