শংকর বাসস্ট্যান্ডে রিকশা করে যাচ্ছিলাম।
আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি গাঢ় নীল। আকাশের সুগন্ধী যোনীতে ফুটে আছে একথোকা মেঘ, ভেনাস দ্যা মিলোর মসৃণ ত্বকে যে শতাব্দীর ঘন সুবাস আয়েশে জমে আছে তার ভাস্কর্য্য। আমি সুন্দরের শরীর স্পর্শে পাগল হয়ে যাই, বাতাসের স্তনবোটায় জমা স্বেদবিন্দুর স্বাদ নিতে উদ্বেলিত হয়ে যাই। কবিতারা ঝাক বেধে যেন জন্মায় এই শরীরে।
উত্তর দক্ষিণ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম সেদিন। অসংখ্য শুন্যচোখ আর জব ওরিয়েন্টিজমের স্টান্টবাজির গিলোটিনে ঘাড় পেতে দেয়া ঠোটপালিশ মাখা প্লাস্টিকের ঠোট দেখলাম। নতুন ক্যাম্পাসে সুবিশাল ইমারত তাদের। ইটের পর ইট গেথে তৈরী সেই স্থাপত্য দেখে পকেট হাতড়িয়ে একটা ভাজ পরে যাওয়া গোল্ডলীফ বের করেছি। আমি কবিতা খুজতে যাইনি , অথবা কবিতা অদৃশ্য এই পৃথিবীতে। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাতাসে ভাসে চাকরীর খবর আর শক্তিমত্ত শিক্ষকদের পাচাটার গল্প। আমার স্বত্তাজুড়ে একটি নিক্ষেপ অপেক্ষায় থাকা থুতুর জন্ম ঘটে।
পদার্থ বিজ্ঞান পড়ে কি হবে অথবা দর্শন অথবা সাহিত্য? এরা কবেই ঢাকা পরে গেছে রঙ্গীন বিলবোর্ডের বেশ্যাবৃত্তির নীচে। এই জনপদে বেশ্যাবৃত্তিই এখন সর্বোত্তম চাকরী। টেলিভিশনের পর্দায় দেখি অসংখ্য মানুষ বুদ্ধিবৃত্তিক বেশ্যাবৃত্তির ঘানি টানছে। স্বমেহনের অর্গাজমের আনন্দেই তারা বুঁদ।
তবে এখনও যেহেতু মেঘ জন্ম নেয়, আর প্রিয়ার ঠোটে দেয়া চুম্বনে শরীর কবিতার মত জেগে ওঠে, এখনও যেহেতু স্বমেহনের স্থলে ভেনাস দ্যা মিলোর ভাস্কর্য্যে খুজে ফিরি মেঘের দাগ, প্রিয়ার বুকে গুজে দেই মেঘফুল, কবিতারা বাস্তুহারা তবে এই জন্মে কবিতা পান করলাম আমি। আমাদের ভেতরের নাইটেঙ্গেল মরে গেছে কবে। আসুন আমরা সৈয়দ হকের কথার মত গোল হয়ে আসি, ঘন হয়ে আসি। যেহেতু নাইটেঙ্গেলের ঠোটে দিতে পারি না কবিতার খাদ্য, আর নাইটেঙ্গেল খুজেও পায় না রক্ত বিসর্জনের জন্যে একটি গোলাপ কাঁটা সেহেতু অন্তত আজ একটি কবিতা পড়ি। একটি কবিতা ধারন করি। গোল হয়ে আসুন সবাই, ঘন হয়ে আসুন।
🙁
মাথার খুব কাছাকাছি এসেও শেষ পর্যন্ত উপরদিয়ে গেল ...
ভাল লিখেছিস ...
আমার আলমা ম্যাটাররে পচাইলা না প্রশংসা করলা ভাই? মাথার উপ্রে দিয়া গেল 🙁
পচাই নাই কইলাম। 😀 😀
আসলে অন্ত:সারশূন্যতার যে ট্রেন্ড পৃথিবী জুড়ে শুরু হয়েছে তার জন্যে হাহাকার থেকেই লেখাটা লেখা।
নর্থসাউথ লেখায় খালি গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে :grr:
------------------------------------------------------------------
কামলা খেটে যাই
লেখাটা ভাল্লাগছে। x-( তবে আমার আলমা ম্যাটাররে গিনিপিগ বানানোর(কানাকে সরাসরি কানা বলার) অপরাধে তোমার ভ্যাঞ্চাই x-(
মাথার উপ্রে দিয়া গেল
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু আমি না হয় গাছ আমার মাথার উপ্রে দিয়া যাইতেই পারে কিন্তু আপ্নেরো একি অবস্থা????!!!!!
ব্যাডমিন্টন র্যাকেট দিয়া বাড়ি দেন একটা, কর্কের মত মাটিতে পইড়া যাইব :grr:
------------------------------------------------------------------
কামলা খেটে যাই
বাড়ি দেওয়ার পর বুঝলাম।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আমি মনে হয় হালকা বুঝছি। ভালো লিখেছো।
তাত্ত্বিক কিছু ধারণা আছে 'বুদ্ধিবৃত্তিক বেশ্যাবৃত্তি'। কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে নেই, তারপর শেয়ার করা যাবে এ'ব্যাপারে আমার ধারণা।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই, এই ব্যাপারে আপনার মতামত জানার অপেক্ষায় রইলাম।
বুদ্ধিবৃত্তিক বেশ্যাবৃত্তি বলতে যদি নিজের মাথাকে চিন্তাভাবনাকে কারো কাছে বিকানো বুঝায় তাহলে হোসেনের সাথে আমি একমত। মানুষ হিসাবে আমার চিন্তা ভাবনা করার ক্ষমতা আছে। সে ক্ষমতা থাকার পরও তার প্রয়োগ যদি আমাকে নিয়ন্ত্রণকারী কোন প্রতিষ্ঠান হয় সেটা আসলেই প্যাথেটিক।
টেলিভিশন খুললে চিন্তাশক্তিক্ষমতা সম্পন্ন বুদ্ধিহীন বুদ্ধিজীবিদের বেশ্যবৃত্তি দেখে শিউরে উঠি। আর নাইটিংগেলের মৃত্যুতে আমি বোধ পাই না কিছু বলার কেননা আমার চারপাশ নাইটিংগেলকে ক্রমাগত হত্যা করে যায়।
বিস্তারিত আলোচনা করতে চাই এই বিষয়ে।
তবে মাহমুদভাই আপনি কমান্ড দেন। আমরা পিছে আছি। 😀 😀 😀
------------------------------------------------------------------
কামলা খেটে যাই
বুদ্ধিবৃত্তিক বেশ্যাবৃত্তির একটা উদাহরন হচ্ছে যখন কোন বুদ্ধিজীবি রাজনীতিতে নাম লেখায় তখন "মননোয়ন" পারিশ্রমিকের বিনিময়ে রাজনেতানেত্রীদের কলম আর মুখের কথায় যেখাবে তুষ্ঠ করতে থাকে তা দেখলে খুব ঘৃনা লাগে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
নোরার ডলস হাউস থেকে উদাহরণ টেনে জেনারেল জিয়ার প্রশংসায় গদগদ হওয়া ঢাবির এক প্রাক্তন ভিসি অথবা শেখ রেহানার ভার্সিটি পড়ুয়া মেয়ের কাছ থেকে আমেরিকার নির্বাচন সম্পর্কে ক্লাস করতে উপস্থিত হওয়া পিএইচডিধারী শিক্ষকদেরকে এই বুদ্ধিবৃত্তিক বেশ্যালয়ের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে ধরে নেয়া যায় সহজেই। সরকারী আমলা বা অন্য পেশার লোকদের কথা বাদ দেই-জাতির বিবেক যাঁদের নাম,সেই শিক্ষকদের এই অধঃপতন দেখলে লজ্জায় মরে যাই।এক ১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যা আমার কাছে ৩০ লক্ষ শহীদ হত্যার সমান বা তার চেয়েও বড় ক্ষতি হিসেবে দেখা দেয় আমাদের জাতীয় জীবনে।সত্যিকারের শিক্ষক/বুদ্ধিজীবীদের শূণ্যস্থান দখল করে নিয়েছে এই বুদ্ধিবৃত্তিক বেশ্যারা।আফসোস!
😕
অতএব, আমরা যারা কবিতায় প্রেম করি, লিখে এবং পড়ে ,তারা আরো কাছাকাছি আসি আলাপচারিতায়, গোল হয়ে আসি , ঘন হয়ে আসি... এই দু:সময়ে ।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
সিসিবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে একটা একটা কবিতা পাঠের আসর হয়ে যাক 😀 😀 লীড দেবেন কামরুল ভাই :grr: :grr:
------------------------------------------------------------------
কামলা খেটে যাই