প্রিন্সের গল্প -২য় কিস্তি

প্রিন্সের তালতো ভাই আরিফ

আমরা আসলে দুই বন্ধু না তিন বন্ধু হলাম হরিহর আত্মা। প্রিন্স (আসল নাম এর ধারে কাছেও না), আরিফ (আসল নামটা একটু বদলে দেয়া হয়েছে) আর আমি। কে কার বেশি আপন তা অবশ্য হাওয়া বদলের সাথে উঠানামা করত। যখন বিড়ি খাওয়ার পয়সা নাই তখন আরিফ আমাদের সবচেয়ে প্রিয় আর ওর বাসায় বিড়ি খেলে যখন ও ঘর থেকে বের করে দিত অথবা ওদের দোকান থেকে শার্ট বা গেঞ্জি নিযে আসলে ও যখন চোর বলত তখন আমি আর প্রিন্স একজন আর একজনের প্রিয় বন্ধু হয়ে যেতাম।

যা হোক কিভাবে যেন আরিফের বড় বোনের সাথে প্রিন্সের বড় ভাইয়ের বিয়ে হযে গেল। আমি ছুটিতে গিয়ে দেখি দুই বন্ধু নতুন পাতানো আত্মীয়তা নিয়ে মহা মশগুল। আমি কিরকম যেন বহিরাগত। একসময় আরিফ মামা এবং প্রিন্স চাচা হলো। আমি দুটোই। আরিফের সামনে আসলে বলি আমার ভাগনা কই, আর প্রিন্সকে দেখলে ভাতিজার কথা জিজ্ঞেস করি। যদিও ছেলের বাড়ি বলে প্রিন্সের দাম বেশি। এদিকে প্রিন্সের বাবা নাকি একদিন কি কারনে প্রিন্সকে একটা পুরোনো বন্দুক দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন। এই ভয়ে ওদের বাসায় ঢুকি না। তো একবার ভাগনা আরিফের বাসায় আসতেই মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল। ভাগনাকে সহবত শেখানো দরকার। আমি আর আরিফ মিলে ভাগনাকে শিখালাম কেউ নাম জিজ্ঞেস করলে কি বললে সবাই ভাল বলবে। সেইদিন আরিফের উপর মেজাজ একটু খিচরে ছিল। তিন ঘন্টা ধরে ওদের বাসায়, একবার চায়ের কথা জিজ্ঞেস ও করে নি। তাই আরিফ একটু সরতেই ভাগনাকে কানে কানে শিখিয়ে দিলাম কে শিখিয়েছে কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতে ছোটো মামা। তাহলে মামা খুশি হয়ে চকলেট দেবে।

শাহজালাল বিজ্ঞাণ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আবার প্রিন্সের বাবার বন্ধু। উনি প্রিন্সের বাসায় বেড়াতে এসেছেন। প্রিন্সের আব্বা তার নাতিকে দেখানোর জন্য ডাকলেন। নাতি কাছে আসতেই ভিসি সাহেব তাকে কোলে নিযে জিজ্ঞেস করলেন তোমার নাম কি ? সাথে সাথে ভাল হওয়ার জন্য নাতির উত্তর

ধুর কুত্তার বাচ্চা
ধুর শুয়রের বাচ্চা

প্রিন্সের বাবা বেয়াদপ ছেলে কে শিখিয়েছে তোমাকে বলে গর্জ়ে উঠতেই সে ভয়পেয়ে সব ভুলে বলে উঠল ছোটো চাচা।

বাকি কাহিনী আমি আর জানি না। আমাদের সম্পর্ক প্রিন্সের সাথে এরপর সূতোর উপর ঝুলে ছিল। আরিফের তালতো ভাই হওয়ার কারনে শেষ পর্যন্ত তা ভাঙ্গে নাই, কিন্তু পরে কি হয়েছিল তা জিজ্ঞেস করার সাহস ও হয়ে উঠে নি।

৩,১১৬ বার দেখা হয়েছে

৩৭ টি মন্তব্য : “প্রিন্সের গল্প -২য় কিস্তি”

  1. নাহ! ফাহিম ভাই তো প্রিন্স ভাইয়ের হাতে হারিকেন ধরাইয়া দিলো। 😉 😉
    প্রিন্স ভাই, আপ্নে কই? ফাহিম ভাই কিন্তু ২-১ এ আগাইয়া গেছে 😉 😉

    লেখা মজার ছিলো ফাহিম ভাই। :thumbup:

    জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    হাতে হারিকেনের সাথে কোমরে ছাতিও মনে হয় ফ্রি দিয়া দিছে...
    বহুত মজা পাইলাম ফাহিম ভাই।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)
    ধুর কুত্তার বাচ্চা
    ধুর শুয়রের বাচ্চা

    মাসুম বাচ্চাকে এইসব অশালীন বাক্য শেখানোর জন্য আল্পসের চূড়ায় ১০টা :frontroll: দাওতো ফাহিম। ব্লগ এডু তো ঘুমাইতাছে তাই জাতির বিবেকের দায়িত্ব পালন করতে করতে ক্লান্ত.....................


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  4. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)

    ফাহিম ভাই,
    লেখার স্টাইলটা জটিল...ব্যাপক মিজা পিলাম... 😀
    ২-১ গোলে আগায়া যাওয়ায় অভিনন্দন :boss:


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  5. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    কি জামানা পড়ছে, সমানে পাংগাইতেছে।

    আহারে সব গুলা ক্যামুন ক্যামুন কইরা কানতাছে। পাষান গলি যাবে, ফাহিম গলে না।

    কি যে করি? 😕


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  6. ফাহিম (৯০-৯৬)

    ফয়েজ ভাই, আপনি এদের কান্দা দেইখা ভুল বুইঝেন না। এরা সব বদমায়েস। কলেজে থাকতে শুনছি সিনিয়ারদের সাথে জুনিয়রদের মাঝে মাঝে ঝামেলা লাগে। কিন্তু জুনিয়রগুলা সিনিয়রদের মাঝে ঝামেলা বাধয়াইতে শুনি নাই। দেখেন না এরা আমারে কয় আমার সাথে আছে আর প্রিন্সরে কয় ফাহিম ভাই এইতা কি করল?দুইদিন পর আর কি করবে আল্লাহ জানেন। আপনি ও আমার সাথে সামিল হন।

    অই ফয়েজ ভাই বলছে আর দশটা :frontroll: দিতে

    জবাব দিন
  7. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    ফাহিম ভাই ডরে ডরে কমেন্টাইতাছি আবার পাঙ্গা শুরু করে দিবেন এই জন্য। ভাল ছিল কিন্তু অবকাশ ও ছিল ( কপিরাইট জানি কার ভুলে গেছি )। লেখা চরম ছিল বলতে পারতেছিনা কারণ পাংগারে আমি আবার ভয় পাই।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।