…… ‘পদ্মার ইলিশ কলিং মধুমতীর পাঙ্গাশ ওভার’ !….. ‘পদ্মার ইলিশ কলিং মধুমতীর পাঙ্গাশ ওভার’ !….. ঠা ঠা ঠা…..ডিশু ডিশু…. ঘোরতর যুদ্ধ চারিদিকে !! হালায় সব হালাক হইয়া গেল নাকি? মইরা সাফ?? দিস ইজ কর্নেল আবিদ।নিড আর্জেন্ট ফায়ার কভার, পজিশন…. প্লিজ রিসিভ। ওভার।
শালা আবিদ থামলি? প্রেপ চলছে, ডিউটি মাস্টার আসলে এক্সট্রা ড্রিল লাগবে। বন্ধ কর তোর এই যুদ্ধ যুদ্ধ কমেন্ট্রী খেলা !
আরে বেটা ডিউটি মাস্টার কে ভয় পাস? আমরা ডিউটি মাস্টার থেকে সিনিয়ার জানিস? আমরা ক্যাডেট কলেজে আছি চার বছর, ওই ‘ধুর ভাই’ এসছে চার মাস। ওকে তোয়াক্কা করে কে?আবার শুরু হয় ওর যুদ্ধ যুদ্ধ কমেন্ট্রী !
আসলে স্যার ভদ্রলোক একদম আনকোরা পাশ করে চাকরীতে ঢুকেছে! আমাদের ক্লাশ টেনের সাথে বন্ধু সুলভ ব্যবহার করতে যেয়ে ভুলে ‘ধুর ভাই’ বলে ফেলেছিল, তাই বেচারার নামই হয়ে গেল ‘ধুর ভাই’!
সেই আবিদ।আবিদ হোসেইন।সহজ-সরল, ভদ্র-শান্ত সহপাঠী। আমার সারা জিবনের বন্ধু।ও শহিদুল্লাহ ভবনে, আমি ফজলুল হক।দুই হাউজের অধিবাসিদের মধ্যে সাক্ষ্যতা বিভিন্ন কারনে একটু কম।কিন্তু আবিদ আর আমার মধ্যে এর প্রভাব কখনো পরেনি।
ক্যাডেট কলেজ জীবনের পর, ওর সাথে আর এখন পর্যন্ত কখনো দেখা হয়নি। দীর্ঘ তেত্তিরিশ/চৌএিশ বছর।ও ক্যাডেট কলেজ শেষে জাহাঙ্গীর নগর ভার্সিটিতে, আমি জার্মানিতে।পরবর্তীতে ও যুক্ত রাষ্ট্রে স্থায়ী ভাবে বসবাসরত।
ফোনে কথা হয়েছে মাত্র দুই তিন বার।সেবার নিউ ইয়র্কে আরেক সহপাঠী লিয়াকতের বাসা থেকে ওর ক্যালিফোর্নিয়ার নম্বর পাওয়াতে অনেক অনেক দিন পর কথা হয়।
“দোস্ত তোর নিউ ইয়র্কের কাজ সেরে চলে আয় এখানে।ছুটি নিয়ে দুজনে মিলে ঘুরে বেড়াবো, সারা রাত গল্প করবো।আগের মত তুই গীটার বাজাবি, আমরা গান করবো।
আর সবচেয়ে দরকারি কথা শোন,বিদেশে-বিগায়ে টাকা পয়সা লাগলে জাস্ট ফোন করে দিস।হেজিট্যাঁট করিস না যেন।পাঠিয়ে দিব” । সেই আগের মতই আছে, গার্জিয়ানলি উপদেশ। আচ্ছা বাপ জান! বলে তখনকার মত মুক্তি।
মনটা সব সময়ের মত ভরে উঠে ওর স্নেহ ভরা ওই আশ্বাস বানীতে । ক্যালিফোর্নিয়ার দিকে আর যাওয়া ও হয়নি, আবিদের সাথে আর দেখাও হয়নি ।
কিছু কিছু মানুষ আছে, যাদের সাথে ভাগ করা উষ্ণ স্মৃতিগুলি ‘ডীপ ফ্রোজেন’ করে হৃদয়ে সযত্নে ফাইল বন্ধী হয়ে গাঁথা থাকে।কখনো বেরিয়ে পরলে, সেই উষ্ণতা সাথে সাথে আবার ফিরে পায়।আবিদের স্মৃতি হল ঠিক তেমনি।
শুক্রবার সকাল।আলসি করে নাস্তা সেরে ফেস বুক খুলতেই ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ আবিদ হোসেন।সেই একিই আবিদ। পয়ত্রিশ বছর পর!
ইনফো থেকে ওর হারিয়ে যাওয়া ফোন নম্বর পেয়ে কল দিতেই,ওপার থেকে সেই কণ্ঠ ‘ আবিদ হোসেন স্পিকিং’।
তোমার দুলাভাই ফ্রম বাংলাদেশ স্পিকিং।শালা !
দোস্ত, আজিজ? আইজ্জা ?????
সময় যেন হঠাৎ করে থমকে গেল। কিভাবে কখন পেড়িয়ে গেল সময়, খেয়াল নেই।জুম্মার আজান দেয়াতে সম্বিৎ ফিরে পেলাম। ধন্যবাদ ফেসবুক! ধন্যবাদ “চিনির পাহাড়” সাহেবের সামাজিক আন্তর্জাল !!!!! (Zucker: Sugar, Berg: Mountain= Zuckerberg: Suger mountain)
ভীষণ মজা পেলাম লেখাটা পড়ে।
আর এই কথাটা বেশী ভাল লাগল।
তানভীর আহমেদ
অনেক দিন পরে হাল্কা মেজাজের লিখা লিখতে ও বেশ মজা পাচ্ছিলাম।এখন আর একদম সময় হয়না লিখার।আর রুঢ় সমালোচকদের কল্যাণে লিখার ইচ্ছেও আর হয়না তেমন। ধন্যবাদ তোমাকে ।
Smile n live, help let others do!
"তোমার দুলাভাই ফ্রম বাংলাদেশ স্পিকিং" 😀
😀 😀 😀
:-B
Smile n live, help let others do!
(সম্পাদিত)
Smile n live, help let others do!
:))
হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি
“কোথায় হারিয়ে গেল সোনালি সে দিন গুলি… আজ আর নেই”…।
Smile n live, help let others do!