এইচ এস সি কাহিনী…

কামরুলের এইচ এস সি’র রেজাল্ট নিয়ে লেখার প্রেক্ষিতে আমার একটা লেখা লিখবার কথা ছিল এবং আমি প্রমিজ করেছিলাম যে আজকের মধ্যে লিখব। তাই প্রমিজ রক্ষা করতে চলছি।

লেখা পড়ার ব্যাপারে আমার অনীহার কথা ইতিপূর্বে আমার “ফিরে দেখা” লেখাটিতে বলেছিলাম। ক্লাশ ইলেভেন এবং টুয়েল্ভ এ আমি এতটাই বান্দর ছিলাম যে কি আর বলবো। আমার রুমমেট ছিল হাফিজ এবং আরাফাত। আরাফাত ছিল কলেজ কালচারাল প্রিফেক্ট। সেই সুবাদে গান শোনার ক্যাসেট প্লেয়ারটা অবৈধভাবে সর্বদা আমাদের রুমেই থাকতো। আর অতিরিক্ত সঙ্গীত প্রীতির কারনে সেটা আবার আমার বেডে থাকতো। বিছানায় শুয়ে শুয়ে সদ্য ঘুমভাঙ্গা আলস্য নিয়ে “পায়েল মেরে জাদু জাগাতে হে…” কিংবা “তু চিজ বাড়ি হ্যায় মাস্ত মাস্ত…” অথবা ” টিপ টিপ বারসা পানি…” গান গুলো শোনার মজাই ছিলো অন্যরকম। ঐ উঠতি বয়সে তখন নিজেকে রাজা বাদশা কিংবা সিনেমার নায়ক মনে হত। হাফিজ ক্লাশ সেভেনের নভিসেস প্যারেডের “বেস্ট টার্ণড আউট ক্যাডেট” ছিল। সেভেনের স্বল্প বুদ্ধিতে আমরা ধরে নিতাম যে বেস্ট টার্ণড আউট ক্যাডেট ই তো টুয়েল্ভে উঠে কলেজ প্রিফেক্ট হবে। তো সেই হবু সিপি’র পরবর্তী কালে ডিসিপ্লিন এত ভালো ছিল যে, আমাদের ব্যাচে হাফিজের পার্সোনাল ফাইলের চেয়ে মোটা আর কারো ফাইল ছিল বলে আমাদের জানা ছিলোনা। মোটা কি কারণে ছিল, তা আশা করি কাউকে আর বুঝিয়ে বলতে হবেনা। হাফিজ ছিল আমার সিগারেট গূরু। নিজেকে হাফিজের মত উপযুক্ত আর কাবিল প্রমাণিত করার জন্যই অর কেনা মিক্সার থেকে বানিয়ে দেয়া সিগারেটে টান দিতাম। আরাফাত ছিল কালচারালবাদী। তো আমি এই দুইজনের সম্মিলনে তৈরী কিছু একটা। কালচারাল এবং ইনডিসিপ্লিন…।। এইরকম একটা রুমে আর যাইহোক, অন্তত পড়া লেখার পরিবেশ আমরা রাখিনি। নিজেরা তো পড়তাম ই না অন্যদের ও পড়তে দিতাম না (আরাফাত মাঝে মাঝে অবশ্য আমাদের সাথে বেঈমানী করে এই প্রজেক্ট থেকে দূরে থাকতো)। বেশ কিছু রুম আমার আর হাফিজের জন্য ছিল আউট অফ বাউন্ড।

মাস্তানি, দুস্টুমি, বদমায়েশি করতেই বেশী আগ্রহবোধ করতাম তখন। পড়াশুনা যে আমার একটা অবশ্যকরণীয় কাজ এটা তখন ভূলেই গিয়েছিলাম। যাইহোক, প্রি-টেষ্ট, টেষ্ট, প্রোগ্রেসিভ টেষ্ট এমন কি কলেজ ফাইনাল পরীক্ষা ও শেষ। এই মুহুর্তে এইচএসসি পরীক্ষার আর যখন প্রায় এক মাস বাকী, তখন স্যার দের টনক নড়ল। নড়ে চড়ে বসলেন তারা। ৪টি পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে বসলেন তারা। চক্ষু চড়কগাছ স্যারদের। বের করা হলো ইলেভেন এর রেজাল্ট। স্তব্ধ ওনারা। তাদের মাথা তে তখন একটাই চিন্তা, “কি করে আহসান এবং হাফিজের সেকেন্ড ডিভিশন ঠেকাই?” অনেক গবেষণার পর সাব্যস্ত করা হলো, আমাকে রুম থেকে সরিয়ে অন্য রুমে নেয়া হবে। আদেশ দেয়া হলো। সেভেনের ৩টা বাচ্চাকে সরিয়ে নেয়া হলো অন্য জায়গাতে। আমার রুমমেট হিসেবে নিয়ে আসা হলো আমাদের ব্যাচের সবচেয়ে নম্র, ভদ্র, নামাজি এবং যে নিয়ম মাফিক রূটিন ধরে পড়ালেখা করে, সেই নাসির কে। নাসিরের প্রতি নির্দেশ ছিল এই এক মাস আমাকে যে করেই হোক এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে যেন আমি অন্তত ৬০০ নম্বর পাই। এর বেশী আর একটা নম্বর ও লাগবে না কলেজ কর্তৃপক্ষের।

নাসির লেগে গেলো তার আ্যসাইনমেন্টে। নাসির আমার জন্য আমার পূর্বের রুমকে আউট অফ বাউন্ড ঘোষনা করলো, আর আমার এক্স রুমমেটদের জন্য আমার বর্তমান রুম। আরাফাত, হাফিজ বা আমি কেউই তখন নাসির কে ঘাটাতে সাহস পাচ্ছিলামনা। ওর কাছে তখন জর্জ বুশের মত ক্ষমতা। অগত্যা আমি খাচায় বন্দী পাখির মত ছটফট করতে লাগলাম। নিয়ম মত পড়তে বসা, খেতে যাওয়া, নাসিরের সাথে ৫ ওয়াক্ত নামায পড়া…সব মিলিয়ে একটা অন্য ধারার জীবন আমি যাপন করছিলাম তখন। সকালে আমরা যখন নামায পড়ে পড়তে বসার আয়োজন করতাম তখন আমার আগের রুম থেকে ভেসে আসতো, “পায়েল মেরে…ছুন ছুন ছুন…”। কষ্টে আমার বুকটা ফেটে যেত। কিন্তু আমার মত সুবোধ বালক তখন কলেজে আর দ্বিতীয়টি ছিলনা। তাই, কানের মধ্যে আঙ্গুল ঢুকিয়ে পড়তে বসতাম।

খাচার পাখিও একসময় নিয়তিকে মেনে নেয়। ছটফট বন্ধ করে খাচাকে ভালবাসতে শুরু করে। আমিও তেমনি নিরুপায় হয়ে আমার এই জীবন ধারাকে ভালোবাসা শুরু করলাম। কিন্তু শুরু হল নতুন এক সমস্যা। বড় ই জ্বালাময়ী এবং প্রকট সে সমস্যা। যেটা ই পড়তে যাই, সেটাই নতুন লাগে। আ্যভোগ্যাড্রো প্রকল্পের কথা তো দূরে থাক, জীবনে কখনো আ্যভোগ্যাড্রো সাহেবের নাম শুনেছি বলেই তো মনে পড়েনা। এর মধ্যে আরেকটা সমস্যা ছিলো। এসএসসি তে আমার অংক ছিলনা কিন্তু আমার বাবার পীড়াপীড়িতে এইচএসসি তে আমাকে অংক নিতে হয়েছিল। এখন সবাই একটু আমার দুরবস্থার কথাটা একবার ভাববার চেষ্টা করে দেখুন তো কি অবস্থাটা দাঁড়ায়…।

যাইহোক, গুটি গুটি পায়ে পরীক্ষা এসে হাজির। আমার বুক দুরু দুরু। কোন মতেই সাহস পাইনা। সবার প্রথমে ছিল বাংলা ১ম পত্র। দোয়া দুরুদ যা ছিল, সব পড়ে ঢুকলাম হলে। ভালোই হলো পরীক্ষা (অবশ্য বাংলাতে খারাপ হবার ই বা কি আছে?) । ইংরেজী ১ম পত্র পর্যন্ত ৩টি পরীক্ষাতেই ১০০ নম্বরের উত্তর দিয়েছি। ইংরেজী ২য় পত্রে ৫ নম্বর ছাড়ার মধ্য দিয়ে শুরু হলো আমার নম্বর ছাড়ার খেলা। একেকটা পরীক্ষা দেই আর নিজে নিজেই কুকড়ে যেতে থাকি। অবশেষে পরীক্ষা শেষে নাসির আমার সব প্রশ্ন নিয়ে আমাকে সহ বসলো। হিসাব নিকাশ করে দেখা গেল যে, ১২০০ নম্বরের মধ্যে আমি ৯২৫ বা ৯৫০ এরকম মার্কের পরীক্ষা দিতে পেরেছি। বাকী নম্ভর হয় ছেড়ে দিয়ে এসেছি কিংবা উত্তর ভূল দিয়েছি। আমিতো মোটামুটি সেকেন্ড ডিভিশনের জন্য মানসিকভাবে রেডী।

কলেজ থেকে বাইরে এসে যখন আর্মিতে চান্স পেলাম তখন আমি মহা খুশী। কারন, আমাকে আর পড়তে হবেনা (???!!!???)। আর সাথে সাথে আরেকটা ব্যাপারে দোয়া করতে থাকলাম আমি যেন একটা সেকেন্ড ডিভিশন পাই (অবশ্য, আমি কনভিন্সড ছিলাম যে আমি সেকেন্ড ডিভিশ্ন মার্কা পরীক্ষাই দিয়েছি)। কারণ, তাহলে প্রিন্সিপ্যাল কে আর্মি হেড কোয়ার্টার্স থেকে শো কজ করবে। আমার জীবনের তো একটা গতি হয়ে ই গেল।

অবশেষে এল সেই মহেন্দ্রক্ষণ। রেজাল্ট দেবে। আমি তখন পটুয়াখালীতে। বাসায় টান টান উত্তেজনা। আমার সারা শরীর অবস হয়ে আসছিল। কি জবাব দেব? আরো কিছু উপলব্ধি আসলো মনের মাঝে…বাইরের মানুষকে মুখ দেখাব কি করে? কলেজে ফোন করা হলো। আমার হৃদ স্পন্দন থেমে যাচ্ছিল। জানলাম, ৪৬ জন ষ্টার মার্কস পেয়েছে, আর ২ জন শুধু মাত্র ফার্ষ্ট ডিভিশন। বুঝলাম আমি আর হাফিজ হলাম এই মানিকজোড়। আমার ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল। বাইরের মানুষের কাছে অন্তত ইজ্জতের ফালুদা হয়নি।

প্রচন্ড কষ্ট করেছিল নাসির আমকে নিয়ে। স্যারদের কথা না হয় বাদই দিলাম। আমার জীবনের সাফল্যের জন্য মানুষগুলো কি অক্লান্ত পরিশ্রমই না করেছে। কলেজ থেকে বের হবার পড়ে নাসির বিগড়ে গেল। আজেবাজে ছেলে পেলের সাথে ওঠা বসা করতে লাগলো। নাসিরের পরিবারে নাসির ই ছিল একমাত্র ভরসা। পারিবারিক অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবে ছেলে এটাই হয়তো ছিল অর বাবা মার আশা। কিন্তু তাদের সেই আশা পুরণ করেনি। আমার মত একটা অথর্ব স্টুডেন্টকে যে মানুষে পরিণত করেছিল, সেই ছেলেটি নিজের জীবন এমন কি নিজের সম্পুর্ণ পরিবারের সদস্যদের জীবন নিয়ে কেন এমন ছিনিমিনি খেললো বুঝতে পারিনা। তবে কি ওর জীবনের সফলতার ছদকা হিসেবে আমি আজ প্রতিষ্ঠিত? বুঝতে পারিনা।

নাসিরের সাথে আমাদের কারোই তেমন কোন যোগাযোগ নেই। কি করে। কোথায় আছে কিছুই জানিনা। মনে মনে শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যে ছেলেটি একটি বিপথগামী ছেলেকে সুপথে নিয়ে এসেছে, আল্লাহ তুমি তাকে রহম করো। মনের মধ্যে অব্যক্ত অনেক যন্ত্রন…। আর কিছু লিখতে ইচ্ছে করছেনা……।

(আমার কিছু শুভাকাংক্ষীরা বলেছেন, আমার লেখাগুলো নাকি কেমন যেন বাংলা ছবির মত একটু “স্যাড এন্ডিং” টাইপের হয়ে যায়। তাই আজকে একটা মজার কথা দিয়ে লেখাটা শেষ করবো। আমার জীবনের অত্যাশ্চার্য্য এবং বিস্ময়কর ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি বা মুহূর্ত টি ছিল জানেন? যখন আমি জানলাম শুধু ফার্ষ্ট ডিভিশন পাওয়া ঐ দুইজন আমি এবং হাফিজ নই।)

৩,৩৪৪ বার দেখা হয়েছে

৩৮ টি মন্তব্য : “এইচ এস সি কাহিনী…”

  1. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    আহসান ভাই,আপনার লেখাগুলা প্রতিবারের মত কিভাবে কিভাবে জানি মনের সবচেয়ে গভীরের তরলতম স্থানে গিয়ে হানা দেয়।যে মানুষটা বাংলাদেশের কমান্ডো ব্যাটালিয়নের শুধুমাত্র সদস্যই নয়,একজন ইন্সট্রাক্টরও,তার কঠোরতার আড়ালে কিভাবে এত আবেগ লুকিয়ে থাকে ভাবাই যায়না।কমান্ডো ছুরি নিয়ে যে মানুষটা কঙ্গোর গভীর জঙ্গলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে অভ্যস্ত,সেই মানুষটার কীবোর্ডের স্পর্শে এরকম হৃদয়ছোঁয়া লেখা কিভাবে বের হয় পরম করুণাময়ই বোদধহয় এর উত্তর দিতে পারবেন।

    আমি এই লেখা নিয়ে আমার কাছাকাছি অভিজ্ঞতার কথা অবশ্যই লিখব।কিন্তু এ মুহুর্তে এই লেখাটি নিয়ে এতটাই অভিভূত যে কিছুটা সময় চেইয়ে নিচ্ছি।

    ভালো থাকবেন ভাইয়া।

    জবাব দিন
    • আহ্সান (৮৮-৯৪)

      তুমি একটু বেশি অভিভূত হও…। সব মানুষ অভিভূত হতে পারেনা, বা জানেও না…। তোমার মনটা সাগরের মত বিশাল বলেই হয়তোবা পারছো…। তবে একথা অনস্বীকার্য যে, তোমরা এভাবে কমেন্ট কর বলেই পরবর্তী লেখার উৎসাহ পাই। আমাকে এভাবে ননস্টপ উৎসাহ দেবার জন্য আমি তোমাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

      ঐ মাসরুফ,
      আমি লেখাতে ছবি আ্যড করতে পারিনা কেন? অনেক চেষ্টা করলাম…হইলনা তো…। সব কিছু দেবার পরে এমন কি ডেস্ক্রিপশন ও দেবার পরে যখন “সেভ চেঞ্জ” কমান্ড দেয়া হয় তখন থেকে একটা সাদা বর্গক্ষেত্র এসে হাজির হয়…মাগার পিকচার আ্যড হবার আর কোন খবর থাকেনা…। কি রহস্য এর মাঝে?

      জবাব দিন
  2. আমাদের এক বন্ধু ইন্টার পরীক্ষার রেজাল্টের আগ পর্যন্ত টেনশনে ছিল পাশ করবে কিনা...পরে ও স্টার মার্কস সহ ফার্স্ট ডিভিশনে পাশ করছিল...
    আমাদেরকে অহেতুক টেনশনে রাখার অপরাধে পরে ওকে আমরা বছরের দ্বিতীয় জন্মদিন পালন করতে বাধ্য করি(অবশ্যই চাইনিজ)...!!!
    আহসান ভাই, আপনার কাছে আমাদের খাওয়া পাওনা রইল... 😀 😀

    জবাব দিন
  3. ahsan bhaia.......jodio apni amar onek onek senior tao ekta kotha na bole parlam na.........

    ami jodi apnar batchmate hotam tahole apanke ami konodin khoma kortam na....
    cause jokhon nasir bhaia'r sujog chilo, i mean cadet life e to uni apnar jonne sob e korsen ( apnar HSC result prove kore eita)....

    but apni in return ki korlen ???

    amader batchmate der o onekei derailed hoa jete nislo.....but amra sesh porjonto tader save korte parsi.

    apnar description jodi thik hoi, jodi really apni feel koren tar kase apnar onk debt tahole apni pass korar 14 year por ajke tar khoj janen na, unar derailed hoa apni check dite paren nai eita share na korlei valo lagto.

    bapar tak beyadobi hisebe treat korben na...cause amar khb khb khrp lagse post ta pore.

    জবাব দিন
    • তৌফিক

      ভাই সিউল, নিজে আসল পরিস্থিতি না ফেস করে একটা মানুষকে সেই পরিস্থিতির জন্য জাজ করা তোমার মনে হয় ঠিক হইল না। আমি তোমার আবেগটা বুঝতে পারি, কিন্তু এর বহিপ্রকাশের ব্যাপারে আমাদের আরেকটু সহনশীল হওয়াটা বোধকরি দরকার।

      জবাব দিন
      • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

        তৌফিক ভাইয়ের সাথে একমত।ক্যাডেট কলেজে আমরা সবাই একটা গন্ডির মধ্যে থাকি কিন্তু বাইরে এলে একেক জন ছড়িয়ে পড়ি একেক প্রান্তে।
        সেই ভিন্ন প্রান্তে থেকেও আহসান ভাইয়ের মত মানুষ,যিনি তারঁ দুঃখের দিনের বন্ধুকে ভুলে না গিয়ে এখানে তুলে ধরেছেন তাঁর কষ্টের কথা-সেই মানুষটি যথাসাধ্য চেষ্টা করেননি,এমন সিদ্ধান্তে আসার আগে দুবার ভালভাবে চিন্তা করে নেয়া আমাদের সবারই কাম্য।

        জবাব দিন
        • hm.....masroof bhaia nd taufique bhaia apnara vul bolen nai...
          ahsan bhaia ki ki korsen eita jehetu bolen nai so amar maybe kotha gulo bolar right nai.....

          kintu bhaia ami kintu take moteo dosh deini....fellow feelings thke kotha ta bolsi....amar emon o batchmate ase jar sathe amar puro cadet life e 10/15 bar er beshi kotha hoini cause amra different house + different form + different table + different friend circle e thaksi 6 year.....but pass kore ber hoar 4 year poreo kintu ami tar sob details e jani.....

          amar khrp lagse ei jaiga tatei....
          senior karo kase jokhoni shuni "ami tar khoj jani na" ekta odvut voi peye boshe....tahole ki ekdin amader obosthao emon hobe....thats all...

          arekta kotha.....ami kono typer personal attack korinai....so pls keu bapar ta ovabe dkhben na.

          জবাব দিন
          • ভাই সিউল,
            তোমার ভয়টা অমূলক না...
            কিন্তু জীবন বড়ই কঠিন... দূরত্ব যে কখন বেড়ে যাবে তুমি বুঝতেই পারবানা...পড়াশুনা, জব, ঘর-সংসার এসব নিয়ে যখন সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়বে দূরত্ব তখনই বাড়তে শুরু করবে।
            তবে হ্যাঁ, বন্ধুত্ব কিন্তু ঠিকই থাকবে, হয়ত নিয়মিত দেখা-সাক্ষাত্‌ হবে না...এই যা...
            আমরা তো অনেক লাকি...এখন যোগাযোগের কত মাধ্যম রয়েছে।
            জিপি বলছে না, 'দূরত্ব যতই হোক কাছে থাকুন...??'
            সবাই কাছাকাছি থেক...!!!!

            জবাব দিন
    • সামিয়া (৯৯-০৫)

      ভাইয়া আসলে কিছু কিছু জিনিস এমন হঠাৎ করে হয়ে যায়...যে কিছু করা যায় না।
      একদম আগের মুহুর্তেও আপনি কিছু জানেন না, পরের মুহুর্তে ঘটা ঘটনার জন্য নিজেকে দায়ী মনে হলেও...আসলে করার কিছু থাকে না।
      things are different u know, in different places, different times.

      জবাব দিন
  4. শাহরিয়ার (২০০৪-২০১০)

    আচ্ছা,নাসির ভাই বিগরে গেল কেন????
    এটা কি বাইরে আসার দোষ,নাকি ক্যাডেট কলেজে পড়ার ফল??
    আমি মিন করতে চাচ্ছি,ক্যাডেট কলেজ কি ওনাকে শুদ্ধ রাখসিলো???


    People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.

    জবাব দিন
  5. আহসান ভাই
    একদিন দেরি করছেন লেখা দিতে। আপনার নামে আরো ৩ টা ব্লগ ইস্যু করা হইলো।
    এইটা দারুন হইসে।

    @সিউল
    ভাইয়া, বাংলায় লেখার চেষ্টা করো। খুব কঠিন কিছু না। একটু অভ্যাস করলেই হয়ে যাবে। ভালো থেকো।

    জবাব দিন
  6. আহ্সান (৮৮-৯৪)

    সিউল,
    তোমার ফিলিংস এর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাবোধ রেখে আমি আমার কমেন্টটা লিখছি...।
    আমি তোমার প্রোফাইল দেখেছি আমার এই কমেন্ট লেখার পূর্বে। তোমার প্রোফাইল দেখার আগে আমি ভেবেছিলাম তুমি হয়তো এখনো এক্স-ক্যাডেট হওনি। কিন্তু আমার সে ধারনা ভূল প্রমাণিত হলো। তুমি এক্স-ক্যাডেট হয়েছো আরো ৪ বছর আগে। সুতরাং, বাস্তবতা তুমি বোঝনা, এই অপবাদ অন্ততঃ তোমাকে আমি দিতে পারিনা। তবে হ্যা, সমস্যা তো একটা আছেই, নইলে এমন মন্তব্য আসবে কেন? সমস্যা টা হলো, হয় আমি লেখক হিসেবে যা বলতে চেয়েছি,সেই মেসেজ টা ঠিক মতো পাঠক হিসেবে তোমার কাছে পৌঁছাতে পারিনি, নয়তো তুমি বুঝতে পারনি। তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে প্রথম কারণটাই এর জন্য দায়ী।

    নাসির কিভাবে বিগড়েছে, কোথায় বিগড়েছে, কি কি কাজ করে বিগড়েছে সে বৃত্তান্ত আমি কোনভাবেই দেবনা। কারণ,সে আমার বন্ধু। আমি কোন দিনও চাইবোনা যে আমার বন্ধুর খারাপ দিক গুলো সবাই পাবলিকলি জানুক। আর একারণেই আমার লেখার মাঝে একটা গ্যাপ তৈরী হয়েছে। ইভেন্ট হিসেব করে আমি এখন বলবোনা যে অমুক দিন ও অমুক কাজটা করেছে এবং তার প্রেক্ষিতে ওকে শোধরানোর জন্য আমরা এই কাজটি করেছি। তবে "একজন ক্যাডেট কোনভাবেই জেনে শুনে তার আরেক ক্লাশমেট ক্যাডেটের ধ্বংস হয়ে যাওয়াটা উপভোগ করবেনা" এটুকু বিশ্বাস একজন প্রাক্তন ক্যাডেট হিসেবে তোমার কাছ থেকে আশা করাটা আমার অন্যায় হবেনা।

    উপভোগ আমরাও করিনি। তবে ইচ্ছে করে সেই ব্যাপারগুলো আমি আমার লেখাতে আনিনি। আমি বা আমার অন্যান্য বন্ধুরা কতখানি করেছি, সেই অবদান আমি ইচ্ছে করেই জাহির করিনি। করে কি লাভ? আল্টিমেট রেজাল্ট যেটা সেটা তো আর বদলানো যাবেনা তাইনা?

    কলেজ থেকে বের হবার পরে আর্মিতে এলাম। দুই বছর কিভাবে যায় আশা করি তোমাকে তা বলে দিতে হবেনা। তোমারো তো বন্ধুরা আর্মি তে আছে। এর পরে জুনিয়র অফিসার হিসেবে চাকুরী করা, বিভিন্ন বাধ্যতামূলক কোর্স করা ইত্যাদি নানা বিষয়, আমাকে সমাজের মূলস্রোত থেকে বাইরে রেখেছে। আমি ঢাকার ছেলে নই, আর পোষ্টিং ও ঢাকাতে ছিলনা। আজকের মত এত সহজ প্রযুক্তি (বিশেষ করে মোবাইল)ও আমার হাতে ছিলোনা যে চাইলেই আমি কারো খোজ নিতে পারতাম। আমি জানিনা তোমার দর্শন কিরকমের। কিন্তু, নাসিরের পরিবারের যেমন নাসিরকে প্রয়োজন ছিল, আমার পরিবারের ও তেমনি আমাকে প্রয়োজন ছিলো। কলেজ থেকে বের হবার পর সবাই ই নিজের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তান্বিত এবং ব্যস্ত থাকে। তোমার কথা হয়তো আলাদা, কিন্তু আমি পারিনি ঐ সময় খবর রাখতে যে নাসির কি ডিরেইল্ড হচ্ছে কি হচ্ছেনা...। আমি খুবই সাধারণ মাপের একটা ছেলে, যার পক্ষে একই সাথে নিজের ভবিষ্যত এবং অন্যের ভবিষ্যত ট্র্যাক করা সম্ভব ছিলনা। ঢাকাতে আমার কোন বেইস ছিলনা...। তাই আমি নিজেকে সামাল দিতে দিতে অনেকটা সময় পেড়িয়ে গেছে। নাসির নিজে থেকে আমাদের সাথে কখনও যোগাযোগ করতোনা। আমার যদি অনেক পয়সা থাকতো, তাহলে হয়তোবা তখন মোবাইল ফোন কিনে ওর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু তা হয়নি। আমরা সবাই যখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত, ঠিক তখনই নাসির আমাদের গন্ডী ছেড়ে অন্য গন্ডীতে পা বাড়ায়। ওর ব্যাপারগুলো আমি বর্ণনা করতে পারছিনা। বর্ণনা করলে হয়তোবা বুঝতে যে আসলেই এই ব্যাপারগুলোতে আমার বা আমাদের করণীয় কি ছিল।

    নাসির আমার জন্য অনেক করেছে এ কথা সত্য। আমি কি করেছি তা আমি বলতে চাইছিনা। তবে তোমার কথাগুলো দেখার পরে বিকেল থেকে আমি অনেক চিন্তা করেছি, আসলেই কি আমি স্বার্থপর?

    নিজেকে একবার আমার জায়গাতে কল্পনা করোতো ভাইয়া। দুই বছর বিএমএ'তে আটকা। ছুটিতে ঢাকা থাকিনা, কারণ, ঢাকাতে আমার কোন বেইস নেই। পাস আউট করার পরে পোস্টিং যশোরে। আমার পক্ষে কি করার ছিল? হ্যা, একটা করার ছিলো...I should not have joined army, and should have tracked him right after passing out from college যে ও ডিরেইল্ড হচ্ছে কিনা...। আমি ডিরেইল্ড হয়েছি বললে অনেকে হয়তো বিশ্বাস করতো...কিন্তু নাসিরের টা নয়। এই রকম একটা ছেলে যে ডিরেইল্ড হতে পারে, তা আমাদের ধারণাতে কখনো ই ছিলোনা। আমি যখনই অফিসিয়াল কাজে ১/২ দিনের জন্য ঢাকা গেছি, আমি যাকে পেয়েছি তাকে নাসিরের কথা জিজ্ঞেস করেছি। এমন কি একবার আমি অফিসে মিথ্যা কথা বলে একদিন ঢাকাতে বেশী ছিলাম। রাতে আমি বুয়েটের একটা হলে ছিলাম শুধু নাসিরের সাথে দেখা করার জন্য। আমি এখনো কারো সাথে দেখা হলে জানতে চাই যে ও কোথায় আছে, কিভাবে আছে...।

    কলেজ থেকে বের হবার পরে তুমি বা তোমরা হয়তো পুরো ৫০ জনেরই খবর রাখতে পেরেছো। আমরা পারিনি। আমাদের পরিস্থিতি আমাদের কে তা করতে দেয়নি, সেই সুযোগ সুবিধাও ছিলোনা। আমি বা আমরা ব্যর্থ। দোয়া করি তোমার সফল হও।

    ব্যক্তিগতভাবে আমার হয়তো অনেক কিছু করার ছিলো (একটু আগে উল্লেখ করেছি) যা আমি করিনি। আমার এই অপারগতা আমাকে আজ যথেষ্ট লজ্জিত করেছে। আজ মনে হচ্ছে আমি স্বার্থপর। আমার এই স্বার্থপরতা ছিলো আমার পরিবারের প্রয়োজনে, যাদের অবদান আমি অস্বীকার করতে পারিনি। দোয়া করি আমার জীবনের এই অনাকাংক্ষিত ঘটনাটি তোমাদের জীবনে যেন না ঘটে।

    ভালো থেকো ভাইয়া। আমার জন্য দোয়া করো, যেন সত্যিকার অর্থে মানুষ হতে পারি। আর নাসিরের জন্য ও দোয়া করো, যেন যেখানে থাকে ও যেন ভালো থাকে। অনেক অনেক শুভ কামনা সবার জন্য।

    জবাব দিন
  7. bhaia first of all i would like to say that if u are hurt i'm extremely sorry.....i'd no intension to hurt u.

    i agree with the fact u stated....i waz unable to visualize ur agony....instead my apprehensive mind forced me to think that yes,,,,maybe same thing will happen with you also....maybe as always i'll loose those souls im debt to.

    and bhaia it was your aesthetic writing capability which don't leave anythin for background analyzing....maybe that's why i forgot u've some explanation obviously against my words.

    Lastly i'll request pls leave the topic....i think it waz a misunderstanding...nothing else.

    আজকে আমার প্রথম দিন এই ব্লগ এ। সূচনা মনমত হলোনা......

    আর কি.........

    বাংলিশ ভাবে ব্লগ করলাম কারন বাংলায় আগে কোনদিন টাইপ করিনি। অভ্যস্থ হতে একটু সময় লাগবে।

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      সিউল আসল ঘটনা বলি।আমরা যারা আহসান ভাইকে চিনি এই ব্লগে, উনার লিখা নিয়মিত পড়ি(তুমি পড়লেও বুঝতে পারবা),তারা জানি যে আহসান ভাইয়ের মত মানুষ পেটে বোমা মারলেও কোনদিন নিজের কোন অবদানের কথা মুখ ফুটে বলবেননা।এই কারণে কিছুটা ইনফর্মেশন গ্যাপ হয়েছে হয়তোবা।

      যাই হোক ভাই, ব্লগে স্বাগতম।প্লিজ এমন কিছু ভেবে বোস না যে আমরা কেউ কোন কারণে তোমার উপরে রেগে যাচ্ছি বা কিছু।এখানে আমরা সবাই কোন কোন ক্ষেত্রে রক্ত সম্পর্কের ভাইয়ের চেয়েও কাছাকাছি-নিজেদের অনুভূতি এভাবে ভাগ করে নেবার অধিকার আমাদের সবারই আছে।

      অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

      জবাব দিন
      • এই বিষয়ে আমি ১টা কথা বলতে চাই......আমাদের ক্যাডেটদের প্ররতি ফীলিংস আছে বলেই আমরা আমাদের ভেলুয়েবল সময় নষ্ট করে,কষ্ট করে বাংলাতে এই ব্লগে লিখি।আমাদের যদি টান না থাকত,আমরা এই সাইটে ঢুকতামও না।
        আহসান ভাইয়ের পক্ষে তার বেশি কিছু করা সেই সময়ের জন্য সম্ভবও ছিল না।তখন সেল ছিল না,টি এন্ড টি ছিল অনেক expensive।চিঠি যেতে লাগত ১ মাস,তার পক্ষে কিই বা করার থাকতে পারে????

        জবাব দিন
  8. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    ঘটনা হল, প্র্যাকটিকাল লাইফে এসে সবকিছু এতই জটিল হয়ে যায় যে সেটা বোঝা অনেকের পক্ষেই সম্ভবনা। ক্যারিয়ারে ঢোকার দুই চার বছরের মাথা থেকে প্রায় সবাইই এইসব জটিলতাগুলো ফেস করা শুরু করে, এটা হবেই, আমাদের সামাজিক অবস্থায় বেশিরভাগ পোলাপানই এই অবস্থার মুখোমুখি হবে। আহসান ভাইয়ের লেখাটা অসাধারণ জীবন ঘনিষ্ঠ একটা লেখা, আমরা যারা প্রায় দশক আগে কলেজ ছেড়ে এসেছিলাম তারা খুব সহজেই নিজেদের জীবনের সাথে মেলাতে পারি [যদিও আহসান ভাইদের চেয়ে আমরা অনেক জুনিয়র, তারপরও] যারা এখনো পড়ালেখায় আছে বা মাত্রই ক্যারিয়ার শুরু করেছে তাদের জন্য এই বাস্তবতাটা অনুধাবন করা কিছুটা কষ্ট হবে। ডিফেন্স-এ স্বাভাবিকভাবেই অনেক আগেই একেকটা ছেলে ক্যারিয়ারে জড়িয়ে যায় বাইরের অন্যদের চেয়ে, যখন ডিফেন্সের একজন জুনিয়র অফিসার চাকরি নিয়ে দিনের পর দিন কোনো রিমোট এলাকায় পড়ে আছে তখনো হয়তো তার ব্যাচমেটরা ভার্সিটি লাইফের মজার সময় সবাই মিলে মিশে পার করছে। যাহোক, যেটা বলতে চেয়েছিলাম শুরুতেই সেটা বলেই এবারকার মত অফ যাই, আহসান ভাইয়ের অন্যসব লেখাগুলোর মতোই এইলেখাটাও একেবারে হার্টের ভেতরটা নাড়িয়ে দিয়ে গেলো.....থ্যান্কস্ আ লট বস্...


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  9. আমাদের ব্যাচেরও কয়েকজন এভাবে দলছুট হয়ে যাচ্ছে। এখনো যদিও পুরোপুরি হয় নি। কয়েকজনকে শুনলাম শিবির এ যোগ দিচ্ছে, কয়েকজন আবার কমিউনিস্ট।
    থামানোর জন্য এখনো চেষ্টা করছে আমাদের ব্যাচের অনেকে। কতদূর কি লাভ হবে আল্লাহ জানেন। সবাই দোয়া করবেন।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।