১.
মাহবুব আমার দুই ব্যাচ ছোটো। আমরা একই হাউসে ছিলাম, শরিয়তউল্লা। ক্যাডেট কলেজ থেকে বের হয়েছি সেই ৮৫ সালে। তারপর অনেকটা সময় চলে গেছে। বয়স ৪০ হয়ে গেছে, চুলও সাদা হতে শুরু করেছে। কলেজে আমি অনেক শুকনা ছিলাম। এখন অনেক বদলে গেছি। সেই সময়ের আমার সাথে যারা ছিল তারা এখন আর আমাকে চিনতে পারে না। একজন বেক্সকা নাইটে গেছি, সবাই মনে করেছে আমি মনে হয় অতিথি কেউ।
মাহবুব যে বিডিআরে আছে জানতাম না। পরশু দিন দুপুরে এনটিভিতে নিখোঁজ বলে হঠাৎ চোখে পড়লো মাহবুবকে। বুকটা কেঁপে উঠলো। মাহবুব একদমই বদলায়নি। অবিকল সেই ক্যাডেট কলেজের চেহারা। সেই একই রকম হাসিমাখা একটা মুখ। মাহবুবের হাসি এখনো চোখে ভাসছে।
কিছুক্ষন আগে ফোন করলো বরিশাল ক্যাডেট কলেজের নওরোজ (ডাক্তার এখন) আর ধীমান (মেজর ছিল, চাকরি ছেড়ে দিয়েছে), ধামরাই থেকে। মাহবুবের বাড়ি ধামরাই। ওখানে এখন ও শুয়ে আছে, চিরদিনের মতো। নওরোজ যা বললো তাতে আমি আরেকদফা স্তব্ধ হয়ে পড়লাম। মাহবুব ছিল লাইবেরিয়ায়, মিশনে। ভাল লাগছিল না বলে তিন মাস আগেই দেশে চলে আসে। সিদ্ধান্ত ছিল ৩ মাস আর চাকরি করে তারপর ছেড়ে দেবে। মিশন শেষে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে তিন মাসই লাগবে। দেশে আমার পর পোস্টিং হয় বিডিআরে। ২৫ ফেব্রুয়ারিই কাজে যোগ দেয় মাহবুব, সকাল ৮টায়। ২৫ ফেব্রুয়ারিই মাহবুব লাশ হয়, সকাল ১০টার আগে নাকি ঠিক ১১টার দিকে?
২.
জরুরী অবস্থা সময়ের ঘটনা। আমি অর্থনীতি নিয়ে সাংবাদিকতা করি। পণ্য মূল্য নিয়েও লেখালেখি করি। ২০০৭ এর ফেব্রুয়ারি। একদিন বিডিআর থেকে ফোন করলেন একজন কর্মকর্তা, নাম বললেন মেজর হুমায়ুন। মহাপরিচালক চায়ের দাওয়াত দিচ্ছেন, আমি আসতো পারবো কিনা। তখন অনুরোধই তো আদেশ। গেলাম ২টা পরে। বসে আছি মেজর হুমায়ুনের রুমে, ডিজি ব্যস্ত। হাসিখুশি মানুষ, কথায় কথায় বের হলো যে সে মানিকদির ছেলে। আমার বউও মানিকদি থাকতো। দেখা গেলো আমার শুশুর বাড়ির সবাই তার অতি পরিচিত। সে আসলে আমার বউএর বড় ভাইয়ের ( নাসের, লে.কর্ণেল। আমরা একই ব্যাচের। মেজর হুমায়ুনও তাই) অতি ঘনিষ্ট বন্ধু। ব্যাস, আমি হয়ে গেলাম জামাই টাইপ, আর সে আমার শশুর বাড়ির লোক। এর পরে ঘনিষ্ট এক সম্পর্ক হয়ে যায় তাঁর সাথে। অনেকবার দেখা হয়েছে আমাদের। ঐ দরবার হলে দেখা হয়েছে। অফিসে দেখা হয়েছে। আমরা এক সাথে দুপুরের খাবার খেয়েছি অনেকবার।
কাল নাসের মেজর হুমায়ুনের লাশ দেখে এসে বললো, কি এমন দোষ করলো হুমায়ুন যে তাকে ১৯টা গুলি করতে হলো?
৩.
কর্ণেল শামসুল আজম। আমার বউয়ের দিক থেকে আত্মীয়। ওনার মা জীবিত। ছেলের লাশ পাওয়ার খবর শোনার পর থেকে সেই যে জ্ঞান হারিয়েছেন আজও ফেরেনি। ডাক্তার বলেছেন আর ফিরবে না।
৪.
মে. জে, শাকিলের সাথে প্রথম পরিচয় এক সেমিনারে। তিনি প্রধান অতিথি আর আমি হলাম মূল বক্তা। ডাল-ভাত কর্মসূচী বিডিআরের মূল কাজ কিনা থেকে শুরু করে চোরাচালানসহ নানা বিষয়ে কঠিন কিছু কথা বলেছিলাম। তিনি হাসিমুখে সব বক্তব্যের জবাব দিয়েছিলেন। এরপর দেখা হয় দুটি টক শোতে। একটি বিটিভির আরেকটি একুশে রাতে। কথা বার্তায় বেশ চৌকশ একজন মানুষ।
৫.
সমকালের এক সাংবাদিক উদ্বিগ্ন হয়ে কাল রাতে আমাকে ফোন করলো। বললো সে একটা মেইল পেয়েছে, একজন সামরিক কর্তকর্তার একটা লেখা। সেখানে আমার আর লাবলু ভাইয়ের নাম আছে। বললাম, মনে হয় সিসিবির কোনো লেখা। সেই মেইল আমার কাছেও এসেছে। যা ভেবেছিলাম তাই। সাইফের লেখাটি। সাইফের আবেগি এবং যুক্তিপূর্ণ লেখাটি নিয়ে আসলে নতুন করে কিছু বলার নেই।
আমি শুধু এইটুকুই বলতে চাই, এই দেশে সামরিক বাহিনী যেমন শক্তিশালী, তেমনি শক্তিশালী মিডিয়া। এখন সময় এসেছে পরস্পরকে আস্থায় নেওয়া। বিভিন্ন সময়ে এই সম্পর্কে চির ধরেছে। যে যখন শক্তিশালী হয় সেই তখন অন্য প্রতিষ্ঠানকে দমাতে বা হেয় করতে চেষ্টা করে। এটা চলে আসছে অনেক দিন ধরে। এর অবসান প্রয়োজন। নিজের পক্ষে মিডিয়াকে আস্থায় এনে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটি শিখতে হবে, ভয় দেখিয়ে নয়। মিডিয়াকেও বুঝতে হবে সবার আগে দেশের স্বার্থকে। মিডিয়ার কাজ উসকিয়ে দেওয়া নয়, বরং উত্তেজনা প্রশমন করা।
আমাদের অনেকদূর যেতে হবে। আমরা খালি এক হয়ে কাজ করার বলি। কিন্তু আসলে এক হয় নাই। যে ঘটনা ঘটলো এক হওয়ার জন্য এর চেয়ে বড় জাতীয় স্বার্থ আর কি হতে পারে?
৬.
আরেকটা কথা বলতে ইচ্ছা করছে। বাংলাদেশ এই জীবনে যতগুলো দুর্যোগে পড়েছে তার একটির সঙ্গেও সাধারণ মানুষের কোনো যোগসূত্র ছিল না। বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেল হত্যা, জিয়া হত্যা থেকে শুরু করে বিডিআর গণহত্যা পর্যন্ত। সুতরাং সামরিক বাহিনীকে ভাবতে হবে তারা কেন বার বার ব্যবহৃত হয়। সবাইকেই আসলে নতুন করে ভাবতে হবে। আর যদি তা না পারি তাহলে এ রকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
৭.
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়ে ব্লগে আন্দোলন করছি। তীব্র ঘৃণা ওদের প্রতি, এই ৩৭ বছর পরেও। গণকবর উদ্ধারের ছবি এখনও আমার কাছে আছে। এতোদিন পর আবার দেখলাম গণকবর, স্বাধীন দেশে। নিজেদের কেমন যেনো পাকিস্তানি পাকিস্তানি মনে হচ্ছে।
৪০ টি মন্তব্য : “নিজেদের কেমন যেনো পাকিস্তানি পাকিস্তানি মনে হচ্ছে”
মন্তব্য করুন
বস,
খুব ইম্পর্ট্যান্ট একটা পয়েন্ট তুলে ধরসেন...
এই বিডিআর ম্যাসাকারের ব্যাপারে মিডিয়ার ভূমিকাকে আপনি কিভাবে বিচার করেন?
আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাদের পেশাগত অদক্ষতা(কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট এর ব্যাপারে...যেইটা সাইফ ওর কোন এক পোস্টে উল্লেখ করসে) আর সেন্টিমেন্টাল ডিগবাজি নিয়ে যারপরনাই বিরক্ত...
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
একটা কথা অনেক দিন আমরা বলে আসছি, সেটা হল যার তার হাতে মিডিয়াকে না দেওয়া। কে মালিক হবে সেটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সম্পাদক বা বার্তা সম্পাদকের মতো দায়িত্বে কে থাকবে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণ দেই। ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি কেবলমাত্র আমরা আর এবিসি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিডিআর উচ্ছৃঙ্খলাতা দেখা দেওয়ার সংবাদ প্রচার করি নায়। বরং আমাদের অফিস থেকেই সরকারের সাথে যোগাযোগ করে বলা হয়ছিল অন্য মিডিয়াকে থামানোর জন্য।
মিডিয়ার ডিগবাজি দেখে আমরাও মহাক্লান্ত। আবারো বলি মিডিয়ার জন্য একটা নীতিমালা তৈরির সময় হয়েছে। বিশেষ করে টিভি মাধ্যমগুলার জন্য।
এসব দুর্যোগের সময় লাইভ কাভারেজও বন্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে হয়। আমরা প্রিন্ট মিডিয়ায় যারা কাজ করি একটা লেখা তিনহাত ঘুরে তারপর ছাপা হয়। তাই ভুল কম থাকে। আর টিভি মিডিয়ায় যায় সরাসরি। এভাবে সরাসরি যাওয়া ঠিক কিনা ভাবতে হবে।
বস্ আমাদের দেশে মিডিয়ার জন্য এখন নতুন করে নীতিমালা করতে গেলে আবার আমাদের বিভিন্ন মতের বায়াসড বুদ্ধিজীবিরা যে পরিমাণ হল্লা শুরু করবে সেই ভয়ে কোনো রাজনৈতিক সরকার কি রিস্কটা নেবে? আর রাজনৈতিক সরকার করতে না পারলে কোনো অরাজনৈতিক সরকারের হাতে দিয়ে কি সুস্থ স্বাভাবিক একটা গাইড লাইন বেরুবে? আমাদের বোধহয় ঠেকে ঠেকেই নিজস্ব নীতিমালাটা শিখে নিতে হবে 🙁
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
সমস্যা তো ওখানেও। গত তত্বাবধায়ক সরকার একটা নীতিমালা তৈরির কাজ হাতে নিছিল। কিন্তু আগাইতে পারে নাই। এই সরকারও বলেছে। নীতিমালাটা দরকার আসলে মিডিয়ার নিজের স্বার্থেই।
আর মিডিয়ার দরকার প্রশিক্ষন। এই কাজটা কেউ করে না। অথচ এর বিকল্প নাই।
দেশে ১০/১২ টা টিভি চ্যানেল, সবাই ঘন্টায় ঘন্টায় সংবাদ দেখায় কিন্তু কোন মানসম্মত মিডিয়া ট্রেনিং ইন্সটিটিউট নেই। আর মিডিয়ার কর্তাব্যাক্তিদেরও সামাজিক দায়বদ্ধতার অভাব রয়েছে।
শওকত ভাই,একটা গল্প বলি।সত্য।ক্লাস টেন বা ইলেভেন এ পড়ি আমরা তখন।প্রিন্সিপাল মাসুঊদ হাসান স্যার একদিন ক্লাসে এসে জিজ্ঞেস করলেন...আমরা কে কি হতে চাই।সবাই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার অনেক কিছুই বল্ল।বন্ধু মিজান বল্ল,স্যার আমি লাইব্রেইরিয়ান হতে চাই।পুরা ক্লাস হেসে উঠল।এরপর আমার টার্ন।আমি বল্লাম,স্যার আমি জার্নালিস্ট হতে চাই।পুরা ক্লাস এইবার ভুরু কুচকে আমার দিকে তাকালো।প্রিন্সিপাল স্যার আমাকে উতসাহিত করে অনেক কথাই বল্লেন।তার পাশাপাশি জানতে চাইলেন আমি কেন এত পেশা থাকতে এই পেশায় যেতে চাই।জানালাম পেশদারিত্বের জন্য নয়,সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা মাথায় নিয়ে সাংবাদিকতা করতে চাই।ক্লাস মেট রা অনেকেই আতেল,বুদ্ধিজিবি অনেক কিছু নাম দিল।
রবিন্দ্রনাথের এক রাত্রি গল্পের নায়ক গ্যারিবল্ডি মাটসিনি হবার স্বপ্ন দেখেছিল।কিন্তু শেষ মেশ হতে হয়েছিল ভাঙ্গা স্কুলের সেকন্ড মাস্টার।ঐ গল্পে একটা লাইন আছে এইরকম......বিধাতা মানুষদেরকে সর্বদা সুবিবেচনাপুর্বক যথকর্মে নিয়োগ করিয়া থাকেন না,কিন্তু মানষ মাত্রেরি উচিত নিজ নিজ কর্মে যথার্থ মনোনিবেশ স্থাপন করিয়া সেই কর্মে নিজের স্থান পোক্ত করিয়া লওয়া।
মিজান আই বি এ থেকে পাস করলো।সবাইকে অবাক করে দিয়ে আমি হলাম ফৌজ।অনেক কষ্টে মঅন কে বুঝিয়ে প্রশিক্ষন সহ কেটে গেলো নয় বছর।কোন প্রাপ্তির আশায় নয়,বরং কিছু দেয়ার আশায়।
অনেক সময় ঈ মনে হয়েছে হয়ত কিছুই দিতে পারছি না।তারপরো এতটুকুন ফাকি দেই নি। আজ মনে হচ্ছে কিছুই দিতে পারিনি,্নিজেকে নিজেই দোষ দেই।কোন সান্ত্বনা খুজে পাই না।আজকে অফিসে ৪০০০ মাইল দূরে বসে,মির্জাপুর ক্যাডেত কলেজের ক্যাপ্টেন তারেক ,পিপি এম বার,যিনি র্যাবে কর্মরত ছিলেন কর্নেল গুলাজার স্যার,কর্নেল এমদাদ স্যার এর প্রসংগ আস্তেই ভেউ ভেউ করে কেদে দিলেন আর বললেন এই লোকগূলা কী কিছুই দেয় নি।যেই হূমায়ুন স্যার এর কথা বল্লেন,তার সাথে প্রতিদিন আমার কথা হত।সদর ঘাটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চাল,পেয়াজ আর সব্জির আড়ত।আমি দায়িত্বে ছিলাম অই এলাকার।তাই প্রতিটা কনাফারেন্সে পিলখানাতে যেতাম।হাসিমুখে ব্রাদার বলে ডাক দিয়ে বলতেন,তোমার এলাকায় দর দাম সব ঠিক আছে।যাই হউক আমরা শোক পালন করব,আস্তে আস্তে আমাদের সবকিছু প্রশমিত হবে।পাশ্চাত্যের হাঙ্গর সংস্কৃতি গিলে খাবে আমদের আবেগ অনুভুতি, টিভির পর্দা থেকে খসে পড়বে এইসব ট্র্যাজেডি,জীবন চলবে জীবনের নিয়মে।
আমরা আমাদেরকে গন মুখি করতে পারি নি,এইটা মাদের যেমন ব্যররথতা,তেমনি আমাদেরকেও কেউ কাছে টান্ তে চায় নি,৭২,৭৫,৭৯,৮২,৯০ বুঝি না,অন্তত আজ আমাদের সবাই বুঝে...বাংলাদেশ,আর তার ভাই হত্যার সুষ্ঠু বিচার।মাস রুফের লেখা পোস্ট এ আমি একটা মন্তব্য করেছি দয়া করে একটু দেখবেন।
নিজে সাংবাদিক হয়নি তাতে কি আমাদের ভাই,লাব্লু ভাই,আপনি,নজরানা ভাই,মোস্তফা মামুন ভাই...আপনারা ত হয়েছেন।
ভুল করলে শাসন করার অধিকার ভাইদের ই ত থাকে,তাই বলে ঘৃনা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিবেন না।আমরা আছ. বর্দি খুলে যখন টি শার্ট ,জিন্স পড়ী তখন কি আপনি আমি আলাদা হয়ে যাই,ভাগাভগি করে সিগারেট খাই,চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে জমিয়ে আড্ডা দেই..।......ভাইয়ের সাথে ভাই কখনো প্রতিযোগীতায় নামতে পারে না,শক্তির খেলায় উন্মত্ত হতে পারে না,যদি বিশ্বাসের ভিতটা সুদৃড় হয়।অতিতের বোঝা আমরা আর কত টানবো।ডেল কার্নেগির একটা কথা মনে পড়ছে...অতিতের হাহাকার আর ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা,দুই এ মিলে বর্ত্ মাঙ্কে ভারাক্রান্ত না করে,আমাদের পথ চলা উচিত,উদ্যমে আত্মবিশ্বাসে,পারস্পরিক নির্ভিরিতায়।আগামির পথ চলা শুভ হবে যদি আপনারা সঠিক নির্দেশনা দেন,ভাই হিসেবে ভাই এর পথ সুগম করারা দায়িত্ব,অবস্ট্যাকল পার হওয়ার দায়িত্ব আমাদের সকলের।
আরে ব্যাটা, সেই পুরনো অবিশ্বাস আর ঘৃণার সম্পর্কটা তো বদলাতে চাই। তাই বারবার বলি আসেন একসঙ্গে কাজ করি। মনে রাখবেন আমাদের হাত দিয়ে ক্ষতি হবে না। মানুষ সত্য জানুক। কিছু ব্যক্তি মানুষ নিজের সংকীর্ণ আর রাজনৈতিক মতাদর্শের হাতে জিম্মি হয়ে যায়। যুদ্ধাপরাধী আর জঙ্গি ছাড়া সবার সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক নিয়ে কাজ করতে তো সমস্যা নেই। দেশটা কারো একার নয়। আমাদের সবার।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানা ভাই,সহমত।
আমিও সহমত।
স্বচ্ছতা এবং পারস্পরিক নির্ভরতা অবশ্যই গুটি কয়েক কুচক্রীর কালো নকশা নস্যাৎ করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।
দেশকে ভালবাসি সবাই।
সেটার প্রয়োগ দেখতে এবং দেখাতে চাই সর্বত্র।
সৈয়দ সাফী
মিডিয়া কখনো দূরে সরিয়ে দিতে চায় না। কিন্তু যে পরিস্থিতি তাতে দূরে সরে যেতে বাধ্য করা হয়। এই অবিশ্বাস কাটবে সেইটা আমি মনে করি না।
কালকের জানাযার কথা বলি। এক ফটোগ্রাফার ছবি তুলছিলেন হঠাৎ পেছন থেকে এক আর্মি অফিসার তাকে ফ্লাইং কিক দিয়ে ফেলো দিলো সবার সামনে। একটা মানুষও কিন্তু প্রতিবাদ করে নাই। সেই ফটোগ্রাফার রাতে বলছিলো তার নাকি নিজেকে অসম্ভব ছোট লাগছে।
জরুরী অবস্থার সময় যা ঘটেছে তা বলা শুরু করলে মহাকাব্য হয়ে যাবে।
আমরা প্রত্যেকেই মনে করি দেশপ্রেম কেবল আমারই আছে, আর কারো নাই। কেন জানি এই মনোভাবটা আর্মির মধ্যে বেশি। এই একচেটিয়া ভাবনারো বন্ধ করতে হবে।
আমি আগেও বলেছি, সামরিক বাহিনীর অনেক কর্মকর্তাকে চিনি, জানি। তারা একেক জন অসাধারণ মানুষ। কিন্তু প্রতিষ্ঠান হিসেবে আর্মি নিয়ে আমাদের অনেক অভিযোগ।
ভুল আমরা সবাই করি। কিন্তু তারাই টিকে থাকে যারা ভুল থেকে শিক্ষা নেয়।
আসলেই সাইফ আমাদের অতীত বড় বেশি বোঝা হয়ে পড়েছে। এই বোঝা ফেলে দিতে হবে। আসরা সিন্দাবাদের মতো বোঝা পিঠে নিয়ে আর রাখতে পারছি না।
(অফটপিক: ভাগ্যিস তুমি সাংবাদিক হও নাই। এতো গুছিয়ে লেখো যে তোমাদে মতো ছেলেরা আসলে আমাদের চাকরি থাকতো না। এই পেশায় আসলেই তোমাদের মতো ছেলে অনেক দরকার। )
শওকত ভাই,আপনার অভিযোগসমূহ সত্য।তবে এইটা ঠিক যে একটা পরিবর্তন আসা শুরু হয়েছে।সেনাকুঞ্জে প্রাইম মিনিস্টার এর সাথে অফিসারদের খোলামেলা আলোচনায় কি হয়েছে সেটা আমার চেয়ে মনে হয় আপনি অনেক বেশি জানেন।আমাদের স্বীমাবদ্ধতা হ লো আমাদেরকে এত বেশি পাব্লিক্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে,যে এতে করে আমরা কিছুসংখ্যক লোক আত্মবিসৃতহয়ে যাই,আর দশজন মানুষের মত আমরাও খুব বেশি হ্যাংলামি করি আচার আচরনে,পরিপক্কতা দিয়ে করতে পারি না,আমার মনে হয় এই জায়গাটাতেই আমরা অনেক পিছিয়ে।আমরা উপল্বধি করতে পারি না যে আমাদের জায়গাটুকু পাব্লিকের কাছে বিশ্বাসের আর শ্রদ্ধার,সেই উপলব্ধিটা কারো কারো ক্ষেত্রে কাজ করে না বলেই
আজকে এত অবিশ্বাস,ক্ষোভ।আমার মতই অন্য দুজন বন্ধু যদি ঝগড়া করে সবার সামনে সেটাকে সবাই সাধারন ঝগড়া হিসেবেই দেখে,কিন্তু আমি যদি করি সেটা আর ঝগড়া থাকে না।
এই যে ঝগড়া এড়ানোর ব্যাপারটাএইখান্টায় আমরা পিছিয়ে,পাব্লিক আমআদের কাছ থেকে এত তুচ্ছ জিনিস আশা করে না,এই বিশ্বাস কিংবা সচেতনতা টা আমাদের মধ্যে গড়ে উঠে নাই।তাই আজ এত কিছু।তবে আশার কথা হলো এটা অনেকাংশেই শুরু হয়েছে,আমি যেমন আমার জুনিওয়রগুলাকে শিখাচ্ছি,চেষ্টা করেছি,করছি,তেমনি আমার জুনিওয়রগুলাও।তবে দেশের পলিসি মেকার,ডীপ্লোম্যাটিক এপয়েন্ট মেন্টে বসা সবাইকে অনেক ম্যাচিউর হতে হবে,অনুভব করতে হবে চিন্তা চেতনার আধুনিকতার বিষয়টাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে।সেই সাথে পেন এন্ড পেপার টাঈগার থিউরি,রাজনৈতিক প্রভাবের আওতায় প্রমোশন এই বিষয় গুলো থেকেও আমাদের উত্তরনের পথ অতিসত্তর খুজতে হবে,জাতির প্রয়োজনে,সেটা সিভিল,প্রশাসন এবং সামরিক বিভাগ দুই ক্ষেত্রেই দরাকার।ভাল থাকবেন।
আসলেই নিজেদের কেমন যেনো পাকিস্তানি পাকিস্তানি মনে হচ্ছে। 🙁
শহীদ দের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
:thumbup:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
একমত.....সমাজের কর্তাব্যক্তিদের কবে যে বোধোদয় হবে ।
৭৫ এর পট পরিবর্তন, ৩ ও সাত নভেম্বরের বিদ্রোহ ও পাল্টা বিদ্রোহ, জিয়া হত্যা, ও সবশেষে ২৫/২ তারিখের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ- সবক্ষেত্রেই বলা হয় 'একদল উশৃংখল সেনাসদস্য/ বিডিআর জওয়ান/দুস্কৃতিকারী' ঘটনা গুলোর জন্য দায়ী! ক্যান্টনমেন্ট এর মতো সুরক্ষিত স্থান এবং সেনাবাহিনীর মতো সুশৃংখল বাহিনীতে মাত্র ৩৭ বছরে কেন এতো রক্তস্রোত বয়ে যায়, কেনই বা ভাতৃঘাতী সঙ্ঘাতে প্রাণ দিতে হয় সম্ভাবনাময় সূর্যসন্তানদের-সময় এসেছে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার। আপাতদৃষ্টিতে ঐ বিডিআর জওয়ানটির রাইফেলের গুলিতে আমাদের সম্ভাবনাময় সেনা কর্মকর্তাদের মৃত্যু হলেও কাদের অঙ্গুলীহেলনে ও ব্যার্থতায় তাদের রাইফেলের সামনে ঠেলে দেয়া হলো এই সুত্রধর দেরও খুঁজে বের করা দরকার। না হলে আবারো অন্য কোন স্থানে এই রকম নারকীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা একেবারে ঊড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
সেইটাই। লক্ষ্য করে দেখো এরকম এক একটি ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসকে পালটে দিয়েছে। ঐ সব ঘটনার রেশ আজ জাতি হিসেবে আজও টানতে হচ্ছে।
বিডিআরের ঘটনাও একটা বড় পরিকল্পনার অংশ বলেই মনে করি। এসব ঘটনার সাথে সাধারণ মানূষ বা সিভিলানদের কিন্তু কোনো সম্পর্ক নাই। অথচ দীর্ঘমেয়াদে এরাই ক্ষতিগ্রস্ত।
শওকত ভাই,
আপনি প্রয়োজনীয় ক'টি দিক তুলে এনেছেন।
প্রিন্ট মিডিয়ার তিন হাত ঘুরে খবর ছাপে - আর টিভিতে লাইভ সম্প্রচার করা হয়। ঘটনাস্থলে নিজস্ব প্রতিবেদক চট করে দৃশ্য তুলে ধরেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ইন্টারভিউ করেন - কখনো নিজস্ব অভিমতও তুলে ধরেন।
টিভির দর্শক হিসেবে আমরা কিন্তু চোখে যা দেখছি তাই বিশ্বাস করে নিচ্ছি। আমরা উত্তেজনায় ভুলেই যাই - আমাকে যতটুকু দেখানো হলো আমি তাই দেখলাম। ফ্রেমের বাইরে যে ঘটনা রয়ে গেল - বা রিপোর্টারের মতামতের সীমানা ছাড়িয়েও ঘটনার গভীরে যে ফ্যাক্ট নীরবে থেকে গেল - তা কিন্তু অগোচরেই রয়ে গেল আপামর দর্শকের কাছে। যে কোন ক্রাইসিস এ খণ্ড খন্ড ঘটনার যোগসুত্রতা স্পট থেকে অনুধাবন করা সম্ভব হয় না। আর কর্মীদের ফিল্ড অনুযায়ী স্পেশাইজেশনের প্রশিক্ষণের ব্যাপারটি অতীব জরুরী।
আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি- লাবলু ভাই বা আপনার মত সত্যিকারের মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আছেন আরো অনেকেই। সালাম আপনাদের।
তাই প্রশন জাগে- আর্মি-মিডিয়া রিলেশনশীপ নিয়ে খোলা মনে ভাববার সময় কি এখন আসেনি? দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার আগেই কিন্তু এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন - আমাদের সবার ভালোর জন্যই। আন্তরিকতা এবং দেশের জন্য গঠনমূলক পদক্ষেপ নিতে পেশা- শ্রেণী নির্বিশেষে একযোগে ভেবে নিঃস্বার্থভাবে সেইমত পথ না চলে কোন উপায় নেই। পারস্পরিক coordination আর synchronaization না থাকলে আর্মি সব সময়ই মিডিয়া প্রতিপক্ষ রয়ে যাবে আর আর্মি সম্পর্কে শক্তিশালী মিডিয়ার অনেক প্রতিবেদন অন্ধের হাতি দর্শন হয়ে ঠেকবে। বন্দুক, ক্যামেরা এবং কলম সহমর্মিতা নিয়ে একযোগে কাজ করলে একটি দেশ এর জন্য কোন বাধাই আর বাধা থাকবে না ইনশাআল্লাহ। নইলে একটি গোষ্ঠী খুব সহজেই হাতে ব্যথা হলে সরাসরি হাত কেটে ফেলার নাম করেযে কারুকেই নির্বিচারে পঙ্গু করার প্রচেষ্ঠা জারি রাখবেই। আর থেকে থেকে রক্তের নদীতে ভাসতে হবে আমাদের। বুকে চোখে জ্বালা নিয়ে মোমবাতি আর ফুল হাতে নিতে হবে জীবনের পথ চলায়।
অনেক লিখে ফেললাম ভাইয়া।
সীমানা অতিক্রান্ত হলে ছোট ভাইকে শুধরে দিয়েন প্লীজ।
সৈয়দ সাফী
ভাইয়া, প্রথম আলো যখন দেশের সবচেয়ে বেশি প্রচারিত দৈনিক তখন বিদেশে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী মিশন কাভার করতে গেছে ঢাকা শহরে ১২০০, ১৫০০, ৬০০০ সংখ্যা সার্কুলেশনের দিনকাল, যায়যায়দিন। আইএসপিআরের কর্তারা চেষ্টা করেও প্রথম আলোর সাংবাদিককে পাঠানোর অনুমতি আদায় করতে পারেনি। আর সেটা কিন্তু আটকিয়েছে সেনা নেতৃত্ব। অথচ প্রথম আলো কাভার করলে যে প্রচার মিলে তা বাকি সবগুলো মিলিয়েও হয় না।
মিডিয়া-মিলিটারি সম্পর্ক? দায়িত্বশীল মিডিয়া কিন্তু সবসময় অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করেছে। সাড়া মেলেনি।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
খুব ভাল বলেছো।
তবে এটাও জানি এই সমন্বয় কোনোদিনই হবে না। সেই মানসিকতা কোনো পক্ষেরই নেই। সুনির্দিষ্ট করে বললে সামরিক বাহনীর মধ্যেই কম আছে। জরুরী অবস্থা সম্পর্ক অনেকটাই নষ্ট করে দিয়েছে। সব কথা বলা যায় না এখানে। ঘটনাগুলো শুনলে নিশ্চই মানবে। সামনা সামনি হলে বলা যাবে।
দেশের পত্রিকায় সাক্ষাৎকার না দিয়ে বিদেশী পত্রিকায় দিতে মহা আগ্রহী অনেকে। এ নিয়ে লেখায় সব সেনানিবাসে প্রথম আলো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন লুকিয়ে চুপিয়ে ঢুকেছে। পরে নিজেরাই উপলব্ধি করেছে লাভ হচ্ছে না। কারণ যারা পড়ার তারা ঠিকই পড়ে। সব সেনানিবাসে প্রথম আলো সর্বাধিক প্রচারিত। ঢাকায় এখন চলে ১ লাখ ৭৫ হাজার। সারা দেশে সোয়া চার লাখ। দ্বিতীয় পত্রিকা চলে সারাদেশে সবমিলিয়ে সোয়া লাখ মাত্র।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
শ্রদ্ধেয় সানা ভাই এবং শওকত ভাই,
মানসিকতার প্রশ্নে আমি বিনা দ্বিধায় সহমত আপনাদের সাথে।
কিন্তু ভাইয়া এই বার সিসিবি যেভাবে ভূমিকা রেখেছে - তা দেখে আশায় বুক বাঁধতে ইচ্ছে হয়।
আমাদের ক্যাডেট কলেজের সিনিরয়র ভাইয়েরা অনেকেই অনেক ক্ষেত্রেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। আমাদের অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম কিন্তু একটি কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে। এখন জীবিকার কারনে যে যেই পেশায় থাক না কেন আমদের সবারই কিন্তু মূল অভিন্ন যা এক সুতোয় বাঁধা - আমরা সবাই ক্যাডেট। আমাদের পারস্পরিক আন্তরিকতা এবং সমঝোতা অন্য যে কারো তুলনায় অনেক বেশী হবে।
আর তাই আমরাইএগিয়ে আসতে পারি সকলকে ধনাত্মক পথে সম্পৃক্ত করতে।
আমাদের সিসিবি হোক আগামী বাংলাদেশ এর আওয়াজ। প্রগতিশীল জনমত গড়তে আমরাই পারি দেশের আপামর মানুষকে এক বৃত্তে আনতে যার কেন্দ্রে থাকবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এর স্বপ্ন।
স্বপ্নের শুরু হোক এখানেই।
আসুন, নিজেরা বাঁচি - আর প্রিয় এই দেশটাকেও বাঁচাই।
:salute:
সৈয়দ সাফী
:thumbup: :thumbup:
Life is Mad.
:thumbup: :thumbup: :thumbup:
আপনার পোষ্টের সাথে একমত শওকত ভাই। আসলেই অনেক কিছু নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
:salute:
একটা deomocratic সমাজে মিডিয়া এর কোনো নীতিমালা থাকেনা বরং মিডিয়া হলো সমাজের মুখপাত্র। আমাদের দেশে media এখন পূর্ণাঙ্গ সাধীনতা লাভ করতে পারেনি। তাদের উপর সব সরকার সেটা রাজনৈতিক আর সামরিক সবাই করেছে। কত সাংবাদিক খবর সংগ্রহে গিয়ে নিহত হয় আমরা তার খবর রাখি?
আর বাংলাদেশে তো সানবাদিকরা আর্মি এর কোনো খবর প্রকাশ করার সাহস রাখেনা। অথচ 1974 এ দুইজন সাংবাদিক এর কারনে প্রেসিডেন্ট Nixon কে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। আমেরিকাতে তো সাংবাদিকরা্ আর্মি এর সব কুকীর্তি ফাস করে। অথচ আমাদের দেশে এটা চিন্তা করা যায়?
সেদিন শুনলাম আর্মি একটা বিবৃতি দিলো যে এখন থেকে টিভি তে যত talk show হয় তাতে আর্মি এর প্রতিনিধি রাখতে হবে। এটা কি? তার মানে আর্মি কি খবরদারি করছে না? যখন আমরা রাজনৈতিক লোকদের সমালোচনা দেখি, পুলিশের কুকীর্তি নিয়ে অনুষ্টান দেখি তখন তো খুব মজা পাই, হাততালি দেয়।কই ওদের তো কোনো প্রতিনিধি ছাড়া দুর্নাম করা হয়। কিন্তূ বাংলাদেশে কেউ চিন্তা করতে পারে যে আর্মি corruption নিয়ে কেউ রিপোর্ট লিখছে।
এখানে আমার মনে হয় আর্মিদের এই এগিয়ে আসতে হবে।
কেবল তাই না, শুনলাম সেনাকুঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই দাবীও করা হয়েছে যে সংসদেও আর্মি নিয়া কোনো কথা বলা যাবে না। 🙁
আসলেই নিজেদের কেমন যেনো পাকিস্তানি পাকিস্তানি মনে হচ্ছে।
আমি তো কয়েক রাত ধরে ঘুমাতেই পারছিনা ভাইয়া। চোখ বন্ধ করলেই বিভৎস দৃশ্যগুলো ভেসে আসে।
:thumbup:
১. সাম্প্রতিক ঘটনায় মিডিয়ার ভূমিকা ছিল অগ্রগামী কিন্তু অপরিপক্ক। অনভিজ্ঞতার কারনেই এমনটা হয়েছে। ইমোশনালী সবাই বিডিআরের পক্ষেই প্রাথমিক প্রচারনা চালিয়ে গেছে, কারন তখনো কারো ধারনা ছিল না ভেতরে কী ঘটছে। বিদ্রোহের আড়ালে যে একটা হত্যাকান্ড চলছে সে সম্পর্কে মিডিয়ার বিন্দুমাত্র ধারনা ছিল না। লাইভ প্রচারের প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে কোন কোন চ্যানেল বিডিআরের প্রচারযন্ত্রে পরিনত হয়েছিল। যার প্রভাব যেমন জনমতে পড়েছে, তেমনি সরকারও বিভ্রান্ত হয়েছে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে। সরকারের পদক্ষেপগুলো বিশ্লেষন করে দেখলে বোঝা যায় সরকার অনেক ক্ষেত্রেই মিডিয়ার তথ্যের উপর ভিত্তি করে এগিয়েছে। নিজস্ব গোয়েন্দা উইং ব্যবহার করেনি বা করতে পারেনি। গোয়েন্দাদের কাজ কী? মিনিটে মিনিটে ঘটনার সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করা। ভেতরে প্রবেশ অসম্ভব ছিল, কিন্তু পিলখানার চারপাশে ঘনবসতি। সেখানে অবস্থান নিয়ে গোয়েন্দারা রিপোর্ট করতে পারতো। কিন্তু করেনি। আসলে টিভি ক্যামেরা যতদুর যাচ্ছিল সরকারের চোখ যেন তার বেশী যাচ্ছিল না। এটা কেন হলো? তার মানে সরকার ওখানে চোখ রাখার জন্য কাউকে পাঠায়নি। কেন? কে নিরুৎসাহিত করেছে?
২. মিডিয়ার কারনে সরকার পাবলিক হয়ে গিয়েছিল অথবা সরকারকে পাবলিক বানিয়ে রাখা হয়েছিল ভেতরের কোন কলকাটির জোরে। নাহলে মেজর জেনারেল শাকিল প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করার পরও সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা যায়নি কেন? সাধারন বুদ্ধিতে বলে, আক্রমন না হোক অন্তত পালানোর রাস্তাগুলোয় পাহারা বসানো যেতো। তাহলে কিছু না কিছু ধরা পড়তো। এটাও করা হয়নি। কেন?
৩. ঘটনার পরপর বেশ কিছু অফিসার পালিয়ে বেরিয়ে গেছে। তাদেরকে একত্র করে সিদ্ধান্ত নেয়া যেত কীভাবে ভেতরে অপারেশান করা যায়। কিন্তু যারা পালিয়ে এসেছে তারা হেডকোয়ার্টারে রিপোর্ট করেছে কিনা জানি না। কিন্তু আন্দাজ করা যায় তারা নিষ্ক্রিয় ভুমিকা পালন করেছে। কেন?
৪. সরকার এই সংকট রাজনৈতিক ভাবে সমাধান করে তৃপ্ত। আসলেই কী সমাধান হয়েছে, নাকি সংকটের শুরু? সরকারকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে দিয়ে সেনাবাহিনীর একাংশ কী অন্য কোন উদ্দেশ্য সাধন করতে চেয়েছে? সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পথে এখনো কী সক্রিয়?
৫. সরকারের রাজনৈতিক উদ্যোগ অনেকের সাধুবাদ পেয়েছে। সরকারও মনে হলো তৃপ্ত। কিন্তু আমার মনে হয় যারা এই খেলায় নেমেছে এটা তাদেরই সাফল্য। তারা চেয়েছে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে গিয়ে সরকার সামরিক ব্যবস্থা থেকে বিরত থাক। এই পরিকল্পনায় ষড়যন্ত্রকারীরা এতই সফল হয়েছে যে তারা সরকারকে বোকা বানিয়ে হাজার হাজার জওয়ানের ভীড়ে সত্যিকারের খুনীরা পালিয়ে যেতে দিয়েছে। খুনী পরিকল্পকরা তাদের সফলতায় তৃপ্ত হোক, কিন্তু সরকারকে তৃপ্ত হওয়া চলবে না।
৬. দুই প্রধান বাহিনীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি, সরকারের সাথে সেনাবাহিনীর দুরত্ব সৃষ্টি, সৈনিক ও অফিসারের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি, নির্বাচিত সরকারের গোড়ায় ফাটল সৃষ্টি, ইত্যাদি বিষয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রাথমিক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু চুড়ান্ত উদ্দেশ্য কী আমরা এখনো জানি না। আমাদের জন্য কী আরো আঘাত জমা আছে?
৭. কোথাও একজন মীরজাফর বসে আছে। উমিচাঁদরাও তৎপর। সরকার এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টিকারীদের চেনার চেষ্টা করতে হবে। কলিযুগে সর্ষের মধ্যেই ভুত থাকে। সরকার কী পারবে সেই ভুতদের চিহ্নিত করতে?
৮. সাধারন মানুষের কাছে সেনাবাহিনী সম্পর্কে এরশাদের আমলে বা তার আগে যে বদনাম ছিল, তা অনেকটা কেটে গেছে তরুন অফিসারদের কারনে। এই তরুন অফিসার প্রজন্ম সেনাবাহিনীকে জনগনের কাছে নিয়ে এসেছে। এই প্রজন্মের কারনেই বাংলাদেশে আর কোন সামরিক শাসন আসেনি। ভোটার তালিকাসহ গনতন্ত্রে উত্তরনের অনেক উপাদান প্রস্তুত হয়েছে এই প্রজন্মের হাতেই। সেনাবাহিনী এখন গনতন্ত্রের বৈরী শক্তি নয়, বরং সহায়ক শক্তি। সেকারনেই কী আঘাতটা গনতন্ত্রে বিশ্বাসী তরুন প্রজন্মের অফিসারদের উপর এসেছে?
প্রায় প্রতিটি পয়েন্টে একমত। আমিও মনে করি সরকারের কর্মকান্ডর বড় দুর্বলতা হচ্ছে বিডিআর সদস্যদের পালিয়ে যাওয়া। আর মিডিয়ার অপরিপক্কতার কথা নতুন করে কিছু বলার নেই। এটা তো সত্যি। প্রশিক্ষন নেই আমাদের মিডিয়ায়। এইটা খুবই জরুরী।
আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি, ২৭ তারিখ সংকটের একটি অধ্যায় শেষ। সংকটের দ্বিতীয় পর্ব শুরু। ২৭ তারিখ সকালে (৮টায় একুশে টিভি)। বলেছিলাম দ্বিতীয় পর্ব কোথায় ঠেকবে বলা মুশকিল। সরকার সামলাতে পারবে কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন। বিশ্বাস করি এর প্রতিক্রিয়া আমাদের আরো পেতে হবে।
একমত।
নতুন প্রজন্মের প্রতি আমারো আস্থা আছে। কিন্তু এই প্রজন্মই আবার বিশেষ বিশেষ জায়গায় গেলে আচরণ পালটে যায় সেটাও আমার দেখা আছে। সুতরাং প্রয়োজনের প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ।
নীড় সন্ধানী অনেক গুলো ভালো পয়েন্ট উল্লেখ করেছে... তবে একটা ঘটনা ঘটে গেলে অনেক ফাক ফোকর বের করা যায়.. ধরেন দিল্লিতে বোমা হামলা... ক্যান তাদের ঘাগু গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জনাতে পারেলো না? আসেন ভবিষ্যতে আমরা এই ফাকা গুলোকে বন্ধ করে নিশ্ছিদ্র করি... সেই সাথে
সামরিক বাহিনী যেমন শক্তিশালী, তেমনি শক্তিশালী মিডিয়া। এখন সময় এসেছে পরস্পরকে আস্থায় নেওয়া। বিভিন্ন সময়ে এই সম্পর্কে চির ধরেছে। যে যখন শক্তিশালী হয় সেই তখন অন্য প্রতিষ্ঠানকে দমাতে বা হেয় করতে চেষ্টা করে। এটা চলে আসছে অনেক দিন ধরে। এর অবসান প্রয়োজন। নিজের পক্ষে মিডিয়াকে আস্থায় এনে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটি শিখতে হবে, ভয় দেখিয়ে নয়। মিডিয়াকেও বুঝতে হবে সবার আগে দেশের স্বার্থকে। মিডিয়ার কাজ উসকিয়ে দেওয়া নয়, বরং উত্তেজনা প্রশমন করা।
আমাদের অনেকদূর যেতে হবে। আমরা খালি এক হয়ে কাজ করার বলি। কিন্তু আসলে এক হয় নাই। যে ঘটনা ঘটলো এক হওয়ার জন্য এর চেয়ে বড় জাতীয় স্বার্থ আর কি হতে পারে?
এখানে কিঞ্চিত বিরোধিতা রইলো... দুটো সংস্থা একসাথে চলতে শুরু করলে আবার আমরা সিন্ডিকেটে পরবো ...এটা নিশ্চিত... বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তাই বলে ... বরং মিডিয়াকে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে প্রফেশনাল হতে হবে ... দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ইন্সটিটিউট বিল্ডআপ করা প্রয়োজন ...
আরেকটা কথা বলতে ইচ্ছা করছে। বাংলাদেশ এই জীবনে যতগুলো দুর্যোগে পড়েছে তার একটির সঙ্গেও সাধারণ মানুষের কোনো যোগসূত্র ছিল না। বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেল হত্যা, জিয়া হত্যা থেকে শুরু করে বিডিআর গণহত্যা পর্যন্ত। সুতরাং সামরিক বাহিনীকে ভাবতে হবে তারা কেন বার বার ব্যবহৃত হয়। সবাইকেই আসলে নতুন করে ভাবতে হবে। আর যদি তা না পারি তাহলে এ রকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়ে ব্লগে আন্দোলন করছি। তীব্র ঘৃণা ওদের প্রতি, এই ৩৭ বছর পরেও। গণকবর উদ্ধারের ছবি এখনও আমার কাছে আছে। এতোদিন পর আবার দেখলাম গণকবর, স্বাধীন দেশে। নিজেদের কেমন যেনো পাকিস্তানি পাকিস্তানি মনে হচ্ছে।
কঠিন ভাবে সহমত প্রকাশ করছি...
একটা কথা যোগ করি, সত্যি যে দিল্লীর বোমা হামলাও ভারতের গোয়েন্দারা আগে জানাতে জানতে পারেনি। আমি আগে না জানার জন্য সরকারকে ততটা দায়ী করবো না, কিন্তু পরের ব্যর্থতাগুলো মেলাতে পারিনা। এত লম্বা সময়েও সরকার বিদ্রোহীদের দেখানো পথেই হেটেছে। একশান ছাড়াও বহুকিছু করার ছিল। সরকারের মাথা থেকে কেন সেগুলো বের হলো না। ৩৩ ঘন্টা তো লম্বা সময়। সরকারের মাথা মানে শেখ হাসিনার মাথা নয়, সরকারের সংস্থাগুলোর মাথা। মাথাগুলো কী ইচ্ছে করে নিষ্ক্রিয় ছিল কিনা জানা দরকার। সেই মাথাদের কেউ কেউ কী পিলখানা পরিকল্পনার অংশীদার কিনা জানতে শংকা হয়।
এইগুলা এখন হয়তো আর জানা হবে না :(... কয়েক বছর পর কোন ফেব্রুয়ারীতে "নির্মমতার একটি রাত : কি ঘটেছিল সেই রাতে" নামে বইয়ের মোড়ক উম্মোচন হবে... তখন হয়তো কিছু জানা যাবে 🙂
সেই পর্যন্ত আল্লাহ আমদের ধৈর্য্য দান করুন... বলুন আমিন 😉
একটা অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম করা দরকার, জাতীয় দূর্যোগের সময়।
আর অপরিপক্কতা বন্ধ করতে হবে, মিডিয়ার পরিপক্কতা যেমন মিডিয়ার থেকেই আসবে, তেমনি আর্মিকেও নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসতে হবে, তাদের নিজেদের নেতিবাচক ভাবমূর্তি নিজেদেরই বদলাতে হবে।
আমি ভীষন আশাবাদি, কারন এখন যারা আর্মির মিডিয়াম লেভেলের কর্মকর্তা তাদের অনেক বেশি কো-অপারেটিভ মনে হয়েছে আমার কাছে, আর ব্রিজিং এর কাজটা করতে হবে আমাদেরকেই, আমরা যারা সিভিলিয়ান, কিন্তু আর্মির অনেক কিছুই বুঝতে পারি।
মাথার জট খুলেনি এখনো, কি বললাম বুঝাতে পারলাম কিনা জানিনা।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
@ ফয়েজ
প্ল্যাটফর্ম তো আছেই, এই যে সিসিবি। চিন্তা এবং মতামত আদান প্রদানের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম আর কি হতে পারে? চিন্তার impact কিন্তু কম না। আর ফর্মাল যে প্ল্যাটফর্মগুলো রয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে আমার কিছু দ্বিধা আছে। আমার ভয় সেটা করতে গেলে হয় দলাদলি হবে, না হলে গলাগলি হবে, পার্টি আর রি-ইউনিয়নই হবে শুধু। এর কোনটার ব্যাপারেই খুব একটা আগ্রহী বোধ করছিনা। কারণ, কাজের কাজ সেখানে কিছু হবে বলে মনে হয়না।
আরেকটা কথা, "আমরা ক্যাডেট" "আমরা ক্যাডেট" এই বিষয়টি নিয়ে আমার কিছুটা অস্বস্তি আছে। আমার বন্ধুমহলেই ইটন-অক্সব্রিজ এর অনেকে আছেন। ওদের সাথে আলাপ আলোচনায় যতদূর বুঝেছি - ওরাও কিন্তু আজকাল এই "old boys' club" মানসিকতা থেকে প্রাণপণে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে; নিজেদের চিন্তা এবং সমাজের দরজা বাকী জনগোষ্ঠীর জন্যও উম্মুক্ত করে দিচ্ছে। তাতে করে বিনিময় হচ্ছে চিন্তা, চেতনা, এবং সহমর্মিতা। আমি মনে করি,
পৃথিবীটা এখন inclusivity-র, exclusivity-র না। জন ডানের ভাষায়: "No man is an island . . ."
:thumbup: সহমত
রায়হান ভাই,
মাইন্ড কইরেন না, বস। আমার মত পুরাই বিপরীত। এখন বরং "categorize > include/exclude" এই প্রকৃয়াটা আরো বেশি intense.
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
বুশের কথাটা মনে পড়ে যাচ্ছে, হয় আমাদের পক্ষে নয়তো বিপক্ষে। ৯/১১ -এর পর মনে হয় এই বাণী ছাড়ছিল।
@ রায়হান ভাই
সিসিবি একটা প্ল্যাটফর্ম হতে পারে, সেক্ষেত্রে সিসিবির গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে হবে, নিজেকে আরও ছড়িয়ে দিতে হবে।
Inclu/exclu বিতর্কে যাব না, তবে সিসিবি একটা গ্রুপ কে প্রমোট করে। আমার অভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এটা যায় না। সেক্ষেত্রে আর একটা গ্রুপ তৈরী হতে পারে যেখানে সিসিবি একটা অংশ, আরেক অংশ সমমনা নন-ক্যাডেট ব্লগার, অথবা সমমনা অন্য যে কেউ।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
৩৩ ঘন্টা খুব একটা বেশী সময় নয়। যাদের recent inidan hostage এর কথা মনে আছে তারা নিশ্চই বলতে পারবেন ইন্ডিয়ান আর্মি এর কতক্ষন লেগেছিল। আর যাদের মেমোরি আরও শার্প তারা মনে করে দেখেন russian hostage by chechnian in 2004.
http://en.wikipedia.org/wiki/Beslan_school_hostage_crisis
http://en.wikipedia.org/wiki/Mumbai_hostage_crisis
এগুলা দেখে সবাই বুজবেন কেন প্রথমেই অ্যাটাক এ যাওয়া উচিত না। আর একটা hostage solve করতে কত সময় লাগে।