১. কদিন আগে সিঙ্গাপুরে গেছিলাম। স্ট্রেইট টাইমস-এ দেখলাম মূল সংবাদ হচ্ছে আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে। বাংলাদেশে আমরা কল্পনাই করতে পারি না এ ধরণের সংবাদ প্রধান খবর হতে পারে। বাংলাদেশে অবশ্য আমরা সুবিধা জনক অবস্থায় রয়েছি। প্রতিদিনই ঘটনা ঘটছে। বলাই বাহুল্য বেশিরভাগ ঘটনাই নেতিবাচক কিছু একটা। মিডিয়াও এইসব খবর পছন্দ করে, সাধারণ মানুষ পড়ে, বাড়ে পত্রিকার বিক্রি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই যখন শুনি বিডিআরে বিদ্রোহ, মনে হলো ভালই তো, কদিনের জন্য সংবাদ সংকট থাকে না। লাবলু ভাই কদিন আগেও আমাদের বার্তা সম্পাদক ছিলেন, লাবলু ভাই এখন থাকলে নিশ্চিত থাকতে পারতেন কদিন।
২. কিন্তু ঘটনার ভিতরে যতই ঢুকলাম, আতঙ্ক গ্রাস করলো আমাকে। আর এখন প্রচন্ড মন খারাপ করে বসে আছি। দুটো লাশের ছবি দেখলাম। দুজনেই কর্ণেল ছিলেন। তাদের একজনের সাথে মিডিয়ার অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক ছিল। বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গেও ব্যক্তিগত পরিচয় হয়েছিল। এখন জানলাম সামিয়ার বাবাও ভিতরে আছেন। (কেউ কি ওনার নামটা বলবে?) বেলা যত বাড়তে থাকলো ক্যামেরার সামনে, গ্রেনেড হাতে বিডিআর জোয়ানদের দেখলাম। আমি যতদূর বুঝি সাধারণ ক্ষমা আপাতত ঘটনাকে শান্ত করলেও সামনের দিনগুলোতে আরো অনেক কিছু ঘটবে। মোট কথা ঘটনা আজকেই মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।
৩. আনোয়ার কবির সশস্ত্র বাহিনীতে গণহত্যা নামে একটি দারুণ প্রামান্য চিত্র তৈরি করেছে। ১৯৭৭ সালে বিমান বাহিনীতে বিদ্রোহ নিয়ে পরে কি হয়েছে আমরা সবাই কম বেশি জানি। যারা আরো ভালো ভাবে জানতে চায় তারা এই ডকুমেন্টারিটি দেখতে পারে। আনোয়ার হয়তো আজকের ঘটনা নিয়ে আরেকটি প্রামান্য চিত্র তৈরি করবে একদিন। আসলে আমরা যারা বাইরে থাকি তারা তো প্রকৃত ঘটনা জানতে পারি খুব কমই।
৪. ছাত্রলীগ-ছাত্রদল গোলাগুলি করলে সমালোচনার ফেনা তুলি আমরা। আর্মি-বিডিআর গোলাগুলি করে নিরীহ পথচারিদের মেরে ফেললেও আমরা তেমন উচ্চবাচ্য করি না। আচ্ছা যদি দাবি করি বিডিআর সদর দপ্তর বা সেনানিবাসগুলো শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়া উচিৎ, তাহলে কি এখন বড় ধরণের সমর্থন পাওয়া উচিৎ?
৫. জরুরী অবস্থার সময় একটি বিশেষ সংস্থার কর্মকান্ডে অনেকের জীবনই অতিষ্ট হয়ে পড়েছিল। যে সব ঘটনা ঘটেছে তাতে ভাল কোনো ধারণা হয় না। এই সব গোয়েন্দা সংস্থার মূল কাজ কি তা এখনও আমার কাছে স্পষ্ট না। তাদের লিখিত অনেক রিপোর্ট আমি পড়েছি। এর চেয়ে হাস্যকর রিপোর্ট আর কি হতে পারে আমার জানা নেই। আজকের যে ঘটনা তা তাৎক্ষনিক ক্ষোভের প্রকাশ তা কিছুতেই মানতে পারছি না। তাহলে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাজ কি? তাদের ব্যর্থতার কথা আর কতবার বলতে হবে আমাদের?
৬. সেনানিবাসে ঢোকার সময় বা গত দুই বছর জরুরী অবস্থার সময় আমাদের নানা ধরণের অভিজ্ঞতা হয়। সেই সব অভিজ্ঞতা সুখকর নয় অবশ্যই। নানা কারণে আমাদের পছন্দ-অপছন্দ তীব্র হয়। সশস্ত্র বাহিনী এই দেশে কেন জনপ্রিয় হতে পারলো না সেটি আমাকে ভাবায়। অথচ আমাদের ভাই, আত্মীয় স্বজনরাই তো এখানে কাজ করে। তারা প্রত্যেকেই ভাল মানুষ। তাদের পছন্দ করি, তাদের সঙ্গ পছন্দ করি, আড্ডা দেই, তুমুল তর্কও করি। তাহলে সমস্যা কোথায়?
৭. খুব মন খারাপ করে আছি। আমি জানি না আজকের ঘটনার শেষ কোথায়। কার ভাগ্যে কি ঘটেছে এখনো তা জানি না। এ থেকে কি শিক্ষা নেব তাও ধারণা নেই। শিক্ষা যে আমরা নেই না তা কি আর বলে দিতে হবে?
১৮ টি মন্তব্য : “এর শেষ কোথায়?”
মন্তব্য করুন
আসলেই তো, এসবের শেষ কোথায়?
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আচ্ছা সাধারণ ক্ষমার ব্যাপারটাকে আর্মি থেকে কিভাবে দেখা হবে বলে মনে হয়? সাধারণ ক্ষমার মত বিষয়টা এত সাধারণ থাকার কোন চান্সই যে আমি সাধারণ চোখে দেখতে পারতেসিনা 🙁
পোস্টের সাথে পুরোপুরি একমত। 🙁
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
অফিসার মারা হয়েছে। সুতরাং সাধারণ ক্ষমা নিয়ে আমি আশাবাদী না।
আমি অন্তত ব্যক্তিগতভাবে যেসম সেনা সদস্যদের চিনি(এই ব্লগেও অনেকে আছেন)এঁদের মত ভাল মানুষ খুব কম দেখেছ(এক দুজন ব্যতিক্রম নেই সেটা বলছিনা কিন্তু তাদের সংখ্যা খুব কম)।দেশকে ভালবাসা থেকে শুরু করে বিনয়,পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কোনটিতেই কোন কমতি নেই এদের।এ কারণেই খুব জানতে ইচ্ছে করে আসলে সমস্যাটি কোথায় এবং তা কিভাবে সমাধান করা যেতে পারে। সায়েদ ভাই, রহমান ভাই বা তাইফুর মামা আপনারা যদি এ নিয়ে হালকা পাতলা আলোচনা করেন বা নিজেদের মতামত দেন তাহলে কিন্তু সিসিবি একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম হতে পারে স্বচ্ছতা আনয়নের ক্ষেত্রে।
বিঃ দ্রঃআমার এ মন্তব্যটিতে আমি গঠনমূলক আলোচনার কথা বলেছি, দয়া করে কেউ ভুল বুঝে আহত হবেন না প্লিজ।
খুব ভাল বলছো ম্যাস্ফূ। দুই একজন খারাপ বা ব্যতিক্রম মানুষ সব শ্রেনীতে থাকে। আসলেই আমার জানান ইচ্ছা সমস্যাটা কোথায়? লিখলে তো মনের মাধুরী মিশিয়ে অনেক কিছুই লেখা যায়। তাতে গঠনমূলক কিছু হয় না। আমি কারণগুলোই জানতে চাই।
সেইটাই। আমি পার্সোনালি যাদের চিনি তাদের কোন ভাবেই খারাপ মানুষ বলতে পারবোনা।
কিন্তু সামগ্রিক অর্থে বিচার করতে গেলে বেশির ভাগ সাধারণ মানুষের মনে আর্মির জন্য শ্রদ্ধার চে ভয় আর একরকমের বিতৃষ্ণা কাজ করে। এইটা শুনতে খারাপ লাগলেও সত্যি কথা। ব্যাপারটা সত্যিই আমার মাথায় ধরেনা।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
কম-বয়সি আর্মি-অফিসারদের দেশপ্রেম+সততা নিয়ে আমি খুব একটা টেনশন করিনা। কারণ, আমারই অনেক খুব কাছের সিনিয়র, বন্ধু, ও জুনিয়রকে চিনি। ওরা আমার কাছে বিশ্বস্ত।
কিন্তু আর্মির উপরের দিকের লোকজনের ব্যাপারে আমার জ্ঞান খুবই কম।যাও বা আছে, খুবই হতাশাজনক। ম-ইউ এর নানা ছ্যাবলামি আর দুদক-প্রধানের ন্যাকামি দেখে দেখে...
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
সকালে প্রথমে শুনে আমিও বিডিআরের আভ্যন্তরীন ঝামেলা বলে এতোটা পাত্তা দেই নি। কিন্তু সাধারন মানুষ মারা যাচ্ছে এটা শুনার পর, এবং টিভিতে দেখে আতঙ্কিত হলাম। (এর মধ্যে খবরে দেখলাম একজন জেলখানার কয়েদী, সে ওখানে কিভাবে গেলো এটা এখনো ভেবে পাচ্ছি না, সত্যি সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ !)
যারা ভিতরে আটকা পড়ে আছেন তারা অনেকেই আমাদের বড়ভাই, পরিচিত, আত্মীয়। সবার জন্যে শুভ কামনা। এছাড়া আর কিইবা করতে পারি এখন !
অবশ্যই।
আমার একটা জিনিস এখন মনে হচ্ছে, আমরা যেমন কোন দাবি দাওয়া নিয়ে বা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসতে পারি, বিডিআর বা সেনাবাহিনীর এধরনের পরিস্থিতিতে দাবি দাওয়া/প্রতিবাদ জানানোর ওয়ে টা কি ? অনেক সময়ই তো সরকারের কানে সব কথা যায় না। তাদের শুনাতে হলে সাধারন মানুষের পথ নামতে হয়। বিডিআর বা সেনাবাহিনী যদি কোন কথা সরকারকে শুনাতে চায় তাহলে তারা কিভাবে শুনাবে?
তবে যেভাবেই শুনাক, গুলাগুলি করে সাধারন মানুষ মেরে তো অবশ্যই নয়।
বিডিআর ও সেনাবাহিনী'র স্ট্যাটাসগত পার্থক্য কতটা আমি আসলে বিস্তারিত জানি না। বেতনস্কেল বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কারা কতটা কম বেশি ভোগ করে এই সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা নেই।
সাধারন বুদ্ধিতে যতটা ধরে , পেশাগত ক্ষেত্রে দুই বাহিনীই রিস্কি জীবন যাপন করে। সেনাবাহিনী যেমন পার্বত্য এলাকায় , বিডিআর তেমন সীমান্তে। (এই ভাবে দেখলে অবশ্য বিডিআর বাহিনী'র লাইফ রিস্ক বেশি মনে হচ্ছে আমার কাছে, সেনাবাহিনীতে সবাই সব সময় পার্বত্য এলাকায় কাটায় না, তাদের অফিসিয়াল অনেক পোস্টিং, কিন্তু বিডিআর জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটায় সীমান্তে )। এজন্যে এই দুই বাহিনীর সৈনিকদেরই বেতনস্কেল বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সমান হলেই মনে হয় ভালো হয়। তাহলে কেউই নিজেদের বঞ্চিত মনে করবে না। আজকের বিদ্রোহের যেটা অন্যতম কারন বলে জানা গেছে।
সশস্ত্র বাহিনী এই দেশে কেন জনপ্রিয় হতে পারলো না সেটি আমাকেও ভাবায়। ব্যাক্তিগত ভাবে আমি বা আমরা সেনাবাহিনীর যাদের সাথে পরিচিত , আমার মনে হয় আমার সাথে আপনারাও স্বীকার করবেন তারা প্রত্যেকেই ভাল মানুষ। কেউ কেউ অসাধারন। কিন্তু প্রতিষ্টান হিসেবে সাধারন মানুষের কাছে এটি ভীতিকর কেনো? এই সিসিবিতেই আমরা আমাদের যে সব বড় ভাইদের দেখি যাদের একজন অন্যজনের চেয়ে অসাধারন, (কারো নাম বলছি না, আজকেও সারাদিন আমি তাদের একজনকে ব্যাক্তিগত কাজে একের পর এক বিরক্ত করেছি, ভাইয়া হাসিমুখে সব সয়ে গেছেন) তারা এমন বলে তাদের প্রতিষ্টানটিকে সাধারন মানুষের প্রতিপক্ষ ভাবতে একটুও ইচ্ছে করে না।
এতো বড় একটা ঘটনা'র বিন্দুমাত্র আঁচ করতে না পারাটা গোয়েন্দা সংস্থাগুলি'র জন্যে নিঃসন্দেহে ব্যার্থতার।
পরিস্থিতি খুব দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসুক, এটাই এখন একমাত্র কামনা।
কামরুলের মন্তব্য পড়লাম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে একদিন, কিন্তু কত কিছুর বিনিময়ে সেটাই প্রশ্ন। আমি ভয়াবহ আতন্কিত।
আমার এক পরিচিতের ফেসবুক স্ট্যাটাসটা কোট করি...
দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতি সাধারণ জনগণের এই ধরণের মনোভাব ভীষণ অ্যালার্মিং...
"আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"
এটাই শঙ্কার মূল বিষয় 🙁
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
সাধারণ ক্ষমার ব্যাপারটাই বুঝলাম না। কি হয় কে জানে!!!
বিদ্রোহ একদিনে হয় না, আস্তে আস্তে ক্ষোভ দানা বাধেঁ। মাসুম ভাইয়ের সাথে একমত, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি করছিল?
খবর যা পাচ্ছি, তাতে মনে হচ্ছে, পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। সামনে গভীর দুঃসময়
ইউসুফের একটা পোস্টে আমি কিছু মন্তব্য করেছিলাম। সম্পর্কিত বলে এইখানে সেটা আবার দিলাম।
ইউসুফ এবং রহমান : তোমাদের লেখা দুটি পড়ে এতো আবেগাপ্লুত হয়েছি যে চোখটা ঝাপসা হয়ে আসছে। একটু অসুস্থ বলে আজ অফিসেই কিছুটা বিশ্রামে আছি। কিন্তু তোমার লেখাটা আমাকে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য করলো। তোমাদের জন্য :hatsoff: ।
তোমার লেখা এবং পাশাপাশি অন্যদের মন্তব্যের সঙ্গে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই। আমাদের গুণেরও শেষ নেই। অতিথিপরায়ন, বন্ধুবৎসল, পরোপকারী এমনসব লিখে চলা যায় পরপর। আর আমাদের সামরিক বাহিনী যে দেশের রাষ্ট্রদূতের কাজ করে যাচ্ছে সেটা তো তুলনাহীন। মিশনে যারা যায়, তারা ভালো কিছু অর্থ পায়, জীবনযাত্রাটা উন্নত হয়- কিন্তু বিনিময়ে তারা যার যার নিজের কাজ, পেশাদারিত্বের মাধ্যমে দেশকে যেভাবে সম্মানিত করে সেটার কোনো জবাব নেই।
কিন্তু একটা বিষয় আমাকে বোঝাও- বিদেশে আমাদের সামরিক বাহিনী এতো প্রশংসিত হলেও দেশে সমানভাবে বা বেশিরকম সমালোচিত কেন? কেন দেশের মানুষের সঙ্গে তাদের আচরণ একইরকম নয়? ১/১১ পরবর্তী সময়ে আমি তত্ত্বাধায়ক সরকার ও সেনাবাহিনীর পক্ষে একরকম জোরালো সমর্থন দিয়ে গেছি। টিভি টক শোতে তো অবশ্যই। অনেকেই বিশেষ দলবাজরা সেটা পছন্দ করে নি। আমার তাতে কিছু আসে যায় না। কিন্তু দেশে তোমরা যখন বেসামরিক লোকজনের সংস্পর্শে আসো তখন তোমরা আমাদের “ব্লাডি সিভিলিয়ান” বলে মনে করো। আমাদের দিক থেকেও যে কোনো সমস্যা নেই তা নয়। আমরা সেনাবাহিনীকে প্রতিপক্ষ মনে করে এসেছি সেই পাকিস্তান আমল থেকে। আর তোমাদের একটা সংস্থার তো যথেষ্ট দুর্নাম। নামটা বললাম না কারন বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। পাকিস্তানের আদলে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ, ছাত্ররাজনীতির সমস্ত পান্ডাদের লালন-পালন, দল ভাঙ্গা-গড়া, অতিরিক্ত ইসলাম প্রীতি- এসব নানা অভিযোগ আছে। আমি বুঝি খোলা বারান্দায় এসব আলোচনা ঠিক নয়। তবে প্রশ্নগুলো রেখে গেলাম কারণ, আমি বুঝি নি যে সেনাবাহিনী বিদেশে এতো সমাদৃত, দেশে কেন তারা ততটাই সমালোচিত??
আমার লেখার জবাবে ইউসুফ বলেছিল : সানাউল্লাহ ভাই, আমার লেখা পড়ে আপনার মত মানুষের চোখ ঝাপসা হয়েছে, এটা পড়ে আমার চোখটা কেমন যেন করছে…আমার জন্য এর চেয়ে বড় আর কি কম্প্লিমেন্ট হতে পারে - আমি বাকরুদ্ধ।
এই ব্যাপারটাকে এড্রেস করবার মত যথেষ্ট ভাষা আমার নেই। আমি শুধু এই ধরনের মানসিকতার মানুষ আমাদের মাঝে থাকার জন্য লজ্জিত এবং তাদের অংশ হবার জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাই। যেখানে আমাদের নিজেদেরই ভাই/বোন, পিতা/মাতা, পুত্র-কন্যারাই সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেখানে এধরনের সম্বোধন নিজের রক্তকেই কলংকিত করা নয় কি?
তবে দিন বদলেছে ভাইয়া, অনেক বদলেছে। আরো বদলাবে এইটুকু আমি বলতে পারি। পারস্পরিক সন্মানবোধের সুফল আমরা অনেকেই বুঝতে পারছি।
তবে একটা কথা। আমাদেরকেও শুধুমাত্র ‘হাটুবুদ্ধি’ হিসাবে দেখাটা অমানবিক নয় কি? আমরা কি আসলেই কিছু বুঝি না? সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা এখন সবাই নিদেনপক্ষে একজন গ্রাজুয়েট। আর আমাদের আজকাল কায়িক পরিশ্রমের পাশাপাশি অনেক পড়াশুনাও করতে হয়। এটা বড় ব্যাপার না। যেটা গন্য সেটা হল, সামরিক জীবনের পাশাপাশি আমাদের অনেক ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিতে হয়, অনেক রিসার্চ করতে হয় এবং আক্ষরিক অর্থে এর প্রয়োগ ঘটাতে হয়। আমাদের মধ্যেও অনেকে বেসামরিক ক্ষেত্রে ব্যাপক সন্মানে ভূষিত হয়েছেন। তাই আমরাও বোধহয় সামান্য কিছুটা সন্মান পেতে পারি।
আপনি আর বাকি যে বিষয়গুলো অবতারনা করেছেন, তার ব্যাপারে আমি সংগত কারনেই কিছু বলতে অপারগ।
শুধু একটা কথা বলতে চাই - ক্ষমতা মানুষকে বিনয়ী হবার যে অমূল্য সুযোগ দেয়, সেটা সবারই গ্রহন করা উচিত। যে ব্যাক্তি একাধারে ক্ষমতাবান এবং বিনয়ী, এ পৃথিবীতে সেইই ঈশ্বরের কাছাকাছি সন্মান পেতে পারে।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
বলা হচ্ছে সারাদেশের সব বিডিআর ক্যাম্প থেকে সব অফিসার প্রত্যাহার না করলে তারা অস্ত্র জমা দিবে না। আবার এই দিকে ভাবে সাবে যা মনে হচ্ছে সেনাবাহিনীও সরতে চাচ্ছে না।
অফিসারদের মৃত্যুর সঙ্খ্যাটা যেখান থেকেই শুনছি একটু পর পর বাড়ছে।
সাধারন ক্ষমা করলেও সাধারন মানুষের মৃত্যু , এতো অফিসারের মৃত্যু স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেয়া যায় না।
বুঝতে পারছি না শেষ পর্যন্ত কি হবে 🙁
১।
এটা কি ঠিক ভাইয়া? আমরা কি আসলেই আর্মি-বিডিআর গোলাগুলি করে নিরীহ পথচারি মেরে ফেললে কিছু বলি না?
২।
আমরা অনেকসময় এমনভাবে কথা বলি যেন আর্মি আলাদা, আর আমরা আলাদা... আর্মি বিডিআরের অমুক ঘটনায় ইত্যাদি ইত্যাদি...
আমি বলি, কেউ মারা যাওয়াটাই অনেক বড় কিছু...সে আর্মির কেউ হোক বা পথচারীই হোক। যে কারণে মারা গেল তার প্রতি নিন্দা, যে মারল তার প্রতি নিন্দা...
অন্যকোন দেশের সাথে যুদ্ধ হচ্ছে না... কারো মারা যাওয়াটাই অনেক বেশি কষ্টের ব্যাপার...
আর্মিকে পাব্লিকের প্রতিপক্ষ করেছে সরকারই...আমার মনে হয়।সব কাজেই আর্মি নামায় দিয়ে ওদেরকে সাধারন মানুষের এত কাছে এনেছে...আমারা সাধারন মানুষের মাঝে তো হাজারো সমস্যা...সব সমস্যায় আর্মি আসলে ....ওদেরকে ডিল করতে হয় বলেই এমনটা হয়।
আর্মিরা যদি শুধু নিজেদের নিয়েই থাকতো তাহলে ত পাব্লিকের সাথে ওদের এত ইন্টারেকসন হতনা।
এখন দেখছি বিডিআর ইসুতে অনেকে ফুল আর্মি কে গালিগালাক করছে।এইটার কোনো যৌক্তিকতা খুজে পাচ্ছি না...
শওকত ভাই, আমার আনোয়ার কবিরের "সশস্ত্র বাহিনীতে গণহত্যা"-র একটা copy দরকার। আপনার সাথে কিভাবে যোগাযোগ করা যায়? দয়া করে আমাকে একটা ইমেইল drop করবেন? trimita@jobs-ict.com