আজ সোমবার। রাত ৯-২০। নাটক হচ্ছে। ভাল লাগছেনা। তাই লিখছি। সুমি আপু পাশে বসে মাসুদ রানা পড়ছে। খুব পড়তে ইচ্ছে করছে। কিন্তু পড়তে দেয়না সুমি আপু। এটা নাকি বড়দের বই। পড়া যাবেনা। আমি এর আগে লুকিয়ে পড়েছি। কিন্তু এমন কিছু পাইনি যার জন্য ছোটরা পড়তে পারবেনা। পড়ায় মন বসছেনা তাই। খুব খারাপ লাগছে। খুব খারাপ লাগছে। একদম পড়তে ইচ্ছে করছেনা। এমন খারাপ লাগছে যে বুকের ভেতর কষ্ট হচ্ছে। আমার ডায়েরীতে এটা একটা দু:খের দিন। আমি লিখছি যে এখনো খুব খারাপ লাগছে। এত খারাপ লাগছে যে কী লিখবো তাও ভেবে পাচ্ছিনা। পাশের রুমে মাসুমা খালা ও শম্পা নাটক দেখছে। নাটকের নাম (বিদায় বেলা)। আরেকটি জিনিস এখনই ঠিক করলাম যে আমার ডায়েরীতে একটি পাতায় সুখের দিন ও দু:খের দিনের একটি তালিকা লিখবো যাতে সে দিনটি দু:খের দিন বা সুখের দিন পালন করতে পারি। আজ থেকেই এটা শুরু করলাম। কারণ আমার জীবনে আজ একটি দু:খের দিন। এই লেখাটি শেষ হওয়ার পরই তালিকা আরম্ভ করবো। পাতাও ফুরিয়ে আসছে। আর আমারও তেমন কিছু লিখবার নেই। শেষ হয়ে আসছে আস্তে আস্তে। আজ আর লিখবোনা। এখানেই লেখার ইতি।
———————————-
এই দিনলিপি লেখার তারিখ: ৩০ জুন, ১৯৯৭। বয়স তখন এগারো।
আজকে পুরোনো দিনের ডায়েরী উল্টাতে গিয়ে অনেক ছেলেমানুষী লেখা ও দিনলিপি আবার পড়া হলো। কিছু কিছু পড়তে পড়তে আমি পুরা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি। তারই একটা শেয়ার করলাম সবার সাথে। 😛
😀 😀
তখন পড়ে আসলে মনে হয় বুঝিইনাই কোন জিনিসের ক্যাম্নে কি 😀
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
এগারো বছর বয়সে আমি পড়ালেখাই জানতাম না, :grr: :grr:
এখন জানোস? 😀
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
দু:খের দিন কি কারনে সেটা তো বললা না।
এটা যেহেতু বিচার করতে পেরেছো তার মানে তুমি আর ছোট নেই তখন 😉
কারণ আপু আমারে মাসুদ রানা পড়তে দেয়নাই 😛
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
ওই বয়সেই পাইক্যা গেছিলা??
আমি মনে হয় ঐ রকম বয়সে দস্যু বনহুর, কুয়াশা পড়তাম। :khekz:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
আমি পড়তাম "রূপকথার বৈঠকখানা"... :khekz:
আমি পড়ছিলাম ঠাকুরমার ঝুলি। 😛
কুয়াশা আমি মাসুদ রানারও পরে পড়সি। আর দস্যু বনহুর পড়সি বড় হইয়া। :khekz:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
শিউর ডায়রিতে সত্যি কথা লেখা হয় নাই। কারণ, জিহাদ বোধহয় ততদিনে মাসুদ রানার কোন একটা বই পুরা শেষ করে ফেলছিল।
জিহাদ, বইয়ের বড়দের অংশটা পড়ে তখন কি মনে হইছিল একটু জানতে পারি কি? জানার বড় সাধ ছিল...
না এইটা ভুল বল্লা। সত্যি কথাই লিখসি ডায়েরীতে। ঐ বয়সে বানায়া বানায়া ডায়েরী লেখার কথা না। 😀
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
ডায়রীতে তুলে রাখা কথামালা হলো বেশি চিন্তা ভাবনা না করে মুহূর্তকালের আবেগের বহিঃপ্রকাশ।
পরে পড়তে গেলে অনেক লেখাই ছেলেমানুষী মনে হয়।
কিন্তু সেসবের গুরুত্ব অ-নে-ক।
আমিও আমার ১৪টা ডায়রী থেকে পাতা উল্টাই মাঝে মাঝে।
অনেক আগের না বরং মাত্র ৩/৪ বছর আগের কথা পড়েও কখনো কখনো প্রচন্ড হাসি পায়, ত্রিশ ছুঁই ছুঁই এই নিজেকে বড্ড বাচ্চা বাচ্চা লাগে।
স্মৃতি প্রতারক হলেও লিখে রাখা কথামালা কখনোই নয়।
ডায়রী পড়ে প্রতিবারই নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করি।
জয়তু ডায়রী।
Life is Mad.
মনের কথা বলে দিসেন। :boss:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
১৪ টা? 😮
হুমম এরকম ভালো লেখক হবার এইটাই রহস্য :dreamy:
আহারে তখন দুইএকটা এ ফোর পৃষ্ঠা লেইখা রাখলেও তাইলে এখন সিসিবিতে কিছুটা লেখালেখি চালাইতে পারতাম :((
মামা, তোর ঐ রিনরিনে কন্ঠের আমলের কিছু লেখা তুইলা দিস আমগো লাইগা 😀 😉
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
নারে মামা...........
ডায়রীর সাথে আরেকটা জিনিস আছে। সেইটা হইলো চিট্ঠি 🙂 ।
চিঠির রোলটা বেশি ইম্পর্ট্যান্ট।
Life is Mad.
১৪টা!!!! 😮 😮
ভাই আমারো একই কথা।
জীবনে একবার টেরাই দিছিলাম ডাইরী লেখার, কিছুদিন লেখার পর আর খুঁজে পাই নাই ডাইরীটা। 🙁
আমারে কেউ চিঠি দেয় নাই :(( ! ও........ মনে পরছে, একটা পাইছিলাম। ওইডা পইড়া কিনতে কিনতে চোওক্ষের পানিতে একটা সুইমিংপুল হইছিল :(( :(( :(( !!!
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
হুম, ডায়রি।
সেদিন, কলেজ থেকে টুয়েলভের চলে আসার সময় নিজেদের পোলাপাইনকে দেয়া ডায়েরিটা উল্টাতে গিয়ে প্রথম পাতায়ই আমার অনেকদিনের রুমমেট জহিরের লেখাটা পড়ে চোখের পানি আটকাতে পারিনি। ওর লেখার শেষে কোনায় লেখা আছে ডেইট অব বার্থ ১১ই নভেম্বর। আর তার নীচে ও লিখেছিলো ডেইট অব ডেথ ----। আমি কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি ঐ জায়গাটাতে আমাকে লিখতে হবে ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০০৮।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
শ্রদ্ধা.......
আর কি বলব? বলতে পারছি না......।
Life is Mad.
দোস্ত আর মাত্র দুই মাস পর একবছর হয়ে যাবে ওর মৃত্যুর। অথচ এখনো মাঝে মাঝে মনে হয় এই বুঝি হাসিটা দিয়ে সামনে এসে দাড়াবে পাগলটা।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আমি অবশ্য ১১ বছর বয়সেই মাসুদ রানা-সোহানার সব অলিগলি পইড়া ফেলছিলাম, কিন্তু ডাইরী লিখতাম না। 😀
জিহাদ ব্যাটা তো দেখি ভালো পাকনা ছিলো। 😉 😉
হইব না আবার...পাইক্কা ফল টসটস কইরা মাটিতে পরতিসিল...ভাল কাম করসস...।
আমারো আসে এইরকম কয়েক্ষান...দেখি খুইজা পাই নি... :clap: :clap: :clap: :clap:
আমারও বেশ কিছু ডায়েরী ছিল কিন্তু আমার খুব একটা বাজে অভ্যাস ছিল, অনেকদিন পরে ডায়েরী পড়তে গিয়ে ডায়েরী ছিড়ে ফেলতাম। আপাতত তিনটা ডায়েরী ছাড়া বাকিসব ছিড়ে ফেলেছি। এখন মনে হচ্ছে রাখলেও পারতাম।
তিনটা রাখছ, আমি তো সবগুলাই ছিড়ছি, পুড়াইছি। মনে হয় ঠিক কামই করছি।
তবে চিঠি আছে, অনেক অনেক চিঠি।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
জিহাদ এইটারে সিরিজ বানা। অন্যের ডাইরী পড়তে ব্যাপক মজা। :guitar: :guitar:
উলটা চিন্তা করে দেখ তো, মনে কর তুমি এখন ১০ বছরের পোলা, বসে বসে ২২ বছর বয়সে লেখা নিজের ডাইরি পড়ছ।
কেমন, মজা লাগে?
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
জিহাদ, এখন আফসোস হয় কেন আগে ডায়েরী লিখতাম না?
তোমার দিনলিপি পড়ে খুব মজা পেলাম। :clap: :clap:
আমি কলেজে থাকতে প্রতি বছর নতুন ডায়েরী কিনতাম। ২/৪ বার লিখছিলামও। তয় সব মিলাইয়া ছয় বছরে ১০/১২ পৃষ্ঠার বেশী না, তাও আবার ৫/৬ টা ডাইরী মিলাইয়া 🙁 ।
আহারে সায়েদ ভাইএর মত যদি ১৪ টা ডায়েরী লিখতে পারতাম তাইলে নিজেরে হুমায়ুন আহমেদ মনে করতাম B-) ।
জিহাদ ১১ বছর থেকে এই পর্যন্ত যা যা লিখছ ছাইড়া দেও।
আমি আবার মাইনষের ডায়েরী পড়তে ভাল পাই 😀