প্রথম প্রেমের গল্প

শুনেছি মানুষ নাকি তার প্রথম প্রেমকে ভুলতে পারেনা। আর সেখানে যদি থাকে বেদনার গল্প, তাহলে তো আরো ভুলার কথা না। আজকে প্রথম প্রেম এর গল্প বলতেই বসলাম।

না, কোন মানবীর গল্প বলছিনা। বলছিলাম “রোনাল্ডো-দ্যা ফেনোমেনন আর ব্রাজিল” এর কথা।

গল্পের শুরুটা ১৯৯৮ এর কোন এক পড়ন্ত দুপুরে। পড়ি তখন চতুর্থ শ্রেনীতে। বাড়িওয়ালাদের ছেলে রিমন এর সাথে আমাদের ভাই-বোনের খুব ভালো সম্পর্ক। বিকালে উঠানে ক্রিকেট খেলি। তার কাছ থেকে মাঝে মাঝে কমিক্স, কিশোরকন্ঠ নিয়ে পড়ি। বিশ্বকাপ স্পেশাল কিশোরকন্ঠে রোনাল্ডোর টাক মাথাটা প্রথম দেখি সেদিন। প্রথম সেদিন জানতে পেরেছিলাম এই টাক্কুই নাকি ৯৮ এর বিশ্বকাপ এর স্টার হবে। যতটুকু মনে পড়ে তখন ইন্টার মিলানে খেলতো।

১৯৯৪ এর বিশ্বকাপে অনেক ছোট।বয়স ছয়।তেমন স্মৃতি মনে নাই। খালি মনে আছে নানুবাসার বারান্দায় বুট্টু মামারা সাদাকালো টিভি চালাতো, উঠানে অনেক মানুষ চেয়ার নিয়ে খেলা দেখতো। তখন খেলার নিয়মও বুঝিনা। আর মনে আছে ইতালি হেরে যাওয়ায় লিরা আন্টির মন খারাপ হয়েছিলো , কারণ তিনি ছিলেন ইতালির সাপোর্টার (ইতালির মুদ্রা লিরা হওয়ায়)।এই দৃশ্যগুলো ছাড়া আমার তেমন স্মৃতি মনে নাই। ৯৮ এ মোটামুটি খেলা বুঝতে শিখেছি। দেশীয় টুর্নামেন্টে তখন আবাহনী- মোহামেডান এর ম্যাচ বেশ উত্তাপ ছড়াতো।কোর্ট থেকে এসে আব্বা বিটিভিতে খেলা দেখতে বসতেন, আমিও তার সাথে আবাহনীর সাপোর্টার হতাম। তার কাছ থেকে খেলার নিয়ম কানুন শিখতাম…

…আবার ফিরে যাই রোনাল্ডোর গল্পে। ঐ কিশোরকন্ঠ থেকেই জানতে পারলাম ব্রাজিল তখনকার র‌্যাঙ্কিং এর শীর্ষদল। আর রোনাল্ডোকেই ধরা হচ্ছে তাদের তুরুপের তাস হিসাবে। ব্রাজিল এর রোনাল্ডোর পাশাপাশি আর্জেন্টিনার বাতিস্তুতাকে নিয়েও ছিলো ফিচার। যাকে ধরা হয়েছিলো আর্জেন্টিনার প্রধান অস্ত্র হিসাবে। জানি না কি কারনে ঐ পড়ন্ত দুপুর থেকেই “ব্রাজিল” আর টাক্কু রোনাল্ডোর সাপোর্টার হয়ে গেলাম।

বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে রিমনদের “উদয় ম্যানসন’ ছেড়ে আমরা চলে আসলাম পুরানথানায়। নতুন বাসার নিচতলায় আমরা। উপরে থাকে একটা মেডিকেল রিপ্রেসেন্টেটিভ এর ফ্যামিলি। ফ্যামিলি বলতে সে আর তার সুন্দরী স্ত্রী। বাড়িওয়ালা থাকে ঢাকায় ।

বিশ্বকাপ শুরু হয়ে গেলো। আম্মা, আমি আর ভাই ব্রাজিল। আব্বা আর বোন আর্জেন্টিনা।আমি নিয়মিত পেপার থেকে খেলার সময়ের আপডেট নেই। বিটিভি তে খেলা দেখি। যেই খেলা গুলো বিটিভিতে দেখায় না সেগুলো দেখতে রাত ১১-১২টায় উপরের বাসায় চলে যাই। তাদের বাসায় ডিশ ছিলো, আমাদের তখনো ডিশ নাই-একারণে। এখন ব্যাপারটা বুঝতে পারি আসলে তাদের কি পরিমাণ যন্ত্রনা দিয়েছি। শীতের রাতে তারা স্বামী-স্ত্রী লেপের নিচে শুয়ে আছেন, টিভিতে হয়তো কোন অনুষ্ঠান দেখছেন।আমি গিয়ে হুটহাট তাদের চেয়ারে বসে খেলা দেয়ার জন্য বলতাম। ছোট্ট বাবুটার জন্য তারা ভদ্রতা করে খেলার চ্যানেল দিতো। তাদের বাড়ি ছিলো বরিশাল, শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতো। আন্টি খেলা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করতেন, আমি তাকে উত্তর দিয়ে দিয়ে বুঝাতাম। কেন জানি খুব ভালো লাগতো। তার স্বামী বেচারা গম্ভীর মুখে খেলা দেখতেন। এভাবেই আমার খেলা দেখা পর্ব চলছিলো। আর চলছিলো পেপার এর সাথে পাওয়া রঙ্গিন ফিক্সচারে খেলা শেষে গোল লেখা।

প্রাণের অরেঞ্জ ড্রিঙ্ক এর প্লাস্টিক বোতলের দাম তখন তিন বা চার টাকা।প্রাণ অফার দিলো প্রতিটা ড্রিঙ্কস এর সাথে একটা করে টীম এর কার্ড। এভাবে ৩২ টা জমানোর পরে তা দোকানে জমা দিলে বড় একটা পোস্টার (বড় আর্ট পেপার সাইজ) পাওয়া যাবে সব দল এর ছবিওয়ালা। বাসা থেকে পাই ৫ টাকা। প্রতিদিন স্কুল এ যাওয়ার আগেই একটা প্রাণ অরেঞ্জ ড্রিঙ্ক খাই আর কার্ড পকেটে নিয়ে রওনা দেই। স্কুলের টিফিনে একটাকার ঝালমুড়ি বা একটাকার ছোলা বুট কিনে খাই।এভাবে জমাতে জমাতে ২৫টার মতো কার্ড হয়।পরের ৭টা আর পাচ্ছিলাম না। ঐ দোকানে যেই কার্ডগুলো ছিলো তা আমার ২৫ টার মধ্যে আছে। আমার দরকার অন্য ৭ টা। কোনভাবেই কার্ড মেলাতে পারছিলাম না।দোকানির হয়তো আমার জন্য মায়া লেগেছিলো। সে আমাকে বললো ১০টাকা নিয়ে আসতে আর ২৫টা কার্ড জমা দিতে। তাহলে পোস্টারটা আমাকে দিয়ে দিবে। টাকা আর কার্ড জমা দিয়ে পোস্টারটা যেদিন বগলদাবা করে এনেছিলাম আমার সে কী আনন্দ!

ফাইনাল ছাড়া কোন খেলার স্কোর কিছুই মনে নাই। কিছু খন্ড খন্ড দৃশ্য মনে পড়ে, কয়েকজন খেলোয়াড়কে এখনো চোখে ভাসে।চিলির দুইটা ফরোয়ার্ড প্লেয়ার ছিলো কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুলের, মাথায় মেয়েদের মতো কালো ব্যান্ড পড়ে খেলতো যাতে চুল সামনে না এসে যায়। একজনের নাম খেয়াল আছে- “সালাস”। প্যারাগুয়ের ক্যাপ্টেন ছিলো তখনকার অন্যতম সেরা গোলকীপার “চিলাভার্ট”। যে নিয়মিত ফ্রি-কিক নিতো, প্রায়ই গোল দেয়ার জন্য সামনে চলে যেতো! কলম্বিয়ার স্টার ছিলো বাহারী চুলের ভালদেরামা, ৯৮ ছিলো যার শেষ বিশ্বকাপ। তাকে মনে আছে তার চুলের স্টাইলের জন্যই, চুল যেন বড় কোঁকড়ানো কদম ফুল।আর্জেন্টিনা প্রতি বিশ্বকাপেই নতুন “ম্যারাডোনা” খুঁজে পায়। মিডিয়াতে কিছুদিন তাকে নিয়ে মাতামাতি হয়, আসল ম্যারাডোনাও তাতে সায় দেন। তো ১৯৯৮ এর বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার মেইন স্ট্রাইকার বাতিস্তুতা থাকলেও তাদের ম্যারাডোনা ছিলো “এরিয়েল ওরতেগা”। তার খেলাও তেমন মনে নাই, খালি মনে আছে কোয়ার্টাল ফাইনালের খেলায় প্রতিপক্ষের গোলকীপার এর থুতনীতে মাথা দিয়ে অনিচ্ছাকৃত ঢুঁশ দিয়ে সোজা লাল কার্ড পেয়েছিলেন। আর্জেন্টিনা ঐ ম্যাচ থেকেই বিদায় নেয়। “বাতিগোল” হিসাবে পরিচিত বাতিস্তুতা এক ম্যাচে হ্যাট্রিক করেছিলেন, পুরা টুর্নামেন্টে ৫ গোল।তবে পুরা টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার “ডেভর সুকার”। তার একক নৈপুন্যেই যেন ক্রোয়েশিয়া সেমিফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে হেরে এবং ৩য় স্থান নির্ধারনী ম্যাচে ৩য় হয়ে বিদায় নিয়েছিলো। সর্বাধিক ৬ গোল করে “গোল্ডেন বুট” জিতে নেন সুকার।

…ব্রাজিল টীম স্বাচ্ছন্দ্যেই এগিয়ে গিয়েছিলো ফাইনালে। কি একটা টীম ছিলো! সামনে খেলতো রোনাল্ডো-রিভালদো-বেবেতো। আর ব্যাকে প্রাচীরের মতো পাহাড়া দিতো দুঙ্গা-কাফু-কার্লোস। ।গোলপোষ্টে ছিলো পেনাল্টি-টাইব্রেকার আটকে দেয়ার মতো সেরা গোলকীপার তাফারেল। রাইটব্যাক কাফু- লেফটব্যাক রবার্তো কার্লোস মাঝে মাঝেই ডানদিক বা বাম দিক থেকে দ্রুত ছুটে যেতেন বল নিয়ে। ফ্রি- কিক ,কর্নার কিক স্পেশালিস্ট ছিলো কার্লোস।রিভালদো খেলতো ভালো, কিন্তু পাস দেয়ায় একটু কৃপণ ছিলো। ৯ নম্বর জার্সি পড়া রোনাল্ডো ডি-বক্সের আশেপাশে বল পেয়েছেন আর সেটাকে কাটিয়ে কোনভাবে গোলবারে কিক করেনি এমন কমই হয়েছে। ৪ গোল করে ব্রাজিলের শীর্ষ গোলদাতা ছিলো সে।বলের উপর অসাধারণ দক্ষতা আর শৈল্পিক খেলার জন্য “গোল্ডেন বল” পেয়েছিলেন। মনে আছে রোনাল্ডো গোল দিলে বা ভালো খেললেই টিভি ক্যামেরা চলে যেতো তার সুন্দরী প্রেমিকা সুজানার দিকে যাকে নিয়ে সংবাদপত্রগুলোরও ছিলো বাড়তি আকর্ষণ ।

ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হবে, ফাইনালে ২ গোল করে রোনাল্ডো সুকারের সাথে যৌথভাবে “গোল্ডেন বুট” জিতবে এই আশায় ফাইনাল খেলা দেখতে বসলাম গভীর রাতে। সবাই ঘুমিয়ে গেছে, আমার সঙ্গী শুধু রাসেল মামা-ব্রাজিল এর অন্ধ সাপোর্টার।বিরতির আগেই জিনেদিন জিদান এর দুই গোলে ব্রাজিল ২-০ তে পিছিয়ে পড়লো। জিদানকে ঐ খেলার আগে আমি তেমন ভালো করে খেয়াল করিনি, আগের কোন স্মৃতিও নাই। সেই জিদান দুই গোল করে আমাকে হতভম্ব করে দিলো।যেই তাফারেল সেমিফাইনালে ২টা টাইব্রেকার সেভ করে দিলেন, সেই তিনি ২ গোল খেয়ে যাবেন মানতেই কষ্ট হচ্ছিলো। বিরতিতে রাসেল মামা সিগারেট খাচ্ছেন, আর আমাকে আশা দিচ্ছেন যে ব্রাজিল বিরতির পরেই ফিরে আসবে। আবারো মামা-ভাগ্নে অন্ধকার কক্ষে খেলা দেখতে বসলাম। রোনাল্ডোকে ঐদিন খেলায় চেনাই যাচ্ছিলো না, তার পা যেনো মাঠে আটকে আছে। দুই-একটা বল নিয়ে ঢুকে, প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা বল ছিনিয়ে নেয়। রিভাল্ডোও নিজে থেকে অনেকগুলো চেষ্টা করলো, কাফু-কার্লোসরা বল নিয়ে পেছন থেকে সামনে চলে আসতে লাগলো,কোনভাবেই কাজ হচ্ছিলো না।উল্টা শেষ সময়ে ফ্রান্স আরেক গোল দিয়ে ৩-০ করে দিলো। ম্যাচ শেষে কার্লোস,রিভালদো, কাফুর কান্নামাখা চোখ দেখে অন্ধকারে চোখে পানি চলে আসলো। ক্যাপ্টেন দুঙ্গা কঠিন মনের মানুষ, শক্ত করেই রইলেন মুখ, রোনাল্ডো একা দাঁড়িয়ে রইলেন নিষ্প্রাণ চোখে।অন্যদিকে স্বাগতিক ফ্রান্স দলের, স্ট্যাডিয়ামের দর্শকদের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস। দ্রুত অন্ধকারেই নিজের চোখ মুছে নিলাম….

———————————–

প্রথম ব্রাজিল প্রেম এভাবেই শুরু হয়েছিলো, বেদনা দিয়ে- প্রিয় দলের চোখে অশ্রু দেখে। তবে মানবীর প্রেমের সাথে এই প্রেমগুলোর পার্থক্য আছে। মানবীরা একবার কষ্ট দিয়ে চলে গেলে আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা ক্ষীন। প্রিয় ব্রাজিল প্রথম প্রেমে কষ্ট দিলেও পরের বিশ্বকাপে দু’হাত ভরে তার দর্শকদের দিয়েছে। ২০০২ এর জাপান-কোরিয়া বিশ্বকাপে কি পাই নি! ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায়, “ফোর-আর” রোনাল্ডো- রিভালদো- রোনালদিনহো- রবার্তো কার্লোস এর ক্লাসিক খেলা, রিভালদোর ৫ গোল, ইংল্যান্ড এর সাথে খেলায় মধ্যমাঠ থেকে কিক দিয়ে রোনালদিনহোর গোল, ফাইনাল খেলায় জার্মানীকে তথা অন্যতম সেরা গোলকীপার অলিভার কানকে দেয়া রোনাল্ডোর ২ গোল,রোনাল্ডোর ৮ গোল করে গোল্ডেন বুট পাওয়া, ক্যাপ্টেন হিসাবে কাফুর হাতে বিশ্বকাপ- সবই ছিলো স্বপ্নের মতো, যেমনটা সব সময় ব্রাজিলের দর্শকরা আশা করে। আর ক্যাডেট কলেজ এর প্রথম বিশ্বকাপ, টিভিরুমে ১০০ জন ক্যাডেট এর সাথে খেলা দেখার মজা বিশ্বকাপকে আরো রঙ্গিন করে দিয়েছিলো।

পরিশিষ্টঃ

———–

…খেলার মধ্য বিরতিতে রান্নাঘরে চা বানাচ্ছি, পাশে দাঁড়িয়ে চা বানানো দেখছে আমার মেয়ে। ছয় বছর বয়স । দুইজন এর গায়েই ব্রাজিলের জার্সি। মেয়ের মা আর্জেন্টিনা হলেও মেয়ে আমার বাবা অন্তঃপ্রাণ হয়েছে, তাই সে ব্রাজিলকেই বেছে নিয়েছে। বরাবরের মতোই আর্জেন্টিনা কোয়ার্টাল ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে। তাই তার মা আজকে আমাদের দুই বছরের ছেলেকে নিয়ে ঘুম। কি অবাক করা বিষয়! ইতিহাস মাঝে মাঝে পুনরাবৃত্তি করতে পছন্দ করে, ২০২৬ সালের এই বিশ্বকাপের ফাইনালে আবারো মুখোমুখি ব্রাজিল-ফ্রান্স।।মধ্য বিরতিতে যাওয়ার আগে স্কোর ১-১। ব্রাজিলের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেছে ৫ গোল করে যৌথভাবে শীর্ষে থাকা ৯ নম্বর জার্সীধারী স্ট্রাইকার “রোনাল্ড ”। হুম, ঠিকই ধরেছেন। ২১ বছর বয়সী এই ছেলে “রোনাল্ডো-দ্যা ফেনোমেনন” এর ছেলে।

বিরতির পর আবার বাবা-মেয়ে খেলা দেখতে বসলাম। মেয়ে বেশ মনোযোগী খেলায়।ছয় বছর বয়সে আমি খেলা বুঝতাম না, কিন্তু সে দেখি ভালোই ফাউল-অফসাইড শিখে গেছে। মেয়ের প্রিয় খেলোয়াড় রোনাল্ড। ছেলেটা বাবার মতোই দেখতে, বল নিয়ে তেড়েফুঁড়ে আক্রমনও করে বাবার মতো। খালি একটাই পার্থক্য। ওর কাঁধ পর্যন্ত কোঁকড়ানো বাদামী চুল। দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হলো আক্রমন-প্রতি আক্রমণ। কিন্তু গোল হচ্ছেনা। হঠাৎ করেই ৮৭ মিনিটে ১০ নম্বর জার্সীধারী রিভালদিনহোর পাসে রোনাল্ড প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের কা্টিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়লো।গোলপোস্টে দাঁড়িয়ে ফ্রান্সের গোলকীপার মঁরিয়ে ফ্রাসো। বাবা-মেয়ে চোখ বড় করে তাকিয়ে আছি। দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে রোনাল্ড, তৈরি হচ্ছে এক নতুন গল্পের।একটা নতুন প্রেমের গল্প।গল্পটি হতে পারে আনন্দের, হতে পারে মন ভাঙ্গার। সে গল্পের পরের অংশ আমার না।  হয়তো কোন একদিন আমার মেয়ে বলবে……

৪২ টি মন্তব্য : “প্রথম প্রেমের গল্প”

  1. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    লক্ষ করলাম, খেলার বর্ননাগুলোর চেয়ে আগের পিছের গল্পগুলি অনেক বেশী উপভোগ করলাম।
    গল্প জিনিসটা সত্যিই ম্যাজিকাল। সত্যর চেয়েও আকর্ষন করে বেশী।

    আরেকটা কথা, শুধু ব্রাজিল না, গোটা দক্ষিন আমেরিকা মহাদেশে ফুটবলে পরিবার প্রথা খুবই দুর্বল। শেষ অংশটা তাই কল্পনাতেই থেকে যাবার সম্ভবনা অতি উচ্চ।
    ভাল লাগলো। 🙂


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    দারুন লিখেছো ইয়েন। আমার প্রথম প্রেম হলো নেদারল্যান্ড। তবে ব্রাজিলের প্রতি সফট কর্ণার ছিল। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো ৯৮ এর শুরুতে রোমারিওকে বাদ দেয়ার পর আর কিছু উগ্র ব্রাজিল সমর্থকদের কারনে সেটা উঠে যায়। এবার সত্যিঈ যদি ওরা জার্সিতে made in bangladesh লিখে নামে তাহলে আবার ওদের সাথে আছি।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    ডি বক্সের ভেতরে সম্ভবত সর্বকালের সবচেয়ে ভয়ংকর স্ট্রাইকার রোনাল্ডো। ১৯৯৮ এর কথা পড়লে এখনো দুঃখ পাই... 🙁


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।