(৭)
কলেজে মাঝে মাঝেই স্যানিটারি ইন্সপেকশন হোত । এর উদ্দেশ্য ছিল ক্যাডেটদের হাইজেনিক কন্ডিশন ঠিক আছে কিনা তা চেক করা । এই ইন্সপেকশনে মূলত মেডিক্যাল অফিসার স্যারকে মূল দায়িত্ন দিয়ে পাঠানো হত । তিনি ক্যাডেটদের রুমগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন আছে কিনা তা দেখতেন । পাশাপাশি হাউস এবং একাডেমির টয়লেট বাথরুমগুলো হাইজেনিক কিনা তাও চেক করতেন । আর এই চেকিংগুলো ছিল ঝটিকা চেক । কাউকে না জানিয়েই হঠাৎ করেই চেক করা হত । তাই আমরা চেষ্টা করতাম আমাদের রুম পরিষ্কার করে রাখতে । কারণ কারো রুম নোংরা হিসেবে চিহ্নিত হলে তার আর রক্ষা নেই । আমাদের মেডিক্যাল স্যার কাউকে ইডি দিলে তিনি নিজে গ্রাউন্ডে থেকে তদারকি করতেন । সেবার আমাদের এয়ার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল । আর ঠিক সে সময়ই আমাদের শ্যাডো প্রিফেক্টশীপ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল । কানাঘুষায় শুনতে পেলাম আমাদের মাহমুদ , হারুন (ছদ্মনাম) এবং আরো অনেকেই প্রিফেক্টশীপ পাচ্ছে । যাই হোক সেই পরিক্ষার দিনটিতে ছিল স্যানিটারি ইন্সপেকশন । ইন্সপেকশনের অংশ হিসেবে মেডিক্যাল অফিসার একাডেমির টয়লেটে ঢুকলেন । ঢুকেই তো স্যার থ । একটা টয়লেটে দুজন ফিসফিস করে কি যেন বলছে । স্যারের কি যেন সন্দেহ হল , তিনি আড়ি পাতার চেষ্টা করলেন । কিন্তু কিছুই বুঝতে পেলেন না । স্যার ধমক দিলেন ভেতরে কে বেরিয়ে এসো ? ভেতরে ছিল আমাদের হারুন আর সুজন । কোন উপায় না পেয়ে বের হয়ে আসতেই হল এবং তখন ওদের দুজনের হাতে ছিল আফসার উজ জামানের বীজগণিত নোট । টয়লেটে একটা বই ছিল বিধায় দুজনকে ভাগাভাগি করে পড়তে হচ্ছিল । তার এরপর কি হতে পারে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । নকলের দায়ে জরিমানা , ইডি দুইই হল । আর বেচারা হারুনের প্রিফেক্টশীপটাও পাওয়া হল না ।
(৮)
আমাদের আশরাফ স্যার ছিলেন সিরাজী হাউসের হাউস মাষ্টার । একবার হাউস ইন্সপেকশনে স্যার সিনিওর টয়লেটে ঢুকলেন । সেখানে দেখলেন একটি টয়লেটের প্যান ভাংগা । পরের ক্লাশে এসে স্যার বললেন ‘উহুউউউ ক্যাডেট তোদের কার *গা এত শক্ত , **গা টয়লেটের প্যান ভাইংগা ফালাইছস’। স্যারের এই ডায়লগের কারণেই অনির (ছদ্মনাম) নাম হয়ে গেলো শক্ত *গা ।
অনির (ছদ্মনাম) এই নাম দেয়ার শানে নুযুল বর্ণনা করছি ।
অনি যদি কোন খাট বা চেয়ারে বসতো তবে তা ভেঙ্গে যেত । এই যেমন একদিন আমরা কয়েকজন হাসপাতালের বেডে বসে বাংলাদেশের খেলা দেখছিলাম । একটা বেডে আমরা অনেকেই ছিলাম কিন্তু যখনি ও এসে পা রাখলো তখনি বেডটা ভেংগে গেলো । এরকম কতবার নিজের বেড ক্লাশের চেয়ার ভেংগেছে তার হিসেব নেই । আরেকবার আমি আর অনি সি এম এইচ এ গিয়েছিলাম কান দেখানোর জন্য । ডাক্তার আমাদের দুজনকে একসাথে চেম্বারে ডাকলেন । প্রথমে ওর কানে একটা ইন্সট্রুমেন্ট ঢুকানো হল । ওটা দিয়ে ওর কান পরিষ্কার করলেন । এরপর যখন ওটা আমার কানে ঢুকাতে যাবেন তখন দেখা গেলো ইন্সট্রুমেন্টটা নষ্ট হয়ে গেছে । আর এসব কারণেই আমরা রায় দিলাম অনি ছাড়া আর কেউ টয়লেটেরপ্যান ভাংগতেই পারে না ।
(৯)
আশরাফ স্যার প্রায়ই লাইটস অফের পর হাউস রাউন্ড দিতেন । একদিন হাউস রাউন্ড দিতে গিয়ে স্যার কোন এক রুমে ঢুকলেন । তখন রুমে কোন এক জুনিওর লকারের আড়ালে ড্রেস চেঞ্জ করছিল । স্যার লকারের দরজা খুলে টর্চ মারলেনএবং পরক্ষণেই চোখ সরিয়ে বললেন ‘উহুউউউ ন্যাংটা ক্যাডেট’ ।
(১০)
আমরা যখন ক্লাশ ইলেভেনের মাঝামাঝি তখন নিয়ম করা হল পরোটা খাওয়ার জন্য হাত ব্যবহার করা যাবে না । পরোটা খেতে হবে কাটা চামচ আর ছুরি দিয়ে । আমরা হাফ ছেড়ে বাচলাম কারণ আমরা জুনিওর থাকতে এই নিয়ম করা হয়নি । কলেজের ইলাস্টিক পরোটা কাটার জন্য ধারছাড়া ছুরিগুলো কতটা কার্যকর হতে পারে একবার চেষ্টা না করলে বোঝা যাবে না । খাবার টেবিলে জুনিওরদের দেখে কষ্টই হয় । আগে যখন ওরা দু তিনটা পরোটা খেত এখন একটার অর্ধেকই শেষ করতে পারে না । এতে বরং আমাদের সুবিধাই হল । আমরা যারা সিনিওর তারা একটু বেশি বেশিই খাই । মেস ও আই সি অনেক চেষ্টা করেও আমাদের হাত দিয়ে খাওয়া থামাতে পারলেন না । অবশেষে তিনি রিপোর্ট করে দিলেন । সিনিওরেরা কাটা চামচ আর ছুরি ব্যবহার করছে কিনা দেখার জন্য সয়ং প্রিন্সিপাল স্যার ডাইনিং হলে উপস্থিত হলেন একদিন । স্যারকে দেখেই হাতে চামচ আর ছুরি তুলে নিলাম । কিন্তু কার সাধ্য আছে এই রাবারসম পরোটা কাটতে পারে । স্যার আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন ‘কি ব্যাপার কাটতে পারছো না’ । ‘এভাবে পরোটা কাটতে হয়’ এই বলে আমার হাত থেকে চামচ আর ছুরি নিয়ে নিলেন । এরপর অনেক চেষ্টা করেও যখন পরোটা কাটতে পারলেন না তখন বললেন ‘যদিও কাটা যাচ্ছে না তবুও এভাবেই কাটতে হবে’ ।
প্রথথম বারের মত প্রথম হইলাম 😀
=)) =)) :pira: :khekz:
মামা এইটা কি লিখলি দারুণ দারুণ :khekz:
সত্যি কথাই লিখছি । আর আমাদের টাকলু মুশফিক :)) :)) :)) । প্রিন্সিপাল ছিল একটা ।
আর দোস্ত তোর নতুন লেখা দেখতে চাই ।
:gulli2: :gulli2: :just: :pira: :khekz:
:)) :)) :))
হুদাই কাটতে গেছিল সেইদিন
আমাদের কলেজে স্যানেটারি ইন্সপেকশনের নামে ডাক্তার স্যার রুমে গিয়ে তারের মাঝে কার কয়টা আন্ডারগার্মেন্টস ঝুলতো তার হিসাব রাখতেন।আর সেগুলির রঙ সাদা থেকে হলদেতে হয়েছে কিনা তা নিয়ে গবেষনা করতেন।
কিছু কিছু মাল টাইপ পোলাপান ছিল,তাদের সেই জিনিষগুলির রঙ হলদে না হয়ে বাদামী বাদামী হয়ে ঝুলে থাকতো।ওতে করে স্যার অতিষ্ঠ হয়ে নোটিশ পাঠাইছিলেন,কোন ক্যাডেট যেন এক আন্ডি ৬ ঘন্টার বেশি না পড়ে।
আমাদের টাকলু মুশফিক নিয়ম করছিল প্রিন্সিপাল ইন্সপেকশনে ৬টা আন্ডি শো করতে হবে ।
:khekz: :khekz: :khekz:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
=)) =)) =)) ‘উহুউউউ ন্যাংটা ক্যাডেট’ =)) =)) =))
ব্যাপক মজা পাইলাম।
=)) =))
চালায় যাও।
মন্তব্য করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ । আপনাদের মন্তব্য আমাকে আরো উৎসাহিত করে ।
😮 😮 😮
~x( ~x(
:khekz: :khekz: :khekz:
অসাধারণ
=)) =)) =)) =)) =))
ফাটাফাটি মজা পাইলাম।চালায়া যা।
R@fee
রাফি ছবি চেঞ্জ করসস ক্যান ??
Dost thanks. noi tarikher issb te chilam. toke chini.valo thakis
:grr:
হাহাহাহা...... =)) =))
ব্যাপক মজা পেলাম, বিশেষ করে শেষের ডায়লগটা। 😀
:khekz: :khekz: :khekz: :khekz: :khekz:
দোস্ত জটিল লিখছোস =)) =)) =)) =))
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
দারুন মজা পাইছি ... :just: :pira:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
প্রথম গল্পের নায়ক গুলারে চিনি মনে হচ্ছে 😀 😀 😀
হাগু ছাড়া আশরাফ স্যার কোন কথাই তো বলত না 😐 😐
মেহেদী তুই ওই টয়লেটে ছিলি নাকি সেদিন ? কেমন জানি সন্দেহ হয় ।
ভাল লাগল
অসাধারন। :khekz: :khekz: :khekz: :khekz:
=)) =)) =)) =)) 😀 😀
Life is Mad.
জটিল লেখা হইছে, শোভন । প,ক,ক তেও চামচ দিয়া পরোটা খাওয়া স্টার্ট হইছে !!! আহারে... পোলাপাইনগো লাইগা কষ্ট লাগতাছে। আমাদের টাইমে হইলে তো না খাইয়া মারা যাইতাম।
:khekz: :khekz:
কোন স্যার প্রিন্সিপাল ছিলো? বি, আর , নাকি ?