মনটা খারাপ হইছে। কোনো কোনো ছবি আছে তারে বলে ফিল গুড মুভি। সাম্প্রতিক উদাহরণ স্ল্যামডগ মিলিওনিয়ার। আর কিছু ছবি আছে ফিল স্যাড মুভি। আজ সেইরকম একটা ছবি দেখলাম। দি রিডার। মনটা অসম্ভব খারাপ হয়েছে। মনটা বিষন্ন হয়ে আছে ছবিটা দেখার পর।
কেন উইনস্লেট একজন মধ্যবয়সী নারী। জার্মানিতে ট্রাম কন্ডাক্টার। ১৬ বছরের মাইকেল তার প্রেমে পড়ে। শারিরীক প্রেম। তবে হান্নার (কেট) পছন্দের বিষয় বই। শারিরীর প্রেমের পর মাইকেলের কাজ হান্নাকে বই পড়ে শোনানো। কখনো আবার আগে বই পড়া তারপর প্রেম। সেই হান্না একদিন উধাও হয়ে গেল মাইকেলের জীবন থেকে।
কয়েকবছর পর মাইকেল হান্নাকে আবিস্কার করে আদালতে। মাইকেল আইনের ছাত্র। শিক্ষা জীবনের অংশ হিসেবে তাকে যেতে হয় আদালতে। হান্না আসামী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হান্না ছিল বন্দিশিবিরের রক্ষী। হান্না সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ। হান্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। সবাই সাক্ষী দেয় হান্না ছিল গার্ডদের ইনচার্জ। লিখিত নোটও পাওয়া যায়, যা হান্নার লেখা। হাতের লেখা মিলিয়ে দেখার জন্য বলা হলে হান্না স্বীকার করে নেয় নোটটা তারই লেখা। যাবজ্জীবন হয় হান্নার।
মাইকেল এসময় বুঝতে পারে হান্নার গোপন একটা বিষয়। হান্না আসলে অশিক্ষিত

আহারে এইরকম সঙ্গী পাইলে পাবলিক লাইব্রেরী মুখস্ত কইরা ফেলতাম

জেল জীবনে শেষ বয়সে কেন উইনস্লেট
তারপর দিন যায়। মাইকেল (রালফ ফিনেস) এখন একজন আইনজীবি। সংসার টেকেনি। একটা মেয়ে আছে। দীর্ঘদিন পর মাইকেল নতুন করে একটা কাজ শুরু করে। ১৬ বছর বয়সে যে সব উপন্যাস পড়ে শোনাতো হান্নাকে সেসব রেকর্ড করে পাঠাতে শুরু করলো মাইকেল। কারাগারের জীবন অন্যরকম হওয়া শুরু হল হান্নার। এক সময় হান্নার মুক্তির সময় এলে জেল কতৃপক্ষ যোগাযোগ করলো মাইকেলের সাথে। হান্নার আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তারপর………। শেষটা বলে আকর্ষনটা নষ্ট করতে চাই না। খালি বলতে পারি মনটা ভীষন খারাপ হয় শেষ দেখে।
ফ্রস্ট-নিক্সনের পর এবারের এই ছবিটা দেখে অন্যরকম এক অনুভূতি হল। অসাধারাণ অভিনয়। গল্প বলার ঢংটাও খুব ভাল। আমি সহজেই মুগ্ধ হই, আবারও হলাম।
কিছু মন ভাল করার তথ্য দেই। ছবির প্রথম আধাঘণ্টা খালি দুইজনের প্রেম। মানে খালি কাপড় খোলাখুলি। কেট এই ব্যাপারে বেশ দ অনেকদিন ধরেই। কিন্তু মন খারাপ করার উপাদানও রয়েছে। বাঙ্গালীর প্রথম কেট দর্শন টাইটানিকের মাধ্যমে। তবে যারা মধুমিতায় দেখেছেন তারা জানেন যে কি দেখেন নাই। পরে ডিভিডিতে দেখতে হয়েছে। আহা—-কি সৌন্দর্য। বর্ণনায় কালিদাশ ধার করতে হয়। সেই কেটকে আবার দেখলাম অনেকদিন পর দেখলাম রিডারে। সময় বড় নিষ্ঠুর, কত কিছু কেড়ে নেয়। আহারে……………
টাইম মতো পোস্ট দিছেন। আজকেই মাত্র ডাউনলোড করলাম। ঝকঝকা ডিভিডি প্রিন্ট। ৩ দিন লাগছে নামাইতে।
রাতে দেখতেছি। দেইখা কালকে ডিটেইলস জানাইতেছি। 😀
আমিও দিয়া দিলাম... B-)
তয় আপনের মত ৩ দিন লাগব না :grr: :grr:
পুরা ছবিটা নিয়াই জানাইও, প্রথম আধঘন্টা নিয়া না আবার।
ফাস্ট-ফরোয়ার্ড কইরা আপনার দেয়া স্ক্রীনশট অংশগুলি দেখলাম। ;;; কেট তো বিছানা থেইকা উঠেনা না দেখি ;;;
পুরাটা রাতে ভালো মতো দেখবো। এই ছবি নিয়ে বেশ কয়েকজনের কাছে বলিষ্ট মতামত পেয়েছি। বুঝতেছি ভালো না লাগার কোন কারন নেই। আমার অলরেডি আপনার লেখা, কমেন্ট আর মুহাম্মদের কমেন্ট পড়েই মন খারাপের মতো লাগতেছে 🙁
ফাস্ট-ফরোয়ার্ড কইরা আবার রাইত পার কইরা দিয়ো না 😉
ইউ বয় কামরুল,
ইন্টারনেট থেকে সহজে মুভি নামানোর উপায় কি। অনেক দেখতে চাওয়া মুভি আছে। ঢাকা থেকে বদলী হয়ে যাবার আগে কিছু মুভি নামাবো।
ডিটেইলস মেইল কর হারিয়াপ, হারিয়াপ! mysf71এট gmailডটcom
ভাইয়া আমি টরেন্ট থেকে নামাই। স্পীড কম থাকে, কিন্তু একেবারে ঝকঝকা প্রিন্ট।
আপনাকে প্রথমে ইউ-টরেন্ট ডাউনলোড করে ইন্সটল করে নিতে হবে।
পাবেন এখানে। তারপর এই সাইটে যান। সার্চ বক্সে যে ছবি লাগবে তার নাম লিখে সার্চ দিন। তারপর পছন্দ মতো বেছে নিয়ে ডাউনলোড দিন। তবে খেয়াল রাখবেন, যে ছবি ডাউনলোড করছেন তার seeder বেশি হলে তাড়াতাড়ি ডাউনলোড হবে। 😀
ধন্যবাদ। টরেন্ট দিয়ে গান নামিয়েছি অনেক। কিন্ত আজকে মুভি ট্রাই করব।
ফিল ব্যাড মুভি' আমি সবসময় এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করি... :-B
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
এইটা ফিল ব্যাড মুভি না, ফিল স্যাড মুভি। না দেখলে পস্তাইবা।
আমি তো ছবি দেখার সময়ই পাই না :(( ফিল গুড, ফিল স্যাড, ফিল ব্যাড কি বুঝমু?
গুড জব মাসুম। খবরদার আর গান নিয়া পোস্ট দিও না!!
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু ভাই, সময় পান না এটা ঠিক। তবুও একটু সময় বের করেন।
(আমার ডিভিডিগুলা কৈ 😛 )
এটা আমার মতে ২০০৮ এর সবচেয়ে মুভিং সিনেমা। অর্থাৎ মানুষকে সবচেয়ে বেশী নাড়াতে পেরেছে এটা। একটা উদাহরণ দিই:
প্রথম আধাঘণ্টা কেট উইন্সলেট একরকম নগ্নই ছিল। কিন্তু সিনেমা শেষ হওয়ার পর সেই নগ্নতার কথা মনেই থাকে না। মনে থাকে যে, কেট উইন্সলেটের শরীরে কোন কাপড় ছিল না। কিন্তু নগ্ন শব্দটা মনে হলে আমাদের শরীরে যে অন্যরকম শিহরন বয়ে যায়, দ্য রিডার এর ক্ষেত্রে সেরকম কিছু হয় না। এতই নাড়িয়ে দেয় এই সিনেমা। এক্ষেত্রে টাইটানিকের তুলনা করা যায়। টাইটানিকও তথাকথিত মুভিং পিকচার্স বা টিয়ারজার্কার ক্যাটাগরিতে পড়ে, কিন্তু এতটা মুভিং না যে নগ্ন কেট উইন্সলেটকে ভুলিয়ে দেবে। দ্য রিডার সেটাই করেছে।
আমি বলছি না যে, নগ্নতা ভুলে যাওয়া উচিত। আমি শুধু বলছি, নগ্নতা বা যুদ্ধাপরাধ কোনটাই এ সিনেমার মুখ্য বিষয় ছিল না। তাই নগ্নতা এবং যুদ্ধাপরাধকে ভুলিয়ে দেয়া দরকার ছিল। উচিত ছিল এমন কিছু করে দেখানোর যাতে সবকিছু ছাপিয়ে উঠে একটি মানুষের বেড়ে ওঠা এবং মানুষে-মানুষে সম্পর্কের বিষয়টি। সেটা পরিচালক বেশ ভালভাবেই করেছেন।
তবে এই সিনেমার ফ্ল্যাশব্যাক স্টাইলের গল্প বলায় নতুন কিছু পাইনি। একেবারে গতানুগতিক।
সব মিলিয়ে সিনেমা খুব ভাল লেগেছে।
এটা নিয়ে লেখার জন্য শওকত ভাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমি তোমার মন্তব্যের অপেক্ষায় ছিলাম। আসলেই, এতোটা বিষন্ন মুভি দেখে আমি অনেকদিন হইনাই। প্রথম আধাঘন্টা দেখে মনে হয়েছে একটু গতানুগতিক। মনে হয়েছিল লেখার সময় এটা নিয়ে অনেক ফাজলামো করা যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মন পড়ে আছে ওদের সম্পর্কের বিষয়টা। মাইকেল যে জীবনে সুখী হতে পারলো না সেতো তার প্রথম প্রেমের জন্যই, যেটা সে স্বীকার করে একদম শেষে। মনটা বিষন্ন হয়েছে ছবিটা দেখে, আবার মনটা ভরেও আছে। শেষে আমি নিজেকে নিজেই স্বান্তনা দিলাম এটা তো মুভি, সত্যি কিছু না।
এক্কেরে খাটি কথা। অনেক সিনেমা দেখার পরই এমনটা করতে হয়। কয়েকদিন আগে "ফারেনহাইট 451" নামে একটা সিনেমা দেখছিলাম। ঐটার থিমই ছিল এরকম। ভবিষ্যতের পৃথিবী নিয়ে করা সিনেমা। দেখানো হয়েছে, ভবিষ্যতে পৃথিবীতে গল্প-উপন্যাস-সিনেমা কে এন্টিসোশ্যাল আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ এগুলো পড়ে মানুষ যা হওয়া সম্ভব না তা-ই হতে চায়, যা পাওয়া সম্ভব না তা-ই পেতে চায়, যা ভাবলে দুঃখ হয় তা-ই ভাবে। মাঝেমাঝে আমার মধ্যেও একম চিন্তা ঢুকে। কিন্তু পরক্ষণেই তাড়িয়ে দেই। ফারেনহাইট 451 এর শেষেও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে সাহিত্য-চলচ্চিত্র না থাকলে মানুষ কতটা অসম্পূর্ণ থেকে যেত। এগুলো আছে বলেই না আমরা এখনও নিজেদের মানুষ বলে ভাবতে পারি। 😀
সময় বড় নিষ্ঠুর, কত কিছু কেড়ে নেয়। আহারে……………
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
"মাইকেল যে জীবনে সুখী হতে পারলো না সেতো তার প্রথম প্রেমের জন্যই"-
আমার কি হবে ~x(? জীবনে তো আসুখীও হতে পারব না মনে হইতাছে :no: :no:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ডাউনলোড দিলাম এখন খোদা মালুম কবে হবে 😕
আমার মিতা শওকত ভাই কে আবারো :boss: :boss:
২০০৮ এর সেরা সিনেমা- মন জগতে সবচে আলোড়ন তোলা সিনেমা। সিনেমা রিভিউ লিখতে পারি না, চেষ্টাও করি না। কিন্তু এইটা দেখে লিখছিলাম। এতো মন খ্রাপ হইছিল...
দেখি নাই :(( । এখন হাতে সময়ও নাই যে দেখা হবে। তবে রিভিউ পড়ে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে।
নিচের কমেন্টটা মুহম্মদের পোস্টে দিয়েছিলাম। পরপর দুইটা মন খারাপ করা সিনেমা নিয়ে রিভিউ দিতে চাই নাই বলে লিখি নাই। এখন নামাচ্ছি changeling এটাও মনে হয় মন খারাপ করে দিবে। ফ্রস্ট/নিক্সন এখনো দেখার টাইম পেলাম না। দেখি সপ্তাহান্তে কি হয়।
---------------------------------------------------
শওকত ভাই আমিও মনে করি কেট জিতবে। কালকে the Reader দেখলাম। খুব ভাল লাগসে। কেট আবারো দারুন করেছে। কিছু দুষ্ট দৃশ্য আছে কিন্তু আমার মতে ওইগুলারে কাটপিস মনে হয় নাই। গল্পটাও ভাল।
...
নাৎজি কেট দারুন করেছে। হানা স্মিডট(কেট) এর একটা প্রিয় সংলাপ দিলাম
জোসসসসসসসসসসসসসস 🙂
এইমাত্র দেখা শেষ করলাম।
তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে গল্পটা ইন্টারেস্টিং (এর ভালো বাংলা জানি না) এবং ব্যাতিক্রম।
তবে হানা'র (কেট উইস্লেটের) চরিত্রটা ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি। লেখাপড়া না জানার ব্যাপারটা শেষ পর্যন্ত গোপন করে যাওয়াটা স্রেফ বোকার মতো সিদ্বান্ত মনে হয়েছে। সেই তুলনায় Ralph Fiennes (মাইকেল বার্গ)এর চরিত্রটা বেশ শক্তিশালী দেখিয়েছে।
তবে ছুঁয়ে যাবার মতো ব্যাপার হচ্ছে হানা'র শেষ পরিনতি।
পুরো ছবিতে সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য হচ্ছে মাইকেলের ক্যাসেট রেকর্ড করে পাঠানোর সময়টা আর হানা'র নিজে নিজে পড়তে শিখার দৃশ্যটা।
ফ্লাশব্যাক থেকে বিভিন্ন সময়ে টাইম জাম্প করাটা আরো স্মুথ হতে পারতো। একটু ধাক্কা লাগে মাঝে মাঝে।
কেট উইস্লেটের অভিনয় এক কথায় দারুন। রালফ ফিয়েনিসো খুব ভালো করেছে। একেবারে মানানসই। বাকিরা চলে।
সবচেয়ে যেটা কষ্ট পেয়েছি কেটের শরীর দেখে। টাইটানিকের সেই ধারালো শরীরের কেট যেনো কোথায় হারিয়ে গেছে। আসলেই সময় বড় নিষ্ঠুর, কত কিছু কেড়ে নেয়।
মন খারাপ করা ছবি। দেখার মতো ছবি।
শওকত ভাই, দি রিডার দেখলাম। মনটা আসলেই খারাপ হল। মন খারাপ করানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। :boss:
কামরুল, তোমাকে ধন্যবাদ টরেন্ট থেকে মুভি নামানোর পথ বাতলে দেবার জন্য। আমার নতুন সর্বনাশ ডেকে আনার জন্য তুমি দায়ী থাকবে। :boss:
ভালো ছবি নামাইয়েন, তাইলেই আর সর্বনাশ হবে না। 😉