দেশে যাতায়াতের জন্য এমিরেটস এয়ারলাইন্স আমাদের পছন্দের। ওদের প্লেনে উঠলেই দেশ দেশ একটা ভাব চলে আসে। তারা অনলাইনে এমিরেটসের মুভি লিস্টের পাত্তা লাগায়, সামনের দিকে সিটের বুকিং দেয় সাথে সাথেই। বাড়ির বাইরে পা দেয়া মাত্র আমার খাই খাই একটা ফিলিং শুরু হয়ে যায় সব সময়। যাত্রায় ভোজন নাস্তি’ কথাটি আমি খুব মানি। ভারী খাবার খাইনা বটে কিন্তু সামান্য বাদাম বা প্রেটসেলস অথবা আধা কাপ কমলার জুসে বেশ চলে যায়। তারা ঠিক উল্টো আমার থেকে, সে পরখ করে দেখবে সব দেশের ডেলিকেসি।
টিকিটের রিসারভেশন দেবার সময়েই তারা এমিরেটসকে জানিয়েছিল ও ফ্লাইটে দুধ বা দুগ্ধজাত কোন খাবার খেতে চায়না। এয়ার হোস্টেসরা কাজের সুবিধার্থে স্ন্যাক্স অথবা লাঞ্চে সবার আগে নন ডেইরী খাবার গুলো পরিবেশন করেন যাত্রীদের মাঝে। মোটামুটি বিষাক্ত স্বাদের এই খাবার হাতে পাবার পর প্রায় কিছুই খেলো না আমার কন্যা। সে অপেক্ষা করতে লাগলো কখন মায়ের খাবার নিয়ে আসবে আর ও নাক ডুবিয়ে খাবে। আমার জন্য সুগন্ধি পোলাউ আর মাটন রেজালার সাথে চিজ কেকের অর্ডার করেছিলাম এই ভেবে যে তারা যদি চেখে দেখে খানিক। মায়ের জন্য একখানা পেয়ার চেয়ে নিয়ে তারা আমার খাবারের ট্রে টেনে খেতে বসে আনন্দের সাথে।
আমার ঠিক পাশেই বসেছেন তপন নামের ছিপছিপে কৃষ্ণকায় একজন তরুণ। বয়েস ঠিক আন্দাজ করা না গেলেও পঁচিশ যে পেরোয়নি সেটা হলফ করে বলা যায়। ম্যারম্যারে বেগুনী রঙের একখানা ইস্তিরিবিহীন শার্টের সাথে ততোধিক নিভাঁজ একটি প্যান্ট পরেছেন তিনি। সাথে পোটলা মত কিছু একটা কোলের ওপর রাখা। জড়সড় ভঙ্গীতে হাত দু’খানা একত্রে করে সশব্দে আঙুল মটকালেন তিনি বার কয়েক। তার যত্নহীন, খসখসে নখের নিচে ধুলোবালি আর কালো ময়লা আমার চোখ এড়ায় না। আমি তার দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে কুশল বিনিময়ের চেষ্টা করলাম, তিনি খুব সন্ত্রস্ত হয়ে হা না গোছের দায়সারা উত্তর দিলেন অবনত চোখে।
ডালাস থেকে একটানে মধ্যপ্রাচ্যে এসেছি আমরা। এখানে একদিন ঘুরে ফিরে বেড়ানোর কথা। সেই সাথে আছে টুকটাক শপিঙের ইচ্ছা। হোটেলে ফিরেই তারা ঘোষণা দিল সে ঘুমোতে যাচ্ছে, অতএব কোথাও যাওয়া হবে না আমাদের। ছ’তলা রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরে তাকাই। আশেপাশে দেখার মত কিছু নেই। দেশে মার সাথে কথা বলি ফোনে, ফেসবুকে বন্ধুদের ছবি দেখি, এটেনশন সিকার মানুষদের উপচে পরা উচ্ছাস অথবা মেকি বিষণ্ণতা দেখি। একজন পাখির বাসার মত অবিন্যস্ত চুলগুলোকে বশে আনবার ছলে কী একটা বিরহের গান ধরেছেন। আর একজন লিখেছেন, মাথা ব্যাথায় মইরা যাইতাসি। আগে টিকিট কেটে অপেরা দেখতে যেতো নাগরিক মানুষ, এখন ফেসবুকের একটি একাউন্ট থাকলেই চলে। আর কিছু করবার মত খুঁজে না পেয়ে ফোমে বোঝাই বাথটাবে শুয়ে শিবরাম পড়তে পড়তে গুলাম আলি শুনি বহুদিন পর।
আমি ক্লাস্ট্রোফোবিক মানুষ, বিমান যাত্রা আমার জন্য অভিশাপ বিশেষ। আটলান্টা থেকে বেরুবার আগে ডাক্তারের থেকে তিন রকমের দাওয়াই সাথে করে নিয়ে এসেছি, যদিও জানি এসবের কোন কিছুই কাজে আসবে না। সহযাত্রী ছেলেটির সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা ব্যর্থ হলে কিন্ডেলে পিপল ম্যাগাজিনে মন দেবার চেষ্টা করি। দেশে গিয়ে ডু’স এন্ডস ডোন্টস নিয়ে শেষবারের মত গুরু গম্ভীর আলোচনা চলে তারার সাথে। চ্যানেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মুভি দেখার চেষ্টা করে নিজেকে ভুলিয়ে রাখতে চেষ্টা করি। ফলাফল শুন্য, আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে বিমানের বদ্ধ পরিসরে।
টেক আ ডিপ ব্রেথ মা, তারা বলে। ইমাজিন উই আর ইন ইউকে ওয়ান মোর টাইম, লুক এট দ্যাট ওশেন ইন জুরাসিক কোস্ট। ওয়ান মোর ডিইইইপ ব্রেথ, মাই বিউটিফুল মামা! ফিল দ্যাট জেন্টেল ব্রীজ, তারা আমার গায়ে হাত বুলাতে বুলাতে বলে। আমি ওর হাতে হাত রেখে চোখ বুজে বড় বড় নিঃশ্বাস নিই। আহ! জগতে অক্সিজেনের বড় অভাব!
তপন হঠাৎ কি মনে করে মৃদু স্বরে জানতে চান, আপনেরা কি আম্রিকান, দিদি? ছেলেটির কাচুমাচু ভঙ্গীটিতে কি ছিল জানিনা, আমরা মা মেয়ে দু’জনেই একসাথে হেসে উঠি। হাসির মত ছোঁয়াচে আর কিছুই নেই বোধকরি। বেচারা একটু অপ্রস্তুত হলেও সে নিজেও যোগ দেয় আমাদের হাসির রোলে। মায়ের হাসি দেখে তারা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। মিনিট পাঁচেক কথা বলার পর তপন খানিক সচ্ছন্দ হয়ে আসে। দু’চার বাক্যে নিজের পরিচয় বলে আমি তার কথা জানতে চাই। তপন দেবনাথ নামের আপাত মুখচোরা যুবক বলতে শুরু করেন তার সংগ্রামের গল্প।
দুবাই এর রাস্তায় আমি পিচ ঢালাই এর কাম করি, দিদি। বড়লোকগোর দেশত সারা বচ্ছর রাস্তাঘাট বান্ধাইতে হয়, জানেন তো। কিন্তু আগুনের অই দেশে এইগুলা কাম করবো কারা বলেন আমরা মিসকিনরা ছাড়া? দেশে মায়ে আমারে লাল মিয়া বইলা ডাকতো দিদি, ঠাডা পরা রইদের মইদ্ধে কাম করতে করতে দেকতাছেন তো কি হালত হইছে আমার। রাইতে একঘরে ছয়জনে শুই, নিজেরাই রান্ধিবারি, কাপড় কাঁচি। বিয়া কইরা বৌ রাইখা আসছিলাম দেশে। একটা মাইয়া হইছে আমার, তারে দেখতেই দুই বচ্ছর পরে যাইতাসি দেশে।
মেয়ে বিভার জন্য কেনা একখানা সরুমতো সোনার চেইন দেখান তপন ওর পুটুলি খুলে। বৌটার জন্নি কিছু আনতে পারি নাই সাথে কইরা দিদি। দেশে গিয়া বিভার মায়েরে নিয়া শাড়ির দুকানে যামু। লাল একখান শাড়ি আর চুরি কিনা দিমু তার পছন্দমত। ফুচকা খামু তারে নিয়া আর ঝাল লাগলে একখান পেপসিও খামু দুইজনে।
দু’ চোখে লেপটানো কাজল আর কপালের কোণে টিপ আঁকা একটি শিশু কোলে ছিপছিপে এক তরুণীর ছবি দেখিয়ে তপন বলেন, বউটা বড় ভাল দিদি, আমার বাবারে খাওন দেয় ঠিকঠাক মত। আমার লাইগাও তার বহুত মায়া, ফোন করলেই কান্দে। দুইখান গরু কিনছি, ছয় কেজি দুধ রোজ বিক্কিরি করে বাবা এখন। আমি আরো পাঁচ বচ্ছর থাকমু দুবাইত, দিদি। হের পরে ইট্টু জমি কিইনা পুকুর কাটামু, মাছের চাষ করমু। পরের গোলামী আর করমু না। মাইয়াডারে লিখাপড়া শিখামু, দিদি! তপনের চোখে মুখে আর কন্ঠে যে দ্যুতি দেখতে পাই সেটি আমাদের ‘সব পেয়েছি’র দেশে থাকা মানুষগুলোর চোখে দেখতে পাইনি কখনো।
মায়ের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরেছে তারা। ওর কোলের ওপর হাট করে খোলা দা ফল্ট ইন আওয়ার স্টারস আলগোছে সরিয়ে রাখি। মেয়েটা পড়তে ভালবাসে খুব, যেখানেই যাক না সে আমেরিকানদের মত একখানা বই তার সাথে থাকা চাই। তপন দেবনাথের গল্প শুনছিলাম মুগ্ধ হয়ে। কি করে যে সাড়ে চার ঘণ্টা কেটে গেছে বুঝতেই পারিনি। নিঃশ্বাস নিতে আর কষ্ট হয়না আমার। মানুষের স্বপ্নের চেয়ে বড় অক্সিজেন জগতে আর কিছু নেই বোধকরি!
ঠিক এই রকম একটা গল্প কোথাও পড়েছিলাম । তাই প্রথমে ভেবেছিলাম এটাই আগে কোথাও পড়েছি । আমার আলঝেইমারের সঙ্গে পাল্লা দেবার মতোন স্মৃতিশক্তি কখনোই আমার সঙ্গে সদাচারণ করে না । তবে এটা ঠিক এমন গল্প সংখ্যাতীত । আমার ক্যযডেট কলেজ বন্ধু প্রসেঞ্জিত চাকমাকে সেই প্রথম জীবনে একবার জিজ্ঞাসা করেছিলাম "আচ্ছা তোরা চাকমারা সব্বাই এক রকম দেখতে, তোরা এক জন অন্য জনকে চিনিস কিভাবে" ? আমার বন্ধুটি ভীষণ চৌকষ আর ওর বুদ্ধির দীপ্তি থেকে থেকে ওই সরল রেখার চেয়ে কিছুটা চওড়া চোখের মাঝেও ফুটে উঠতো যখন তখন । আমার প্রশ্নের জবাবে সে বলেছিলো "তোদের বাঙ্গালীদেরও কিন্তু আমাদের দখে সব এক রকম মনে হয়। তোরা চিনিস কি করে" !
ঠিক ওই রকম 'তপন দেবনাথ'-দের গল্পগুলো সব একই রকম । অনবরত ভাবে একই রকম । আর 'দ্য ফল্ট ইন আওয়ার স্টারস' যদি সত্যি সত্যি আমরা পাশে সরিয়ে রাখতে পারতাম ... তবে আমাদের হাসিতেও সেই দ্যুতি খেলে যেতো ...
পারি কি !
গল্পের দ্যুতিতে মনে হয়েছে ... কখনো কখনো হয়তো পারি ।
যদি সব সময় পারা যেতো ... সবাই পারতো ......... (সম্পাদিত)
জগতের সব খেটে খাওয়া স্বপ্নবাজ মানুষের গল্প গুলো একই রকম। ভিন্ন তবকে মোড়া সাদা, কালো অথবা বাদামী মানুষেরা একই দু্যতি ছড়ান পৃথিবী জুড়ে। ভদ্র পল্লীতে ঈশ্বর থাকেন বলেই মিসকিনদের অবস্থার পরিবতর্ন হয়না!
আহা রে, মানুষ!
🙁 🙁
" মানুষের স্বপ্নের চেয়ে বড় অক্সিজেন জগতে আর কিছু নেই বোধকরি! "....
এক্ লাইনে কি চমৎকার বলে দিলে ... :boss: :boss: :boss:
নিজে কানা পথ চেনে না
পরকে ডাকে বার বার
🙂 🙂 🙂 🙂
অনেক ধন্যবাদ, দাদা!
খুব সুন্দর ভ্রমনের কাহিনী পড়লাম। এরপরের গল্পগুলোর অপেক্ষায়। :clap:
🙂 🙂 🙂 🙂
এরপরের গল্পগুলো শেষ হবে না বোধকরি কখনোই, জিয়া। আমার মায়ের গল্প, ছায়ের গল্প, দেশের গল্প, বন্ধুদের গল্প, অথবা গরমে সেদ্ধ হবার গল্প! লিখবো তো অবশ্যই এক সময়।
তোমার লেখা দেখতে চাই সিসিবিতে এবার। অনেক ধন্যবাদ।
মানুষের স্বপ্নের চেয়ে বড় অক্সিজেন জগতে আর কিছু নেই বোধকরি! "....eto sundor line ekmatro apner matha thekei asapossible...osadharon ekta golpo.... =)) :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :boss: :boss: :boss: :boss:
🙂 🙂 🙂 🙂
তপন দেবনাথের গল্প আমার দেশের বন্ধুরা অবগত আছেন। তুমি লুবনা অথবা শাহেদের কাছে তার কথা বিস্তারিতভাবে জানতে পারবে আশা করি। ঢাকা এয়ারপোটর্ে দীর্ঘক্ষণ তপন আমার সাথে ছিলেন।
অনেক ধন্যবাদ, তাসমিয়া!
শেষ যে পংক্তিটা কোট করতে চাচ্ছিলাম, তা একাধিক পাঠক আগেই করে দিয়েছেন।
পুনরাবৃত্তি করলাম না তাই।
কিন্তু যে ইন্সপিরেশনটা ট্রান্সমিট করেছো, বুকভরে নিয়ে নিলাম।
খুব স্নিগ্ধ একটা অনুভূতি হলো পড়ে শেষ করার পর।
অনেক ধন্যবাদ এমন অসাধারন একটা পিস ডেলিভার করার জন্য।
মুগ্ধতা আর কৃতজ্ঞতা দিন দিন বাড়ছে তো বাড়ছেই.........
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
🙂 🙂 🙂 🙂
অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া! 😀
:hatsoff: :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
🙂 🙂 🙂 🙂
ওহ! হোয়াট এ ওয়ান্ডার্ফুল ক্যাপশন!
তীক্ষ্ণ অন্তর্ভেদী দৃষ্টি, সাবলীল ভাষা, নিবিষ্ট সমব্যথী অনুভূতিপ্রবণ মন - বিমুগ্ধ হ'লাম।
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
তপন দেবনাথের গল্প আমার মন ছুঁয়ে গিয়েছিলো, ভাইয়া। তার কথাগুলো যে আমি অশেষ মমতায় শুনেছিলাম তিনি জানেন। এজন্যই হয়তো কথা বলেছেন অকপটে। আমি জানি তার সাথে ভবিষ্যতে আমার দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কম। এয়ারপোটর্ে নামার আগে ব্যাগ থেকে কয়েকটা লিপস্টিক, কাজল আর আমার হাত থেকে চারটে ব্রেসলেট খুলে তার হাতে দিয়ে বলেছিলাম, এগুলো বিভার মায়ের জন্য। আমার কথা বলার প্রয়োজন নেই, বলো তুমি এনেছো। আমার সামান্য এই উপহারে কী যে খুশী হয়েছিলেন তিনি!
তুমি পারোও...
::salute:: ::salute:: ::salute::
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:shy: :shy: :shy: :shy:
এটুকু জেনে বিমুগ্ধ হবার মাত্রাটা আরেকটু বেড়ে গেলো।
বিভার মা হয়তো সেগুলো ব্যবহার করার সময় তপন দেবনাথকে নিয়ে খুব প্রাউড ফীল করবে।
তবে তপনের যতটুকু পরিচয় পেলাম, তাতে মনে হয় না যে সে নিজেকে "আমার কথা বলার প্রয়োজন নেই" - এই বিধি নিষেধের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখতে পারবে।
🙂 🙂 🙂 🙂
পুরো পরিবার একসাথে বসতে চায় দেখে আমাকে অনুরোধ করে বাঙলাদেশগামী এক পরিবার। সীট পরিবর্তন করে যার পাশে গিয়ে বসি তার নামটা মনে নাই। সারা রাত নড়াচড়া করার খাতিরে যে কয়টি অনুরোধ, পানীয় নিয়ে জিজ্ঞাসা এই। শেষ বিকেলে যখন অবতরণের ঘোষণা দিল, তখন ছেলেটার চেহারা চনমনে হয়ে উঠলো। বারবার জানালা দিয়ে দেখছিল। আমি তাকে দেখছি দেখে নিজে থেকেই নাম বললো। ইরাকের নাগরিক। ২০০৩ সালে আমেরিকা ইরাকে যখন বৃষ্টির মত টমাহক মিসাইল ছাড়ছিল তখন রেফিউজি হিসেবেই আমেরিকা আসে সে। মজার ব্যাপার আমেরিকান সরকারই তার পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করে। কাজ দেয়, থাকার জায়গা দেয়। গ্রীন কার্ড দেয়। এখন সে নিউ ইয়র্কে থাকে একটি কাবাবের দোকান চালায়। ১২ বছর পর দেশে যেতে কেমন লাগছে? বলল খুবই একসাইটেড। বাবা, মার সাথে দেখা হবে। বিয়ে করবে। তারপরে আমেরিকা ফেরত এসে থিতু হবে।
বড় কাকাকে বলি এসে পড়েন। সৌদি আরবে আর কত গোলামি করবেন? হাসে! বলেন, খরচ বেশী হইলেও অলিভ ওয়েল দিয়া রান্না করতে বল তোমার আম্মাকে। পেট ভাল থাকবে! 😕
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
গেল বছর দেশে যাওয়ার পর দূর সম্পর্কীয়া একজন মামীর সাথে দেখা করতে গেলে তিনি বললেন, আর কতদিন পরের গুলামী করবি? দ্যাশে ফিরা আয় এইবার। তোরা গুলামী করবি ক্যান, গুলাম রাখবি! সত্তুরোধ্য ভদ্রমহিলার কন্ঠের দৃঢ়তায় মুগ্ধ হয়েছিলাম, জানো।
আমেরিকায় থাকলে ভাবার্থে গোলামি হইলেও, মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকের চাকুরী আক্ষরিক অর্থেই গোলামি। মিস্কিন বলে নামডাক আছেই আমাদের! 🙁
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
অন্যদের নিয়ে আলো চনা করতে গিয়ে এখন দেখি এই পোষ্টে আমিই কিছু লিখিনি। আসলে পড়েছিলাম মোবাইলে, ভালো করে লিখবো মনে ক্রে তখন লেখা হয়নি। সাবিনার মন্তব্যের উত্তরে ছোঁয়া লিখতে গিয়ে ছুঁচো লিখে ফেলেছিলাম, সে যাতনাতো আছেই। সেটা এখন সুঁচের মত বিধছে। তবে আমার আগের মন্তব্যই আবার লিখছি। সাবিনার লেখায় তাঁর ফুল পাখিরাই আমাদের স্বজন হয়ে ওঠে আর এখানে তো মানুষ নিয়ে লেখা। মানুষের স্বপ্ন নিয়ে লেখা, এটা তো চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। কী আর লিখবো!
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
আপনার সদয় মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া!
মনটা অদ্ভুত ভাল লাগায় ভরে গেল! 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
প্রিয় জুনা, :teacup:
তপনের জন্যে অনেক অনেক দোয়া রইলো।তপনের গল্প চিরচেনা বাঙ্গালীর।তবুও তোর লেখা পড়ে ওর জন্য পরম মমতায় বুকের ভিতরে কেমন জানি একটা কস্ট অনুভব করছি।এয়ারপোর্ট হতেই ওর গল্প শুনে আসছি। আবারো মনে করিয়ে দিলে।বেচেঁ থাকুক শতবর্ষ আমাদের এই যুদ্ধজয়ী সুন্দর মানুষটি। :boss: :boss: