ভিন্নচোখে ভিন্নতার মাত্রাজ্ঞান

লেখাটা ১৩ জুলাই ২০২১ তারিখে লিখেছিলাম, কিন্তু টেকনিক্যাল সমস্যার কারনে ব্লগে পোস্ট হচ্ছিল না।

হালের আলোচিত মাস্টারশেফ অনুষ্ঠান ও তাতে বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরা কিশওয়ার সম্পর্কে শুধু ফেসবুকেই পড়ে গেলাম। এত আলোচনা হচ্ছে একবার অন্ততঃ সময় বের করে দেখা উচিত বলেই মনে হলো। কারন এখানে আমাদের ঐতিহ্যের রিপ্রেজেন্টেশন নিয়ে কথা হচ্ছে। এবং আজই প্রথম তার ছোট্ট একটা ভিডিও ক্লিপ দেখলাম, সম্ভবত ফাইনাল ডিশের। প্রবাসে বেড়ে ওঠা এই বাঙালি নারীর মুখে “আলুভর্তা” উচ্চারণটা খুবই সাবলীল লেগেছে আমার কাছে।

যাহোক, বাংলাকে বাংলার মতই প্রেজেন্ট করা উচিত। আঞ্চলিকতাকে আমি সম্মান করি, তবে আঞ্চলিকতায় প্রভাবিত কোন বাংলা প্রেজেন্টেশন আমি পছন্দ করি না। সেখানে বিদেশী ভাষায় পারদর্শিতা দেখানোর জন্য ইচ্ছাকৃত ভাবে বাংলার টুইস্টেড উচ্চারণ-কে তো সহ্যই করতে পারি না।

আমার জন্ম, চিন্তা, সবই বাংলায়। পড়েছি ক্যাডেট কলেজে, পরবর্তিতে ইংরেজি ভাষা-সাহিত্যে, আর এখন রিজিক চালাই ওই দুচার কলমের ইংরেজির জ্ঞান দিয়েই। কিন্তু শো-অফ করার জন্য ইংরেজি আর বাংলার মেশানো উচ্চারণে উপস্থাপন করা এবং সেটাকে অভ্যাস কিংবা ফ্যাশন বা ট্রেন্ড হিসেবে প্রচলিত করার বিরূদ্ধাচারণ আমার সবসময়ই ছিল-আছে-থাকবে। ক্লাসের ছেলে-মেয়েদেরকেও এই কথাটা বলি।

আবার অপরপক্ষে, ইংরেজি প্রেজেন্টেশনটাও গ্রহনযোগ্য হওয়া জরুরি। ব্রিটিশ বা আমেরিকান উচ্চারণে চোস্ত না হলেও চলবে, তবে অবশ্যই গ্রহনযোগ্য হতে হবে। যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেই লিখছি, ইদানিংকালে কিছু ইংরেজির শিক্ষকের উচ্চারণে জোর করে ইংরেজ সাজার চেষ্টাটা আমার কাছে কাকের ময়ূর সাজার মতই মনে হয়।

তবে হ্যাঁ, লিঙ্গুইস্টিক বরোয়িং, কোড সুইচিং, কোড মিক্সিং, এগুলো থাকবেই, এগুলো যে কোন ভাষার মধ্যেই একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেটার সাথে আমার উপরের কথাগুলোকে তালগোল পাকিয়ে ফেলার সুযোগ নেই। প্রভাবিত উচ্চারণ (এ্যাফেক্টেড প্রনান্সিয়েশন) আর ভাষার চলমান প্রক্রিয়া-কে আলাদাভাবে বিচার করতে জানা এবং শেখাই শ্রেয়, অন্ততঃ যে কোন ভাষার ব্যাবহার-প্রক্রিয়ার ভুল ধারণাগুলো কিছুটা হলেও কেটে যাবে।

মাস্টারশেফ আয়োজনের কিশোয়ারের ফাইনাল রাউন্ডের ইউটিউব ভিডিও লিঙ্ক:
https://www.youtube.com/watch?v=Xp8GUDiQ38A

৬২৭ বার দেখা হয়েছে

১টি মন্তব্য “ভিন্নচোখে ভিন্নতার মাত্রাজ্ঞান”

  1. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    উচ্চারণটা যতদূর সম্ভব শুদ্ধ ও স্বাভাবিক হওয়াটা একান্ত বাঞ্ছনীয়। বিদেশি ভাষার উচ্চারণ বিদেশি এ্যাক্সেন্টে রপ্ত করা সহজ নয়, তাই উচ্চারণ মোটামুটি ঠিক রেখে আমাদের এ্যাক্সেন্টে উচ্চারণ করলেও চলে।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।