৩১শে আগস্ট ২০২০ [ব্লগের প্রথম পাতায় বেশ কিছুদিন আমার একাধিক লেখা থাকায় এবং সেগুলোর কোন একটি পরের পাতায় না যাওয়া পর্যন্ত অন্য লেখা দিতে পারছিলাম না। খসড়টা আগেই লেখা ছিল। আজ শুধু এই প্রথম অংশটুকু সংযোজন করে লেখাটাকে পোস্ট করছি।]
১. গত রাতে ফেসবুকের ফ্রেণ্ডলিস্ট ঝাড়ামোছা করতে গিয়ে খেয়াল করলাম, অতি পরিচিত এবং ঘনিষ্ট বেশ কয়েকজনের একাউণ্ট-প্রফাইলের ছবি উধাও (পুরা ফাঁকা) এবং আমার ফ্রেণ্ডলিস্টে দেখানো তার/তাদের নামের উপরে ট্যাপ করার সাথে সাথে কি একটা রিএ্যাক্টিভেশন টাইপের ম্যাসেজ দেখালো, যার নিচে “আনফ্রেণ্ড” এবং “ওকে” এই দুটো অপশন ছিল। বলাবাহুল্য নির্দ্বিধায় আনফ্রেণ্ড অপশনটাই বেছে নিয়েছিলাম। পরে তাদের একাউণ্টের সমাধান হয়ে গেলে আবার যুক্ত হওয়া যাবে।
২. অনেকেই দেখি একাধিক একাউন্ট মেইন্টেইন করছেন। বিষয়টাতে আমি কনফিউজড হয়েছি। এমন ক্ষেত্রে তাদের উভয় একাউন্ট চেক করে যা পেলাম, একটাতে তাদের নিজেদের পাব্লিশ করা সর্বশেষ পোস্ট বহু আগের (এক/দুই বছর বা তারও আগের), আবার আরেকটা বর্তমানে তিনি রেগুলার। এমন ক্ষেত্রে, বা কোন সমস্যার কারনে নতুন একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে (যদি আগের একাউণ্ট কেউ আর ব্যাবহার না করার সিদ্ধান্ত নেন, কিংবা একাউণ্ট হ্যাক হয়ে যাবার কারনে আর সেটাতে ফিরে যাবার সম্ভাবনা নেই), নিজের নতুন রেগুলার/এক্টিভ একাউন্ট থেকে নিজের টাইমলাইনেই বিষয়টা জানিয়ে রাখলে ভাল হয়।
৩. আবার নিজের পুরোনো একাউন্ট ব্যাক্তিগত কোন কারনে আর ব্যাবহার করবেন না (যদিও সেটার পাসওয়ার্ড আপনার জানাই আছে), এমন ক্ষেত্রে নিজের একাউন্টটাকে সম্পূর্ণ ডিএ্যাক্টিভেটেড করা একটা অপশন হতে পারে। আরো একটা অপশন হলো, নিজের পুরোনো একাউন্টের ফ্রেণ্ডলিস্ট থেকে সকল কানেক্টেড আইডিকে আনফ্রেণ্ড করে দেয়া। আর ভুল বুঝাবুঝি এড়াতে এই বিষয়টা নিজের রেগুলার/এক্টিভ একাউন্টের টাইমলানে উল্লেখ করা বা লিখে রাখা।
৪. আমরা সোস্যাল মিডিয়ায় সচরাচর তাদের সাথেই কানেক্টেড থাকতে চাই, যারা অন্তত আমাদের দৃষ্টিতে দায়িত্বশীল। আপনার একাউন্টের প্রাইভেসি যেমন আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আপনার একাউন্টে কানেকটেড অন্য আইডির (ব্যাক্তির) প্রাইভেসিও তো তার কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, তাই নয় কি? নিজেরটাই কেন শুধু ভাবছেন/ভাববেন? আপনার অবিবেচনায় অন্যের অস্বস্তি নিশ্চয়ই কোন সুখকর অভিজ্ঞতা নয়। “আমার তো আর কোন ক্ষতি হচ্ছে না” এই চিন্তার বাইরে আসুন। কারন সামাজিকভাবে আপনার সাথে কানেক্টেড ব্যাক্তি আপনাকে ভরসা করেন বা করতে চান এবং সামাজিকতার মানদণ্ডে বিশ্বাস করেন বা করতে চান বলেই আপনার সাথে কানেক্টেড আছেন/থাকছেন। প্রকাশ্যে না বললেও হয়তো কেউ না কেউ আমাকে/আপনাকে সামাজিকভাবে অগ্রহনযোগ্যতার নিদর্শন হিসেবে গন্য করছেন।
৫. ঠিক একই ভাবে/নিয়মে এই করোনাকালে বাহ্যিক মেলামেশা এবং নিজের ও আসেপাশের মানুষজনের প্রতিও খেয়াল রাখুন। “আমার হচ্ছে না, হবে না, বা আমার তো হয়ে গেছে, অতএব আমার তো আর ভয় নেই” এমন চিন্তার বাইরে আসুন। কেউ নিজে একবার আক্রান্ত হলে কি অবিবেচকের মতন ক্যারিয়ার হয়ে অন্য কারো ক্ষতি করতে হবে? একবার অন্ততঃ ভাবুন, আপনার অসাবধনতায় কিংবা স্বার্থপরতায় আপনার সঙ্গে বহন করা এবং ছড়িয়ে দেয়া জীবানু আরেকজন সাথে করে বয়ে নিয়ে গিয়ে গেলে তার বাসায় বার্ধক্য/শ্বাসকষ্ট, ইত্যাদি অসুস্থতাজনিত মানুষের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। সবাই ভাল থাকুন, সচেতন থাকুন, নিজের জন্য, পরিবারের সদস্যদের জন্য, সার্বিকভাবে এই সমাজটার জন্য।
ফেসবুকে একইসাথে একাধিক একাউন্ট পরিচালনা করাটা সন্দেহজনক।