অল্প কিছুদিন হলো আমার এক পুরোনো ছাত্র শিক্ষকতা শুরু করেছে। সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নিয়ে ইদানিং লিখছে। আমার সেসব পড়তে বেশ লাগছে। তার এক লেখার মন্তব্যের ঘরে নিচের কথাগুলো একান্ত নিজস্ব কিছু অনুধাবন হিসেবে লিখেছিলামঃ
১. ক্লাসে কেউ পড়া/বিষয় না বুঝলে আমার খারাপ লাগে না। নাও বুঝতে পারে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ক্লাসে বিষয়ভিত্তিক আলোচনার সময় কেউ যখন আলোচনার বাইরে অন্য কোন কাজে ব্যাস্ত থেকে নেহায়েতই গাফিলতির কারনে পড়া বোঝে না, সেটা মেনে নিতে পারি না। এই ধরনের ছাত্ররা মনে হয় নিজেরাও জানে না যে তারা কতখানি পরিবেশ নষ্ট করছে, নিজের জন্যও, অন্যদের জন্যও। (এখানে আমি ইচ্ছা করেই পরিবেশ লিখেছি… ক্লাসরুমের পরিবেশ)
২. পুরো সেমিস্টার/টার্ম জুড়ে কোন খবর নাই, আবার পরীক্ষার ঠিক আগ দিয়ে এক গাদা সমস্যা নিয়ে যারা শিক্ষকের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে, তারা আসলে শেষ পর্যন্ত তেমনভাবে কিছুই বুঝতে পারে না। আর তারা এটাও বোঝে না যে, এই গুটিকয়েক ছাত্রের এত পরিমান জমিয়ে রাখা সমস্যা সারাতে গিয়ে শিক্ষককে যে পরিমান এনগেইজড থাকতে হচ্ছে, সেই সময়টাতে পুরো ক্লাসের সবার কিছু কিছু একাডেমিক সমস্যার সমাধান দেয়া যেত। এটাও এক প্রকারের পরিবেশ নষ্ট করার/হবার প্রক্রিয়া।
৩. আমি পরীক্ষার হলে ডিউটিতে থাকার সময় দোয়া করি যাতে কেউ নকল করার চেষ্টা না করে। আর আমার কাছে যেন কেউ কোন কিছুতে ধরাও না পড়ে। আর এজন্য আমি হল জুড়ে এমনভাবে হাঁটতে থাকি যাতে করে নকল কেউ বের করতেই না পারে। কারন, কেউ নকল করে ধরা পড়লে আমার যা করণীয় তাই আমি করব, যেটা নিতান্তই অপ্রিয় একটা কাজ।
৪. পরীক্ষার খাতায় ছাত্ররা কম নম্বর পেলে আসলেই অনেক খারাপ লাগে। তবে গণহারে সবাই অনেক বেশি নম্বর পেলেও সন্দেহ হয়। একটা ব্রিলিয়ান্ট গ্রুপ হলেও গনহারে সবাই মিলে অনেক বেশি নম্বর পাবার কথা না। (অবশ্য, প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়েই আমার আরো অনেক বেশি অব্জার্ভেশন আছে, কাজেই সব কিছু মিলিয়েই একজন শিক্ষককে অনেক হিসেব নিকেষ কষেই একেকেটা সেমিস্টার/টার্মের ইভ্যালুয়েশন ফাইনালাইজ করতে হয়)
… আহমদ, সিসিআর, ১৯৮৮-১৯৯৪
… সকাল সাড়ে ৯টা, বুধবার, ১১ মার্চ ২০২০
নকল অবশ্যই একটা গর্হিত কাজ। এর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়।