আমার এই লেখাটা সকল শিক্ষার্থী মায়েদের উৎসর্গ করা হলো।
প্রায় ১৭ বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার জীবনে আজ আমার একটা অন্য রকমের অভিজ্ঞতা হলো। ইউনিভার্সিটির আশুলিয়া ক্যাম্পাসে আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের “বিজনেস ইংলিশ” কোর্সের একটা ৩০ মিনিটের ক্লাস টেস্ট নেয়া হবে। ক্লাসে দেখি এক ছাত্রী তার ছোট্ট বাচ্চাটাকে নিয়ে এসেছে, বাচ্চাটা তার কোলে ঘুমাচ্ছে। পরীক্ষার দিনে বাচ্চাকে সাথে নিয়ে এসেছে কেন, এই প্রশ্ন করাতে মেয়েটা জানালো যে, আজ বাচ্চাটাকে কারো কাছে রেখে আসার মত তার বাসায় কেউই ছিল না। আমার কেন যেন বেশ মায়া লাগল। মেয়েটাও বেশ কনফিডেন্সের সাথে ঘুমন্ত বাচ্চাকে কোলে নিয়েই পরীক্ষায় বসে গেল। বাচ্চাটার ডায়াপার পরানো আছে কিনা জানতে চাইলাম। তারপরে তাকে বললাম বাচ্চাটাকে আমার কোলে দিতে। মেয়েটা কোন দ্বিধা প্রকাশ না করেই আমার কোলে বাচ্চাটাকে দিয়ে নিশ্চিন্তে পরীক্ষা দিল।
প্রফেশনাল পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এই কাজটা করা আমার কতখানি সঠিক হয়েছে, তা বিচার করা আপেক্ষিক বিষয়। কিন্তু সেই মুহূর্তে আমার কাছে যেটা সঠিক মনে হয়েছে, আমি সেটাই করেছি। আমি আমার স্লীভলেস জ্যাকেটটা খুলে রাখলাম এবং জামার বুক পকেট থেকে কলম-মার্কার এসবও বের করে নিলাম, যাতে বাচ্চাটা কোনভাবে ব্যাথা না পায়। আমার ছাত্রীকেও আস্বস্ত করলাম যে, আমিও একজন বাবা, কাজেই আমার কোলে বাচ্চাটা নিরাপদেই থাকবে। পরীক্ষার পরে ক্লাসের একজনকে বললাম বাচ্চাটার সাথে আমার একটা ছবি তুলে দিতে। আজকের মুহূর্তটা আমার শিক্ষকতার জীবনের একটা অন্যকমের অভিজ্ঞতা ছিল। আর বাচ্চাটার মা-কে (আমার সেই ছাত্রীকে) বললাম, আর কোন পরীক্ষার সময় যেন আমি সহ আর অন্য কোন শিক্ষকের কাছে সে এমনটা আশা করে না থাকে।
অনেক মেয়ের জীবনেই দেখেছি, বিয়ের পরে তাদের পড়াশুনা অনিয়মিত হয়ে গেছে। সেখানে এতটুকু একটা বাচ্চা কোলে নিয়ে আমার এই ছাত্রীটা যে নিজের পড়াশুনা নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছে, এটা আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে। তবে সার্বিক বিচারে মায়ের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এই বাচ্চাটার আমার কাঁধে মাথা রেখে পুরো সময়টা জুড়ে ঘুমানোটা আমি বেশ এঞ্জয় করেছি। আমার নিজের মেয়েটার এখন সাত বছর বয়স। সবকিছু মিলে আমার জন্য একটা ভাল অভিজ্ঞতা ছিল, বলতেই হচ্ছে।
… আহমদ, সিসিআর, ৮৮-৯৪
"তবে সার্বিক বিচারে মায়ের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এই বাচ্চাটার আমার কাঁধে মাথা রেখে পুরো সময়টা জুড়ে ঘুমানোটা আমি বেশ এঞ্জয় করেছি। আমার নিজের মেয়েটার এখন সাত বছর বয়স। সবকিছু মিলে আমার জন্য একটা ভাল অভিজ্ঞতা ছিল, বলতেই হচ্ছে।"
একটা সুন্দর সময়ের সাক্ষী।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
গতকাল আমি আমার শিক্ষকতার জীবনের মনে রাখার মত একটা ঘটনা নিয়ে লিখেছিলাম। বিষয়টা (পুরো লেখাটা, আমার নাম এবং ছবি সহ) বিভিন্ন পেইজে এবং অনলাইন পোর্টালে আমার অনুমতি ছাড়াই ভাইরাল হয়ে যায়, যা আমাকে যথেষ্ট অস্বস্তির মধ্যে ফেলেছে।
প্রথমে আমি ভেবেছিলাম আমার কিংবা আমার ডিপার্ট্মেন্টের পেইজ থেকে আমার কোন অতি উৎসাহী ছাত্র এটা করেছে। পরে জানতে পারি যে, এটা আরেকটা কমিউনিটি বেইজড প্লাটফর্ম থেকে কপি-পেস্ট করা হয়েছে। আমি প্রথম যে পেইজটিতে পোস্ট হবার খবর জানতে পারি, সেটাতে ম্যাসেজ পাঠাই। আজ সেখান থেকে জবাব এলো যে, সেই পেইজটার সাথে আমার কমিউনিটির কিছু জুনিয়র সংস্লিষ্ট, এবং ম্যাসেঞ্জারের কনভার্সেশনে যেটা মনে হলো, তারা ভাল মন নিয়েই আমার লেখাটাকে তাদের পেইজে ছাপিয়েছে। আজ পর্যন্ত দেখলাম এটা অনেকগুলো জায়গায় ছড়িয়ে গেছে। প্রথম দিকে আমি কিছু জায়গায় রিপোর্ট অপশনে যাচ্ছিলাম। এখন আর তা করছি না, কারন লিমিট ছাড়িয়ে গেছে, কয় জায়গায় রিপোর্ট করব?
পুরো বিষয়টা নিয়ে আমার কিছু কথা ছিল। আমি সবাইকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন পূর্বক আমার অভিমত জানাচ্ছি। আশাকরি কেউ ভুল বুঝবেন না, এবং দয়া করে আমার কথাগুলোকে বিবেচনায় নেবেন।
প্রথমত, একজন শিক্ষার্থী মা-এর ঘুমন্ত বাচ্চাকে শিক্ষক হিসেবে আমার কোলে রেখে সেই ছাত্রীকে ৩০ মিনিটের একটা ক্লাস টেস্ট নির্ঝঞ্ঝাটভাবে দেবার বিষয়ে সাহায্য করার পেছনে আমার মনে কোন মহৎ উদ্দেশ্য বা এমন কোন কিছুই কাজ করেনি। সেই মুহূর্তে আমার যেটা করণীয় মনে হয়েছিল, আমি শুধু সেটাই করেছি। এটা যখন ভাইরাল হলো, আমি যেন পাব্লিকলি অন্য এক দেবতায় পরিনত হলাম, যা আমার মেনে নিত নিতে কষ্ট হচ্ছে। এই বিষয়টা নিয়ে লেখার পেছনে আমার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ১৭ বছরের শিক্ষকতার জীবনের একটা ব্যাতিক্রমী ভাল লাগার ঘটনাকে শেয়ার করা। আর কিছুই আমার মনে ছিল না, এখনো নেই।
দ্বিতীয়ত, কারো লেখা, ছবি, এসব পাব্লিকলি কোন প্লাটফর্মে ছাপানোর দরকার হলেও কখনোই তা তার বিনা অনুমতিতে করা উচিত নয়। আমার বিশ্বাস, এতটুকু আমরা সবাই বুঝি। আমি পরিস্কার ভাবে বলছি, আমার অনুমতি চাওয়া হলে আমি সেটার অনুমতি কখনোই দিতাম না। এখন আমাকে যাই বোঝানো হোক না কেন, আমি এ বিষয়ে অনুমতি দিতাম না, এটাই আপাতত চূড়ান্ত কথা।
তৃতীয়ত, আমাদের অনেকেই লেখাকে পাব্লিক করতে পছন্দ করেন, আবার কেউ তা কেবলমাত্র নিজস্ব গণ্ডির মধ্যেই রাখতে চান। প্রত্যেকের ইচ্ছাকেই আমাদের সম্মান দেয়া উচিত বলেই আমি মনে করি।
সর্বোপরি, আমি পাব্লিসিটি এবং জনপ্রিয়তা ভয় পাই। মানুষের ভালবাসা হলো নিরব এবং দীর্ঘস্থায়ী/চিরস্থায়ী। কিন্তু, জনপ্রিয়তার প্রকাশ তীব্র, ক্ষণস্থায়ী, যা মুহূর্তেই ভোল পালটে ফেলে। সেই বিবেচনায় নিজস্ব কমিউনিটির বা পরিচিত কারো অতি উৎসাহের ফল হিসেবে ভাইরাল হওয়া আমার লেখাটা নিয়ে আমি ভীষণ রকমের অস্বস্তিতে আছি। তাই এই কথাগুলো লিখলাম। কথাগুলো পজেটিভলি সবার বিবেচনায় থাকবে, এটা কি আমি আশা করতে পারি না?
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
পাব্লিসিটি এবং জনপ্রিয়তা ভাল নয়। আমি এটাকে ভীষণ অপছন্দ করি, ভয়ও পাই। পাব্লিসিটিতে মানুষের ভালবাসা থাকে না। ভালবাসা নিরব, দীর্ঘমেয়াদি/চিরস্থায়ী। জনপ্রিয়তার মাত্রা তীব্র এবং ক্ষণস্থায়ী; মুহূর্তেই ভোল পাল্টে ফেলে।
এক্স ক্যাডেটদের একটা প্লাটফর্ম থেকে কিছু জুনিয়র অতিরিক্ত উতসাহ নিয়ে প্রথমে এটাকে (আমার অনুমতি ছাড়াই) তাদের নিজেদের পেইজে ছাপিয়েছে। তারপর থেকে ভাইরাল হয়েই যাচ্ছে। আমার এটা মোটেও ভাল লাগছে না। অনেকটা গৃহবন্দি হয়ে যাবার মতন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
আমার ভাললাগার একটা বিষয় শেয়ার করেছিলাম মাত্র। আর এখন, ভার্সিটির করিডোরে হাঁটার সময় মাথা নিচু করে হাঁটছি। অন্য ডিপার্টমেন্টের অপরিচিত ছেলেমেয়েরাও সালাম দিয়েই যাচ্ছে। ক্লাসের বাইরের বাকি সময়টুকু নিজের কেবিনের দরজা বন্ধ একাডেমিক রেখে কাজে ডুবে থাকার চেষ্টা করতে হচ্ছে। অস্বস্তি বাড়ছে তো বাড়ছেই। নিজের অনিচ্ছায় এবং অপরের অতি উৎসাহে পাওয়া সাময়িক জনপ্রিয়তা যে আমার মতন একজন সাধারন মানুষকে কতটা আইসোলেশনে ঠেলে দেয়, তা কেবল ভুক্তভোগীরাই বুঝবে।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
Story Behind The Story
I've been in connection with so many humanitarian mentors in my life, from my early childhood, my cadet college, in the university, and also in my profession. Furthermore, I've also been the child of my very strict parents. Altogether, what I've learnt, is to help someone positively as and when needed, especially in profession. Now, sharing a personal experience in the midst of my professional business was nothing so special but just sharing a good memory, when I was also thinking of the education of the girls surrounding us.
There is always a story behind the story. When we got married, my wife Monira Akhter was in the 2nd year, studying in the department of Biochemistry and Molecular Biology of Jahangirnar University. It was so challenging for her to complete her BSC and MSC travelling from Dhaka to Savar and again from Savar to Dhaka, availing all the common public transports, whatever available, like bus and etc., and she did it with all her courage and sincerity. But still, she had to sacrifice her desire and I had to shatter my dreams for her to be in a professional life just for the sake of looking after and taking care of our only little child Arisha Ariba. Taking her (our little princess) to school, art class, music class, attending different competitions, even these things are not that easy for a lady in the busy Dhaka city, and I am so proud and happy that my wife is doing all these things. So, I know, how challenging things are for a girl to complete studies and maintaining a life with happiness.
Please keep me and my family in your prayers for our honest living and happiness blended with all the simplicities. Also please keep praying for me so that I can prove myself a true, honest and devoted professional to remain alive among all even after my physical death.
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
আশাকরি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া নিয়ে এটাই আমার সর্বশেষ কথাঃ
আমি ভাল লিখি না, তাও যদি কিছু লিখেই ফেলি সেটা কেবলমাত্র নিজের মনের আনন্দের তাগিদেই লিখি। আর দশটা স্বাভাবিক মন-মেজাজের মানুষের মতই আমার লেখা আমার পরিচিত মহলের কেউ পড়লে আমার ভাল লাগে। কিন্তু আমি কখনোই পাব্লিসিটির আশায় কোন কিছুই লিখিনি, লিখি না, আর সে আশায় ভবিষ্যতেও লেখার ইচ্ছা নেই। শুধু তাইই নয়, পাব্লিসিটির আশায় কিছু করিও না। তবে হ্যাঁ, এক অতি সাধারন মানুষ হিসেবে নিজের আনন্দ আমার পরিচিত মহলে এবং একান্ত ক্লোজড কমিউনিটির মধ্যে শেয়ার করি। কথায় আছে, আনন্দ বাটলে তা বাড়ে, আর দুঃখ বাটলে তা কমে। আমিও তো সুখ-দুখের অনুভূতিসপন্ন খুবই সাধারন একটা মানুষ। আমার লেখাকে আমার পরিচিত মহল যখন পাব্লিক করে দিয়ে ভাইরাল হবার সুযোগ করে দিলেন, তাও আবার আমার অনুমতির তোয়াক্কা না করেই, সেটা কি আমার জন্য খুব সুখের হলো? আমি বারবার লিখেই যাচ্ছি, আমি পার্সোনাল পাব্লিসিটি শুধু অপছন্দই করি না, রীতিমত ভয় পাই; আপনারা কি তা বিশ্বাস করছেন না? আমার পরিচিতজনেরা তো আমাকে জানেনই; আমি "হ্যাঁ" বা "না" যেটাই বলি, মন থেকেই বলি। তাহলে বারবার অনুরোধ করা সত্বেও কেন আমাকে ক্ষণে-ক্ষণে বিব্রত করছেন? এতে যে আমার অস্বস্তি প্রতি মুহূর্তে বেড়েই চলেছে, তা কি আপনারা বুঝছেন না? দয়া করে এই ভাইরাল পোস্ট শেয়ারিং এবং তাতে আবার আমাকেই ট্যাগ করা, এসব আর করবেন না। আমি বিব্রত হচ্ছি বারবার। এবং সত্যি কথা বলতে, বিরক্ত যে একেবারেই হচ্ছি না, তা কিন্তু মোটেও নয়। ... ... ... আরেকটা কথা, শিক্ষকের ডায়রি সিরিজটা আমি কিছুতেই থামাতে পারব না। হয়তো এমন আরো ঝড়-ঝাপ্টা যাবে, কিন্তু মনের গলা টিপে মেরে ফেলার কি কোন মানে আছে? আমার কাছে আমার প্রতিটা লেখাই যেন আমার একেকটা সন্তান। হয়তো অনেকগুলো লেখাই জাস্ট ট্র্যাশ, তারপরেও আমার আবেগেরই তো প্রসব। তাই না?
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
Although, I'm always against any kind of personal publicity, which, in my case, was initiated without my consent, by some of my junior Ex Cadets out of their personal enthusiasm, this is surely a great honor for me to have some acknowledgement from my PhD Supervisor, who wrote, "Thanks Mr. Ahmad Mahbubul Alam, it is an exemplary encouragement to emancipate women education. I am proud as your PhD supervisor."
Dear Sir,
I'm a very-very tiny person in comparison to a great humanitarian scholar like you. I'm really so lucky to have you as my mentor to make me understand what "feminism" truly is and what it actually covers, which is now to me not only just a "term" to be defined but a "philosophy" to be realized.
In fact, when I initiated to help the girl in the exam-room, nothing extraordinary worked in my mind; rather I simply did what I felt best at that moment. Later, I just shared the story to my near and dear ones within my community without having the slightest idea of getting viral through social media, which of course made me embarrassed in the consequence, when people from different corners, including my relatives, and students shared the viral-links.
But still, being appreciated by a great personality like you is surely a matter of huge blessing for me. Please keep me and my family in your prayers.
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
দিনে দিনে অনেক বড় মাপের লেট লতিফ হয়ে যাচ্ছি। তাইতো এই অসাধারন ব্লগটা পড়তে অনেক বেশিই দেরি করে ফেললাম। সুখকর একটা মুহূর্ত!
তবে লেখা পরবর্তী যে খ্যাতির বিরম্বনার মধ্যে দিয়ে আপনাকে যেতে হয়েছে তাঁর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। অনুমতি ছাড়া লেখা কিংবা ছবি শেয়ার করা একদমই অনুচিত সে যতটাই সৎ উদ্দেশ্য নিয়েই করুন না কেন এটা বোঝা উচিত ছিল। আপনি তো ফেসবুকে পাবলিক পোষ্ট দেন নি। কে শোনে কার কথা।
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি, ভাই। 🙂
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
তোমার চেয়েও বড় লেট লতিফ মনে হয় আমিই। কবে মন্তব্য করেছো আর আমি কবে দেখলাম। অনেক সুন্দর করে মন্তব্যটা করেছো। ধন্যবাদ।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম