“লাভ কঙ্কারেথ অল”

সমসাময়িক কিছু ঘটনায় খণ্ড-খণ্ড চিন্তাপ্রসূত নিচের পয়েণ্টগুলোকে আর কম্পাইল করতে ইচ্ছে হলো না।

১. ছাত্রদের নকল ধরার চেয়ে পরীক্ষার হলে একজন শিক্ষকের উপস্থিতি এমন হওয়া উচিত যাতে করে কেউ নকল করতেই না পারে।

২. নকল বা নকলের প্রমান বা যথেষ্ট সন্দেহ জাগায় এমন মুহূর্তে এক্সপালশন ছাড়াও নানা পন্থায় শাস্তি দেয়া যেতে পারে। যেমন, একটা দীর্ঘ সময় খাতা আটকে রাখা, মূল খাতার পুরোটা কেটে দেয়া & সেটাকে আটকে রেখে অতিরিক্ত খাতায় আবার প্রথম থেকে লিখতে দেয়া & পরে সেটাকে মূল খাতার সাথে এটাচ করা।

৩. আমি বিশ্বাস করি, একটা অপরাধের দুটো শাস্তি হতে পারে না। এক্সপালশন & হিউমিলিয়েশন একসাথে হতে পারে না।

৪. অভিভাবককে এড্রেস করারও ভাষা আছে। ভদ্রতার ভাষা। শিক্ষকদের তো সেটা না জানার কথা না।

৫. ছাত্রের দূর্বলতা/ত্রুটি অভিভাবকের সাথে আলোচনার সময় ছাত্রকে উপস্থিত না রাখাই শ্রেয়।

………. আরো অনেক কিছুই এবিষয়ে বলার/লেখার আছে। নিজের সবল ভাব ছাত্রদের উপরে দেখানো/প্রয়োগের মানসিকতা আমাদের অনেক শিক্ষকেরই মজ্জাগত হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক পেয়াদা নয়, শিক্ষক হলো কাউন্সেলর/বন্ধু/গাইড….. এটা শিক্ষককেই বুঝতে হবে। এটা শুধু উপার্জনের মাধ্যম নয়, এটা একটা মহৎ সেবা, এটা শিক্ষকদের বুঝতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে, ধারন করতে হবে।

আরো কিছু কথা এই মুহূর্তে না বললে/লিখলেই নয়ঃ

১. একজন ছাত্রকে আমি কখনোই কালপ্রিট বা ক্রিমিনাল ভাবতে রাজি নই।

২. বহু মত, বহু মন, নানান রকমের পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকেই আমাদের ছাত্ররা আসে। এক্ষেত্রে শিক্ষকতায় ধৈর্য্য অবশ্যই একটা বড় বিষয়।

৩. স্নেহ কিন্তু সবাই বুঝে। আমি ভালবাসতে পারলে, তার প্রতিদান আসবেই। কারো কাছ থেকে দ্রুত আসবে, আবার কারো কাছ থেকে আসবে দেরীতে।

৪. মনের মাঝে ক্ষোভ ধারন করে রাখলে মনের অজান্তেই ছাত্রদের কারো-কারো প্রতি একজন শিক্ষকের মারাত্মক ভুল আচরন প্রকাশ পেয়ে যেতে পারে।

৫. দীর্ঘদিন স্টুডেণ্ট-কাউন্সেলরের দায়িত্ব পালন করে অনেক ডিস্টার্বড ছাত্রকে হ্যাণ্ডেল করে দেখেছি, একটু ভালবাসা পেলে, একটু ভেন্টিলেট করতে পারলেই একজন চরম মাপের অবাধ্য ছাত্রও নিজেকে কতটা বদলে ফেলতে পারে।

৬. শাস্তির বিধান ছিল, আছে, থাকবে, কিন্তু তা কোন মাত্রায় প্রয়োগ করব, তা শিক্ষককেই বিবেচনায় নিতে হবে।

৭. লঘু পাপে গুরু দণ্ড হয়ে যাচ্ছে কিনা, সেটার দায়ভার শিক্ষককেই নিতে হবে। আইনের দৃষ্টিতে না হলেও, নিজের মনের কাছে প্রশ্ন করেই এটার প্রয়োগিক মাপকাঠি তৈরি করে নিতে হবে।

………. একান্তই আমার অভিমত। সবাই একমত হবেন, এটা আমি দাবি করতে পারি না।

………. আমি আমার ছাত্রদের মাঝে আমার মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকতে চাই।

৮,২৮৩ বার দেখা হয়েছে

২ টি মন্তব্য : ““লাভ কঙ্কারেথ অল””

  1. মাহমুদুল (২০০০-০৬)

    পাবনা ক্যাডেট কলেজের এক কুখ্যাত শিক্ষক বলেছিলেন লঘু পাপে গুরু দন্ড শৃংখলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে কার্যকরী। এবং তিনি সেটাই করেন।


    মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

    জবাব দিন
    • আহমদ (৮৮-৯৪)

      সেই শিক্ষকের পলিসির সাথে আমি সহমত নই। শিক্ষকতায় আমি নিজে কখনোই কোন ভুল করিনি, এটা দাবী করতে পারছি না। তবে সবসময়ই আমাদের নীতি এবং পদ্ধতির (প্রিন্সিপল & পলিসি) সমন্বয় থাকা প্রয়োজন।


      চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।