রাজু শিশির ভালোবাসতো।
প্রথম দেখার নীলচে শেষ বিকেলে
নগরের সাধাসিধে ব্যস্ততায়-
ডানে বাঁয়ে সামনে পেছনে সবখানে
যখন অজস্র মিনিবাস, অজস্র রিকশা
সারে সারে যন্ত্রদানবের অরণ্যে- কোথায়, মনে নেই ঠিক
একফোঁটা শিশির দেখেছিলো রাজু।
রাজু শিশির ভালোবাসতো।
ক্ষণ চলে যায়, মুহূর্ত, দিন-
রাজুর ভেতর বর্ষার দুপুর
এক হৃদয় বর্ষা নিয়ে, রাজু শিশির খোঁজে।
সিংহল সমুদ্র নয়, এই মৃত নগরে-
কত রাত্রির পথ একলা হেঁটেছে রাজু
কত নিভে যাওয়া ধূম্রকাঠি, কত কত ছেঁড়া ডায়েরীর পৃষ্ঠা
কত পৃথিবী ভুলে হঠাৎ আনমনা ভোর
কত ভেজা লুকনো আবেগ, তবু নিরাবেগের অন্তহীন অভিনয়-
চেপে যাওয়া কান্নার মত এক নিঃশ্বাসে সব গিলেছে রাজু।
রাজু শিশির ভালোবাসতো।
পত্রিকারা শিরোনাম বদলায়, পৃথিবী উত্তাল-
স্টক মার্কেটের তলবিহীন দরপতন
এখানে সেখানে আধভাঙা যোগাযোগ
তেল গ্যাস বাঁচাতে সোচ্চার এক শহীদ মিনার-
দেখেছে রাজু, দেখেনি।
দুম করে হারিয়ে গেলো কত লোক
কত শত বাস এখনো পুড়ছে নগরীর চৌরাস্তায়
লক্ষ শত কোটি মুদ্রার অন্ধকার হাতবদল-
তবু কিছু বলেনি রাজু।
অবিন্যস্ত, অগোছালো রাজুর বুকে তখন
একফোঁটা শিশির।
রাজু শিশির ভালোবাসতো।
শীত এখন-
ঘাসের ওপর, নিষ্প্রাণ রেলিঙে, ধূসর ধোঁয়া জানালায়-
শিশির জমেছে শুধু রাজু নেই।
মৃত নগরীর রাস্তায় রাস্তায় নির্বাক অনুসন্ধান
রাজু দেখে যাও, কত শিশির।
সময় চলছে, জীবন চলছে- রাজু নেই শুধু কোথাও।
রাজু, হতভাগ্য রাজু-
শুধু ওই একফোঁটা শিশির ভালোবাসতো।
ভালো লিখছো...।
শিশির...
অসহনীয় রকমের সুন্দর কবিতা।
এমন কবিতাপাঠ উত্তাল অথচ অদৃশ্য ঢেউ তোলে মস্তিষ্কে হৃদয়ে।
একফোঁটা শিশিরের জন্যে রাজুর আকুলতা আমাদের সবার হাহাকারে লীন হয়ে গেছে।
কবিকে কুর্ণিশ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।
:boss: অসাধারণ কবিতা......