এই ডিসেম্বরে ছুটির ঝুলি

ত-য়ে তুষারপাত, ঘ-য়ে ঘরে বসে থাক
আমার সব অনুমান ভুল প্রমাণ করে শেষমেষ বরাবরের মতো একটি হোয়াইট ক্রিসমাস হলো এবছরও। ক্রিসমাসের দিন আকাশ ভেঙ্গে সাদা পেঁজা পেঁজা তুলোর মতো তুষারপাত শুরু হলো সারা নগর জুড়ে। দিনভর তুষারপাতে শহরটা চোখের সামনে নিমেষে শ্বেতশুভ্র রহস্যপুরী হয়ে গেলো। এদেশের মানুষজন ক্রিসমাসে তুষারপাতে দারুণ খুশি হয়। জানালা দিয়ে কিছুক্ষন পরপর উঁকি দিয়ে সেই তুষারপাত দেখে আমিও দারুন খুশি! সারা শহর যথাযোগ্য মর্যাদায় ভবদীয় গুরুগাম্ভীর্যের ভিতর দিয়ে ক্রিসমাস পালন করলো সেই খুশিতে। ক্রিসমাসের রাতে আমার রুমমেট যখন ঘরে ফিরছিল, এলিভেটরের ভিতরে একজনকে মেরি ক্রিসমাস শুভেচ্ছা জানালে প্রতিবেশী ক্রিসমাসের উচ্ছ্বাসে একগাদা কোকোনাট কুকিজ উপহার দিয়ে ফেললো তাকে। সেদিন থেকে নিয়ম করে তুষারপাত হচ্ছে। আর তুষার না পড়লে কনকনে হাড্ডি কাঁপানো ঠান্ডা। মানে মাইনাস পনেরো বা বিশ কিংবা আরো বেশি নিম্ন-তাপমাত্রার জুবুথুবু ঠান্ডা।

ক্রিসমাসের দিন এই শহরে ঠিক সন্ধায় বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় নিয়ম করে প্রতিবছর। এবার সে অনুষ্ঠানে সাবিনা ইয়াসমিন এবং এন্ড্রু কিশোর এসেছিল। বেশ ধুমধাম অনুষ্ঠান। আমার যথারীতি যাওয়া হয়নি। প্রতিবছরই দেশ থেকে নাম করা কেউ না কেউ আসে। যারা অতিথি শিল্পী তারা বাদে বাকি অনুষ্ঠান বেশ সফলভাবে হযবরল হবার রেপুটেশন আছে। সাবিনা ইয়াসমিনের গান শোনার যে খানিক ইচ্ছে হয়নি, তা নয়। সাবিনা ইয়াসমিনের গান বনাম আমার আলসেমি। শেষে ঠিকই আমার আলসেমি জয়যুক্ত হয়েছে।

এই শহরে এলিসিয়া নামে এক চটপটে বুদ্ধিমতি বাকপটু পিচ্চি আছে। আমাকে সে মামা বলে ডাকে। আমি তার মার এমন লতায়পাতায় কাজিন যে অপরিচিতের মতো একদিন কথা বলার অনেকক্ষন পরে গিয়ে আবিষ্কার হলো আমরা লতানো-পাতানো কাজিন এবং কেউ কাউকে আগে চিনতাম না, জানতাম না। ভিনদেশে ব্যাপারটা বেশ আজব! তো এই পিচ্চি এলিসিয়ার সাথে আমার খাতির হবার পর যখন সে বুঝলো আমি আসলে খুবই দুধভাত টাইপের মামা। তারপর সে আমাকে সর্ন্তপণে বলে যে, দিজ পিপল আর সিক! ক্রিসমাস ইভে কেউ স্টেইজ ইভেন্টস করে! আমি কেনু, কেনু জিজ্ঞেস করাতে সে বলে, দিস টাইম ইউ শুড বি উইথ ইওর ফ্যামিলি। একসাথে ক্রিসমাস ডিনার করবা, গিফট প্যাক ওপেন করবা। ইত্যাদি, ইত্যাদি। পিচ্চির ক্ষোভ দেখে আমি পুরাই টাস্কি! পরে মনে হলো, এরা তো আসলে দ্বিতীয় প্রজন্ম। এদের বেড়ে ওঠা এইসব বৈপরীত্তের ভিতর দিয়ে। অভিবাসী শিশুদের এইসব ‘ওডস’ কে মেনে নিয়ে বা প্রত্যাখ্যান করে নতুন প্রজন্ম হয়ে বড় হওয়া। এভাবেই প্রবাসে ‘ডায়াসপোরা’ গড়ে ওঠে।

ক্রিসমাস হলিডেতে ভেবেছিলাম বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন কাজ করবো। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। একদম আরাম-আয়েশ করে শুয়েবসে কাটছে। যা ঠান্ডা বাইরে, বাপরে বাপ! সেজন্য কোন বাধ্যবাধকতা নেই দেখে বেরও হতে ইচ্ছে করে না। তাই বসে বসে সিনেমা দেখা হচ্ছে মহা সমারোহে। তাই ভাবলাম সবার সাথে শেয়ার করি কি সিনেমা দেখছি। দেখুন তো মিললো কিনা কোনটা?

দ্য ওয়ে ব্যাক (২০১০)
সিনেমাটা চরমভাবে কাহিনীর ভিতরে নিয়ে যায়। জেল পালানোর গল্প। পোলিশ এক রাজবন্দী সাইবেরিয়ার জেল থেকে পালায় দলবলসহ এবং পথে এসে দলে যুক্ত হয় একটি মেয়ে। তারা বরফ, মরুভূমি, সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে ভারত পর্যন্ত চলে আসে। এবং সেখানেই শেষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে কাহিনীটি একটি সত্য ঘটনার উপর নির্মিত।

দ্য এ্যাডভেনচার অব টিনটিন (২০১১)
থ্রি-ডি গগলজ পরে দেখার সিনেমা তাই হলে গিয়েই দেখলাম। চমৎকার ইলাসট্রেশন! না হয়ে পারে না, কারণ পরিচালক হলেন স্টিভেন স্পিলবার্গ। আর দুঃসাহসী টিনটিনের গল্প যে মুন্সিয়ানায় এনিমেটেড করা হয়েছে তা টিনটিন ভক্তদের ভাল না লাগার কোন কারণ নেই। দুর্দান্ত সব এ্যানিমেশন ইফেক্ট – বাস্তব আর এনিমেশনের দ্বদ্ধে কাটে পুরোটা সময়। টিনটিন, ক্যাপ্টেন হ্যাডক এবং কুট্টুস কারেকটারগুলো এ্যানিমেশনে কেমন জীবন্ত হয়ে ওঠে।

এ্যা সেপারেশন (২০১১)
একটি সাদামাঠা গল্পের দারুণ মুভি। ইরানি পরিচালকগুলো কি খায় কে জানে! সাধারণ গল্পগুলোকে কি অসাধারণ করে সেলুলয়েডে ধরে রাখে। পরিচালকের নাম আসগার ফারহাদি। আগে তার কোন সিনেমা দেখি নাই। আমার কাছে সিনেমাটা দুর্দান্ত লেগেছে। এক দম্পতির গল্প। স্ত্রী চায় অভিবাসনের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তন করে তাদের মেয়ে সন্তানের নিশ্চিত ভবিষ্যত গড়তে, কিন্তু স্বামী চায় দেশে তার এ্যালঝেইমারে আক্রান্ত অসুস্থ পিতার সেবা করতে। তাই দেশে থাকতে চায়। মতদ্বৈততার দোলাচলে এই দম্পতি বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করে। সেখান থেকেই আবর্তিত হয় সিনেমার গল্প। সিনেমাটায় এক দন্ড রাজনীতির কথা নেই সরাসরি। আবার পুরো সিনেমাটাই ইরানের সামাজিক রাজনৈতিক বাস্তবতার দোদুল্যমান সময়কে ধারণ করে।

ইনসেনডাইস (২০১০)
রকিবের পরামর্শে দেখা। দুর্দান্ত একটি সিনেমা। ফরাসি, আরবি এবং ইংরেজি এই তিনভাষার মিশ্রনে। ইংরেজি যদি খুব সামান্য। তাই সাবটাইটেল আবশ্যক। সিনেমার গল্প হলো কানাডার এক অভিবাসী জমজ ভাইবোনের পরিবারের ইতিহাস সন্ধান করা। সিনেমার গল্প আবর্তিত হয় মধ্যপ্রাচ্যের এক নামহীন দেশ এবং কানাডায়। হতে পারে সে দেশটি লেবানন, প্যালেস্তাইন, কিংবা অন্য কোন দেশ। মূল উপজীব্য জাতীয়তাবাদ, যুদ্ধ এবং ধর্মের যাতাকলে এক অভঙ্গুর নারী। মা চরিত্রই সিনেমার মূল কেন্দ্র যার জীবন ফ্ল্যাসব্যাকে মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস। অসাধারণ এবং অনবদ্য। ওয়াজদি মউয়াদের নাটক অবলম্বনে চিত্রনাট্য নির্মিত।

উই নিড টু টক এবাউট কেভিন (২০১১)
খানিকটা সাইকোলজিক্যাল মুভি। কিশোর ছেলের খুনের দায় মাকে মানুষিকভাবে বিদ্ধস্থ করে ফেলে। সিনেমার মূল কাহিনী খুনী সন্তানের মায়ের মনঃস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়া নিয়ে। যে মা নিজেকে নিয়ে সন্তানের কৃতকর্মের জন্য অপরাধবোধে ভোগে। পুরো সময় অদ্ভুত এক সংকটের ব্যঞ্জনায় বুদ করে রাখা এক চিত্রনাট্য এবং ইলাসট্রেশন।

দ্য ডার্টি পিকচার (২০১১)
হিন্দি সিনেমা। দক্ষিন ভারতের অভিনেত্রী সিল্ক স্মিতার জীবন নিয়ে নির্মিত সিনেমা। নাসিরউদ্দিন শাহ এবং বিদ্যা বালান অভিনীত। মূলতঃ সিনেমা জগতে আগ্রহী এক মেয়ে কিভাবে তার দারিদ্রকে তোয়াক্কা না করে রেবেল এক সেক্স সিম্বলে পরিণত হয়ে ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রি কাঁপায় তার উপর গল্প আবর্তিত হয়েছে। সিল্কের সিনেমা জগতের নানা উত্থান-পতন এবং সিরিয়াল প্রেমের গল্প। সিনেমাটা দেখার কারণ লেখিকা শোভা দে’র কলাম পড়ে যে সিল্ক ছিল বাস্তব জীবনে চরম রেবেল এবং ফেমিনিস্ট চরিত্র। সিনেমাটা মানে সার্বিকভাবে নির্মান ‘মোটামুটি’ মানের লেগেছে। হিন্দি সিনেমাই মনে হয়েছে। তবে পিকচারাইজেশন দুঃসাহসী – একেবারে ম্যাডরাস চিকেন মাসাল্লা কারি!

সত্যজিৎ রায় নেগেটিভস: মাই লাইফ ইউথ মানিকদা (২০০৫)
সত্যজিৎয়ের উপর একটি ডকুমেন্টরি। শুনেছি সত্যজিত রায় নিয়ে অনেক ডকুমেন্টরি হয়েছে। কিন্তু এই ডকুটা নিশ্চিতভাবে ভিন্ন স্বাদের। আমি যেহেতু অন্য ডকুগুলো দেখিনি তাই তুলনা করতে পারবো না। তবে, এটা আমার ভাল লেগেছে। পঁচিশ বছর ধরে সত্যজিৎ রায়ের সাথে ছায়ার মতো থেকে তার ব্যক্তিগত ফটোগ্রাফার নিমাই ঘোষ। তিনি নব্বই হাজার ছবি তুলেছেন তাঁর মানিকদার। তাঁর বয়ানে এবং নেগেটিভগুলোর গল্প সাজিয়ে পুরনো ছবির লোকেশন, সিনেমা বোদ্ধা এবং অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ভিতর দিয়ে রক্তমাংসের সত্যজিৎকে ক্যামেরার সামনে তুলে এনেছেন বেলজিয়ান পরিচালক বো ভান ডের হার্ফ।

লাভ ইন ইন্ডিয়া (২০০৯)
২৮+ একেবারে প্রাপ্ত বয়স্কদের ডকুমেন্টরি। পরিচালক কৌশিক মুখার্জি। বাংলা এবং সমগ্র ভারতের প্রেম, ভালবাসা এবং যৌনতা নিয়ে যে ঢাকগুড়গুড়, পরিচালক তা উন্মোচন করার চেষ্টা করেছেন। একেবারে বাৎসায়ণ থেকে বাউল, দেহতত্ত্ব থেকে হাল আমলের লিভ টুগেদার পর্যন্ত পরিচালক প্রেম এবং দেহজ কাম সম্পর্কের ধরণ নিয়ে কথা বলেছেন। উচ্চবিত্ত থেকে একেবারে নিন্মবর্গীয় বয়ান। একদম সাংঘাতিক পোষ্টমডার্ন ডেপিকশন – ডকুতে পরিচালক এবং তার পার্টনার বারবার নিজেদের জীবন নিয়ে এক্সপেরিমেন্টের বয়ান করেছেন। তার আরেক সিনেমার নাম ‘গান্ডু’। আমার এখানে দিল্লী স্কুল অব ইকোনোমিকসের এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট সাজলের মতে কৌশিক মুখার্জি নাকি ভারতীয় সিনেমায় খোলনোলচে পাল্টে নতুন ধারা সংযোজন করেছেন। তবে ‘গান্ডু’ আমার কাছে খানিক র্দুবোধ্য লেগেছে। লাভ ইন ইন্ডিয়ার দুয়েকটা সিনে একটু ইয়ে থাকলেও, খারাপ লাগার কথা না। ছোটরা দেখলে নিজ দায়িত্বে।

বারি মাই হার্ট এট ওয়াউন্ডেড নি (২০০৭)
আমেরিকার আদিবাসী ইতিহাসের উপর নির্মিত টেলিভিশন সিনেমা। আমেরিকার লেখক ডি ব্রাউনের বইটার অনুবাদ পড়েছিলাম অনেক বছর আগে ‘আমারে কবর দিও হাঁটুভাঙ্গার তীরে’। যদিও সিনেমা তার অনেকখানিই ধরতে পারেনি। তারপরও যে কাউকে স্পর্শ করবে। দেখানো হয়েছে আধুনিক রাষ্ট্রে কিভাবে আদিবাসীরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। গল্পটা আমেরিকার কিন্তু এই উপনিবেশিক ইতিহাস বাংলাদেশের আদিবাসীদের জন্যও অভিন্ন। রাষ্ট্রের শক্তিপ্রয়োগ, উৎখাত, সামরিক অভিযান, বিশ্বাসঘাতকতা, রিজার্ভ এলাকায় আটকে ফেলা, উন্নয়নের নামে স্বেচ্ছাচারিতা, অধিকার বঞ্চিত করা, মিথ্যাচার যা উপনিবেশ আমলে শুরু হয়েছে তা স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোতেও সেই একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি। হাঁটুভাঙ্গার তীরে যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশিক ইতিহাসে আদিবাসীদের এথনোসাইড এবং লাঞ্চনা-বঞ্চনার বয়ান হলেও তা দেখার সময় আমাদের দেশের আদিবাসীদের প্রেক্ষাপটে অভিন্নই মনে হবে।

বিবিসি – দ্য স্টোরি অব ইন্ডিয়া (২০০৭)
যথারীতি ডকুমেন্টরি। মাইকেল উড নির্মিত ছয় পর্বের ভারতের আদি থেকে উপনিবেশিক আমল পর্যন্ত দশ হাজার বছরের ধারাবাহিক ইতিহাস। ভাল লাগবে।

রঞ্জনা আমি আর আসব না (২০১১)
অঞ্জন দত্তের সিনেমা। সিনেমায় অঞ্জন দত্ত এবং কবীর সুমন দুজনেই আছেন। গায়ক হিসেবে। অঞ্জন দত্ত রকস্টার অবনী চরিত্রে। যে রকস্টার নারীলিপ্সু। আর ভালবাসে শুধু গান। সিনেমার গল্প ঘুরপাক খায় এক কচি গায়িকার সাথে অবনীর নেহায়েত দেহজ ভালবাসার টান এবং গানের প্রতি দায়বদ্ধতার টানাপোড়েনে। গানগুলো বেশ ভাল লেগেছে। সেই সাথে সেলুলয়েডে কলকাতার গানে পাশ্চাত্য ধারার আত্মীকরণের বয়ান এবং এ্যাংলো সংস্কৃতির মিশ্রণ।

ইতি মৃণালিনী (২০১১)
অপর্ণা সেনের পরিচালনায় সবথেকে লেটেস্ট সিনেমা। একজন বয়স্ক অভিনেত্রী সুইসাইড করার সিদ্ধান্ত নেয় তখন ফ্ল্যাশব্যাকে তার অতীত জীবন দেখানো হয়। অভিনেত্রী জীবনের উত্থান, আনন্দ, দুঃখ-কষ্ট, ভালবাসা, সম্পর্ক, হতাশা, এবং বিশ্বাসভঙ্গের গল্প। বয়স্ক মৃনালিনী চরিত্রে অপর্না সেন এবং শুরুর তরুণী জীবনে কঙ্কনা সেন শর্মা। সিনেমার গানগুলো ভাল। কিছু কিছু ক্যারেকটার খানিক ইমম্যাচিউরড মনে হয়েছে। যেমন মৃণালিনীর কলেজ জীবনের প্রেমিক। কিংবা শেষ বয়সের তরুণ পরিচালকের চরিত্রায়ন কেমন বেখাপ্পা ঠেকেছে। তা বাদে বেশ ভাল। তবে সিনেমার সেট এবং কস্টিউম দুর্দান্তভাবে সময়গুলোকে ধরেছে।

******
পূর্ণিমা আমাবস্যায় যে ধরে হাল,
তার দুঃখ হয় চিরকাল।
তার বলদের হয় বাত
তার ঘরে না থাকে ভাত।
খনা বলে আমার বাণী,
যে চষে তার হবে জানি।

সবাই নিরাপদে থাকুক। ভাল থাকুক।
হ্যাপি নিউ ইয়ার!

৩,২৫০ বার দেখা হয়েছে

১৯ টি মন্তব্য : “এই ডিসেম্বরে ছুটির ঝুলি”

  1. সামিয়া (৯৯-০৫)

    অসাধারণ! অসাধারণ অসাধারণ! একটানে পড়া কি চমৎকার একট 'ঘর ঘর' লেখা 🙂
    একমাত্র কমন পড়ল ইতি মৃণালিনী। অসাধারণ লাগসে আমার কাছে মুভিটা। অপর্ণা কে আমার এত ভালো লাগে...এত এত এত ভাল লাগে...ওঁর শাড়ি পড়া, ওঁর নিচু হয়ে কিছু একটা তোলার ভঙ্গিমা...সবই কেমন যেন আলাদা। আর সকলের চেয়ে অনেক অন্য রকম, ওঁর কাছে থেকেই এই শিক্ষাটা নেয়া, যেটাতে কমফোর্ট পাওয়া যায় তাই সবচেয়ে ফ্যাশনেবল।
    তরুণ পরিচালকের ক্যারেকটারটা ইমম্যাচিউরড কেন মনে হল আপনার? আমার তো বরঞ্চ কঙ্কণার বাচ্চার ক্যারেকটারটা কিছুটা ইমম্যাচিউর লাগল। আরেকটু ভাল অভিনয় পারে এমন বাচ্চা নেয়া যেতে পারত রোলটাতে।

    জবাব দিন
      • রাব্বী (৯২-৯৮)

        Diaspora শব্দের আদি উৎস হলো আমার 'রাব্বী' নামের মতো হিব্রু ভাষায়। তবে এখানে ডায়াসপোরা বলতে বুঝেয়েছি বিদেশে কয়েক প্রজন্ম থাকার পর প্রবাসী সংস্কৃতি এবং স্বদেশের সংস্কৃতির মিশ্রণে এক নতুন সংস্কৃতি গড়ে ওঠে সম্পূর্ন নতুন প্রজন্মের হাতে সেই প্রজন্মের কথা। যেমন, ইষ্ট লন্ডনের সিলেটি বা বাংলাদেশি ডায়াসপোরা। আর্কিটেক্টের জন্য ডায়াসপোরা বোঝা দরকারি 🙂

        অপর্ণা সেন আমারও খুব প্রিয়, কঙ্কণাও। তরুণ পরিচালকের ডায়ালগের ভঙ্গি খানিকটা আনকোরা লেগেছে। রাহুল বোস হলে বেশি মানাতো মনে হয়েছে। কঙ্কণার মেয়ের চরিত্রে যে ছিল তাকে চোখে লাগেনি কারণ সে বিদেশে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। তাই তার রোলটার অনভ্যস্ততা বরং ঠিক মনে হয়েছে।

        লেখায় 'ঘর ঘর' ইফেক্ট তৈরি হবার কারণ ব্লগটা লিটারালি লেপের ভেতরে বসে লেখা 🙂 বাকিগুলি দেখে ফেলো।


        আমার বন্ধুয়া বিহনে

        জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    দারুন পোস্ট, পড়ে আরাম পেলাম। তবে দুঃখ লাগলো শুধু একটা মুভি কমন পড়লো দেখে, বর্ণনা পড়ে সবগুলো দেখার লোভ হচ্ছে কিন্তু ডাউনলোড করার মত ইন্টারনেট সংযোগ নাই 🙁

    ইনসেনডাইস দেখেছি, আমারো দূর্দান্ত লেগেছে। শুধু শেষের টুইস্টটা বেশ আগে আগে বুঝে ফেলেছিলাম এই যা।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. মনজুর (৮৯-৯৫)

    মুভিগুলোর লিংক দিবা না ?? এইডা একটা কাম করলা মিয়া ?? ~x(
    ডকু গুলি এখন কই পাই 🙁 :-/

    রিভিউ পইড়াতো মুভি দেখতে মঞ্চাইতাছে.. :dreamy:
    লেখা ভালো হইছে, তয় কেমন জানি একটা আইলসামি লাইগা আছে লেখাটার গায় 😀

    জবাব দিন
  4. রকিব (০১-০৭)

    বস সিনেমার অংশের আগ পর্যন্ত লেখা একেবারে কম, মন ভরলো না; আরো একটু বাড়িয়ে তারপর সিনেমায় আসলেন না কেনু কেনু কেনু!!!
    কেবল ডায়াসপোরার অংশটুকু নিয়েই বলি। এই জিনিস মাঝে মধ্যে বেশ গুরুতরভাবে আইডেন্টিটি ক্রাইসিস তৈরি করে সেকেন্ড কিংবা থার্ড জেনারেশন ইমিগ্র্যান্টদের জন্য। সাইফ ভাই, ওয়াহিদা আপু, মাইনুল ভাই কিংবা এহসান ভাই ভালো বলতে পারবেন। আমি কেবল চারপাশ থেকে যা দেখি তাই বুঝে উঠবার চেষ্টা করতে থাকি।

    বিবিসির ডকুটা, বারি মাই হার্ট এট ওয়েন্ডেড নি, ডার্ট পিকচার, টিনটিন সত্যজিতকে নিয়ে ডকুটা বাদে সবগুলো দেখা হয়েছে। সত্যজিতের ডকুটা আছে আপনার আছে? লিঙ্কু পেলেও চলবে।

    অ্যা সেপারেশন দুর্দান্ত সিনেমা; মেকিং, অভিনয়, ডিরেকশন সব মিলিয়ে দারুণ; আমাদের দেশে এমনটা কবে হবে- অপেক্ষায় থাকি। উই নিদ টু টক অ্যাবাউট কেভিন আমার এবছরের সেরা পাঁচে থাকবে। ট্রি অব লাইফ দেখেছেন? না দেখলে দেখবার অনুরোধ থাকলো।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
    • রাব্বী (৯২-৯৮)

      তোর মনের ইদানিং যে অবস্থা পুরা বঙ্গোপসাগর দিলেও সেইটা ভরবো কিনা সন্দো! 😕

      সত্যাজিৎয়ের ডকুটা পাইলাম না। কিন্তু লিংকু মঞ্জুর ভাইয়ের কমেন্টে।

      আব্বাস কিয়রেস্তোমি এবং জাফর পানাহিও ফাটাফাটি। এগুলি পরম্পরা ছাড়া হয়না হুট কইরা। কেভিন নিঃসন্দেহে সেরা পাঁচে। চ্রম! ট্রি অব লাইফ সংগ্রহে এবং দেখার লিস্টিতে আছে 🙂


      আমার বন্ধুয়া বিহনে

      জবাব দিন
  5. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    একটাও দেখিনাই। নেটফ্লিক্স থেকে একটু আগে লাভ ইন ইন্ডিয়া দেখলাম। ভালো লাগেনি।
    টিনটিন-টা হলে গিয়ে দেখার ইচ্ছে রাখি।
    আমাদের এখানে ঝকঝকে রোদেলা ক্রিসমাস গেলো। তুষারপাত যা হলো এ ক'দিন তাও নামে মাত্র।
    তোমার চিঠিপর্ব কবে শুরু হচ্ছে ফের?

    জবাব দিন
    • রাব্বী (৯২-৯৮)

      নূপুরদা, ইনসেনডাইস এবং উই নিড টু টক এবাউট কেভিন দেখেন টিনটিনের সাথে। লাভ ইন ইন্ডিয়া পরিচিত যারা দেখছে দুইটা বিপরীত মতই পেলাম। এটা নাকি একটা র‌্যাডিক্যাল মুভমেন্টের অংশ।

      আমাদের এখানে এখন সাদা সাদা সবই সাদা!

      চিঠিপর্বের একটা প্লট মাথায় আছে। দেখি কবে লেখা যায়। পরের বছর কোন এক সময়।


      আমার বন্ধুয়া বিহনে

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।