কোনদিনই লেখার অভ্যাস ছিলো না, লিখবো কোনদিন এমনটাও ভাবি নি । গত দু দশকে জীবিকার জন্য লিখতে হয় নি, কিন্তু জীবিকা টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু কিছু লিখতে হয়েছে, যেগুলোর পাঠক/শ্রোতা রা উপস্থিত ছিলেন তাদের জীবিকা টিকিয়ে রাখার জন্য ।এর মধ্যে মাঝে মাঝে বিভিন্ন ফর্ম পুরন করতে হয়েছে, সেগুলো ও লেখা, কিন্তু এখন যে অর্থে লিখছি, সেই লেখা না নিশ্চয়ই ।
লেখালেখি, তা যদি কাউকে পড়তে দিতে হয়, তাহলে প্রারম্ভিক বিষয় কে টেনে নাকি বড় করতে নেই, তাহলে পাঠক/শ্রোতা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন । কিন্তু এ লেখা তে প্রসঙ্গের অবতারনা একটু বড় হয়ে গেলো, কারন এ ধরনের বিরক্তিকর কিছু বিষয় নিয়ে ক্রমাগত লিখতে চাই, যতদিন না কন্ঠরোধ করা হয় । এর পর থেকে প্রারম্ভিক বিষয় গুলো বড় না হয়ে মুল বিষয় ই বড় হবে ।
consumer কিংবা ভোক্তা হিসেবে আমরা কতটুকু দেই আর কতটুকু পাই, সেই হিসেব করতে গিয়েই আজকে আমি বিরক্ত । আসলে মনের কোনে এই বিষয় টা এলো তখনি, যখন নেট (ব্লগ) এ একজনকে বলতে শুনলাম ” কচ্ছপের গতিতে ইন্টারনেট পাচ্ছি” ।
আজকে ইন্টারনেট এর গতি নিয়ে বিশেষ কোনো আলোকপাত করবো না । সাধারনভাবে, ভোক্তা হিসেবে আমরা কি বঞ্চিত, প্রতারিত, শোষিত নাকি অন্য কোন শ্রেনীভুক্ত তা বোঝার চেষ্টা করবো ।
‘মাছে-ভাতে বাঙ্গালী’ শ্লোক এর মতো শোনা গেলে ও, মাছের বাজারে গেলে বিক্রেতার কথা শুনলে মনে হবে, সেই দিন এখন ও বিরাজমান। “ভৈরবের মাছ, মেঘনার মাছ” শুনে আমরা শুধু আহ্লাদে আটখানা হই, কিন্তু আসলেই ঐ গুলো ওখানকার মাছ কিনা তা অনেকেই নিশ্চিত হতে চাই ও না । যারা নিশ্চিত হতে চাই তারা এমন ব্যখ্যা পাই, স্বয়ং কবিগুরু কিংবা সুপ্রীমকোর্টের বাঘা বাঘা ব্যারিষ্টার রাও উপাধি/অর্জিত অবস্থান হারানোর ভয়ে ওই মাছওয়ালার থেকে দূরে থাকতেন । এখনো ওনারা যার যার অবস্থানে আছেন কারন ওনারা বাজার করতে যান না । যারা যান ব্যথা শুধু তারাই সয়ে থাকেন । কি মুল্য দিয়ে কি কিনছেন, তা সঠিক ভাবে জানার তাদের কোনো উপায় ও নেই । এ উপায় তৈরী করে দেবার জন্য যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত, তারা কি করছেন তা আমার জানা নেই ।
এ জন্য ও আমি বিরক্ত, কারন যা জানা দরকার তা আমরা হয় জানি না, জানার চেষ্টা করি না, জানার কোনো উপায় নেই, জানা থেকে বঞ্চিত, ইত্যাদি ইত্যাদি । এবার পাঠকরাই হয়তো বলবেন, কি লিখতে এসে কি লিখলেন? তথ্যের কোন অধিকার আমাদের নেই বলেই জেনে এসেছি সেই ছোটবেলা থেকে । ছিটেফোঁটা যাও জানতে পারি তাও হয়তো অন্য কোনো কারনে জানি । কোন অবিচার এর কথা হয়তো তখন ই প্রকাশ হয় যখন অবিচারকারীকে কেউ ব্যক্তিগত ভাবে ধরিয়ে দিতে চায় । সাধারন ভাবে যেটা দেখি সেটা হলো – আমরা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অবিচারের বিচার চাই না, একজন অবিচারকারীর বিচার চাই ।
প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক, পার্থক্যটা কোথায় ? ব্যক্তি ও ঘটনার মধ্যেই এর উত্তর আছে, একই ঘটনা অনেক ব্যক্তিই ঘটাতে পারে, তাই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার না হয়ে অনিয়ম এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াই শ্রেয় ।
শিরোনাম দেখে ই যারা ধারনা করেছিলেন, এটা একটা বিরক্তিকর লেখা হবে তাদের আশা হয়তো পুরন করেছি, কিন্তু তা কোনোভাবে ই করতে চাই নি । শুরু করেছিলাম ভোক্তা হিসেবে বঞ্চনার কথা দিয়ে, এই লেখার শেষটা ঐ একই বিষয় এ নিয়ে যেতে চাই।
শুধু মাছই আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নয়, বাঁচতে হলে, বাঁচাতে হলে, বেঁচে থাকতে হলে প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের অনেক কিছুর প্রয়োজন হয় । সেগুলোর কতোটি কিনতে গিয়ে আপনি হাসিমুখে ফিরেছেন, ফিরে থাকলেও এই হাসিটির স্থায়িত্বকাল কতোক্ষন ছিলো তার বিবেচনার ভার টা পাঠক এর কাছেই ছেড়ে দিলাম ।
জানি আমার লেখা পড়ে বিরক্ত হলেন, কিন্তু ভোক্তা হিসেবে আমার দেয়া শিরোনামে আপনিও যে ফেরত যাবেন তাতে আমি নিশ্চিত। যদি আপনাদের থেকে সাড়া পাই তাহলে এ নিয়ে লেখার চেষ্টা করবো । সবাই ভালো থাকবেন, কায়মনোবাক্যে আশা ও প্রার্থনা করছি, আমরা যেন কম কম বিরক্ত হই, এই পরিবর্তনই আসুক।
🙂
থাঙ্কু থাঙ্কু
ভাইয়া, আমি কিন্তু পাঠক হিসেবে মোটেও বিরক্ত হইনি। বিষয়টা অনেক ইন্টারেস্টিং লেগেছে, লেখাটা।
আমাদের কি জানার অধিকার কতটুকু সে সম্বন্ধে আমি মোটেও অবগত নই। 🙁 আপনার লেখা পড়ে তা জানার ইচ্ছা রইল।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।
জানার অধিকার নিয়ে সরকারই ক-ন-ফিউজ হইয়া বইসা রইছে, আমরা কোন ছার(পোকা), খিক খিক খিক
একটা পণ্যের ক্রেতা হিসেবে আহ্লাদে আটখানা হবার দিন মনে হয় ফুরিয়ে গেছে। তাই আজ আমাদের পুর্ববর্তী জেনারেশনের ক্রয়ের অভিজ্ঞতা শুনেই আহ্লাদ করেই দুধের স্বাদটা ঘোলে মেটানোর বৃথা চেষ্টা চালাই।
আহারে, সেই দিন কি আর আছে রে ভাই, গোলাভরা মাছ, গোয়াল্ভরা ধান আর পুকুর ভরা গরূ, :)) :)) :))
আমিও বিরক্ত হই, বারংবার বিরক্ত হই...... :bash: :bash:
তাই হওয়ার ই কথা