মহান ১৪ই আগস্ট (পাঙ্গা দিবস)

আগামীকাল ১৪ই আগস্ট। রংপুর ক্যাডেট কলেজের ১৯তম (১৯৯৩-১৯৯৯) ইনটেকের জন্য এই দিনটি ছিল পাঙ্গা দিবস। ঘটনার সুত্রপাত হয় ১৯৯৩ সালের ১৪ই আগস্ট। দিনটি ছিল শনিবার। কলেজ এসেম্বলী ছিল সেই দিল। আমাদের ইনটেক হয়েছিল ২০ মে ১৯৯৩। তখন আমরা ক্লাস ৭ এ পড়ি। কলেজ এসেম্বলী শেষ হবার পর কলেজ প্রিফেক্ট এক এক ক্লাসকে ক্যারি অন করাচ্ছিল। সেই সময় এসেম্বলী রুমে অনেক চিল্লাচিল্লি হয়। সম্ভবত সিনিয়র কোন ব্যাচ এই চিল্লাচিল্লি করে। তখন এডজুটেন্ট অডিটরিয়ামে আসে ঘটনার কারন জানার জন্য। ঠিক সেই সময় আমদের ব্যাচকে কলেজ প্রিফেক্ট ক্যারি অন করাচ্ছিল। সেই কারনে এডজুটেন্টের সকল রাগের কেন্দ্রবিন্দু হই আমরা। তখন আমরা ক্লাস ৭। তাই এডজুটেন্টের পাঙ্গা খাওয়ার সৌভাগ্য আমাদের তখনো হয়নি। আমাদের পানিসমেন্টের পরিসীমা ষ্টাফ, প্রিফেক্ট আর সিনিয়রদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। সেইদিন প্রথম আমরা অনেক বড় রকমের পাঙ্গা খাই। পুরা ব্যাচকে গ্রাউন্ডে নিয়ে পাঙ্গা দেওয়া হয়। আমাদের কোন দোষ ছিলনা সেইদিন। পাঙ্গা খাওয়ার পর আমাদের অবস্থা ছিল কেরাসিন। নামায পড়ার সময় উঠতে এবং বসতে সমস্যা হত। খাওয়ার সময় হাত মুখ পর্যন্ত নিতে কষ্ট হত। কারো কারো প্রাকৃতিক কাজের সময় বসতে কষ্ট হত। এরপর প্রতি বছর আমরা এই দিনটাকে পালন করতাম পাঙ্গা খেয়ে। ইচ্ছা করে এমন কিছু একটা করতাম যাতে পুরা ব্যাচকে পানিসমেন্ট খেতে হয়। ২ বারের কথা মনে আছে। ক্লাস ৯ এ থাকা অবস্থায় নাইট প্রেপের সময় অনেক চিল্লাচিল্লি করে ভূগোলের বজলুর রশিল সারের কাছে পাঙ্গা খাই সবাই। আরের বার ক্লাস ১১ এ টি ব্রেকের সময় কারেন্ট চলে গেলে বিপুল পানি ছুড়াছুড়ি হয় ডাইনিং হলে। ডিউটি মাস্টার ছিলেন বাংলার রাবেয়া ম্যাডাম। সম্ভবত ম্যাডামের গায়েও পানি লাগে। ম্যাডাম এডজুটেন্টের কাছে রিপোর্ট করে। এডজুটেন্ট ছিল তখন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের এক্স ক্যাডেট মেজর আজিজ। সেইবার আমরা উরা-ধুরা পাঙ্গা খাই, একাডেমী ভবনের সামনে পুরা ব্যাচ। অনেকেই সেইদিন বমি করে দেয়। মেজর আজিজ প্রত্যেকের পাছায় বেদম প্রহার করেন। পরে বাথরুমে গিয়ে সবাই পাছার বেত্রাঘাতের দাগ কাউন্ট করেছিল। মেজর আজিজ, বজলুর রশিদ স্যার বা রাবেয়া ম্যাডাম এরা কেউই জানত না যে আমরা এই দিনটায় পাঙ্গা খাওয়ার জন্য আগে থেকেই প্ল্যান করতাম।

অনেক দিন পর আজকে হঠাৎ দিনটির কথা মনে পরে গেল। তাই সবার সাথে শেয়ার করালাম।

১,৯৮৫ বার দেখা হয়েছে

১৫ টি মন্তব্য : “মহান ১৪ই আগস্ট (পাঙ্গা দিবস)”

  1. বাহলুল, তোর কাহিনীতে বোধ হয় অনেক ফাঁক রয়ে গেছে। বোধ হয় এই দিনই আমরা খাকি ড্রেস পড়ার অনুমতি পেয়েছিলাম, এসেম্বলীর পর। আর তাতেই হট্টগোলের শুরু। ব্যাস - দুই নম্বর ফুটবল মাঠে রচিত হল নয়া ইতিহাস।

    সময় নিয়ে চিন্তা কর - ভাল থাকিস।

    জবাব দিন
  2. সামিয়া (৯৯-০৫)

    বাহ! ...আমাদের কলেজে একটা অলিখিত রুল ছিল, যেইদিন যার জন্মদিন কেমনে কেমনে জানি সে সেইদিন একটা ভয়াবহ ধরা খাইত...কেমনে ব্যাপারটা হত আল্লাহই জানে, পরের দিকে এমন হত আমরা নিজেরাই নিজেদের জন্মদিনে উলটাপালটা কিছু একটা করে ফেলতা। লেখাটা পড়ে সেই কথা মনে পড়ল... :dreamy:

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।