ক।
এবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ নিয়ে কেন জানি খুব একটা আশাবাদী ছিলাম না, যদিও সাধারনত আমি খুবই আশাবাদি ধরনের সমর্থক। (এক যুগের বেশি সময় ধরে আর্সেনালকে সাপোর্ট করা বলে কথা)। কিন্তু আমাদের টাইগারেরা যখন টি২০ সিরিজে ওদেরকে হোয়াইট ওয়াশ করলো (হোক না এক ম্যাচের সিরিজ) তখন ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠলাম। কিন্তু সে আশায় যথারীতি গুড়ে বালি। এখন শেষ ওয়ানডে বাকি মান সম্মান বাঁচানোর জন্য। তবে সামনের টেস্ট সিরিজ নিয়ে আমি সত্যি শঙ্কিত।
তবে এই সিরিজে আমার কাছে সবচেয়ে চমকপ্রদ ঘটনা ক্রিকেটের সাথে সম্পর্কিত নয়, খাওয়া দাওয়া বিষয়ক। পান্তা ভাত আর শুঁটকি মাছ, একে বারে খাঁটি দেশি খাবার যাকে বলে। ১ম ওয়ানডের আগের রাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক এই দেশি খাবার খেয়েই কুপোকাত, ডাইরেক্ট লাইন হওয়ার কারনে আর ঐ ম্যাচ খেলতেই পারলো না, বেচারা। কিন্তু একটা কারনে ওর উপরে বেশ রাগ হচ্ছিল। দলের ক্যাপ্টেন হয়েও কিভাবে সে একা একা রুমে বসে আলাদা মেনু দিয়ে ডিনার করলো। উচিৎ ছিল পুরো দলকে ফলইন দিয়ে ঐ শুঁটকি আর পান্তা দিয়ে ডিনার করানো। ক্যাপ্টেন হিসেবে একটা দায় দায়িত্ব আছে না! আমরা এর থেকে সব সফরকারী দলকে ম্যাচের আগের দিন আমাদের দেশীয় এই মেন্যু দিয়ে আপ্যায়ন করতে পারি।
খ।
৯০ এর বিশ্বকাপে রজার মিলার ক্যামেরুন প্রথম ফুটবল বিশ্বকে আফ্রিকান ফুটবলের চমক দেখায়। তারপরে আরো অনেক দেশই সাড়া জাগিয়েছিল, কিন্তু বিপত্তিটা ঘটালো ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি ‘পেলে’। ভবিষ্যতবানী করলো আফ্রিকানরাই আগামীর ফুটবল রাজত্ব করবো। তারপর যা হবার তাই হলো, আফ্রিকান ফুটবল মোটামোটি ইউটার্ণ নিলো। সর্বকালের সেরা ফুটবলার পেলে না ম্যারাডোনা এ নিয়ে প্রচুর বিতর্ক থাকলেও সবচেয়ে ব্যর্থ ভবিষ্যত বক্তা হিসেবে পেলের শ্রেষ্ঠত্ত্বে(?) কেউ ভাগ বসাতে পারবে না।
এই আফ্রিকান ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর আফ্রিকান নেশন্সস কাপের আগামী আসর বসবে ২০১২ এর জানুয়ারীতে, যার বাছাই পর্ব শেষ হলো কিছুদিন আগে। আশ্চার্যজনক ভাবে এ থেকে বেশিরভাগ ফেভারিট দলই বাদ পড়ে গিয়েছে, অবস্থা এতই খারাপ যে গত ৯ আসরের চ্যাম্পিয়নদের মধ্যে ৮টি বাদ পড়েছে, টিকে আছে শুধু তিউনিশিয়া। এর মধ্যে সবচেয়ে ঘটনা বহুলভাবে বাদ পড়েছে দক্ষিন আফ্রিকা। সিয়েরা লিউনের সাথে শেষ ম্যাচে ড্র করে তারা কোয়ালিফাই করার উৎসব শুরু করে দেয়, এমনকি ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি টিভিতে পুরো দেশবাসীকে শুভেচ্ছাও জানায়। কিন্তু ঘন্টাখানেক যেতে না যেতেই তারা জানতে পারে তারা আসলে কোয়ালিফাই করেনি, তাদের সিয়েরা লিওনের সাথে জেতা দরকার ছিল, তারা হিসেবে ভুল করে ভেবেছিল ড্র করলেই চলবে। অবশ্য দক্ষিন আফ্রিকানদের হিসেবে ভুল করা নতুন কিছু না, ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ডাকওয়ার্থ লুইসে রানের হিসাব ভুল করে তারা গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ে গিয়েছিল।
গ।
আফ্রিকান নেশন্স কাপে এবার অনেক দেশই অপ্রত্যাশিতভাবে কোয়ালিফাই করে চমক দেখিয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে লিবিয়া। গাদ্দাফি বিরোধী সসস্ত্র সংঘাতের মাঝে তারা নিজেদের মাঠে খেলতেই পারেনি, একেক সময়ে এক এক এলাকার খেলোয়াড়েরা অবরোধে আটকা পড়ে খেলতে পারেনি, দু একজন খেলোয়াড় ফ্রন্ট লাইনে গিয়ে অস্ত্র হাতে যুদ্ধও করে এসেছে। সেখান থেকে অবশ্য সহযোদ্ধারাই তাদেরকে জোর করে জাতীয় দলে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছে লিবিয়ার কোচ। ছয় মাস ধরে বেতন ভাতা বন্ধ থাকা সত্ত্বেও দলকে কোচিং করিয়ে গিয়েছে, নিজের পকেটের টাকা খরচ করে এওয়ে ম্যাচগুলোতে বিভিন্ন দেশে গিয়েছে। চমকপ্রদ ব্যাপার হলো যে সে কিন্তু একজন লিবিয়ান নয়, একজন ব্রাজিলিয়ান, মার্কো পাকেতা। সত্যিকারের বিপদের সময়ে সে তার খেলোয়াড়দের ছেড়ে যেতে পারেনি নিজের মানবিকতা কারনে। বর্তমান পেশাদার যুগে এই ধরনের লোক খুঁজে পাওয়া আসলেই দুষ্কর। মার্কো পাকেতা কে স্যালুট।
ঘ।
সৌদি আরবে ৮ বাংলাদেশির শিরোচ্ছেদ নিয়ে নেট জগৎ এখনো গরম। ক্যাপিটেল পানিশমেন্ট থাকা উচিৎ কি উচিৎ না তা নিয়েও তর্ক হচ্ছে। তবে ডেউই বোজেলা (Dewey Bozella) খুবই ভাগ্যবান যে সে সৌদি আরবে না জন্মে আমেরিকাতে জন্মেছিলেন। বোজেলা ১৯৮৩ সালে এক খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ভোগ করে। জেলে বসে সে বক্সিং প্রাকটিস শুরু করে, সেখানে চ্যাম্পিয়ন ও হয়। নিজেকে সব সময় নির্দোষ দাবি করে আসা বোজেলা শেষ পর্যন্ত দুই তরুন আইনবিদের সহায়তায় সেটা প্রমান করতে সক্ষম হয় ২৬ বছর পরে ২০০৯ সালে। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে সে তার স্বপ্ন পূরনে উদ্দেশ্য নেমে পড়ে, প্রফেশনাল বক্সার হবার স্বপ্ন। শেষ পর্যন্ত গত ১৩ তারিখে জীবনে প্রথম প্রফেশনাল বক্সিং ম্যাচ খেলেছে। ম্যাচ শুরুর আগে প্রেসিডেন্ট ওমাবা তাকে ফোন করে শুভকামনাও জানিয়েছিল। প্রায় ২০,০০০ দর্শকের সামনে ৫২ বছর বয়সে নিজের প্রথম প্রফেশনাল ম্যাচে জিতেও গিয়েছে বোজেলা। এরপরেই অবশ্য অবসর গ্রহনের ঘোষনা দিয়েছে সে। নিজ শহরে ফিরে গিয়ে সে বাচ্চাদের জন্য বক্সিং কোচিং সেন্টার চালাবে সে।
ঙ।
ক্রিকেটে ডিসিশন রিভিও সিস্টেম নিয়ে ভালই রাজনীতি চলেছে। পুরো ক্রিকেট দুনিয়ার উপরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ক্ষমতার নগ্ন প্রদর্শন হয়েছে এটা নিয়ে। শেষ পর্যন্ত তাদের চাপে এটা অপশোনাল করেছে আইসিসি। হটস্পট ছিল এই রিভিউ সিস্টেমের অন্যতম টুলস, যেখানে থার্মাল ইমেজের মাধ্যমে বল ব্যাটে লেগেছে কিনা তা বোঝা যায়। তবে এই হটস্পট এর বাইরেও আরো কিছু আবিষ্কার করছে যেমন অস্ট্রেলিয় ফাস্ট বোলার বোলিঙ্গারের মাথার উইগ…
আজকাল দেখি প্রথম হওয়া খুবই সহজ...যাই পড়ে আসি... =))
হুম, সেই দিন আর নাইরে। আজকাল মাঠ প্রায় ফাকাই পড়ে থাকে 🙁
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
সময়োপযোগী লেখা... নেলসন নাম্বারের জন্য অভিনন্দন... :hatsoff:
থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু 😛
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
মাথার উইগটাতে খুবই মজা পেলাম। আর পান্তা ভাতের কাহিনী পড়ে টেবিল থেকে পিরা মিরা যাচ্ছিলাম আরেকটু হলেই।
আর্সেনাল খুবই লাকী যে আপনার, আমার ছোট ভাইয়ের মত সমর্থক পাইছে, যারা কিনা আট গোল খাওয়ার পরও মরুক বাঁচুক আর্সেনাল 😀 (সম্পাদিত)
আরে দুই একটা সিজন খারাপ খেললেই কি দল খারাপ হইলো নাকী? আমি তো এখনোও ওয়েষ্ট ইন্ডিজ সাপোর্ট করি।
@সামিয়া, মাথার উইগের ভিডিও দেখার পর আমার বেচারা বলিঞ্জারের জন্য দুঃখই লাগছে, বেচারার গোমর এভাবে ফাঁস হয়ে গেল 😛 আর্সেনালের সাপোর্টারদের সেরা সাপোর্টরের পুরষ্কার দেয়া উচিৎ, ছোট ভাইকে আমার পক্ষ থেকে একটা হাই ফাইভ দিয়ে দিও। 🙂
@মইনুল ভাই, মাত্র দু এক সিজনের কথা বললেন, সেই ১৯৫৩ (আসলে ২০০৫) সাল থেকেই তো... ~x( ~x(
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আরে ব্যাপার না। এইবার দেখবা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে চ্যাম্পিয়ন হই যাইবে ইনশাল্লাহ।
মইনুল ভাই,মজা নেনে 🙁
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আজকে কেমন জিতল? খেলা কি পাতানো ছিল নাকি? পাকিস্তান হইলে শিউর হইতে পারতাম।
বাংলাদেশ ১০ উইকেট ফেলতে পারছে এইটাই মাথায় ঢুকতেছিল না।
এই রকম একটা পারফর্মেন্সের জন্য আসলেই প্রস্তুত ছিলাম না, চট্টগ্রামের পিচ নিয়ে আশাবাদি ছিলাম কিন্তু তাই বলে একেবারে হাতে হাতে বিশ্বকাপের প্রতিশোধ!!! অসাধারন।
আমাদের উচিৎ এখন থেকে চট্টগ্রামেই বেশি ম্যাচ খেলা, বোর্ডের সিরিয়াসলি ভাবা দরকার এই বিষয়ে।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
অনেক মজা পেলাম আকাশ।
ভালো আছো তো!
ভাল আছি নূপুরদা, তবে মাঝে মধ্যে আপনার দু একটা লেখা পড়তে পারলে আরো ভাল থাকতাম 🙂
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
খেলা কি ফিক্সিং ছিল?
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
হা হা হা হা হা...... সবাই মজাক করতাছে... খেলাটা চ্রম ছিল...
:boss: