রাফখাতা (সাপ্তাহিক…১)

ক. আহ… বৃহঃস্পতিবার রাত। সেই কলেজ লাইফ থেকেই সপ্তাহের সেরা সময়। মাঝে শুধুমাত্র বিএমএ’র ১ম তিন টার্মের বৃহঃস্পতিবার রাত বাদ দিলে এই রাত আসলেই মনটা ভাল হয়ে যায়। তবে এখন কোর্সে এসে এই ভাল লাগার মাত্রাটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। ক্লাস, খাওয়া, পড়াশুনা, হোম এসাইনমেন্ট এই চক্করে পুরা যন্ত্র হয়ে গিয়েছি। তাই এখন বৃহঃস্পতিবার রাতগুলো আরো অসাধারন হয়ে উঠেছে।

খ. পুরো সপ্তাহের এই যান্ত্রিক জীবনের মাঝে মেন্টাল রিলিফের বিষয় আছে দুইটি… এক হলো মোবাইল এ তার সাথে কথা বলা, আর হলো সিসিবি। ক্লাস বাদ দিয়ে দিনের বেশির ভাগ সময়ই কাটে পড়ার টেবিলে, আর সামনে ল্যাপটপে খোলা থাকে সিসিবি, এ ছাড়া কোন টিভি দেখা নেই, নেই আড্ডাবাজি, এমনকি ছুটির দিনেও বাইরে যাওয়া হয় না… জিইসি মোড়েও না। আজকে ছুটির আমেজের সাথেও সিসিবি পুরোপুরি জড়িয়ে আছে, হাবিজাবি যাই হোক কিছু একটা লিখতে ইচ্ছা করছিল খুব। তাই এই বকবকানি…

গ. অনেকদিন পর আজকে মনে রাখার মতো একটা ফুটবল ম্যাচ খেললাম। কোর্স চলাকালে বিকালে খেলাধূলার সুযোগ খুব কম, প্রায়ই বিকালে ক্লাস করতে হয়। তাও যে ক’দিন গেমস এর সুযোগ পাওয়া যায়, সে সময় বেশির ভাগেরই স্থান হয় ভলিবল গ্রাউন্ডের এক কোনায়… যাতে খেলাধূলার কোন ক্লান্তি তাদের রাতের পড়াশুনায় কোন ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে। শুধু আমার মতো কিছু ফুটবল পাগল চলে আসে ফুটবল মাঠে। গত দু সপ্তাহে ৩-৪ দিন এভাবে ফুটবল খেলেছি, তবে আজকেরটা ছিল পুরোপুরি ভিন্ন… সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় এমনিতেই সবার মধ্যে আলাদা জোস ছিল, আর খেলোয়ারদের মান ও ছিল উন্নত। তবে প্রথম দিকে মোটেও সুবিধা করতে পারছিলাম না… এক পর্যায়ে ০-৩ গোলে পিছিয়ে যাই। সেখান থেকে শেষ ১০ মিনিটে ৪ গোল করে ৪-৩ এ জিতলাম… শেষ কবে এরকম ম্যাচ খেলেছিলাম মনে করতে পারছি না… অসাধারন…

ঘ. ক্লাস এইটের শেষে ম্যাথ আর বেলাল স্যারের ক্যামিস্ট্রির আতঙ্কে মায়ের তিব্র বিরোধিতার মুখে বাপের আস্কারা পেয়ে যখন মানবিক বিভাগ নেবার সিদ্ধান্ত নিলাম তারপর থেকে মনে হয় একবার ও এর জন্য কোন আক্ষেপ হয়নি, উপরি হিসেবে প্রায় বিনা পরিশ্রমেই দুবার পত্রিকায় নাম তুলে ফেলেছি। আর্মিতে চলে আসায় ভর্তি নিয়েও কোন টেনশন করতে হয় নি। কিন্তু আজ এত বছর পরে এসে আমার মাথার চুল টেনে ছিড়ে ফেলার দশা হয়েছে। এই কোর্সে এসে ম্যাথ, ফিজিক্সের কি সব সুত্র আর অংক শিখতে হচ্ছে, যদিও অমানবিক পোলাপাইনের কাছে এগুলো নিছক ছেলেখেলা, কিন্তু আমরা যারা মানবিক তাদের অবস্থা করুন। তবে ইন্সট্রাকটরদের অক্লান্ত পরিশ্রমে দু’সপ্তাহে কিছুটা জাতে উঠতে পেরেছি। পরীক্ষার খাতায় কি হয় আল্লাহই জানে… তবে সবচেয়ে কষ্টকর ব্যাপার হচ্ছে ম্যাথ প্রাকটিসের ক্লাসগুলো হয় বিকাল বেলায়… পুরাপুরি কলেজের আফটারনুন প্রেপের মত অবস্থা ~x(

ঙ. কালকে শুক্রবার… ঢাকায় থাকলে কালকে মোবাইলে না, সরাসরি কথা বলা হতো। এটা মাত্র ২য় শুক্রবার, এরকম আরো ২০ টা শুক্রবার পার করতে হবে, কষ্টে আছি……

চ. বাইরে দেখি টিপ টিপ বৃষ্টি পড়তেছে, শান্তি… বর্ষাকে স্বাগত জানিয়ে কামরুল ভাইয়ের পোস্টের পর থেকে বৃষ্টি যে কই পালাইছিল আল্লাহই জানে… গরমে পুরা ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।

ছ. সবশেষে সমকালীন ব্লগীয় ধারা বজায় রেখে…
ar

ব্যাপক চক্করে থাকায় আর্জেন্টিনা আর ম্যারাডোনার ধরা খাওয়াটা ঠিক মত সেলিব্রেট করতে পারি নাই, তাই এখন একটু করলাম :grr:

২২ টি মন্তব্য : “রাফখাতা (সাপ্তাহিক…১)”

    • আহসান আকাশ (৯৬-০২)

      আশা করি খুব তাড়াতাড়ি তুই বাস্তবে ফুটবল খেলবি...

      আর আর্জেন্টিনারে আমি আর কি পচাবো, ওরা নিজেরাই তো :grr: যাই হোক, আগামীবার ব্রাজিলরে পচাইয়া ব্যালান্স করে দিবনে 😀


      আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
      আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

      জবাব দিন
    • আহসান আকাশ (৯৬-০২)

      লেখা ভাল লাগতেছিল জেনে ভাল লাগল 😀 আর আর্জেন্টিনা... থাক আর কিছু না বলি...

      আগামীবার ব্রাজিলরে পচাইয়া ব্যালান্স করে দিবনে


      আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
      আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

      জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।