পোশাক শ্রমিক দের বেতন বাড়ানো নিয়ে সারাদেশে তুঘলকি কান্ডকারখানা। শ্রমিকরা বলে ৮,০০০টাকা দিতে হবে, মালিক-রা বলে ৩,৬০০টাকার বেশী দিতে পারব না। মাঝখান থেকে রাজনীতিবিদরা এবিষয়ে ঢুকে, শেষ পর্যন্ত যা হয়, তালগোল অবস্থা।
আমারও ছোট একটা কারখানা আছে।
৮,০০০টাকা সর্বনিম্ন বেতন হলে বাধ্য হবো মান্যুয়াল মেশিন এর পরিবর্তে অটোমেটিক মেশিন ব্যাবহার করতে। আগে ১০,৮০০টাকাতে ২জন (৬,০০০টাকাতে একজন অপারেটর, ৪,৮০০টাকাতে একজন হেল্পার) দিয়ে ম্যানুয়াল মেশিন দিয়ে কাজ হত, সেখানে ৮,০০০ টাকাতেই একজন দিয়ে কাজ চলবে।
২-৩ মাসে মনে হয় মেশিন-এর পিছনে বিনিয়োগ উঠে আসে।
নিচের ক্যাল্কুলেশন টা দেখুন।
( জাপানিজ মেশিন দিয়ে, কম্প্রেসারের খরচ বাদ)
ম্যানুয়াল ১ খানা প্লেইন মেশিন এর দাম – ২৯,০০০টাকা
অটোমেটিক ১ খানা প্লেইন মেশিন এর দাম – ৪৫,০০০টাকা
১৬,০০০টাকার পার্থক্য যা ২ মাসে (১৬,০০০/৮,০০০) উঠে আসে।
বেতন, মজুরি-র মতো বেসিক ব্যাপারগুলো চাপিয়ে দেওয়া ঠিক না। অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে চলতে দেয়া উচচিত। নইলে, এতে আল্টিমেটলি ক্ষতি হয় শ্রমিকদেরই। সর্বনিম্ন বেতন ৮,০০০টাকা হলে বেশিরভাগ ফাক্টরি অটোমেটিক মেশিন এর সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে, যা হেল্পারদের চাকুরিচ্যুত হওয়ার পথকেই প্রশস্ত করবে মাত্র।
বিষয় গুলো আসলে সবার কাছে ক্লিয়ার না। মালিকেরা এক রকম ভাবেন আর শ্রমিকেরা আর এক।
সমঝোতায় এসে মাঝামাঝি একটা সমাধান দরকার। যাতে দুই পক্ষেরই লাভ হয়।
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
আসলেই ব্যাপারটা ডিমান্ড-সাপ্লাই এবং আলোচনা করে নির্ধারণ ছাড়া অন্যকোন উপায় আছে বলে আমার মনে হয় না।
আমার কাছে ৪,০০০-৫,০০০টাকার আশেপাশে হওয়া উচিত বলে মনে হয়।
অর্থনীতি ভালো বুঝি না তবে চমৎকার কথা বলেছেন। সব ধরণের কস্ট, এক্সটার্নালিটিজ, ওয়েলফেয়ার লস (যদি থেকে থাকে) ধরে কিন্তু মজুরী নির্ধারণ করা উচিৎ। একরোখা মজুরী বাড়াতে হবে বলে গ্যাট হয়ে বসে থাকলে আপনার মত অটোমেশানের চিন্তা অনেকেই করবে বলে আমার ধারনা।
সেই সাথে বিল্ডিং সেফটি, বেনিফিট এর কথা এসে যায়। দুটো ফলাফল হতে পারে। ক) বাড়তি খরচ অফসেট করার জন্য অন্য কোন খাতে কমানো শুরু হবে, অথবা খ) মূল্য বৃদ্ধির কারণে ক্লায়েন্ট চলে যাবে প্রতিযোগী দেশের কাছে।
রানাপ্লাজার দুর্ঘটনার তৃতীয় দিন Anderson Cooper's 360 শোতে একটা আলোচনা শুনছিলাম সেখানে একজন শেষে বলেছিল, "at the end of the day, cheap labor wins."
খুব তেতো সত্য কথাটা। (সম্পাদিত)
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
আমার ফ্যাক্টরি তে Maternity leaveদেয়ার চিন্তাভাবনা করার সময়,
পরীক্ষামূলক ভাবে ১জন কে ৩মাসের ছুটি দেয়া হয়।
সাথে আইন অনুযায়ী কাজ না করেও বেসিক বেতন।
পরবর্তী মাসে ৭জন এ বিষয়ে আবেদন করে।
১৮ থেকে ২৪ বছরের এই মেয়েরা উচ্চ প্রজননশীল ।
(sorry for, if i offend anybody)
আইন অনুযায়ী সবাইকে Maternity leave দিতে গেলে
আমাকে যে দেউলিয়া হতে হয়!!
অন্যান্য শিল্পের সাথে এই শিল্পের কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে,
যে কারনেই এখানে সমস্যাও অনেকটা জটিল।
বায়াররা যখন এভাবে বলে, তখন আমাদের আর কিবা করার থাকে।
আল জাজিরার একটা অনুসন্ধানী রিপোর্ট দেখছিলাম কয়েকদিন আগে। ক্রেতা গোষ্ঠী কিভাবে সর্বনিন্ম মূল্যে কাপড় আদায় করে নেয় বাংলাদেশ থেকে এবং কিভাবে কন্ট্রাক্ট, সাব কন্ট্রাক্ট, সাব-সাব কন্ট্রাক্ট করার মাধ্যমে নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়। গালি আর ইটের টুকরো তাই ঘুরেফিরে গার্মেন্ট্স মালিকদের উপরে।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
:thumbup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
গার্মেন্টসে মজুরী বাড়ানো জরুরী কিন্তু সংস্কার আরও বেশি জরুরী। আপনি শ্রমিক কে বেশি বেতন দিলেন কিন্তু তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলেন না।তাতে লাভ কি।যেমন রানা প্লাজায় যদি শ্রমিকদের বেতন মিনিমাম ৬০০০টাকা থেকে শুরু হয় তাতেই বা লাভ কি? তাদের কি নিরাপত্তা আমরা দিতে পেরেছি?কিংবা তাজরিন গার্মেন্টস এ যারা পুড়ে মারা গেল দরজা দিয়ে বেড় হতে না পারার জন্য। শ্রমিকদের স্বাস্থসেবা,ডেকেয়ার সেন্টার যাতে যেসব শ্রমিক মা তারা তাদের বাচ্চা এ নিয়ে আসতে পারেন।স্বাস্থ বীমা করা বা জীবন বীমা ইত্যাদি আরো অনেক কিছু নিশ্চিত করতে হবে।
যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি
সিরাজ,
তোমার পয়েন্ট টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নাই।
তাজরিন কিংবা রানা প্লাজা যে আমাদের কারখানার নিরাপত্তা বিষয়ে দৃষ্টি খুলে দিয়েছে
এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নাই।
দুর্ঘটনা বিষয়ে সচেতনতা, ফায়ার ড্রিল, নিয়ম অনুযায়ী দালান নির্মাণ, ব্যক্তি বা সাংগঠনিক সততা - এসব না থাকলে দুর্ঘটনা বারবারা হবে এতে সন্দেহ নাই।
সামাজিক ভাবে আমাদের যে নিয়ম না মানার প্রবনতা টা থেকে সবারই বেরিয়ে আসা দরকার।
সবাই এসব নিয়ে আলোচনা করছে যা ২-৩ বছর আগে কেউই করতনা।
আমি আশার আলো দেখতে পাই।
ব্লগে স্বাগতম।
:teacup:
এক্জন গারমেন্টস মালিকের নজরে লেখা বলে গুরুত্বও রয়েছে।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
আশা করি আরো লিখবেন জুবায়ের ভাই।
রিকোয়েষ্ট একটা আছে, লেখা আরেকটু বড় কইরেন।
পড়ার আগেই শেষ হয়ে গেলে ক্যামন জানি লাগে!
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
রাজিব,
সবসময় MS-WARDএ লিখে কাট-পেস্ত করতে অভ্যস্ত।
এখানে এখনও অভ্যস্ত হতে পারি নাই।
চেষ্টা করব আরও বড়ো লেখার।
আমি নিজেও বড়ো লেখার ভক্ত।
ভাল থেকো।
ভাল লিখেছ :clap:
জলদি ১০টা ফ্রন্টরোল দাও :grr:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
:frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll:
কলেজ থেকে পাশ করার পর ১৮বছর হইল।
এখনো সিনিয়ারদের হাত থেকে রেহাই পাইলাম না।
:frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll:
রি-ইউনিয়নে বদলা নেবার একটা সুযোগ পাবে ভাইয়া। 😀
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
অর্থনীতিই বলে ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো হলে অনেক অদক্ষ ও মাঝারি মানের দক্ষ শ্রমিক ঝরে পড়বে। সমস্যা হচ্ছে আলোচনার টেবিলে বসে আছে শ্রমিক নেতা ও গার্মেন্টস মালিক গোষ্ঠীর হোমরা-চোমরা'রা। রেফারির ভূমিকায় সরকার থাকলেও সেখানেও দুই শ্রেণীর প্রতিনিধিরা আছে। ফলে রেফারিং বায়াস্ড।
কোলাটেরাল ড্যামেজ হিসেবে অনেক শ্রমিক চাকুরি হারাবে এবং অনেক ছোট-মাঝারি গার্মেন্টস মালিকরা সরে যেতে বাধ্য হবেন।
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আসলেই তাই।
সমস্যা হল মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা বড়ো ফাক্টরির মালিক আর
শ্রমিক প্রতিনিধিদের খুব কম সংখ্যকরা প্রকৃত শ্রমিক।
এব্যাপার টা মিডিয়াতে কম ই আলোচনা হচ্ছে।
মিডিয়াতে মালিকদের রক্তচোষা হিসেবে দেখানোর এক প্রবনতা,
এমন সরলীকরন খুবই দুঃখজনক।
আমার পরিচিত এক কলকাতার বাংগালি বাংলাদেশের ঢাকায় তার কোম্পানি চালাচ্ছে। কলকাতাকে দেখতে আমার ঢাকার চেয়েও অনেক দরিদ্র মনে হয়। অথচ ঢাকার মজুরী কলকাতার থেকেও কম।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ওয়াহিদা আপু,
আমারও কোলকাতা যাওয়ার অভিজ্ঞতা একবার হয়েছে।
ঢাকার তুলনায় জৌলুশ অনেক কম, কেমন যেন ক্লিশে একটা ভাব।
তবে এটা ঠিক যে, ওদের অর্থনীতির আকার অনেক বড়,
সেইসাথে অনেক বিস্তৃত।
আর জৌলুশ-এর ব্যাপারটা তো কালচারাল।
আমরা দাতাদের টাকাতে জৌলুষ, অন্যের পণ্য দিয়ে জৌলুশ পছন্দ করি
যা ভারতীয়রা অনেকটাই কম করে।
আমাদের জনপ্রতি জিডিপি ওদের তুলনায় ৭০%এর মতো,
তাই সর্বনিম্ন মজুরিও কম হবে।
বাই দা অয়ে, আমি আপনার লেখার বিরাট ফ্যান।
জুবায়ের@টোকিও
ঢাকা একটা দেশের রাজধানি আর কোলকাতা একটি পশ্চাদপদ রাজ্যের রাজধানি,তুলনা করা যায়না।কোলকাতার রাস্তাগুলো অনেক প্রসস্ত।আর ওরা নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে তারপরেও যতটা ক্লিশে ভাব বা দরিদ্র মনে হয় ততটা নয়। সময়ের অভাবে আমরা অনেক কিছু দেখতে পাই না।ওদের পার্ক স্ট্রিট বা সাউথ কোলকাতা দেখলে মনে হবে না এটা ইন্ডিয়া।







কয়েকটা ছবি দিচ্ছি।দেখুন।
এমন কিছু ফ্লাইওভার ওখানে আছে যেগুলোর বয়স কম করেও ৩০ থেকে ৪০ বছর যেখানে ঢাকায় এই সেদিন মহাখালিতে প্রথম ফ্লাইওভার তৈরি হয়।ঢাকায় এখনো ম্যাকডোনাল্ড'স নাই কিন্তু কোলকাতায় কেএফসি বা ম্যাকডোনাল্ড'স এর ছরাছড়ি।
যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি
জুবায়ের ভাই,
সিসিবিতে স্বাগতম। অবশ্য দেইখ্যা ফালাইছি উপ্রে মোস্তাফিজ ভাইয়ের দেওয়া স্বাগতম 😛
সাপ্লাই-ডিমান্ডের ব্যাপার এইটা না, কেবল অর্থনীতি কখনোই এই সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, পারবেও না। কারণ, আমরা মানুষ, শুধুমাত্র পুঁজির মালিক বা শ্রমশক্তির আধার না।
বস, টোকিওতে দেখা হবে কি, নেক্সট উইক? 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ
সময় পেলে একবার ফোন দিয়ো,
অথবা আমার অফিসে চলে আসতে পারো।
০৯০-৯১৫৪-০৩৮০
তোমার ইউএস অভিজ্জ্ঞতা শোনার অপেক্ষাতে রইলাম।