ঠিক এখুনি

হয়ত কোথাও সূর্য ডুবলো টুপ করে,আর শেষ হইয়ে গেল ঝকঝকে একটা দিন, গাজ়ায় হয়ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে গেল অথবা অপ্রত্যাশিতভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়ে গেল……..সাইবেরিয়াতে সবুজ ফসল ফলে গেল…………..ঠিক এখনই অনেক কিছু ঘটে যাচ্ছে প্রতিটি মানুষের মনের গহিনে……………দায়ভার এড়াতে গর্ভপাতে শেষ হয়ে গেল একটা সৃস্টি, অথবা ছাড়পত্র পেল সদ্যজাত এক শিশু নতুন বিশ্বের দ্বারে ব্যক্ত করল অধিকার জন্ম মাত্র সুতীব্র চিৎকারে………..তখুনি হয়ত কোথাও ইথিওপিয়াতে কারও গালে হাত, ভাবছে মেঘেতে কি সত্যি জল থাকে, কোথাও মক আপে এন্টেনা আর খালি ছাদ মিটিং বসালো একদল পাতি কাকে, কোথাও সভা শেষ প্যাকেটে প্যাকেটে চলে গেল ঠান্ডা লুচি,কোথাও গ্লাসে গ্লাসে খুবই দরকার কড়া পানীয় বরফ কুচি,হয়ত কাউকে দাম দিতে হল কাল ঘাম,কোথাও কাউকে চাকরি দিল নোটের খাম, তখুনি কচি কচি আংগুলে বুড়োর কোলে বসে কেউ শেখে- তেরে কেটে,এ নয় এ ঘটণা,ঘটে তুমি জান না,এ নয় এ ঘটনা ঘটেছে অজান্তে,এ সব ই ঘটে আর দেখি শুনি সবাই,তবুও ভুলে যাই দিন কি দিনান্তে, এখুনি কোথাও সুমনা ফিরল বাড়ি আর এক ছুটে চান ঘরে,চান নয় আঞ্চান অজানা শিহ র ণে একা একা গোপ্ নে মিলের চিঠি পড়ে যখুনি,তখুনি হয়ত কোথাও মাতাল হাওয়া উদাসী,ফিস ফিসিয়ে কেন যে বলল ভালবাসি,ভালবাসি……….
আর তখুনি হয়ত কোথাও সূর্য উঠল টুপ করে,আর শুরু হয়ে গেল ঝকঝকে একটা দিন……….।

ছন্দ আর গানের মতই পৃথিবির বুকে সৃস্টি আর ধ্বংস লীলা পালাক্রমে চলতে থাকে,এর ই মাঝে এগিয়ে চলে মানব সভ্যতা ,আর মানুষের দিন বদলের স্বপ্নে লালিত বিজয় গাঁথা রচিত হয়,পঞ্জিকার পাতাকে রাঙ্গিয়ে জন্ম নেয় ইতিহাস।
প্রতিদিন ই মনে হয় এত কিছু বদলায় আর আমদের দিন গুলো কি বদলাবে না। অনেক আশঙ্কা সত্ত্বেও স্বপ্ন দেখি দিন বদলের.। …কেননা আমি বিশ্বাস করি সন্ধ্যার অন্ধকার যতটাই চেটে পুটে লুটে নিক না কেন,অন্ধকারের ও আছে সীমানা। আর সেই সীমানা পেরিয়ে একদিন টুপ করে সূর্য উঠবে, সূচনা হবে একটা ঝকঝকে দিন। সেই ঝলমলে আলোয় আমরা সবাই সূর্য স্নান করব…আলোক রশ্মির স্পর্শে আমাদের পুরনো ক্ষতগুলো শুকিয়ে যাবে। আমি আশাবাদী,কাল ভোর হবেই।

দেশ,সে তো ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইল,ভুগোলের কথা। তবুও সময়ের প্রয়োজনে আমরা সবাই লড়ছি প্রতিনিয়ত আলোর সন্ধানে,এতটুকুন সুখের আশায় স্বস্তির জন্য। যে কৃষক সারের অভাবে ফসল ফলাতে পারে না, সেও তো লাংগল চালানো থামিয়ে দেয়নি, নিস্ফলা মাঠের দিকে শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেও সে আশার বীজ বুনে যায় প্রতিনিয়ত,সেখানে আমরা কেন হতাশ হব। আমরাও আশাবাদী ,ঘোর অমাবস্যা কেটে যাবে একদিন। সে দিন বেশি দূরে নয়।
আমি জানি আমার এই কথা শুনে সবার মনে হচ্ছে হয় আমি মদ্যপ হয়ে কথা বলছি নয়ত বিশাল ভুরি ভোজের পর ঘুমের ঘোরে ফ্যান্টাসিতে হারিয়ে গেছি।

৫২ এর ভাষা আন্দোলন আর ৭১ এর গৌরব গাথা ছাড়া আমাদের জাতির জন্য সত্যিকার অর্থেই বড় আর কোন অর্জন নেই। এর পরের সব ইতিহাস হত্যালীলায় ক্লেদাক্ত,ক্ষমতার পালাবদল,স্বৈরতন্ত্র ,স্বাধীনতাকে কলঙ্কিত করে ধর্মকে পুজি করে জঙ্গিবাদ আর স্বাধীনতা বিরোধি শক্তির উত্থান।
নব্বই এর দশকে যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের দাবিতে অনেক আন্দোলন হয়েছে,রাজপথে নেমেছে প্রগতির ধারক বাহকরা, আশায় গুড়ে বালি,সব আন্দোলন ব্যর্থতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। ছোট বেলায় দেখেছি বড় ভাইরা মামারা স্লোগান দিয়েছে,দেয়ালে চিকা মেরেছে………..। লাখো শহীদ ডাক পাঠালো সব সাথিদের খবর দে সারা বাংলা ঘেরাও করে রাজাকারদের কবর দে। এক সময় সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছে ,বিপ্লব ,আন্দোলন তাদের কাছে একটা সময়ে ঠুনকো মনে হয়েছে।
আজ এত বছর পর মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মই সেই অসাধ্যকে সাধন করেছে,প্রবীন আর নবীনের যে একাত্মতায় যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সুচিত হয়েছে তা আমাদেরকে আশার বাণীই শোনায়। বাকিটা রাষ্ট্র যন্ত্রের পরিচালক যারা তাদের দায়িত্ব। ৮ কোটির বেশি সংখ্যক লোকের ডাটাবেইজ এবং ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র এবং তার ই ধারাবাহিকতায় রেকর্ড সঙ্খ্যক ভোতারের উপস্থিতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারীর বহুল প্রতিক্ষিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন কি আমাদের কে আশার বাণী শোনায় না। ৩৩ শতাংশ নতুন ভোটারদের অগ্রণী ভুমিকা কি আমাদের সম্বভাবনার গল্প শোনায় না। পাশাপাশি রাষ্ট্রযন্ত্রের পরিচাল্কদের জন্য সতর্ক বাণীও পৌছে দেয়,…আমরাও বেঁচে আছি,দেখে নেবো রংবাজদের.. ।
আর তাই বলছি এককভাবে কোন দলের জন্য খুশি হওয়ার মত কিছু দেখছি না,শুধু বলতে চাচ্ছি, দলমত নির্বিশেষে এটাই আমাদের জন্য একটা বড় সুযোগ। একটা কথা আছে..TIME IS BABBLER, IT SPEAKS WHEN NO QUESTION IS PUT……………..
রাষ্ট্র পরিচালনাকে কেউ যদি ক্ষমতা মনে করে যথেচ্ছ ব্যবাহার করে বা অপপ্রয়োগ করে………তাদের পিছু নিতে সেই নিস্ফলা মাঠের কৃষক কিংবা মুক্তি যুদ্ধের পরের এই প্রজন্ম কেউ এতটুকূ দ্বিধা করবে না..সুকান্তের বাণী ধ্বনিত হবে তাদের মুখে…..
শোন রে মালিক ,শোন রে মজুতদার
তোদের দুয়ারে জমা হল কত মৃত মানুষের হাড়
হিসাব কি দিবি তার
প্রিয়াকে আমার কেড়েছিস তোরা ভেঙ্গেছিস ঘর বাড়ি
জীবনে মরণে সে কথা কি আমি কখনও ভুলিতে পারি
আদি হিংস্র মানবিকতার যদি আমি কেউ হই
স্বজন হারানো শ্মশানে তোদের চিতা আমি তুলবই
শোন রে মালিক শোন রে মজুত দার
শস্য ফলানো মাটিতে তোদের রোপণ করব এবার।

১,৮৮০ বার দেখা হয়েছে

২৪ টি মন্তব্য : “ঠিক এখুনি”

  1. সাইফ (৯৪-০০)

    জ়ুনু,ডট কমে নাই,জায়গা মত দিয়া দিমু,তর যদি শর্ট পড়ে কইস,ঠিকানা দিয়া দিস,ফোন নাম্বার হইলেই হইব,পরে ফিডব্যাক নিস,কথায় আছে না ......।।রহমতের নাকি এক ফোটাই যথেষ্ট............। =)) =)) =)) =))
    আছিস ক্যামন...............।

    জবাব দিন
    • জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

      মন খারাপ হইলেই ওবায়দুল্লাহ্‌ ভাইএর কবিতাটা পড়বেন... :thumbup:
      দেশে থাকলে কোথায় না কোথায় ডেপ্লয়মেন্টে যাইতেন...তারচেয়ে কয়েকদিন বাইরে কাটায়ে আসেন, ততদিনে দেশটা নতুন সরকারে অভ্যস্ত হোক... :-B


      ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

      জবাব দিন
  2. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)

    কলেজের শেষ এক বছর আর তার পরবর্তী বছরদুয়েক আকন্ঠ ডুবে ছিলাম শিলাজিতের গানে। তোমার লেখায় আবার সেগুলো মনের মধ্যে গুঞ্জন তুলছে।
    ভালো হয়েছে ব্রাদার........... :clap: :clap: :clap: :clap: ।


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  3. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    সবডি বুঝলাম না, এই যেমন ধর

    সুমনা ফিরল বাড়ি আর এক ছুটে চান ঘরে

    এই সুমনা কেডায়, কইঞ্চেন দেখি?

    ৫২ এর ভাষা আন্দোলন আর ৭১ এর গৌরব গাথা ছাড়া আমাদের জাতির জন্য সত্যিকার অর্থেই বড় আর কোন অর্জন নেই।

    সত্যিই কি নেই? আমার তো মনে হয় কিছু আছে, তবে আরও অনেক হওয়া উচিৎ ছিল।

    বাকিটা রাষ্ট্র যন্ত্রের পরিচালক যারা তাদের দায়িত্ব।

    তাদেরকে বারবার মনে করিয়ে দেয়া, এটার জন্য লেগে থাকাটা কিন্তু আমার দায়িত্ব। বাসায় টিচার রেখেছি মেয়ের জন্য, টিচার ঠিক মত কাজ করছে কিনা এটাও তো আমাকেই দেখতে হবে, মনে করিয়ে দিতে হবে তার কাজের কথা। তা না হলে আমার মেয়ে যে পিছিয়ে পড়বে আবার।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  4. সাইফ (৯৪-০০)

    ফয়েজ ভাই,ধন্যবাদ।অনেক কিছুই আছে,কিন্তু আমি বলেছি স ত্যিকার বড় অর্জন।ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মত একটা কোম্পানি আমাদের দুইশ বছর শাসন করেছে,এইটা অত্যন্ত লজ্জাকর।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।