এটা আসলে কোন লেখা নয়, না লেখার গল্প।
জোহার বারুতে গিয়ে পুরোপুরি মাইনকা চিপায় পড়ে গিয়েছিলাম। হরাইজন হিলস নামের যে আবাসিক এলাকায় উঠেছিলাম, বছর তিনেক আগে একটি গলফ ক্লাব ছাড়া এখানে আর কোন দ্রষ্টব্য ছিলোনা। আজকাল প্রায় সব গলফ ক্লাবের লেজেই কান্ট্রি শব্দটি জোড়া থাকে। গলফ ও কান্ট্রি ক্লাব। সেই সুবাদে আরও কিছু ফ্যাসিলিটিজ থাকে। এখানে ধীরে ধীরে ফ্যাসিলিটিজ গুলিও বেড়ে উঠেছে যা বাড়েনি তা হল মানুষ। সুন্দর সুন্দর বাড়িগুলি খালি পড়ে থাকে। দুই একটা বাড়িতে রক্ষণাবেক্ষণ অথবা ভাঙা গড়ার কাজ আর আধ ঘন্টা এক ঘন্টায় ৫০ সিসি মোটর সাইকেলে নেপালি প্রহরীদের টহল ছাড়া এই এলাকায় আর কিছু মানবিক মনে হয়না। সব কিছু সাজানো গোছানো কম্পিউটার গেমের মত, আমরা চারজন মনে হয় এখানে ঢুকে পড়েছি গেমের চরিত্র হিসাবে।
হরাইজন হিলের দুই ব্লকে দু’টি মার্কেট আছে, হুবুহ একরকম এমন কি দোকানের নাম গুলো পর্যন্ত এক। এক সকালে আমি হাটতে হাটতে আড়াই কিলোমিটার দূরে গিয়ে একই রকম দোকানপাট দেখে ধন্দে পড়ে গিয়ে ছিলাম। শেষ পর্যন্ত দোকানিদের চেহারার অমিল দেখে বুঝতে পেরেছি, দু’টি একজায়গা নয়।
প্রথম যেদিন এসেছিলাম, মনে বেশ ফূর্তি ছিলো। কী সুন্দর গ্রাম গ্রাম ভাব, অথচ শহুরে সুযোগ সুবিধার কমতি নেই। এখানে নিশ্চয় নিরিবিলিতে কয়েকদিন থাকা যাবে। বিকেলে মন খারাপ হল, এখানে ডিস এন্টিনা তো পরের কথা কোন এনটিনাই টিভিতে নেই। বিশাল আকারের এলইডি টেলিভিসন দেয়ালে সেটে আছে শুধু রেকর্ডেড মুভি দেখার জন্যে। Pan Kobo kafe নামে একটা জাপানি দোকানে কিছু একটা খেলে নাকি ঘন্টার পর ঘন্টা ইন্টারনেট ব্রাঊজ করতে দেয় । এখানে তারাই শেয়াল রাজা। সকালে গিয়ে দেখি কোন কারণ ছাড়াই পান কবো বন্ধ।
মোবাইলে কারো কারো ইন্টারনেট থাকলেও ব্রড ব্যান্ড কারো নেই। মোবাইল নেট ওয়ার্কও যথেষ্ট শক্তিশালি নয়। অথচ উল্টোদিকের গলফ ক্লাবে সবই আছে। মালোয়েশিয়ার অন্যতম সেরা এই গলফ ক্লাবে পদচারণা ঘটেছে আমাদের সিদ্দিকুর রহমানসহ অনেক রথিমহারথীর। অসাধারণ না হলে সেখানেও ঠাঁই পাওয়া দায়।
নিজের গাড়ি না থাকলে শহরে যাওয়াও সহজ কথা নয়। একটি ক্যাব কোম্পানির নম্বর পেয়েছিলাম, তবে অনেক সাধ্য সাধনা করেও প্রথম দুদিন ট্যাক্সি পাইনি। আমি এখনও মাইল কা মাইল হাটতে পারি বটে, কিন্তু আমার ভ্রমণ সঙ্গীরা হাইকিঙ্গের বিপক্ষে।
হরাইজন হিলে যে দু’টি মার্কেটের মত আছে বললাম, সেখানে তিন চারটিটি করে ফাস্ট ফুডের দোকান, কয়েকটা গ্রোসারি, হরাইজন হিলস প্রজেক্ট অফিস ছাড়া তেমন কিছু নেই। মোবাইলের সিম বিক্রির একটা দোকান আছে,তবে নির্দিষ্ট একটি কোম্পানির সিম ছাড়া তাঁরা আর কিছু বিক্রি করে না। এই নির্জন এলাকায়ও প্রাণের চানাচুর আর মুড়ি বিক্রি করতে দেখে খানিকটা গর্ব হল। মালিকের পরিচয় যাই হোক, পণ্যতো বাংলাদেশের।
৩য় দিন সকালেও ট্যাক্সি খোঁজাখুজির ব্যর্থ পর্ব শেষ করে, হরাইজন হিলের প্রজেক্ট অফিসে ঢু’মারলাম। ইনিয়ে বিনিয়ে বলা আমার বিড়ম্বনার কথা শুনে নিকোল নামের এক হৃদয়বতী মহিলার মন গলল। তিনি বললেন এখানে তো ট্যাক্সি পাবান, তবে আমার এক ফ্রেন্ডের ট্যাক্সি আছে, তাকে আসতে বলেছি। তুমি একটু অপেক্ষা করো। একটু পর বলল, নীল ট্যাক্সি কিন্তু, আমি বললাম তিনদিনের চেষ্টায় ট্যাক্সি পেয়েছি সেটি নীল না লাল তাঁকে কী আসে যায়। মেয়েটি বলল, রঙে না এসে গেলেও ভাড়ায় এসে যায়। নীল ট্যাক্সির ভাড়া বেশি।
স্বীকারোক্তিঃ
ছবি আর লেখার কোন মিল নেই।
ভালই তো! নিরুপদ্রুপ নিরুদ্দেশ হয়ে থাকুন না হয় কিছুদিন!
দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ
ধন্যবাদ মোস্তফা। নিরুদ্দেশ আর থাকা গেলো না
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
"ছবি আর লেখার কোন মিল নেই" - তবুও তো দুটোই কত ভালো লাগলো, দেখতে ও পড়তে!
আপনি খুব কন্সিডারেট পাঠক স্যার। বরাবরের মতই মনকাড়া মন্তব্য
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
একপর্বেই সমাপ্ত? আর চলবে না?
জারুলের রংটি যেন অন্যরকম লাগছে। আমার অত্যন্ত প্রিয়ফুল -- যে ভূমিতে জারুল হয় সে ভূমিও প্রিয়।
না, আর পর্ব নেই।এটি তো এখা নয়, না লেখার গল্প
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
লেখা নয় লেখার গল্প
শোনালো কি কিছু অল্প !
দারুন লাগে ... যতোই পড়ি ...
আসলেই, এটি কোন লেখা নয়
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান