প্রতিবার দেশে গেলে আমার বাবা তারার জন্য একজন মাষ্টারমশাই নিযুক্ত করেছেন গান শেখাতে। পঁচিশ তিরিশের দীর্ঘকায় শ্যামবর্ণ একটি ছেলে সপ্তাহে তিনদিন আসতেন তালিম দিতে। একদিন বাবা বললেন তারা একা গাইবে কেনো, মাগো? তুমিও বসে যাও হারমোনিয়াম নিয়ে। অনুশীলনের অভাবে কন্ঠে লালিত্যের ঘাটতি থাকলেও পিতা জানেন তার কন্যার বুকে সুরের নিত্য আনাগোনা! ডো-রে-মি-ফা ভুলে যাবার বহু বছর পর আবারও সারগামে ডুব দিলাম বাবার মন রাখতে।
গৌতম নামের মাষ্টারমশাই এর সাথে আমাদের মা মেয়ের খুব ভাব হয়ে গেল। আমার বাবা আর মা ছেলেটিকে নাম ধরেই ডাকেন। আমি বলি মাষ্টারমশাই কিন্তু তারা একটু বেকায়দায় পরে গেল যেন। গৌতম নামটা বেশ খটোমটো তারার জন্য, আবার মাষ্টারমশাইও বলতে পারে না ঠিকমত। কি মনে করে সে মাষ্টারমশাইকে কবুতর বলে ডাকা শুরু করলো আজ আর মনে করতে পারিনা। প্রতি উত্তরে স্নেহশীল মাষ্টারমশাইটিও তার সদা অমনোযোগী ছাত্রটিকে কবুতর বলেই সম্বোধন করতেন। তারা নিজেই বিচিত্র সব গান মুখে মুখে বানায় আর তাতে সুরও আরোপ করে। সেই সব গানের মর্ম উদ্ধার করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না হলেও মাষ্টারমশাই যে তাতে বিমলানন্দ পান বলাই বাহুল্য। ধূসর রঙা পাঞ্জাবীর পকেটে করে কখনো চকলেট ক্যান্ডি আর কখনো কুকিজ নিয়ে আসেন তার কবুতর ছাত্রটির জন্য!
আমাদের ছোটবেলার তবলা, হারমোনিয়াম সবই মা যত্ন করে রেখে দিয়েছিলেন বাড়িতে। ঝাড়পোঁছ করার পর সেগুলোই টিউন করে নিলেন মাষ্টারমশাই। দিনের আলো নেভার আগেই দোতলার ড্রইংরুমে লাল কার্পেটে ডোরাকাটা চাদর পেতে রাখতো রফিক। সপ্তাহে তিনদিন আসবার কথা থাকলেও গৌতম হঠাৎ সঠাৎ লাজুক মুখে কলিং বেল বাজিয়ে বলতেন, এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম, ভাবলাম চাঁদ তারা ছাত্র দুটিকে দেখে যাই!
আমার কন্যা বরাবরের বিচ্ছু মেয়ে। দু’দন্ড স্থির হয়ে বসবার মতো ফুরসত তার মেলে কই! এরই মাঝে বাংলা শেখাবার আয়োজন করে ফেলেছেন আমার বাবা। সুমন নামের একটি রোগা পটকা ছেলে দুপুরবেলা তারাকে বাংলা পড়াতে আসেন। পড়া মানে অ আ ক খ এর পাশাপাশি ছড়া আর কবিতা শেখাবেন। তারা জানালার গ্রিল ধরে বাঁদরের মতো উলটে আছে হয়তো, আর বেচারা মাষ্টারমশাই দু’চার লাইনের ছোট ছোট ছড়া অথবা কবিতা পড়ছেন উচ্চস্বরে। ‘লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া’ শেখার আগেই ও ‘পাখিওয়ালা’ মুখস্ত করে ফেলল। দিন শেষে বাবার কোলে বসে ঝুঁটি নেড়েনেড়ে পড়ে,
পাখিওয়ালা বলে, ওটা কালো রঙ চন্দনা।
পানুলাল হালদার বলে আমি মোটে অন্ধ না।
কাক ওটা নিশ্চিত হরিনাম ঠোঁটে নাই।
পাখিওয়ালা বলে, বুলি ভাল করে ফোটে নাই।
আমার বাবার মুখে তৃপ্তির হাসি। নিজের কন্যাত্রয়কে অপার উদারতার বড় করেছেন তিনি, বহু বছর পর আরো একটি কন্যাকে কাছে পেয়ে তাকে নিজের মত করে মানুষ করবেন এটিই তো স্বাভাবিক। চায়ের কাপে বন্ধুদের আড্ডায় তারার ডাক পরে একখানি কবিতা শুনাবার। একটি ছড়া পড়বার কথা থাকলেও তারাকে থামাবার সাধ্য কারোরই নাই। লন্ডন ব্রিজ ইজ ফলিং ডাউন’ মাঝপথে থামিয়ে সে ‘আমি এক কানাইমাষ্টার’ বলতে শুরু করে অথবা রিং এরাউন্ড দা রোসি’ শেষ করেই সে ‘বীরপুরুষ’ শুরু করে দেয় হাত পা ছুঁড়তে ছুঁড়তে।
গৌতম মাষ্টারমশাই এলে চায়ের কাপ হাতে বাবা আমার পাশে এসে বসেন। চিরকালের প্রবাসী মেজ সন্তানের প্রতি তাঁর বাড়তি স্নেহের কথা পরিবারে সর্বজনবিদিত। রূপার পানের বাটা হাতে আঁচল টেনে মা’ও যোগ দেন আমাদের সাথে। আড্ডার মাঝেই আহারবিহার চলে সবাই মিলে। রফিক সিঙ্গারা, মিষ্টি অথবা ঠান্ডা এক টুকরো কেকের সাথে চা’ও নিয়ে আসে ট্রেতে করে। তারা আমার মায়ের চিবোনো পান মুখে নিয়ে ঠোঁট লাল করে হাসে।
কবিতা আর গানে গানেই পহেলা বৈশাখ চলে এলো। ছোট চাচী স্যাকরাকে দিয়ে আমাদের জন্য রূপার চাবির গোছা বানিয়ে নিয়ে এলেন। মা কিনে দিলেন তাঁতের শাড়ি আর বাজুবন্দ। গৌতম মাষ্টারমশাইয়ের আমন্ত্রণে তার স্কুলে আমরা কবিতা আর গানের অনুষ্ঠানে যোগ দিই বৈশাখী সাজ পোশাক পরে। ফিরতি পথে বাবা মেলা থেকে চিনির ঘোড়া, ঘটাং মটাং ডুগডুগি আর লাল চেলী পরা কনে বৌ কিনে দিয়েছিলেন তারাকে।
আমাদের বাড়ির পেছনেই রেল লাইন চলে গেছে। সকাল বিকেল পদ্মা, যমুনা নামের ট্রেনগুলো চলে যায় কু ঝিকঝিক আওয়াজ তুলে। ট্রেন আসার আওয়াজ পেলেই তারা ছুট লাগায় বারান্দায়। সেদিন মাষ্টারমশাই এসেই ‘আমরা সবাই রাজা’ শেখাবেন বলে ঘোষণা দিলেন। সদা বিদ্রোহী তারা বলল, রাজার গান আমি শুনতে চাইনা, কবুতর। আমি রাজা হতে চাইনা। মাষ্টারমশাই বললেন, তুমি কি হতে চাও বলো তবে? কোন কিছু না ভেবেই তারা বলল, আমি ট্রেন হতে চাই, প্লেন হতে চাই, রিকশা হতে চাই, পাখি হতে চাই, ফায়ার ফাইটার হতে চাই, পাশের বাড়ির বিল্টুর কিটিও হতে চাই!
তারার কথায় আমরা সবাই হাসলেও মাষ্টারমশাই খচখচিয়ে নোট লিখে চলেন খাতায়। লেখালেখির পাট চুকলে হারমোনিয়ামের রিডে তিনি হাত রাখতেই আলোয় আলোয় ঝলমলিয়ে উঠলো ঘরখানি। কবুতর ছাত্রটির কথা মেনে নিয়ে গৌতম গাইলেন, ঝিকঝিক ঝিকঝিক চলে রেলগাড়ি… …
বাড়ি ফিরতে তারার দেরী হবে আজ, বেটা ক্লাবের মিটিং আছে স্কুলের পর। কন্যা তার মায়ের সবিশেষ অনুরাগী। অপরাপর সব বাচ্চাদের মত তারাও বিশ্বাস করে তার মা’টি জগতসেরা! আসলে আমার সকল কাজের ‘পার্টনার ইন ক্রাইম’ বলতে তো ঐ একজনই আছেন জগত জুড়ে। গুগোল মুগোল ঘেঁটে ‘রেলগাড়ি’ গানের লিরিক্স পাওয়া গেলো অবশেষে। সুর তো মাথায় ছিলোই। তারার মুগ্ধ চোখ দেখতে আমার বরাবরই ভাল লাগে তাই দেরী না করে পিয়ানোয় হাত রাখি আনমনে!
বাজাতে বাজাতেই শুনতে পাই ঐ তো আমাদের সাদা বাড়ির দোতলা থেকে কবুতর মাষ্টারমশাইয়ের ভরাট কন্ঠ ভেসে আসছে! কড়া লিপটন চায়ের সুবাস অথবা মায়ের চমনবাহার খুশবু ছড়াচ্ছে মগজের করটিতে! সব কিছু আছে আগের মতোই। আমার বাবামনি কেবল আকাশের তারা হয়ে গেছেন ঐ সুদূরে!
''আমি ট্রেন হতে চাই, প্লেন হতে চাই, রিকশা হতে চাই, পাখি হতে চাই, ফায়ার ফাইটার হতে চাই, পাশের বাড়ির বিল্টুর কিটিও হতে চাই!''
আমার মনের কথা বলছ। আমিও এগুলো হতে চাই কিন্তু আর বোধ হয় হতে পারলাম না। যাই হোক লিখাটা একটু বড় হয়েছে দেখে ভালো লাগলো তবে মিউজিক শেষ হয়ে গেছে কিন্তু লিখাটা পড়া শেষ হয় নাই। তুমি অনেক ভালো থেকো। শুভকামনা আপু। :clap: :clap:
🙂 🙂 🙂 🙂
আমিতো এখনো কত কি হতে চাই, জিয়া। পাখি, নদী, সন্ধ্যামালতি এমনকি গাছ অবধি হতে চাই।
বড়সড় বাজনা তো দিতে চাই, যদি ভরসা দাও সবাই। লেখা ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।
অসম্ভব সুন্দর মনের স্মৃতিচারণ। খুবই ভালো হয়েছে। মন ছুঁয়ে গেলো। এমন বাবা কয়জনের হয় বলতো? এমন মানুষের কন্যাদের ভালো না হয়েতো উপায় নেই। একজন বাবার গল্প।একজন সপ্নের কারিগরের গল্প।লেখাটি অসাধারণ।
🙂 🙂 🙂 🙂
আমার বাবার মত সজ্জন আর আলোকিত মানুষ কম হয়। আমাদের বৃহত্তর পরিবার এবং পরিচিত বলয়ের কত মানুষ যে তাঁর থেকে উপকৃত হয়েছেন তার হিসাব নেই। কত মানুষের পড়ার খরচ জুগিয়েছেন, বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন, সরাসরি অথর্ সাহায্য করেছেন তিনি। গ্রামের বাড়িতে দাদার তৈরি স্কুলটিতে বাবা ত্রিশ বছর আগে অডিটোরিয়াম বানিয়ে দিয়েছেন যেন ছাত্ররা কথা বলতে শেখে, বিতকর্ করতে পারে। স্কুলের জমিতে পুকুর কাটিয়ে মাছের চাষ করালেন তিনি, সেগুনবাগিচা বানালেন।
আমার বাবা সতি্যই একজন স্বপ্নের কারিগর! :hatsoff: :hatsoff:
অনেক ধন্যবাদ পড়বার জন্য, বন্ধু।
"বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন" - এটার জন্য কৃতিত্বটা বাবার চেয়ে মায়ের বেশী প্রাপ্য।
🙂 🙂 🙂 🙂
কথা সত্য, ভাইয়া! 😀
(সম্পাদিত)
ভালো লাগলো চমৎকার হয়েছে
🙂 🙂 🙂 🙂
অনেক ধন্যবাদ, আয়নাল!
কবুতরের মতোন উড়ে উড়েই যাচ্ছিলাম শব্দের বাগানে উন্মুল আহলাদে ।
ধূসর রঙা পাঞ্জাবীর পকেটে কখনো চকলেট ক্যান্ডি কখনো কুকিজ
‘লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া’ কিংবা ‘পাখিওয়ালা’র ঝুটি, লন্ডন ব্রীজ, রোসি, বীরপুরুষ
ডানা ঝাপটে স্যাকরার গড়া রূপার চাবির গোছা, মার কিনে দেয়া তাঁতের শাড়ি-বাজুবন্দ
চিনির ঘোড়া, ডুগডুগি আর লাল চেলী পরা কনে বৌ, রূপার পানের বাটা - এই সব ছুঁতে ছুঁতে
ট্রেন, প্লেন, রিকশা, পাখি, ফায়ার ফাইটার, বিল্টুর কিটি - কত কী যে হতে চাই; ডানা ঝাপটাই ।
সেই সব আকাশ জুড়ে বন্ধনহীন বিচরণের শেষ এসে ঝিকঝিক ঝিকঝিক রেলগাড়িটি
অকস্মাত ভূপাতিত হলাম যেনো সবশেষে এসে ।
এতোটা আশ্চর্য কি করে টেনে নেয়া যায় পাঠকেরে, পরমাণু প্রখর বর্ণনা বিচ্ছুরণে !
🙂 🙂 🙂 🙂
কু ঝিকঝিক রেলগাড়ি চলে গেছে কোন দূরে
বালিকার হাসি আহ্লাদ, কিশোরীর ভ্রুকুটি
অথবা অবনত চোখের লাজুক হাসি পেছনে ফেলে
হঠকারী মেষপালকের মত মিছে কথার ফানুস
উড়িয়ে যে সময় চলে যায়
সে কি কভু আসে হায়!
অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া! :boss:
ছোটবেলায় আমার কোন এক রাশভারী গুরুজন জিজ্ঞেস করেছিলেন, বড় হয়ে কি হতে চাও? আমিও নাকি বেশ ভাব-গম্ভীর উত্তর দিয়েছিলাম, "এখনও ভেবে দেখিনি"। জীবনের অনেক বেলাই তো বয়ে গেল, ভাবনাটা আর ভাবাই হল না।
লেখা দারুণ লাগলো আপা। আপনার বাবা-মা, তারা, মাস্টারমশাই............ সবাইকে নিয়েই ভালো থাকবেন, আরও দারুণ লেখার অপেক্ষায় রইলাম.........
🙂 🙂 🙂 🙂
এই জীবনে ফুল, পাখি, লতাপাতা অথবা নদী তো হওয়া গেল না, ভাইয়া। মানুষ হতে চেষ্টা করি সদা সবর্দা। দেখি না কী হয়!
অনেক ধন্যবাদ, সাদাত।
কি সুন্দর করে যে লিখো তুমি, পড়ে ধন্য হই বারবার...
আর পিয়ানোটাও চমৎকার বাজিয়েছো।
সবকিছু মিলিয়ে দুর্দান্ত একটা ব্লগ নামিয়েছো।
লিখালিখি জিনিষটা তুমি কিন্তু খুব কঠিন করে দিচ্ছো। এই রকম ব্লগের পাশে তো আর যা তা পোস্ট করা যায় না, তাই না?
😀 😛 😀
একটা ঝামেলা সমাধান করতে গিয়ে বেশ কদিন সিসিবিতে ঢোকার সময় পাচ্ছি না।
আবার নিয়মিত হতে হবে যত তাড়াতাড়ি পারি.........
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
তোমার স্নেহমাখা মন্তব্য আমাকে ভাল লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করে, ভাইয়া। বাঘা বাঘা সিসিবিয়ানদের মাঝে আমাকে নিতান্তই শিশু বলা যেতে পারে। আশা করি জাগতিক ব্যস্ততা কমেছে খানিক। তোমার নতুন লেখার অপেক্ষায় রইলাম!
পড়ে, শুনে অনেক ভাল লেগেছে।
আংকেলের জন্য প্রার্থনা।
🙂 🙂 🙂 🙂
অনেক ধন্যবাদ, কাজী সাহেব!
প্রতিবারের মত সেই একই ভুল করলাম। ভেবেছিলাম গদ্যটিকেই বোধ করি শুনতে পাওয়া যাবে। তারপর সুরের ধারাটি গড়াতে শুরু করলে বুঝতে পারলাম - গদ্যটিকেই শুনছি, একটু অন্যভাবে। ভুল কিছু হয়নি আমার। এমন পাঠের পর মনটা কেমন চুপ হয়ে যায় -- বেশি কিছু বলার থাকেনা।
🙂 🙂 🙂 🙂
একখানা অডিও ব্লগের খসড়া লেখার কাজে হাত দিয়েছি সম্প্রতি। ডাকসাইটে সব কবিদের প্রশংসা পেয়ে এবার কবিতা লিখতে মন চাইছে, জানো। দেখি যদি শেষ অবধি সাহসে কুলোয় কবিতাই না হয় পড়বো। তোমরা নিজ দায়িত্বে লাইফ ইনসুরেন্স করিয়ে নিও তার আগেই।
পিয়ানো বাজানো তো দূরের কথা, কোনদিন অঙুলিস্পর্শও করে দেখিনি। কিন্তু তোমার এ বাজানোটা শুনে মনে হলো, মনের অনুভূতিগুলো যেমন কলমের নিবে কিংবা কীবোর্ডের স্পর্শে কবিতা হয়ে উঠতে পারে, তেমনি বাদ্যধ্বনির মাধ্যমেও আকাশের তারা হয়ে জ্বলে উঠতে পারে, শাওন রাতের বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়তে পারে।
০২ঃ৩৭ মিঃ এর ঝঙ্কারে মন ভরলোনা, অগত্যা গুগলের জাদুতে কিছু 'রিলাক্সিং মিউজিক' খুঁজে বের করে উন্মুখ হয়ে শুনলাম। নতুন একটা আগ্রহের দ্বার পড়ন্ত বেলায় উন্মোচিত হলো।
ড্যাডি'স ডটারের শ্রদ্ধানুভূতিগুলোও বেশ স্পর্শ করে গেলো।
বলা বাহুল্য, তোমার এর আগের অডিওটাও ( ক্রোধ অথবা অভিমানের সুর) সুরের ক, খ, গ, না জানা থাকা সত্ত্বেও আমার খুব ভালো লেগেছিলো।
🙂 🙂 🙂 🙂
মুগ্ধ মুগ্ধ মুগ্ধ ...
তোমার লেখা পড়ে আমার ছোট বেলার ময়মনসিং এর গন্ধ পাই। একটা জর্দা ফ্যাক্টরি ... মৃত্যুঞ্জয় আর রাধাসুন্দরি স্কুলের মাঝের রাস্তা ... গোল পুকুর পাড় হয়ে, কোন একটা বাড়িতে গানের চর্চা হচ্ছে পড়ন্ত বিকেলে ... রাস্তায় হাটতে গিয়ে সুর শুনে থমকে দাঁড়ানো ... ধোঁয়ার গন্ধ ...
:boss: :boss: :boss: :boss: :boss:
নিজে কানা পথ চেনে না
পরকে ডাকে বার বার
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
আমাদের ছেলেবেলার ময়মনসিংহের পরিবেশ বড়ই উদার ছিল, অরূপদা। হিন্দু মুসলমানদের পিসফুল কো একসিসটেন্সের মাঝেই বেড়ে ওঠা আমাদের। গান বাজনার চল ছিল ঘরে ঘরে। শিক্ষিত বাঙালী পরিবারের মেয়েরা সে হিন্দুই হোক বা মুসলমান, দুটো চারটে গান গাইবে এমনি চল ছিল তখন। লিটল ম্যাগ বের হতো মাস দুই মাস পরপর। বছরের শুরুতেই বাবা একখানা ডায়েরী ধরিয়ে দিতেন আমাদের সবার হাতে হাতে। মা, চাচী অথবা প্রতিবেশী আন্টিদের হিজাব নেকাবে পোটলা হয়ে ঘুরতে দেখিনি কখনোই। পাশের বাড়ির টুনু আর কল্পনা দিদিমণিদের আভিজাত্যহীন ঘরে অন্য কিছুর অভাব থাকলেও তাদের কথায় আর গানে উপচে পরা ভালবাসার ছোঁয়াই পেয়েছি!
তুমি ভাল থেকো, অরূপদা!
জব্বর হইছে।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
🙂 🙂 🙂 🙂
ওরে পুরোদস্তুর বাঙাল ভাইয়া আমার, তোমাকে চিনতেই পারছিলাম না প্রথমে। অনেকদিন দেখা নেই তোমার সাথে। নতুন লেখা দাও এবার, ভাইয়া। সিসিবি মিস করছে তোমায়।