আহূতি

ছায়াদের পিছুপিছু অনেকদূর হেঁটে এসেছি আমি।
এবার আমি ফিরে যাব আয়নার ওপাশে।
গলিত সূর্যের ফোঁটায় ফলনশীল উদগ্র ফোস্কার ক্ষেত আমার পিঠে।
আমি ফিরে যাব সেই ছেলেটির কাছে।
যার মুখ আমি আজও দেখি বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতে।
সূর্যের বিপরীতে দাঁড়ানো সেই ছেলেটি!
উদ্ধত সূর্যালোকের তীর্যক আক্রমণে উদ্ভাসিত!
অথচ আলোহীন ভীতিকর কী গহীন দুইচোখ !
প্রথম চাঁদের পর পৃথিবীর সব অমাবস্যা জমাট বেঁধেছে সে আঁধারে।
কোনদিন কোন নক্ষত্রের আলো দূষিত করতে পারে নি যে আঁধার!

কবিতার অভিশাপে সাড়া দিয়েছিল যে ছেলেটি ,
ঘুম থেকে উঠে অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছিল “কেন? “,
তারপর শুধুই ছবি হয়ে যাওয়া সেই ছেলেটিকে আমি আজও খুঁজি! শুধুই খুঁজি!
তারপর সূর্যের জন্ম থেকে মৃত্যুতে,
বীজ থেকে মহীরুহে,
অস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বতে,
মানবীর দেহের অসমতল ছায়াতে,
প্রতিটি সময় সঙ্ঘটনেই আমি খুঁজেছি সেই “কেন?”-র উত্তর।
আমি শুধু সেই ছেলেটির ছবিই খুঁজে পেয়েছি।
আমি তার পায়ের ছাপে পা রেখেছি,
একই সুরে ভুল করেছি,
সেই মেঘেদের পিছু নিয়েছি,
সূর্যের বিপরীতে দেখেছি ছায়াদের বেড়ে ওঠা,
আমি এখনও দুহাতে ঠেলে সরাই সন্ধ্যার কুয়াশা!
ক্লান্ত আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব ছাড়া কিছুই পাই না আমি!!

আগামী কোন এক অমাবস্যায় বিলীন চাঁদের আলোয় চলে গিয়েছে সে!
নরকেই গিয়েছে সে;আমি জানি।
“নরকটাই বেশি আলোকিত !ওখানেই যাব ভাবছি। ” হেসেছিল সে সেদিন!
আজ আমার প্রতিবিম্বের ওপাশ থেকে উঁকি দিয়ে সে বলেছে “আয়নার অতীতে চলে এস! ”
সেই চোখ!সেই অন্ধকার!
নরকের সমস্ত আলো শুষে নিয়েছে সে আঁধার!
“নরক বলে কিছু নেই আর! ‘নজরবন্দী ‘ করে রেখেছি! ” বলে গিয়েছে সে।
” চলে এস! আয়নার এপাশ ওপাশ! ” বলে চলে গিয়েছে সে!

আমি তবু বিহ্বল আশা নিয়ে ছুটি ছায়াদের পিছু,
আমার দুচোখ ভরা শুধু তাঁর কাছে যাবার হাহাকার!
ছায়াদের পিছুপিছু অনেকদূর হেঁটে এসেছি আমি! …..’

১,১৯৪ বার দেখা হয়েছে

১০ টি মন্তব্য : “আহূতি”

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।