লেখালেখি জিনিসটা সবাইকে দিয়ে হয় না। আমার ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি প্রযোজ্য। তবুও আজ লিখতে বসলাম।
ফেসবুক এ গতকাল বসেই প্রথমেই একটা খবর চোখে পড়ল , “প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত , ফ্লাইং কর্মকর্তা নিহত”।
খবরটা পড়েই মনের মধ্যে কেমন জানো একটা ব্যাথা অনুভব করলাম। এভাবে আর কত গুলো জীবন ঝরে যাবে? আর কতগুলো মৃত্যুর পর জেগে উঠবে সবাই এবং খুজে বের করবে সব অজানা রহস্য গুলো……
মনে পড়ে যায় আজ থেকে ৮ বছর আগে,খুব ইচ্ছা ছিল বিমান বাহিনীতে যাওয়ার। কিন্তু ক্রমাগত বিমান দুর্ঘটনার খবর গুলি আমার পরিবারের প্রতিটি সদস্য কে বাধ্য করেছিল আমাকে বাধা দেয়ার জন্য। অনেকে হয়ত ভাবতে পারেন মৃত্যু ভয় কি এখন নেই? অবশ্যই আছে। কিন্তু বিমান বাহিনীর ক্রমাগত দুর্ঘটনাগুলো আসলে মেনে নেয়াটা কষ্টকর।
তাহলে কি আমাদের পাইলটরা যথেষ্ট যোগ্য নয়। আমি তা বিশ্বাস করি না। কারন আমাদের বিমান বাহিনীর পাইলটরা যখন বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এ যায়, বিভিন্ন দেশের পাইলটদের সাথে প্রতিযোগিতায় আসে, তখন আমাদের দেশের এই পাইলটরাই কিন্তু ভালো ফলাফল অর্জন করে বয়ে নিয়ে আসে দেশের সুনাম। তাহলে মূল সমস্যা কথায়? এই প্রশ্নের উত্তর আমি এখানে না বললেও আমি জানি সবাই বুঝেতে পেরেছেন কারন এটা সবারই জানা একটি রহস্য।
হিন্দি মুভি “Rang De Basanti” দেখেছিলাম, দেখে মনে হয়েছিল এমন একটা বিপ্লব বাংলাদেশের জন্যও দরকার। নয়ত আরও না জানি কত জনকে প্রান বিলিয়ে দিতে হবে। কিন্তু ওই বিপ্লব তো দূরে থাক, বাংলাদেশে কি এই কাহিনী নিয়ে একটা মুভি বানানোর সাহসও কেউ করবে? আমি জানি করবে না। কারন যে মারা যাচ্ছে তার পরিবার, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব ছাড়া আর কেউ তো এই কষ্ট পাচ্ছে না। খুজে দেখুন তো যারা পারবে এই সব অনিয়ম দুর্নীতি দূর করতে, তাদের কয়জনের সন্তান বা আত্মীয় সামরিক কোন বাহিনী তে আছেন? খুজে পাওয়া খুব কষ্টকর হবে, নাও পেতে পারেন। তাই কার কি যায় আসে বলুন? এ রকম কত মৃত্যুই তো দেশ প্রতিদিন দেখে,তাই না? কিন্তু একটি বার ভাবুন এভাবে, এই একটি মৃত্যুতে দেশ হারাচ্ছে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক কে। আমরা দেশপ্রেমের কথা সবাই ই বলি। কিন্তু কয়জন পারবেন নিজের জীবন বাজি নিয়ে বিমান চালানোর দুঃসাহস করতে? আজকাল লোকজন বাস এর চেহারা খারাপ হলেও ওই বাস এ উঠতে ভয় পায়। কিন্তু এই বৈমানিক রা………থাক আর কিছু বলব না। শুধু এটুকু চিন্তা করতে অনুরধ করব, নিজের চোখের সামনে মৃত দেখেও যারা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করে যায় যে কিভাবে বিমানটাকে বাচান যায় ,কারন গরিব এই দেশটির এই বিমানটি কিনতেও খরচ হয়েছে কোটি কোটি টাকা এই চিন্তা করে, এই রকম দেশপ্রেমিক কে হারাচ্ছি আমরা।
আজ খুব মনে পরছে আমার বন্ধু ফয়সাল মাহমুদ এর কথা। আজ থেকে ৫ বছর আগে যশোরে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গিয়েছিল। অনেক রাত ঘুমতে গিয়ে ভেসে উঠেছিল ওর মুখটা চোখের সামনে। আর মনের অজান্তেই চোখের কোনায় কিভাবে যেন জমে উঠেছিল পানি। তখন বুঝেছিলাম ওর আব্বা আম্মা তাহলে ঠিক কতটা কষ্ট পাচ্ছেন। সাহস করে একদিন ফোনও দিয়েছিলাম। কিন্তু আঙ্কেল আন্টির কান্না তখনও থামাতে পারিনি। এভাবে প্রতি বছর আর কত মায়ের কান্না আমাদের দেখতে হবে জানি না। কিন্তু আর কত? প্রতি বছরের এই কান্না দেখা বন্ধ করার কোন উপায় ই কি আমাদের জানা নেই?
সব শেষে একটি কথা বলে শেষ করতে চাই। গতকালের ওই খবরটির নিচে অনেক কমেন্ট ছিল,যার মধ্যে কিছু কিছু কমেন্ট এ চোখ আটকে গিয়েছিল। একটি কমেন্ট ছিল অনেকটা এরকম, “ট্যাঙ্কের নিচে আর কত বিমান যাবে?”…… আবার অনেকে লিখেছেন, “প্রতিরক্ষা বাজেটের সব টাকা এক বাহিনীর পকেটে যাচ্ছে, আর আরেক বাহিনী মারা যাচ্ছে।” আমি জানি না কমেন্ট গুলো কি জেনে করেছেন নাকি না জেনেই করেছেন?
যদি জেনে করে থাকেন,তাহলে আমি আমার নিজের জানার জন্য একটু এর ব্যাপারে তাদের কাছে জানতে চাইব তাদের মন্তব্যে ভিত্তি কি?
আর যদি না জেনেই শুধুমাত্র কমেন্ট করার জন্যই কমেন্ট করে থাকেন, তাহলে একটাই অনুরোধ থাকবে দয়া করে এমন মন্তব্য করে নিজেদের মধ্যেই কৃত্রিম বিভাজন টানার চেষ্টা করবেন না। ফলাফলটা দেশের জন্যই খারাপ বয়ে আনবে। পারলে গঠনমূলক কিছু করুন, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য।
কিছু ব্যাপারের ব্যাখ্যা কার কাছে চাওয়া যায়, সেই ব্যাপারটা নিয়ে মাঝে মাঝে চিন্তিত হয়ে পড়ি। কালকের এই খবরটা খুব কষ্ট দিয়েছে। আমাদের বয়সী একটা ছেলের এভাবে চলে যাওয়াটা কোনভাবেই মানতে পারছি না।
গরীব দেশের বিমান বাঁচাতে গিয়ে এক একজনের এভাবে চলে যাওয়াটা কোনভাবেই মানা যায় না।
আর কালকের ওই মন্তব্য আমারও চোখে পড়েছে। লোকজনের নির্বুদ্ধিতা দেখে হতবাক হয়ে যেতে হয়।
খুবই সময়পোযোগী লেখা রায়হান ভাই। সিসিবিতে এখন এই লেখাটার খুব দরকার ছিল। অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ...... 🙂
আমরা আসলে কোন কিছু না বুঝেই এমন কিছু মন্তব্য করে ফেলি যা দুঃখ কষ্ট আরও বাড়িয়ে দেয়......
প্রতি বছরের এমন দুর্ঘটনা মোটেই কাম্য নয়.........তবুও এই ব্যাপারগুলো দেখার যেন কেউই নেই......
আমরা কি পারি না এই উদাসিনতা ঝেরে ফেলে দিয়ে আরেকটু সচেতন হতে.........
তাহলে আমাদের চোখের সামনে এতগুলো জীবন ঝরে যেত না
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
একদম মনের কথাগুলো বলে দিয়েছো রায়হান... :hatsoff: :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধন্যবাদ স্যার ::salute::
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
বলার মতো কিছু খুজে পাচ্ছি না। আমার পক্ষ থেকে একটা ধন্যবাদ নিয়েন রায়হান ভাই।
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
:hatsoff:
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
রাহুল ভাই, খুব সুন্দর লিখেছেন । আমাদের মস্ত দোষ, কিছু ঘটলেই না জেনে বুঝে বিজ্ঞের মত রায় দিয়ে ফেলি ।
ধন্যবাদ
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
:hatsoff: :hatsoff:
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
রায়হান ভাই,শুধু বলবো সঠিক সময়ের লেখা। :boss: :boss: :boss:
তানভীর আহমেদ
ধন্যবাদ ভাই
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার
রায়হান ভাই, চলেন শুরু করি।
আসলেই শুরু করতে ইচ্ছে হয়............
কিন্তু পারি না...... দুঃখটা এখানেই ~x(
একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার,সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার