সিসিবি তে এটা আমার প্রথম লেখা। যদিও আমার প্রথম লেখা হওয়ার কথা ছিল লিন্ডাও সম্মেলনের ওপর, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমার মনে হল এই রকম একটা লেখা দেয়া দরকার।
আমি প্রথমেই বলে নিতে চাই যে আমি কোন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ নই, আমি পদার্থবিদ্যার একজন সামান্য ছাত্র। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক সমীকরণ আইন্সটাইনের ফিল্ড ইকুয়েশন এর চেয়ে কোন অংশে কম জটিল না, ক্ষেত্রবিশেষে আরো জটিল। ফিল্ড ইকুয়েশন সমাধান এর কিছু অভিজ্ঞতা আমার থাকলেও দেশের রাজনীতি নিয়ে কোন লেখা আমি আগে কখনো লেখিনি, সুতরাং আমি নিশ্চিত যে আমার লেখা অগোছালো হবে। তাই শুরুতেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচিত সরকার এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। সুতরাং ২ বছর পর আবার জাতীয় সংসদ বসতে যাচ্ছে এবং নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হতে যাচ্ছে। এই অবস্থায় আওয়ামী সরকার এর কিছু বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝতে হবেঃ
১. এই নির্বাচন এ যত না লীগ এর জয় হয়েছে তার চেয়ে বেশি হয়েছে তার চেয়ে বেশি হয়েছে বিএনপি এর পরাজয়। “সরকার এর ৫ বছর আর জনগন এর ৮ ঘন্টা” – এই কথাটার এর চেয়ে ভাল উদাহারন আর মনে হয় দেয়া যাবে না। ৫ বছর পরে লীগ সরকার কে এই একই রকম “এসিড টেস্ট” আবার দিতে হবে। বাংলার জনগন এখন আর বাকি তে বিশ্বাস করে না, নগদ নগদ ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দিতে দুইবার চিন্তা করবে না। সোজা ভাষায় বিএনপি এর পরাজয় থেকে আ.লীগ এর বুঝতে হবে যে “একবার” নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা মানে “সারাজীবন” নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নয়।
২. সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল সেদিন একটা খুবই চমৎকার কথা বলেছেন যে “নির্বাচিত সরকার এর বুঝতে হবে যে জনগন তাদের কে ক্ষমতায় বসায়নি, জনগন তাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছে”। উনার কথার সাথে আমি সম্পুর্ন একমত।
৩. বিএনপি এর ভরাডুবির মুল কারণ দুইটি – বেগম খালেদা জিয়া এর দুই পুত্রের কীর্তি এবং সারাদেশ জুড়ে জামায়েতে ইসলামী এর অগ্রহনযোগ্যতা।
এইবার সারাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে যে পরিমান প্রচারণা হয়েছে তা নতুন প্রজন্ম এর কাছে জামায়েতে ইসলামী এর মুখোশ খুলে দিয়েছে। আ.লীগ সরকার এর কাছে সবাই আশা করে যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এর বিষয়টি তারা এবার গুরূত্বের সাথে দেখবে এবং যতো দ্রুত সম্ভব বিচারকাজ শেষ করবে। জংগীবাদ দমন করতে হবে। তবে এবার আর শুধুমাত্র সরকার এর বিবেচনার উপর সবকিছু ছেড়ে না দিয়ে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করা হবে।
আর দুর্নীতি এর বিষয়টি আ.লীগ এর না বোঝার কোন কারণ আমি দেখিনা !
৪. দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রন, সন্ত্রাস দমন, মৌলিক অধিকারগুলি নিশ্চিতকরন, পানি-বিদ্যুৎ সরবরাহ- এই ব্যাপারগুলি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। এইগুলি বুঝতে আ.লীগ সরকার এর কোন রকেট বিজ্ঞানী এর দরকার পরবে না।
৫. মন্ত্রনালয় বন্টন এর ক্ষেত্রে সুবুদ্ধির পরিচয় দিতে হবে। কিছু টেকনোক্র্যাট লোকজন (কিবরিয়া সাহেব এর মত) নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।
৬. জাতির পিতার “স্বপ্ন” বা এই সংক্রান্ত বিষয়গুলি ঝেড়ে ফেলতে হবে। বঙ্গবন্ধু পুরো বাংলাদেশ এর, দেশের সব কিছুর নামকরন উনার নামে না করলেও জাতি কখনই উনার অবদান ভুলবে না। অতিমাত্রায় “বঙ্গবন্ধুকরন” আ.লীগ এবং বঙ্গবন্ধুর ভাবমুর্তি, উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
৭. আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ঠিক করতে হবে। আমাদের দেশে এখন তিন রকমের শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে – বাংলা মিডিয়াম, ইংরেজি মিডিয়াম এবং মাদ্রাসা। এদের কারো সাথে কারো কোন সামঞ্জস্য নেই। এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে এবং সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহন করতে হবে।
“একমুখী শিক্ষা ” নামক ভয়াবহ ব্যাপারটাকে চিরতরে বাতিল করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলির উপাচার্য পদে কোনভাবেই রাজনৈতিক নিয়োগ দেয়া যাবে না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে হবে।
সাধারণ জনগন এটা খুবই ভালমত বোঝে যে একটা সরকার এর পক্ষে রাতারাতি দেশের সব কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কিন্তু তারা অন্তত শুরুটা দেখতে চায়। আ.লীগ এর ঝানু নেতারা যদি এইবার, বিএনপি এর মত একটা দলকে মাত্র ৩২ টা আসন পেতে দেখে, জনগন এর মনের কথা (এবং তাদের ক্ষমতা ) না বোঝেন…তাহলে বোধহয় কোনকালেই বুঝবেন না!
জনগনের কথা বুঝবে বলেই আশা করি... 😐
আমিও মনেপ্রাণে তাই আশা করি !
“
অসাধারণ :salute:
ধন্যবাদ !
সিসিবিতে স্বাগতম। ৯৬-০২ ব্যাচের আরো একজন বাড়ল। 🙂
সুন্দর বিশ্লেষণ করছস। আমারো একই সমস্যা। অর্থনীতি আর রাজনীতি এই দুইটা বিষয় খুব কঠিন লাগে। 🙁
বাংলাদেশের জনগণের এই সচেতনতাই আমি বলব সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এবিসি রেডিওতে একজন বললেন তিনি বিএনপির সাপোর্টার। তারপরও ভোট নৌকায় দিয়েছেন, কারণ, দেশে তিনি শান্তি দেখতে চান।
আওয়ামী লীগ দিন বদলের অংগীকার করে এই নির্বাচন করেছে। দেখা যাক তারা কতোটুকু রাখতে পারে এই অংগীকার।
ওরা বুঝলেই হয়... :-B
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
chomotkar shampad bhaiya
tomar kotha gulo 16 anna juktipurno ebong ami mone kori j amra shobai jodi eki bhabe shocheton hoi charpasher rajnitir bepare tahole shonar bangla gorar shopno r beshi dur noy
hoyto amader projonmo e er shufol bhog korte parbe
cheers 🙂
ভালো বিশ্লেষণ ওমর :clap: :clap:
নতুন সরকার এই প্রজন্মের গ্রহণযোগ্যতায় থাকবেন এইটাই আশা করি।
সিসিবিতে স্বাগতম ওমর :clap: :clap:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আরে ওমর হাবিব সম্পদ ভাই নাকি? ভালো আছেন?
--------খালেক।
আমার মনে হয় না আ.লীগ এত কিছু বুঝবে, শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়া দুইজন মাথামোটা মহিলা ছাড়া আর কিছু নন (sorry for my langugage)। এরা এখন সাপের পাঁচ পা দেখছেন। প্রথম প্রথম শুরুটা হয় তো করলেও শেষ পর্যন্ত এরা আগের মতই নির্লজ্জ দলীয়করণ আর নামকরণ করবে এবং সন্ত্রাস দুর্নীতি দিয়ে দেশের তেরটা বাজাবে।
সব রসুনের একটাই ***
আমি ভালই আছি। তোমার খবর কি ?
আমি কিন্তু আজকের সংবাদ সম্মেলন দেখে কিছুটা আশাবাদী।
আজকেই মনে হয় টিভিতে দেখলাম সাংবাদিক এবিএম মুসা বলছেন 'আওয়ামী লীগের উচিত তারা এতো ভোটে কেনো জিতলো সেটা না ভেবে বিএনপি কেনো এতো ভোটে হারলো সেটা ভালো মতো ভাবা।
তাহলেই অনেক কিছু ইতিবাচক হবে'
আমার কথাটা পছন্দ হয়েছে।
সিসিবিতে স্বাগতম ওমর। 😀
বিশ্লেষণ ভালো হয়েছে। :thumbup:
স্বাগতম ওমর।
বিশ্লেষনগুলো যথার্থ হয়েছে।
চলো সবাই আশায় বুক বাঁধি।
ধন্যবাদ ভাই !
আসলে বিশ্লেষণের কিছু নাই, আমি যা লিখেছি সবাই তাই ভাবছে।
আমি খালি লিখে ফেলেছি, এর বেশি কিছু না !
বিশ্লেষণ ভালো লাগছে :clap: :clap: ।
আওয়াজ না দিলে টেরই পাইতাম না যে এইটা প্রথম লেখা 😛 ।
Life is Mad.
ঠিক কথা।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ধন্যবাদ সায়েদ ভাই !
আপনার লেখার আমি বিশাল ভক্ত।
সিসিবিতে স্বাগতম ওমর। তোমার বিশ্লেষণ খুবই ভাল হয়েছে।
মিথ্যা বলার জন্য ক্ষমা করতে পারলাম না ভাই।
ওমরকে সিসিবিয় ধারা অনুযায়ী কি পদে ভুষিত করা যায় রে ফৌজি বলতো?
অমায়িক চো... 😀
অথবা টেরোরিস্টাপু সামিয়ার বোমাক্ষেপের মুখোমুখি করা যায়। :grr: :grr: :grr: :grr:
খুবই সত্য কথা...... :thumbup:
কামরুল ভাইয়ের,
সেকেন্ডারি কোটেশনটা পুরাই পাঙ্খা... :salute:
সবশেষে, ওমরকে সিসিবিতে স্বাগতম :party: , বুকে আয় :hug: (বেশি কাছে আসিস না আবার...পোলাপান উলটাপালটা বুঝতে পারে... :khekz: )
যারা বুঝতে চায় নায় তাদেরকে দেখি তুমি বেশ সহযোগিতা করছো। :grr: :grr: :grr:
এই কারণে গুনীজনরা বইলা গেছেন,
:-B :-B :-B
আশিক ভাই :hug: ওমর ভাই
আমি :dreamy: :dreamy: :dreamy:
চরম হইসে ভাই, স্বাগতম আপনাকে :hug: :hug: :hug:
ওমর, স্বাগতম :hug:
তোমার বিশ্লেষণ চমৎকার হয়েছে। :clap: :clap:
এই কথাটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। এখন দেখি নির্বাচিত সরকার কি ধরনের চিন্তাভাবনা করে!
এ সময়ে এরকম একটা লেখারই দরকার ছিল। আওয়ামী লীগের কাছে আমরা কি চাই সেটা বোঝানোর দায়িত্ব কিছুটা আমাদেরও নিতে হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জনগণকে সবসময়ই সরকারের পিছে লেগে থাকতে হবে, নইলে যেকোন সময় পথভ্রষ্ট হওয়ার আশংকা থেকে যায়। আমরা লেগে থাকলে আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই বুঝবে। আর তাকে বুঝতেই হবে, না বুঝলে যে বাংলাদেশ আরও পাঁচটি বছর পিছিয়ে যেতে থাকবে।
লীগের ইশতেহারটা এবার ভাল করে ঘেঁটে দেখা যায়। অন্য দলগুলোর ইশতেহার দিয়ে এখন আর কোন লাভ নেই। এবার লীগের ইশতেহার খুটিয়ে খুটিয়ে সব প্রতিজ্ঞার কথা বের করে আনার সময় হয়েছে। তাহলেই বোধহয় লীগকে সঠিক পথে রাখা যাবে।
সবশেষে, সিসিবিতে স্বাগতম ওমর ভাই।
স্বাগতম,ওমর ভাই....
ওই কে আছিস,ওমর ভাইরে এক কাপ ছা দে....
জটিল বিশ্লেষণাত্মক লেখা। :clap: :clap:
ব্লগে স্বাগতম। ভাল বিশ্লেষন করেছ। প্রতিটি লাইন পছন্দ হয়েছে।
ভেবেছিলাম একটি লিখব, দেখি মন্ত্রী পরিষদটা কেমন করে। মেনন অবশ্য বলেছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তারা করবে, টিভিতে দেখলাম।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
অন্তত বিগত চারদলীয় জোট সরকারের মত একটা বড় উদাহরণ তো শেখ হাসিনার সামনে থাকল!
সকালে শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলন দেখলাম, নিজেরাও মনে হয় এতটা আশা করে নাই।
কারণটা বুঝতে পেরেছে বলে মনে হ্ল। এখন কাজ করে দেখাতে পারলেই হয়। আসলেই যদি সদিচ্ছা থাকে, আওয়ামী লীগকে অনেক বিষয়ে ছাড় দিতে হবে। তা না হলে অবার সেই পুরনো মদ নতুন বোতলে... 😐
স্বাগতম ওমর ভাই। :tuski: :tuski:
লিন্ডাও সম্মেলন নিয়ে তাড়াতাড়ি লিখা ফেলান, কার সাথে কি নিয়া গেজাইলেন। আগ্রহ নিয়া বসে রইলাম। :dreamy: :dreamy:
লিন্ডাও নিয়া লেখাটা আসতেসে !
চিন্তার কোন কারণ নাই !
ওমর,াওনেকদিন পর আসলাম সিসিবিতে।
বিশ্লেষণটা অনেক সুন্দর।কিন্তু দুঃখের কথা হইতেসে রাজনীতিবিদরা এগুলি বুঝেও না বুঝার ভান করে।
এর পিছনে কিছু ব্যাপার আমি বলি,এগুলি একান্ত আমার নিজস্ব মত।
রাজনীতিটা হলো মূলত একটা ব্যবসা ।রাজনীতিবিদরা টাকা ইনভেস্ট করে আসেন।সো তাদের উদ্দেশ্য বেশিদিন ক্ষমতায় থেকে জংনের কল্যান নয় বরং জনগনের টাকা মাইরা কত তাড়াতাড়ি চালান উঠানো যায়। আমাদের চাওয়া পূরণ করে আবার ক্ষমতায় এসে তাদের চালান তুলতে লাগবে ১০ বা ১৫ বছর সেখানে লুটেপুটে পরেরবার ক্ষমতায় না এলেও পাঁচ বছরে চালান উঠে যায়।সো ংদে বিশ্বাসী বাঙালি।লুটোপুটো ,জংন থোড়াই কেয়ার।
ও হ্যা, আর ক্ষমতা? সেটা পাঁচ বছর অপেক্ষা করলেই হয়।কারণ ভালো দেশ চালালে পুজিবাদী গোষ্ঠী কোনমতেই সেই সরকারকে দুবার আসতে দিবে না ক্ষমতায়।
সাম্রাজ্যবাদী চিলের সামনে আমরা শুধুই নিরীহ ইঁদুর।প্রতিবাদ করার ক্ষমতাটুকুও আমাদের নাই।
ধন্যবাদ।
**পুনশ্চ: সিসিবিতে স্বাগতম।
তিন বছর পর নিজের কমেন্ট দেইখা নিজেই অবাক হইলাম !!! আমার কথা প্রায় অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেছে। অথচ না ফললেই আমি বেশি খুশি হতাম !!!
বাহ :clap: :clap: :clap:
ব্লগে স্বাগতম
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই