ছবির এই লোকের নাম আমি জানি না। জানতে ইচ্ছেও হয়নি। কারণ আমি তখন অবাক বিস্ময়ে তাকে দেখছিলাম। তার মুখ দিয়ে গল গল করে ফেনা বের হচ্ছিলো আর সারা দেহ কাঁপছিলো ঠিক টিকটিকির কাটা লেজের মত। টিকটিকির সদ্য কাটা লেজ জীবনে না দেখলে আমি হয়ত এই লোকের কাঁপাকাঁপির কোন উপমা খুঁজে পেতাম না।
এভাবেই সে DMCH এর admin wing এর সামনে মাটিতে পড়ে ছিল। এটা রোজা শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগের ঘটনা।
পাশে দাঁড়ানো পুলিশকে জিজ্ঞেস করে জানলাম তার পরিচয়। সে চোর। অত্যন্ত সেয়ানা চোর। তাকে “my favourite hobby” রচনা লিখতে দিলে সে লিখবে, এসির তার চুরি করা। এভাবেই সে নেশাতজাত দ্রব্যের খরচ চালায়। আগের দিন সন্ধ্যায় পুরোপুরি হেরোইন এর নেশায় চুর হয়ে ষষ্ঠবারের মত এই কাজ করতে গিয়ে হাতে নাতে ধৃত। সেয়ানা বললাম এইজন্য যে, হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্ট স্যারের উপস্থিতিতে তার রুমের এসি থেকে চুরি করার চেষ্টা চালায়।
বর্তমানে, তার “নেশা উঠে যাওয়ার” এবং নতুন করে হিরোইনের সাপ্লাই না পাওয়ার কারণে তার এই অবস্থা। মেডিকেলিও ভাষায় withdrawal syndrome. স্নায়ুর উপর প্রভাব বিস্তারকারী যে কোন ওষুধ বা ড্রাগের ক্ষেত্রে ঘটা অতি সাধারণ ঘটনা এটি।
কোন মানুষ কি সুস্থ্য মস্তিষ্কে চাইতে পারে এভাবে রাস্তার আবর্জনার মত পড়ে থাকতে? লোকটা গরীব বলে তার এই করুণ পরিণতি নিজ চোখে দেখতে পেলাম।কিন্তু কত সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে মেয়েদের বেডরুমে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনা আমাদের গোচরেও আসবে না কখনো। কেউ শিক্ষাও গ্রহণ করবে না।
ভাইরে ভাই, আল্লাহর দুনিয়ায় এত সুস্বাদু খাদ্য থাকতে তোদের চেখে দেখার সাধ হয় নেশাজাত দ্রব্য। তোরা ফাস্ট ফুড খা, বার্গার খেয়ে হার্ট এটাক করে মর। মানুষ অন্তত হরলিকসের বয়াম নিয়ে হাসপাতালে দেখতে আসবে। ডাক্তার নাকে নল দিয়ে খাওয়াবে, বৌ কোলে করে বাথরুমে নিবে। শৌচ কর্ম করাবে। আবর্জনার মত ঘৃণ্য বস্তুর মত ধুঁকে ধুঁকে মরতে হবে না অন্তত।
কেউ জন্মগত ভাবে অ্যাডিক্টেড হয়ে জন্মায় না। সম্ভাবনাময় তরুণদের হাতে ধরে ধরে অ্যাডিক্টেড বানানো হয়। যারা এই কাজটা নিষ্ঠার সহিত করে যাচ্ছে তাদের চেহারাটা আমার একবার দেখতে ইচ্ছা হয়। বলতে ইচ্ছা হয়, “আসেন ভাই,আমার সাথে এক কাপ চা খান। আর যাওয়ার সময় আপনার ব্রেইনের হাইপো-থ্যালামাস অংশ টা কেটে রেখে দিবো। একটু দেখবো কোন ধাতুতে গড়া আপনার ওই বস্তু, যেখানে বিবেকের কোন স্থান নেই!”
কেউ জন্মগত ভাবে অ্যাডিক্টেড হয়ে জন্মায় না। সম্ভাবনাময় তরুণদের হাতে ধরে ধরে অ্যাডিক্টেড বানানো হয়। যারা এই কাজটা নিষ্ঠার সহিত করে যাচ্ছে তাদের চেহারাটা আমার একবার দেখতে ইচ্ছা হয়। বলতে ইচ্ছা হয়, “আসেন ভাই,আমার সাথে এক কাপ চা খান। আর যাওয়ার সময় আপনার ব্রেইনের হাইপো-থ্যালামাস অংশ টা কেটে রেখে দিবো। একটু দেখবো কোন ধাতুতে গড়া আপনার ওই বস্তু, যেখানে বিবেকের কোন স্থান নেই!”
- খুব দরকার ।
ভাইরে ভাই, আল্লাহর দুনিয়ায় এত সুস্বাদু খাদ্য থাকতে তোদের চেখে দেখার সাধ হয় নেশাজাত দ্রব্য। তোরা ফাস্ট ফুড খা, বার্গার খেয়ে হার্ট এটাক করে মর। মানুষ অন্তত হরলিকসের বয়াম নিয়ে হাসপাতালে দেখতে আসবে। ডাক্তার নাকে নল দিয়ে খাওয়াবে, বৌ কোলে করে বাথরুমে নিবে।
এই কথটা বার বার বলা উচিত
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
আহা রে! লোকটার জন্য মায়া হলো। নেশাখোর কিম্বা চোর হলেও মানুষ তো! কুপ্রবৃত্তির বশে আজ তার এই অবস্থা। তবুও তো মানুষের মত বলে মনে হয়!
দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ
লেখাটা সংক্ষিপ্ত কিন্তু ভয়ঙ্কর। কেঁপে উঠলাম, ভয়ে, দুঃশ্চিন্তায়, রাগে...
মাহবুব এর সাথে একমত। ভীত হ'লাম, কেঁপে উঠলাম।
খুব টাচি।
তোমার লেখার হাত ভালো। এরকম অভিজ্ঞতা গুলো লিখতে থাকো দু'হাত খুলে সিসিবিতে।
চোখের পর্দা খুলে দেয়ার মত লেখা।
"কেউ জন্মগত ভাবে অ্যাডিক্টেড হয়ে জন্মায় না" - কথাটা ঠিক কিন্তু এটাও বোধ হয় ঠিক যে, কোন কোন মানুষের মধ্যে জন্মগত ভাবে এডিক্ট হবার প্রতি কিছু একটা দুর্বলতাও কাজ করে।
আমি খুব ছোটবেলা থেকেই আমার পরিচিত সার্কেলে এমন অনেককেই দেখেছি যারা যেকোন নিষিদ্ধ জিনিসের কথা শুনে তা পরখ করার প্রতি সীমাহীন আগ্রহ দেখায়।
এই কথাটা বলছি কারো নেশার ঝোক জিনেটিক, একথা বলে তাকে দায়মুক্তি দেবার জন্য নয়। বরং, একথাটা মাথায় রাখার জন্য যে সবাইকে দু'একবার কুফল বর্ননা যে যথেষ্ট না, সেটা মনে করিয়ে দেবার জন্য।
কেউ কেউ যেমন দু'একবার শুনে বা না শুনেও কেবলই নিজে নিজে ভেবে এর থেকে দূরে থাকার মত সতর্ক, আবার কেউ কেউ থাকবে যারা একশত বার শোনার পরেও "দেখি না একবার পরখ করে, একবারে কি হবে" ভেবে এটার মধ্যে ঢুকবে।
ওদের জন্য প্রয়োজনে তাই একশো একবার বলতে হবে কুফলের কথা।
ড্রাগের কুফল তুলে ধরার জন্য চমৎকার একটা প্রয়াস।
সাধু, সাধু!!!
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
সাবলীল লেখনিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যা বর্ণনা করেছো। :clap:
কিন্তু এইটা কে স্যাটায়ার ট্যাগ কেন দিলে বুঝিনি।
নেশা'কে 'না' বলুন।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
নেশা জাতীয় দ্রব্যের প্রতি আগ্রহ মানুষের জেনেটিক প্রবনতার একটি অংশ হলেও ধর্মীয় ও সামাজিক বিধান রয়েছে বিবেক কে জাগ্রত করবার জন্য। আসলে আমরা সামাজিক ভাবে নেশা জাতীয় দ্রব্যের বিরুদ্ধে যথেষ্ট সক্রিয় নই। আমাদের ভাবটা এমন, "ওর ছেলে/মেয়ে নেশা করে করুক আমার ছেলে/মেয়ে তো করে না। ওটা নিয়ে আমার মাথা ঘামানোর দরকার নেই।"
এখান থেকেই মূলত নেশা প্রশ্রয় পেয়েছে।
নেশা যারা করে তারা কুফল জেনেও করে। যারা নেশা করে না তারা হয়তো কুফল জেনে কিছুটা দূরে থাকার চেষ্টা করবে। এটাও স্বার্থকতার পথে এক ধাপ। লিখতে থাকুন।