“সত্যি বিচিত্র এই দেশ”

হরতালের বিরোধিতা করলেই সে সরকারী দলের চামচা না,
রাজাকারের ফাঁসি চাইলেই সে আওয়ামীলীগ না,
একটা গণতান্ত্রিক দেশে প্রধান বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের-
-জেলে ভরার প্রতিবাদ করলেই সে বিএনপি না,
শাহাবাগের গণজাগরন সাপোর্ট করলেই সে নাস্তিক না,
জামাত নিষিদ্ধ হোক চাইলেই সে ধর্ম বিরোধী না।

আমাদের দেশের শিক্ষিত, বুদ্ধিমান কিছু মানুষ একই জিনিস চান, তারা সবাই ঘুরে ফিরে দেশের জন্যই ভাবে হয়ত। কিন্তু শুধু মাত্র ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল সাপোর্ট করে জন্য কাওকে দেখি পুলিশের গুলিতে মরা পিকেটার বা ছাত্রলীগের কোপাইয়া মারা বিশ্বজিতের জন্য খুব দরদ, পাখির মত মানুষ মারতেছে, শেষ হয়ে যাচ্ছে সব কিছু বলতে ফ্যানা তুলে ফেলতেছে। আবার এরাই ফটিকছড়ি বা শিবগঞ্জের ঘটনাকে উচিত জবাব দেয়া হয়েছে বলে ঘোষনা করতেছে।

আবার উল্টাটাও আছে। কেও কেও বলেতেছে ঠিক হইছে, গেছে রাস্তায় মারামারি করতে, মানুষ মারতে গেছে, মানুষের গাড়ি ভাংতে গেছে তাই পুলিশ গুলি করছে। ভাল হইছে মরছে। আবার এরাই বলতেছে ফটিকছড়িতে কি ভয়ংকর ভাবে মানুষ মারছে, ওদের দয়া-মায়া মানবতাবোধ বলে কিছু নাই। ওরা কসাই।

আবার দেখলাম ফটিকছড়ির ঘটনার নেপথ্যে কে কারা কি করছে সব কিছু পুলিশ বের করে ফেলছে। ভেরিগুড আমরাও তাই চাই। কিন্তু এর অনেক আগে শিবগঞ্জে জনগনের সম্পদ পল্লীবিদ্যুত কেন্দ্রে আগুন দিয়ে ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি করছে, সম্ভবত তিন হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। এর পেছনের ঘটনা বের হচ্ছে না কেন? ওটা আওয়ামীলীগের মিছিল ছিল না তাই?

আবার মির্জা ফখরুল কে পুলিশ ধরছে, তাতে আমার কি ক্ষতি হইছে? উনি বাইরে থাকলেই বা আমার কি উপকার হইত? তো ওনার জন্য আমি কেন হরতাল করতে যাব? কিভাবে এই হরতাল গুলো স্বতস্ফুর্ত মানুষের হরতাল হয়? বরং এই হরতালে দেশ সহ প্রতিটা মানুষের জন্য সমস্যা তৈরি করতেছে। একটা বা এক দল নেতা যারা বলেন তারা দেশের মানুষের ভাল চান, তাদের জেল থেকে বের করার জন্য পুরা দেশটার সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে তাতে তাদের মাথা ব্যথা নাই !!! তারা দেশ কবরস্থান হয়ে গেলেও ক্ষমতায় যেতে চান !!!

আরেক দল আছে যারা একটা গণতান্ত্রিক দেশে প্রধান বিরোধীদলের সব নেতা কে জেলে ভরে দিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চান। এবং চিৎকার করতে থাকেন তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলে। তারাও নাকি দেশকে ভালবাসেন। দেশের মানুষ উজার হয়ে গেলেও সমস্যা নাই। তারা ক্ষমতায় থেকে দেশ উদ্ধার করতে চান। বুঝিনা কি ভাবে এটা বলতে পারেন তারা যে তাদের আণ্ডারে নির্বাচন হলে সেটা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ হবে, যেখানে তাদের সময় এই দেশে একজন রিক্সাওয়ালার বাড়ীও যদি গোপালগঞ্জে হয় তাইলে সেই বেটা জোরকরে ভাড়া বেশী নেয় !!!

অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি রাজনীতিবিদের, নিজেদের দলের লোক ছাড়া বাকিদের এরা মানুষ বলেই গণ্য করে না। কিন্তু এই দেশটায় তো আমার মত মানুষই বেশী। যারা কোনো দলের সাথে সরাসরি কোনো ভাবেই সম্পৃক্ত না। এরা শান্তিতে ৫বছর থাকতে চায়, সস্তায় বাজার করতে চায়, নিজেদের অফিস,ব্যবসা, কাজকর্ম করতে চায়। নিজের ও পরিবারের জান-মালের নিরাপত্তা চায়। কিন্তু নির্বাচনের সময় ভোটও দেয়। তাদের নিয়ে কোনো দলের মাথা ব্যথা নাই। তাদের কি হচ্ছে না হচ্ছে সেটা কেও জানতেও চায় না। এদের মাথা বেঁচেই আপনাদের মানে রাজনীতিবিদের পেট চলে। একজন রিক্সাওয়ালাও তার রিক্সার যত্ন নেয়, একজন মুচিও তার বাটালি আর জুতার ব্রাশের যত্ন নেয়। কারন এটাই তাদের রুটিরুজি। আর আপনারা দেশে-বিদেশে হাতি ঘোড়া মারতেছেন। যাদের কাঁধে ভর দিয়ে নিজেদের এত বড় কিছু ভাবতেছেন, তাদের দিকে তাকানোর সময়ই আপনাদের হচ্ছে না !!!

৫৬১ বার দেখা হয়েছে

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।