বন্দী নিশাচর

রাত বারোটা-
সবে তো রাত শুরু
জেগে উঠছে কিছু আজব প্রাণীর দল।
ক্লাশ টুয়েলভের সবচেয়ে সুবোধ বালকটা
মাত্র রুমের দরজা খুলে বের হল।
ডিউটি মাস্টার চলে গেছে-
হাউস বেয়ারাও ব্যস্ত সুখের নিদ্রায়,
মোবাইলের চার্জও শেষ।
এইত সময়-
ছক কষার।
হাতে অনেক কাজ বাকি-
টিভি রুমটা খুলতে হবে,
চ্যাম্পিয়নস লীগের ম্যাচ আছে-
অমুকের মনটা আজ ভাল নেই,তাই-
সে ব্যস্ত টেংকিতে ওঠার রাস্তা বানাতে,
সারাটা রাত আজ চাঁদ মামাকে সঙ্গ দিবে।
ওপাশেই এক রুমে হঠাৎ আলো জ্বলে উঠল,
বিচ্ছুরিত হবার আগেই তা ঢেকে গেল মোটা কম্বলে,
আজ পার্টি হবে,
রাতভর পার্টি,
মুড়িচানাচুর পার্টি,
তাই পেয়াজ-মরিচ কাটার তোড়জোড় চলছে।
হঠাৎ কার যেন মুঠোফোন কেপে ওঠে,
স্ক্রিনে নাম্বার টা দেখে ঝকঝক করে ওঠে
ওপরের দু পাটি দাত।
প্রিয়ার ফোন এসেছে-
কাভার্ডের ওপাশে চেয়ার নিয়ে বসে পরে-
“এই রাত শুধু দুজনের।”
কেউ একজন মনে করায় দেয়-
“জুতা পালিশ করে রাখিস, কাল তো প্রিন্সিপ্যাল প্যারেড।”
“-আরে সকালে উঠে দেখা যাবে।আগে ম্যাচ দেখে আসি চল। রিয়াল আজ জিতবেই।”
সাদা জার্সিটা গায়ে চড়িয়ে রওনা দেয় টিভি রুমের উদ্দেশ্যে।
রুমের দরজা খুলে আরো বের হতে থাকে,
আসতে থাকে আরো একদল অদ্ভুত প্রানী।

১,৯১৫ বার দেখা হয়েছে

৮ টি মন্তব্য : “বন্দী নিশাচর”

  1. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    সেই নূপুর। দৃশ্যপট কিভাবে পালটায় যুগের সাথে।
    মোবাইল, ডিশটিভি এসব তো আমাদের আমলে জরায়ুর ওপাড়ের, সম্ভাবনার অপার জগতের।
    পেন ফ্রেন্ডশীপ ছিলো। অডিটোরিয়ামের গ্রীনরুমে পেছনের ঘুলঘুলি জানালা দিয়ে ঢুকে টিভি দেখা বা জিমনেশিয়ামে কলেজ কর্মচারীদের ভীড়ের কোনায় চাদর বা কম্বল মুড়ি দিয়ে খেলা দেখা। এমন ঘটনা কিছু আছে। হলে হলে টিভি আসেনি তখনো।
    জানালায় কবমল লেগেছে অগুন্তি রাতের গভীরে। এটায় মিল আছে বটে।
    সময় ...

    জবাব দিন
  2. মুজিব (১৯৮৬-৯২)

    আহ! কতকিছুই না বদলে গেছে, শুধু বদলায়নি রাতে জাগা, রাত জাগা...
    :clap: :clap: :clap:


    গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মুজিব (১৯৮৬-৯২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।