১.
হুইস্কির বাংলা পরিভাষা হলো সোনালী শিশির। সম্ভবত সুনীলের ছবির দেশে কবিতার দেশে বইতে পড়েছিলাম। মূলতঃ একটা ফাঁকিবাজি ব্লগ লিখতে বসার কথা পরিকল্পনা করে মনে হলো নামটা অন্তত শ্রুতিমধু হওয়া চাই। তখনই সোনালী শিশিরের কথা মনে হলো। একটি পাবের ট্রিভিয়া নাইটে মাঝে মাঝে যেতাম। কয়েক বন্ধু মিলে একটি দল করে ট্রিভিয়ায় অংশ নিতো। সেখান থেকে আরো এক দঙ্গল লোকজনের সাথে পরিচয়। ট্রিভিয়ার পাশের দলের এবং পাশের টেবিলের ড্যান নামের লম্বা পনিটেলওয়ালা মধ্যপঞ্চাশের ভদ্রলোক সবসময় ডাবল-হুইস্কি অর্ডার করতেন। সোনালি শিশিরের কথা মনে হতে ড্যানের বরফ টুকরো ভর্তি হুইস্কির গেলাশটা ছবির মতো চোখে ভেঁসে ওঠে।
২.
এবছর আরো তিনখানা ব্লগ লিখেছিলাম সর্বসাকুল্যে। লেখার পিছনে অনুঘটক ছিল শাহবাগ আন্দোলন। আজকাল আর আগের মতো ব্লগ লেখা হয়না তাই আমার উদ্দেশ্য ছিল শাহবাগের ঘটনার পরম্পরায় আমার মাঝে কি ভাবনা প্রতিক্রিয়া হচ্ছিল তা কিবোর্ড-বন্দী করা। আমাদের সমাজ অনেক বেশি পোলারাইজড এবং অসহিষ্নু – সেটা তো নতুন কিছু নয়। যেটা হতাশ করেছিল তা হলো আন্দোলনটার মুখ থুবড়ে পড়ার পর মানুষের উন্নাসিকতা। আন্দোলন নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য এবং নিরবতা। সব আন্দোলন যে সফল হবে তেমন কথা নেই। সোশ্যাল মিডিয়া এবং ব্লগ উদ্ভুত আন্দোলনগুলোর একটা ধরন হলো আন্দোলনগুলো সবার, কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সাধারনত থাকে না। প্রোপাগান্ডা, স্যাবোটেজ এসব তো থাকেই। অকুপাই ওয়াল স্ট্রীট, তাহরীর থেকে শাহবাগ কোনটাই সেই অর্থে প্রথাগতভাবে সফল আন্দোলন না। কিন্তু বহুমাত্রিক প্রভাব রেখেছে। গুরুত্বপূর্ন বার্তা পৌছে দিয়েছে। তুরস্কের ইস্তানবুলে যে আন্দোলন চলছে সেটাও কিছুটা শাহবাগের চরিত্রের। তবে অবস্থান সরাসরি কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে হওয়ায় পুলিশ এবং জনগণ সাংঘর্ষিক অবস্থায়। আন্দোলন শুরু একদল পরিবেশবাদীর পার্ক রক্ষা দিয়ে, শেষে এসে সেক্যুলার এবং ইসলামপন্থীদের রাজনৈতিক দ্বন্ধ। তুরস্কের আন্দোলনকারীদেরও বলা হচ্ছে নাস্তিক! ওনুর এবং গুলডেন দুই তুর্কি বন্ধুর আমন্ত্রনে এক বিকেলে এখানে ওদের এক্সপ্যাটস প্রটেস্ট দেখতে গিয়েছিলাম। সেই একই ব্যাপার প্রবাসে শাহবাগের মতো এক টুকরো গেজি পার্ক তারাও বানিয়েছে। তারুণ্যের আন্দোলনের ভাষা সবখানেই এক। কট্টর এবং কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে হতাশা থেকে যার জন্ম।… মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ট এবং অধ্যুষিত দেশগুলোতে এসব আন্দোলন সফল হোক আর না হোক সবখানেই কট্টরপন্থীদের জয়জয়কার। এটাই যেন নিয়তি।
৩.
মাস খানেক আগে এক বন্ধুর বন্ধু বেড়াতে এসেছিল। তাদের সাথে চায়ের আড্ডা দেবার কথা ছিল। সেই চা আড্ডা ডিনার হয়ে মাঝরাত পর্যন্ত গড়ায়। বন্ধুর বন্ধু পেন স্টেটে গবেষনা করছে তুলনামূলক সাহিত্যে, বিষয় সমসাময়িক সাহিত্যে স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র আন্দোলনের প্রভাব এবং রাজনৈতিক ন্যারেটিভস, বিশেষভাবে মাহমুদ দারবীশের কবিতায়, লেখায়। আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা কথা চালিয়েছিলাম মুসলমান অধ্যুষিত দেশগুলো কেন পিছনে হাঁটে। পঞ্চাশ, ষাট এবং সত্তরের দশকের চিত্রটা বেশ উল্টো ছিল। অনেক বেশি আধুনিকতাবাদে প্রভাবিত হচ্ছিল। এখন হচ্ছে তার বিপরীত। কি কারণে যেন আত্মবিশ্বাস এবং পরিচয়ের সংকট বেড়ে যাচ্ছে। মানবিক বোধের জায়গা ধর্মানুভূতি দখল করে নিচ্ছে। এমনকি শহুরে শিক্ষিত সমাজেও নব্য ইসলামিক ঢেউ। অনেকক্ষেত্রে সেটা কট্টরপন্থী ইসলাম। ক্ষমতা, আধিপত্যের দ্বন্ধ এবং অবিশ্বাস। উদার ইসলামিক সংস্কৃতি কোথায় বারবার কট্টরপন্থীদের কাছে মার খায়। এটা তো শুধু ফেইথ কিংবা স্পেরিচ্যুয়ালিটির ব্যাপার নয়। এমনকি পশ্চিমা বিশ্বের যেখানে যেখানে মুসলমান জনসংখ্যা বেশি সেখানে মসজিদ কেন্দ্রিক তৎপরতা বেড়েছে। যেটা আসলে হয়তো মাত্র দুই দশকের ট্রেন্ড। নাইন-ইলেভেন নিশ্চিতভাবে সবথেকে প্রভাবশালী প্রপঞ্চনা সাম্প্রতিক বিশ্বে। যার প্রভাব পৃথিবীর সব মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে বহুমাত্রিক এবং জটিলভাবে।
৪.
বৃহস্পতিবার রাতে বন্ধু এভান এবং আমি ফ্রিঞ্জ ফেস্টিভ্যালে ‘কিপার’ নামের মনস্তত্ত্ব এবং স্মৃতি জটিলতা নিয়ে রচিত/অভিনীত একটি নাটক দেখতে গিয়েছিলাম। আমার অবশ্য কিপার নিয়ে তেমন বেশি আগ্রহ ছিল না। এভানের ব্যাকগ্রাউন্ড হলো নিউরো সায়েন্স তাই তার উৎসাহ বেশি ছিল। আমাকে যেতে হয়েছিল কারণ আগের উইকএন্ডে আমি দ্য পিট নামের একটা নাটক দেখতে এভানকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিপার ছিল ইন্টার্যা কটিভ থিয়েটার ধাচের নাটক। মানে দর্শকদের পারফর্ম করানো হয়েছিল। এমা নামের ভিক্টোরিয়া ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একজন থিয়েটার শিল্পীর একক অভিনয়ের নাটক ছিল কিপার। সবসাকুল্যে পনেরজন দর্শক ছিল, ইমা সবাইকেই টেনে বের করেছিল দর্শকসারি থেকে মঞ্চে। সে এক নাস্তানাবুদ অবস্থা। হয়তো সে কারণেই নাটকটার বিষয়বস্তু জটিল হওয়া সত্ত্বেও মজাই লেগেছিল।
যেহেতু কিপারের বিষয়বস্তু ছিল স্মৃতি কিভাবে জীবনকে প্রভাবিত করে, থিয়েটার থেকে বের হয়েও নাটকটার রেশ মনের গহীনে ছিল খানিকক্ষন। নাটকের শেষে আমরা দুজন খানিকটা বাস্তবে ধাতস্ত হয়ে আর্ট সেন্টারের পাশের রিড্যু কান্যাল ধরে হাটার পরিকল্পনা করলাম সেই রাতে। এভান একবার মাস দেড়েকের জন্য নেপাল এবং ভারতে বেড়াতে গিয়েছিল। সেই গল্প দিয়েই সে রাতের কথা শুরু। লতায় পাতায় সেই গল্প ঢাকা, টরোন্টো বহু জায়গার কথা ঘুরে মিউনিখ (২০০৫) সিনেমা পর্যন্ত গড়ায়। তারপর এভান প্রথমবারের মতো ওর পারিবারিক ইহুদী পরিচয়ের কথা আমাকে বলে। এভানকে চিনি জানি বছরখানেক, কেউই আসলে কারো ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে মাথা ঘামাইনি। প্রয়োজনও ছিল না। হয়তো কিপার নামের নাটকটির প্রভাবে অথবা রাতটা অন্যরকম ছিল আমরা অনেকক্ষন ইহুদি এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বী সমাজ, ইসরায়েল, প্যালেসটাইন, মধ্যপ্রাচ্য, হলোকাস্ট, ইহুদি কিংবা ইসলামিক পারিবারিক পরিমন্ডলে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কেমন এসব নিয়ে থিক ডিসকাশন চালালাম। কখন যে ‘নাইন এলেভেন মাস্টার-মাইন্ড’ এবং ‘ইহুদীরা-সবকিছু-নিয়ন্ত্রন-করে’ জাতীয় কন্সপিরেসি থিওরির কথা বলতে বলতে এলগিন স্ট্রীট ধরে বাসার উল্টো পথে হাটা শুরু করেছিলাম খেয়ালও ছিল না।
আমি হলোকাষ্ট নিয়ে কিছু সিনেমা দেখেছি। পড়েছিও কখনো, কখনো। এভান না বললে হয়তো এভাবে জানা হতো না জন্মের পর যখন মানুষ বুঝতে শুরু করে ইহুদী এবং বাদবাকি বিশ্ব – এবং নিজের পরিচয় সেটা কখনো কখনো কেমন আনকমফরটেবল অনুভূতি হয়। কেউ সেই ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করুক আর না করুক। ইহুদীবাদ তার সাংস্কৃতিক পরিচয়। সেটা ঠিকই অস্তিত্ত্বে সেঁটে থাকে। অস্থিত্ত্বের জন্যই ইহুদীরা একত্রিত অন্যদের চেয়ে বেশি, আরেকবার হলোকাষ্টের মুখোমুখি হতে চায় না। ইসরাইল এবং ফিলিস্তিন স্বাভাবিকভাবেই অনেকক্ষন দখল করে ছিল কথোপকথন। সত্যি কথা বলতে এভানের ইসলাম ধর্ম, বিভিন্ন পন্থা, তরিকা এবং আরব ইতিহাস এতো বেশি পড়াশোনা। কিন্তু আমার জন্য যেটা আগ্রহের ছিল সেটা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে পরিচিত হওয়া, ভিন্ন এনালজির সাথে পরিচিত হওয়া। এভানের জন্ম বেড়ে ওঠা টরোন্টোতে হলেও বর্ধিত পরিবার থাকে জেরুজালেম এবং শিকাগোতে – তাদের কি দৃষ্টিভঙ্গি। এমন না যে আমি বা এভান দুজনের সবকথায় সম্মত হচ্ছিলাম। কিছু ইস্যুতে যে বরং আমাদের একে-অন্যের অসম্মতি সেটাতেই সম্মত হচ্ছিলাম। কিন্তু কোথায় যেন ঠিকই একটা শূন্যস্থান পূরণ হচ্ছিল। কারণ আমি যখন থেকে প্যালেসটাইন এবং ইহুদী নিয়ে যা জেনে-শুনে এসেছি সেই সূত্রগুলো সব একই রকম। আর ফিলিস্তিনি যাদের চিনি, ইয়াফা কিংবা ম্যারিয়ান যখন প্যালেসটাইন নিয়ে বলে সেটা ইহুদীবিরোধী না হলেও শুধু একতরফা ইসরাইল বিরোধী। তাই আমি যেহেতু জানি খুবই কম এবং সরাসরি সম্পর্কিত না – তাই এভানের কথা শুনে মনে হচ্ছিলো একটা মিডল গ্রাউন্ডে দাড়িয়ে। হয়তো সে রাত্রে কিপারের একটা ভূমিকা ছিল। কারণ পরে যখন এভানের সঙ্গে দেখা হয় গতকাল সেসব কথা আর কেউ উঠায়নি – জানিনা সেটা ইচ্ছে করে নাকি অসচেতনভাবে।
৫.
মানুষের সাথে পরিচয় হলে একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হই কখনো-কখনো – বাংলাদেশের জীবন কেমন? কেউ যখন এটা জিজ্ঞেস করে তখন আমার অবস্থা হয় কঠিন কোন পরীক্ষায় নার্ভাস ছাত্রের মতো। যারা এই প্রশ্নটা করে তারা আসলে এটা জানতে প্রশ্নটা করে না যে পৃথিবীর সবথেকে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট বা দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত আছে বাংলাদেশের। সেই কারণেই আমি বেশি নার্ভাস হই। কারণ বিদেশের এমন কি দেশের মিডিয়ায় সবসময় বাংলাদেশ দুঃসংবাদ নিয়ে থাকে। যে সংবাদগুলো দিয়ে আমার ভাবনাও প্রতিনিয়ত আবর্তিত হয়। রানাপ্লাজা যখন ধ্বসে পড়ে, অনেকের অনেক প্রশ্ন ছিল। এতো বড় দুর্ঘটনা মানুষের জানতে চাওয়ার আগ্রহ খুব স্বাভাবিক। তাও কেন যেন বিব্রত লাগে কখনো কখনো। দ্বিধান্বিত থাকি দেশের কথা মানুষের কাছে কিভাবে বলা উচিত। গ্রামের কথা বলি, পাবনার গল্প বলি, পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা, খাবারের গল্প বলি, মানুষের জীবন সংগ্রামের কথা বলি। বলি না যে বড় বোনকে যখন হেফাজতের ঢাকা ঘেরাওয়ের সময় রাস্তায় বাসায় ফেরার পথে একদল লোক “কাপড় ঠিক করেন, মাথায় কাপড় উঠান” বলে শ্বাশ্বানোর গল্প টেলিফোনে শুনতে কেমন অস্বস্তি বোধ করেছিলাম।
৬.
সুখ হলো প্রজাপতির মতো। যতো এটাকে ধরতে চাও, ততো বেশি যেন অধরা হয়ে পালাতে চাইবে। কিন্তু যখন মনযোগ অন্য কিছুতে স্থিত হয়, তখন সে ধরা দেয় এবং অনায়াশে কাঁধে আলতো ছোঁয়ায় ভর করে জানায় যে জীবন আসলে সুন্দর …
৭.
“নই ঘোড়া, নই হাতি, নই সাপ বিচ্ছু
মৌমাছি প্রজাপতি নই আমি কিচ্ছু।
মাছ ব্যাং গাছপাতা জলমাটি ঢেউ নই,
নই জুতা নই ছাতা, আমি তবে কেউ নই!”
১ম 😀
🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
অনেকদিন পর রাব্বী ভাই, বেশ লাগলো :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ধন্যবাদ
আমার বন্ধুয়া বিহনে
:boss:
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
ধন্যবাদ
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী ভাই, অনেক দিন পর... 😀
অনেক কিছু লিখে আবার মুছে দিলাম...মনের কথা মনের মধ্যে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ...
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
😀 জুনারে কতদিন পর!
বুদ্ধিমান হতে পারলাম না ... আফসুস!
আমার বন্ধুয়া বিহনে
পুরাই ফাঁকিবাজি ব্লগ, হান্টসভিলের স্বর্ণকেশি ভাবীর গল্প নাই এইখানে 🙁 🙁 🙁
জরুরী কথা আছে; ৪ তারিখ পরীক্ষা শেষ করে আওয়াজ দেবো। যুগোপযোগী কিছু তত্ত্বালোচনা/সাজেশন লাগবে। :grr:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
হান্টসভিল
তোর সাথে কথা হয়না অনেকদিন। ব্যস্ততা কমলে একদিন সন্ধায় ফোন দিস 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
জুডাইজম আর যায়ানিজমের পার্থক্যটা খুব প্রকট, এজন্যই ইসরায়েল ইস্যুতে (যায়ানিজম) কেউ হলোকস্টের কথা বললে ভ্রূ কুঁচকে ফেলি।
ইহুদি জাতিসত্ত্বাকে আমার কাছে অনেক বেশি দৃঢ়চেতা বলে মনে হয়। বাঙালি জাতিসত্ত্বা বা ফিলিস্তিনি জাতিসত্ত্বা কোনো এক অদ্ভুত কারণে নিজেদের ওপর ঘটে যাওয়া বা ঘটে চলা হত্যাকাণ্ডকে সন্দেহাতীতভাবে নথিবদ্ধ করতে পারে নি, পারছে না। এজন্য গণহত্যাকারীরা সুযোগ পাচ্ছে নানা ছলছুতায় গণহত্যাকে লঘু করার, অপরাধীদের নিস্তার নিশ্চিত করার।
অনেকদিন পর আপনার ব্লগ পড়লাম। শাহবাগ নিয়ে কিছু না বলি, রিয়েল লাইফে কথা বলতে গিয়ে তিক্ততম অভিজ্ঞতা হয়েছে। বুঝতে পেরেছি যে চুপ থাকাই শ্রেয়।
আমার জন্য যেটা গুরুত্বপূর্ন মনে হয়েছিল সেটা হলো আমরা জেনোফোবিয়া চর্চা করতে শিখি ছোটবেলা থেকে। আমাদের কথায় হলোকাস্ট এসেছে কারণ এভানের পরিবার আদতে হাঙ্গেরিয়ান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আত্মীয়স্বজন হারিয়েছিল। ইহুদিরা অনেকে নিজেরাই যায়ানিজমের সমালোচক। পশ্চিমে যেটা এখন মাথা ব্যথার কারণ সেটা হলো ডাইভেস্টমেন্ট মুভমেন্ট।
শাহবাগটা আমার কাছে যে কারণে গুরুত্ব বহন করে সেটা হলো নিজেদেরকে বোঝার জন্য। আমাদের পরষ্পরবিরোধী বিপরীত অবস্থান - কনট্রাস্ট। একদিকে সহনশীলতা আবার একই সাথে পশ্চাদপদ। সফিসটিকেশনের পাশে সংকীর্ণতা। সেক্যুলারিজমের পাশে কট্টরপন্থা। জাতীয়তাবাদের পাশে ধর্মানুভূতি। একদিকে আবেগ আরেকদিকে মানুষিক দৈন্যতা। কন্ট্রাস্ট-গুলো অনেক গভীর এবং এগুলো যখন একটা আরেকটাকে চ্যালেঞ্জ করে তখন বিশাল সংকট তৈরি হয়।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
এইসব নিয়া চিন্তা করতে আর ভালু লাগেনা। তাড়াতাড়ি দেশে আসেন লাভবী ভাই। বান্দরবান গিয়া ঝরনার পাশে বসে মাতাল হইতে মঞ্চায়। এ জেবন আর ভালু লাগতেসেনা
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
জেবননেসার সাথে যুগাযুগ কর
আমার বন্ধুয়া বিহনে
:))
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
ষাট, সত্তরের দশকে শুধু মুসলিম বিশ্ব না সমগ্র পৃথিবীই একটা আধুনিক, সভ্য, ধর্মনিরপেক্ষ সমাজব্যবস্থার দিকে যাচ্ছিলো। নাইন ইলেভেন পরবর্তী বিশ্ব সে পথ ছেড়ে হাঁটা শুরু করেছে সম্পূর্ণ উলটো দিকে। আগের তুলনায় আমরা এখন অনেক ধার্মিক, সন্দেহ আমাদের শিকড়ে শিকড়ে।
😀
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
সেইটাই - পলিটিক্যাল ইসলাম চাঙ্গা হয়ে উঠেছে! তবে মনে হয় না যে এটা ঠিকে থাকতে পারবে না।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
হু ---
৬ তে সুখের সনগগা (বিজয়ে লিখছি) মানলাম না। বাদবাকী OK.
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
৬ এ আসলে সুখ বোঝার চেষ্টা মাত্র। আপনি বিষয়টা কিভাবে দেখেন?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সুখ নিয়ে আমার অনেক গবেষণা, অনুসন্ধান, আগ্রহ, উৎসাহ, উচ্ছাস, স্বপ্ন এবং চাওয়া-পাওয়ার হিসেব আছে। তার পেছনের কারণটা আমি আমার সিগনেচারে লিখেছি। আমার মনে হয় অন্য আর কিছুর মতো সুখী হবার জন্যও নিরন্তন চেষ্টা চালাতে হয়। নইলে সুখ হয়ে পড়বে প্রজাপতির কিম্বা খাঁচার ভিতরের সেই অচিন পাখির মতো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপনার চিন্তাটার কিছু ভাল দিক আছে। ফাংশনাল এ্র্যাপ্রোচে অবশ্যই সুখকে দেখা যায়। কিন্তু এমন কোন নিশ্চয়তা নেই যে কেউ শুধু চেষ্টা করলেই সুখী হতে পারবে। প্রজাপতি বা খাঁচার ভিতর অচিন পাখির মতো বিমূর্ত দিকটা না ধরলে জিনিসটা যান্ত্রিক শোনায়। আমার কাছে সুখ দুঃখ এসব সাবজেকটিভ বিষয়।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী ভাই, লেখাটা ভালো লাগলো বরাবরের মতই।
আমি সময় করে কিছু বিষয় বিশেষ করে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজের মাঝে হঠাৎ করে অতি ধার্মিক হয়ে যাওয়ার প্রবণতা আর প্রবাসে মুসলিম দের আত্ম পরিচয় দ্বন্দ্ব আর ধর্মকে আঁকড়ে ধরার ব্যাপারে কিছু বলতে আগ্রহী। আমার ভাবনা চিন্তা শেয়ার আর কি। আপাতত ব্লগের ডিফল্ট ফন্ট না থাকায় অভ্রতে টাইপ করতে গিয়া আমি সাইজ।
তুমি লিখো তোমার পর্যবেক্ষণ - আমি পড়তে এবং জানতে আগ্রহী। এই জিনিসগুলো আশপাশে দেখি সবসময় ঘটতে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে