সিসিবি তে প্রায়এক বছর পর যোগদান করেছি। অনেক দিন ধরে লেখার ইচ্ছা হচ্ছিল। আজ শুরু করে দিলাম। যদিও সিসিবির সব লেখা পড়ে শেষ করতে পারিনি। তবে এখন পর্যন্ত ‘বাবা’কে নিয়ে কোন লেখা চোখে পরেনি। তাই ‘বাবা’কে নিয়ে লিখতে বসে গেলাম। আগে কেউ লিখে থাকলে একটু জানাবেন।
এই ‘বাবা’ কোন বাবা তা মনে হয় ঝিনাইদহ আর রংপুরের ক্যাডেটদেরকে বলতে হবে না। যিনি আমাদের কলেজে আমাকে মোটামুটি খুব স্নেহ করতেন…। কেমন স্নেহ তা আশা করি বুঝায়ে বলতে হবে না। এই বাবার কাহিনী যারা জানেন না তাদের জন্য ছোট্ট করে বাবার গল্প বলছি।
প্রথমে স্যারের বর্ণনা দিয়ে নিই। সত্যি কিনা জানি না কিন্তু তার সম্পর্কে এ রকম একটা কাহিনী প্রচলিত ছিল যে কোন এক অমাবস্যার রাতে যখন কারেন্ট ছিল না,তখন তিনি তার বাড়ির উঠানে তার ট্রেডমার্ক গেঞ্জি(VEST) পড়ে দাড়িয়েছিলেন। এমন সময় এক চোরের আগমন। অন্ধকারে চোর মহাশয় ভাবলেন গেঞ্জিটি উঠানের তারে ঝোলান। যেমনি বোঝা তেমনি কাজ। চোর মহাশয় যেই না গেঞ্জিতে হাত দিয়েছেন ওমনি বাবা বলে উঠলেন “বাবারে তুই কি আমাকে নিয়ে যেতে এসেছিস না আমার গেঞ্জিটা নিতে এসেছিস বাবা”। বাবা খুব “ফর্সা” ছিলেন বলে চোর মহাশয় বুঝতে পারেননি যে আমাদের বাবা ওখানে দাড়িয়ে আছেন। :grr:
যাই হোক আমার সাথে স্যারের সুন্দর সম্পর্কের কাহিনীটা বলি। ক্লাসএইটে থাকাকালীন সময়ের ঘটনা। সে সময় আমাদের কলেজে রাতে ডিনারে রুটি দিত। সাথে মুখরোচক আলু ভাজি। যেটা অন্তত আমার কাছে খাওয়ার সেইরকম যোগ্য ছিল না। তাই যে কাজটি করতাম তা হল, ডাইনিংয়ে ঢুকেই সুন্দর করে একটি রুটি পকেটে চালান করে দিতাম যেটা নাইট প্রেপে ডাস্টবিনে রপ্তানী হয়ে যেত। এমন ভাবেই খুব সুন্দর দিন কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু কোন এক দিন ধরা খেয়ে গেলাম (ধরা খাওয়ার কাহিনী অন্য কোন সময় হবে)। ঘটনাটা গড়াতে গড়াতে এক্কেবারে ভি.পি. পর্যন্ত চলে গেল। তখনকার ডাইনিং হল প্রিফেক্ট মেহেদি ভাই এর বদৌলতে ভি.পি. থেকে রক্ষা পেলেও বাবা আমিরুল স্যারের হাত থেকে আর পেলাম না। তিনি খুব সুন্দর করে আমার গায়ে “রুটি চোর” উপাধি লাগিয়ে দিলেন। এরপর থেকে তার সামনে পড়লেই কথায় কথায় তিনি বলতেন “বাবা তুই তো ভাল ছেলে,কিন্তু রুটি চুরি করতে গেলি কেন”। মনে মনে ভাবতাম যাক বাবা বাসায় বাপ-মা তো আর জানল না,কোন সামস্যা নাই। এভাবে দিন কাটতে কাটতে পারেন্টস’ ডে চলে আসল।যথারিতি বাপ-মা কে নিয়ে ফর্মের এক কোনায় বসে কথা বলছি এমন সময় “বাবা” এসে হাজির। পাশ দিয়ে চলে গেলে তো সালাম দিতাম না, কিন্তু জোরপূর্বক সালাম নেওয়ার জন্য ঊনি যখন দাড়িয়ে গেলেন তখন আর সালাম না দিয়ে পারলাম না। সালাম, কুশল এবং বাবা-মার সাথে পরিচয় পর্ব শেষ করে অপেক্ষা করছি কখন তিনি যাবেন। কিন্তু কথায় আছে… “যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয়”। ঊনি আমার গুনকীতর্ন করা শুরু করলেন। “জামান তো ছেলে হিসাবে খুব ভাল, শুধু মাঝে মাঝে একটু দুষ্টুমি করে। না না ওটা তো এই বয়সে একটু করবেই। কিরে বাবা ঠিক বলছি তো। না না তুই বল বাবা ঐ যে তুই রুটি চুরি করেছিলি এটা কি আমি তোর পারেন্টস’কে বলেছি?”
এরপর কি হতে পারে আপনারাই বলেন……… ~x(
:))
'বাবা' কোন সাবজেক্ট পড়াতেন ? 🙂
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
অর্থনীতি। 😀
আমাদের সাইফুল্লাহ একবার পাবলিক স্পিকিংএ নিজের ভুট্টাচুরির কাহিনী বলতে গিয়ে উনার রোষানলে পতিত হয়েছিল। ওকে দেখলেউ স্যার বলতেন, ব্যাটা তুই তো ছোটবেলা থেকেই চোর। :grr:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ভাই আমি আর আপনি তো মিতা আমাদের নামের শেষে হাসান আসে 😀 @কামরুল ভাইয়া
মনে হচ্ছে
ঘটনা = ফুটবল
ভিপি = গোলপোষ্ট
😀
আমাগো ভিপি পামোশের সাইজ গোলপোস্টের চেয়ে কম ছিলনা 🙁
কাহিনীটা মজার।
কিন্তু ব্লগ থেকে স্যারের আসল নাম তুলে দেবার জন্য অনুরোধ করছি। নাম না বলে শুধু বাবা বলে সম্বোধণ করলেও মজার মাত্রাতে তেমন কোন হেরফের ঘটতোনা।
আবার খেয়াল করে দেখো স্যারের নাম বলার সময় কোথাও তুমি একবারও স্যার বলে সম্বোধণ করোনি। যেটা আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মোটেও ভালো লাগেনি।
এটা একটা ওপেন ফোরাম। কাজেই কিছু অলিখিত এটিকেট সবারই মেনে চলা উচিত বলে মনে করি।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
জিহাদ ভাই,অনেক ধন্যবাদ।আমিও ব্যাপারটা খেয়াল করিনি।
বাবার প্রতি এত শ্রদ্ধা ...... বাবার ছেলে এত দিনে পাওয়া গেলো......
:boss:
স্যার আমার খুব খুব প্রিয় ছিলেন। আমাকেও খুব ভালোবাসতেন। আশা করি, খুব জলদি সেসব নিয়ে কিছু লিখতে পারব। লেখাটা ভালো লেগেছে। আমার অনেক অনেক কথা মনে পড়ে গেছে। এমন লেখা আরও চাই। অনেক ধন্যবাদ জামান। ভালো থেকো।
ভাই আমি আর আপনি তো মিতা আমাদের নামের শেষে হাসান আসে
সাদিদ ভাই,ধন্যবাদ।
ভাইয়া পড়ে খুব ভালো লাগলো :clap:
আমরা আরেকজন স্যার কে বাবা বলতাম তার আবার ছেলে মেয়ে নাই ইংলিশ এর শিক্ষক 😀
কে মোস্তাফিজ স্যার??? ওনার কথাও শুনেছি।
আপনে ১০০ তে ১০০ পাইসেন উনি অনেক খারাপ ছিল 🙁
জীবনে প্রথম ১০০ পাইলাম।যাই মিষ্টি খেয়ে আসি।
মিজা পাইছি
:)) :)) :)) :pira:
আমাদের ফর্মমাস্টার ছিলেন... বাবারে, কত্ত কাহিনি মনে করিয়ে দিলিরে.........
ভাই আমি আর আপনি তো মিতা আমাদের নামের শেষে হাসান আসে 😀
মিতা হওয়ার এত শখ ক্যান... যা :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: শুরু কর...
🙁 :frontroll: :frontroll:
এক্সকার্শন থিকা আইসা আপনেদের সেই সাউন্ডের কাহিনী... 😛
মেহেদি ভাই আপনাদের ঘটনা গুলা লেখেন না ভাই????? plz plz plz
~x( আমি ক্লাস সেভেনে একবার বাবার কাছে ধরা খাইছিলাম ১৯৯৭ সালে।ডায়নিং হল প্রিফেক্ট শফিক ভাই উনার নাস্তা নিয়ে আসতে বলেছিলেন-আর বাবা ছিলেন ডিউটি মাস্টার।ধরা খাবার পর বেশ কিছুক্ষণ জ্ঞাণ দিলেন-"বাবারে,তুই শফিক ভাইয়ের নাস্তা নিয়ে যাস কেনো তুই কি ওর চাকর নাকি রে বাবা"।এর পর অবধারিতভাবে কোথাও দেখা হলেই সেই চা আর শফিক ভাইয়ের কাহিনী উনি বলবেনই।২০০৩ সালে আমি ক্লাস টুয়েল্ভে উঠে একবার ধরা খেলাম জুনিয়রকে দিয়ে ডায়নিং হল থেকে নাস্তা আনাতে গিয়ে-আর যায় কই!সেইখানে শুরু হল-"বাবারে,আগে নিজে শফিক ভাইয়ের চা আনতি এখন জুনিয়রকে দিয়ে চা আনাচ্ছিস,তোর তো বেশ উন্নতি হয়েছে রে বাবা!"
আর জুনিয়রকে ৬ বছর আগে আমাকে দেয়া একই দায়ালগ দিলেন,তবে এবার শফিক ভাইয়ের জায়গায় "মাসরুফ ভাই" বসিয়ে।
যা হোক-২০০৭ সালে রিউনিয়নে গিয়েছি-বাবাও রিইউনিয়নে এসেছেন।ডায়নিং হলের সামনে বর্তমান ক্যাডেটদের সাথে হয়ে গল্প করছি,হঠাৎ সেখানে বাবার আগমন।ফলাফল-ওই জুনিয়রদের কাছে আমার নাম হয়ে গিয়েছিল চা ভাই :bash:
এই লেহা যদি বাবার সংস্পর্শে আসা কোন বর্তমান ক্যাডেট পরে তবে তার প্রতি আমার উপদেশ-বাবা নেভার ফরগেটস,সো খুব খিয়াল কৈরা!
অফ টপিক- বাবাকে আমি অসম্ভব শ্রদ্ধা করতাম এখনো করি।আমার অর্থনিতি পড়ার পেছনে উনিও একটা কারণ
অফ টপিক- বাবাকে আমি অসম্ভব শ্রদ্ধা করতাম এখনো করি।আমার অর্থনিতি পড়ার পেছনে উনিও একটা কারণ
ভাই আমার ও 😀
অন টপিক- আমিরুল স্যার আমাদের হাউস মাস্টার ছিলেন, এবং উনি আমাকেও অনেক বেশী স্নেহ করতেন (আমাদের হাউসের রেড অ্যালার্ট পোলাপানের আমি ছিলাম অন্যতম এই কারণে) এবং স্যারের সবচেয়ে অপছন্দের কাজ হচ্ছে ধূমপান এই কারণে স্যার আমাকে আরো বেশী স্নেহ করতেন :bash:
"Never think that you’re not supposed to be there. Cause you wouldn’t be there if you wasn’t supposed to be there."
- A Concerto Is a Conversation
আশহাব,আল্লাহ বাচিয়ে দিয়েছেন যে উনার সামনে আমি কখনও ধূমপান করে ধরা খাইনি।খাইলে যে কি হত...!!!
আশহাব তুই সিগেরেট খাস x-(
আর কখনো আমার সাথে মিশবিনা
আম্মু বলসে যারা সিগেরেট খায় তাদের সাথে না চলতে B-)
আমার কাছ থেকে যে এক প্যাকেট বেনসন নিলি ?????
সেইটা কি করছস ????
হারামি সেইখান থেকে আবার একটা আমারে দিসিলিও x-(
:chup: :chup: :chup: :chup:
B-)
সিগেরেট দিয়া যে সেটা আবার মনে করাই দে আল্লাহ তাকে মাফ করবেন না মনে হয়।
এর পরে আপনার সাথে দেখা হইলে আমিও আপনাকে কিনা দিব এবার আসতে বললাম আপনি তো আসলেন না 🙁
:khekz: :just: :pira:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
:khekz: :khekz: :khekz:
পুরো নাম দেয়া আছে বলে শান্তি করে কমেন্ট করতে পারলাম না...
যাই হোক, মনের ঘৃণা মনেই রেখে দিলাম... 😛 😛 😛
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
আইহাই কি কন?বাবা তো ম্যালা ভাল লোক ছিল 🙁
জুনা ভাই,ঠিক করছি। আশা করি এখন কোনো অসুবিধা হবে না।
আঠারো বছর বয়সের সময়টাতে এই একজন মানুষকেই আমি ঠিকমতো বুঝতে পারি নাই। সব স্যারের ব্যাপারে আমার একটা নির্দিষ্ট ধারণা আর ভালো লাগা বা মন্দ লাগা ছিলো। একমাত্র আমীরুল ইসলাম স্যারকে নিয়ে বলতে গেলে আমি দ্বিধায় পড়ে যাই। মাঝে মাঝে এত রাগ হতো, কেন উনি এভাবে আচরণগুলো করতেন, যেগুলো সম্পূর্ণই তার স্বতন্ত্র অধিকার ছিলো। আবার কেনইবা মাঝে মাঝে তাকে অনেক দুঃখী আর সমব্যথী বলে মনে হতো!
এখন সাত বছর পার হয়ে মনে হয় ওনার সাথে দেখা হলে অনেক শ্রদ্ধাই করবো!
===
জামান, লেখা ভালো হয়েছে। তবে জিহাদের বলা বিষয়টা আমারও চোখে পড়লো। এটা ঠিক করে ফেলো।
ধন্যবাদ ভাই।আশা করি এখন কোনো সমস্যা হবে না।
আমি ভাবছিলাম উনি মনে হয় ইসহাক স্যার। উনিও খুব বাবারা বলে সম্বোধন করতেন। ইসহাক স্যার মারা গেছেন বেশ কিছুদিন আগে। আল্লাহ তাকে ভাল রাখুন। আমাকে অনেক আদর করতেন।
মজার পোষ্ট......ভালো লাগলো
ভাই, ধন্যবাদ।