এক দুষ্টু ক্যাডেটের গল্প ২০১৬ তে প্রথম প্রকাশিত হওয়ার পর আমি যে পাঠক-প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা লেখক হিসেবে আমার হৃদয় ভরিয়ে দিয়েছে। চেনা-অচেনা পাঠক আমায় জানিয়েছেন যে উপন্যাসটি পড়ে তাঁদের ভাল লেগেছে। যাঁরা আমার এই বইটি পড়েছেন তাঁদের জানাই অশেষ কৃতজ্ঞতা।
এ গল্পের ঘটনাগুলো এতো দ্রুত ঘটছে যে অনেকেই শুধু ঘটনাগুলোর ওপরই মনোনিবেশ করেছেন। ক্যাডেটরা কি করে তাই দেখেছেন। অনেকে ক্যাডেট কলেজে ইতিহাস বলে গন্য করেছেন। কয়েকজনের মুখে শুনেছি এটি ভাল শিশু-সাহিত্য হয়েছে। তবে আমার ভাল লেগেছে সেই সব পাঠকের সাথে কথা বলতে যাঁরা এই গল্পের চরিত্রগুলো নিয়ে আলাপ করতে চেয়েছেন। শিশু এবং যুবা জনগোষ্ঠী এ গল্প পড়ে অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধ পেয়ে আনন্দ পাবেন তা সত্য। তবে গল্পের বিষয়বস্তু নিতান্তই ছোটদের জন্য নয় তা বলার তাগিদ থেকে আমার আবারও একটি ভূমিকা লেখার প্রয়াস।
ইমু নামের একজন ক্যাডেট আমার গল্পের মূল চরিত্র। তাকে আমি তৈরী করেছি একটা ঘোরের মধ্যে বসবাস করে। অনেক বছর ধরে এই চরিত্র নিয়ে আমি এই ঘোরের ভেতর আছি। লেখার সময় আমি টের পাই নি যে এই চরিত্রটি তৈরী করতে অবচেতন মনে আমি রবীন্দ্রনাথের ফটিক এবং চার্লস ডিকেন্সের পীপ’এর ভাবছিলাম। বড়দের দ্বারা চালিত একটি পৃথিবীতে ফটিকের মত এক ধরনের অসহায়ত্ববোধ আমার ইমুর চরিত্রে চলে এসেছে। আবার পীপ’এর অপরাধ প্রবণতার ধরনও ইমুর মাঝে বোধ হয় বুনে দিয়েছি।
কয়েকটি প্রশ্ন আমার নিজের ক্যাডেট জীবনেই আমায় ভাবিয়েছিল সেগুলো এ গল্পে উঠে এসেছে। বড়দের পৃথিবীতে একজন শিশু বা একজন বালক কখন অসহায় বোধ করে? কোন পরিস্থিতিতে একজন শিশু বড়দের নিয়ম ভাঙ্গতে চায়? সে কি নিজে-নিজেই অপরাধী হয়ে ওঠে। আবার ইমুর মত একজন অপরাধীকে তার সতীর্থরা কেন পছন্দ করে? তাহলে কি তারা এক ধরণের সামগ্রিক অপরাধ-প্রবণতায় ভূগছে?
নতুন পাঠকদের আমি অনুরোধ করছি এ গল্প পড়ার সময় এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে।
বইটি নতুন প্রচ্ছদে প্রকাশ করার জন্য আমি আমার প্রকাশক শাহাদত ভাইকে ধন্যবাদ জানাই এবং প্রচ্ছদটি আঁকার জন্য ছোট ভাই চিত্রশিল্পী আবু সালেহ টিটুর প্রতি কৃতজ্ঞতা।
ইকরাম কবীর, ঢাকা।
জানুয়ারী ২০১৮
ইকরাম ভাই, আমার সালাম নিবেন। প্রথম বই প্রকাশের জন্য শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বইয়ের ফ্লাপে 'সশস্র' বানান ভুলটি খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছে।
বিবেক হলো অ্যানালগ ঘড়ি, খালি টিক টিক করে। জীবন হলো পেন্ডুলাম, খালি দুলতেই থাকে, সময় হলে থেমে যায়।