ঈমান আলীর হজযাত্রা

ঈমান আলী যেদিন তার স্ত্রী রাহেলার সাথে বসে হজ করার জন্য মক্কা-মদিনায় যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা সবাইকে জানাল, সেদিন থেকে তার চারপাশের মানুষগুলো দিন-থেকে-রাত হওয়ার মতো বদলে গেল। তার বন্ধু-স্বজন—সবার ব্যবহারে অজ্ঞাত এক পরিবর্তন লক্ষ করল সে। তার প্রতি সবার আচার-আচরণ বদলে গেল। এ সিদ্ধান্তে তার স্ত্রী নিজেও কিছুটা অবাক হলেও, নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে স্বামী যেন তার ইচ্ছে পূরণ করতে পারে সে ব্যপারে মনোযোগী হলো। স্বামীকে দীক্ষা দেয়ার সাহস নেই—তবে তার মনের গতি-প্রকৃতি বুঝে, বাঙালি বউয়ের অসীম ধৈর্য নিয়ে ধর্ম এবং আরব দেশের প্রসঙ্গ তাদের আলোচনায় আনতে শুরু করল। অকারণে হজের আলোচনা সে পাড়ে না। ঈমান আলী যখন বিষয়টি নিয়ে তার সাথে কথা বলতে চায়, শুধু তখনই তার মন বুঝে কথা বলে।

পঁচিশ বছর ধরে তার সাথে ঘর করে রাহেলা দেখেছে ঈমান আলী অন্য কারো কাছ থেকে ধর্মীয় দীক্ষা মানতে চায় না। কাউকে ধর্মের ছবক দেয়া তো দূরের কথা, কারো সাথে কখনও আলোচনা করতেও দেখেনি সে। নিজের ছেলে-মেয়েদের কোনো ধর্মোপোদেশ দিতে সে কখনও শোনেনি। ঈমান আলী শুধু বলেছে, ‘পড়াশোনা করো, নিজেই জানতে পারবে।’

বিয়ের প্রথম কয়েক মাসের মাথায় রাহেলা কথায়-কথায় বলেছিল, ‘হ্যাঁগো; তোমার ধর্ম-কর্ম করতে একেবারেই ভালো লাগে না দেখছি; বাবা-মা তোমার নাম দিয়েছেন ঈমান আলী—নামের প্রতি অন্তত কিছুটা ভালোবাসা দেখাও!’

স্ত্রীর কথা শুনে ঈমান আলী বিন্দুমাত্র বিচলিত হয়নি, রাগও করেনি। বরং আদর করে কাছে ডেকে বসিয়েছে।

‘শুধু ধর্ম-কর্ম করলেই বুঝি মানুষের মনে ঈমান আসে, রাহেলা? আমার অনেক সহকর্মী আছেন যাঁরা নিয়ম করে দিনে পাঁচবার পশ্চিমমুখি হয়ে দাঁড়ান, লম্বা-লম্বা পাঞ্জাবি ছাড়া আর কোনো পোশাক পরেন না, নামাজের ছলে কাজের সময় পার করেন—কিন্তু টাকা-পয়সা ছাড়া কোনো ফাইল ছাড়েন না। তোমার কি মনে হয় এরা ইমানদার হতে পেরেছেন? ধর্ম কি ওনাদের কিছু শেখাতে পেরেছে?’

রাহেলা বুঝেছিল তার স্বামী কী বলতে চেয়েছিল। সে আর কথা বাড়ায়নি। ঈমান আলীকে তার মতো করে মেনে নিয়েছে, চলতে দিয়েছে। ঈমান আলীও স্ত্রীকে নিজের আধ্যাত্মিকতার চিন্তায় কখনো বাধা দেয়নি। রাহেলা তাদের সন্তানদের ধর্ম-অনুশীলনে উত্সাহ দিলেও, ঈমান আলী কখনও বিরক্ত হয়নি। সন্তানদের জন্য তার চিরকালীন উপদেশ ছিল, ‘এমন কাজ করবে না যেন অন্যের ক্ষতি হয়, এমন কথা বলবে না যেন অন্যে কষ্ট পায়। সবাইকে ভালো থাকতে যাহায্য করবে। খোদা তাতেই খুশি হন। অন্যের উপকার করলে, তারাই তোমার উপকার করবেন।’

এত বছর পরও রাহেলা বুঝে পায় না, যে মানুষটি ধর্মের কোনো ধারাই মেনে চলে না, কথাও বলতে চায় না, বন্ধুদের নিয়ে সপ্তাহান্তে হুইস্কি হাতে আড্ডায় বসে, মাঝে-মাঝে তাসও পেটায়, সে কী করে খোদার পছন্দ-অপছন্দের কথা বলে? একে কি খোদাভক্তি বলে? মানুষটিকে তার প্রায়ই

ধর্মহীন, ঈশ্বরহীন মনে হয়। এ জীবনে ভালো মানুষ হয়ে থাকাটাই যেন তার ব্রত; পরজীবন নিয়ে কোনো অস্থিরতা নেই। খোদাভয় নেই। মানুষটি কেমন যেন! এই খোদাভীরু, এই ধর্মহীন! খোদা যেন তার হাতের মোয়া; চাইলেই পাওয়া যায়! ধর্মের কথা জানতে চাইলেই বলে—‘আমায় ও কথা বলো না; ওটা আমার জন্যে মেলাঙ্কলিয়া, মন খারাপ হয়ে যায়; ঈশ্বরের কথা বল—মনে আনন্দ পাই।’

রাহেলা কিছু বলে না। স্বামীকে ধর্মহীন মনে হলেও, খোদা-বন্দনা নিয়ে কোনোদিন তার মাঝে কার্পণ্য দেখেনি। সৃষ্টি রহস্যকে আরো রহস্যময় করতে পছন্দ করে সে। ডারউইনকে নিয়ে মজা করে। ডারউইনের মতবাদকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে ঈমান আলী বলে, ‘আমরা বানর থেকে মানুষই যদি হব, মানুষ থেকে আর অন্য কিছু হচ্ছি না কেন? অনেক সময় তো পেরিয়ে গেল? সেই কবে ডারউইন সাহেব বানর থেকে মানুষ হয়েছিলেন, তারপর তার বংশধর তো মানুষই রয়ে গেল!’

এ তো গেল তার ধর্ম ও খোদাভক্তি নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি। কিন্তু সে হজে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নিল তা এখনও রাহেলার মাথায় খেলছে না। সে অবশ্য খুশি। তার নিজের হজে যাওয়ার একটি সুযোগ হয়ে গেল! সে বড় শঙ্কায় ছিল যে ঈমান আলীর দর্শনের কারণে তার বোধহয় কোনোদিন মক্কা-মদিনায় যাওয়া হবে না। নামাজে বসে কতদিন যে আল্লাহর কাছে চেয়েছে—তিনি যেন তার স্বামীর মনটি নরম করে দেন—ঈমান আলী যেন তার আখেরাতের কথা ভাবতে শুরু করে। দিনের পর দিন দোয়া করেও সে কোনোদিন কোনো ফল দেখেনি—স্বামীর চিন্তাধারায়, জীবন-যাপনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আশা করা সে প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল। তিনি লোকটির মনে মোহর এঁটে দিয়েছেন—ঈমান আলীকে আর বদলানো যাবে না। তবে হঠাত্ করে হজে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় রাহেলা কেঁদেই ফেলেছিল। তার কত বছরের চাওয়া এবার সত্যি হতে চলেছে—আল্লাহ তার প্রতি সদয় হয়েছেন, তার এবাদত গ্রহণ করেছেন, মুখ তুলে চেয়েছেন। মনের ভেতর আধ্যাত্মিকতার একটি বাজনা বেজে উঠেছিল। তারপর থেকেই স্বামীকে তার মন বুঝে উত্সাহ দিয়ে চলছিল। বেশি বলতে সাহস হয় না—কখন আবার মন বদলে যায়।

এত সাবধানতার পরও ঈমান আলীর মন ক-দিন ধরে বেশ খারাপ। কী হয়েছে তা জানতে চাওয়ার সাহস রাহেলা জোগাতে পারছে না। যে উচ্ছ্বাসে সে খোদার ঘরে যাবে বলে রাহেলাকে জানিয়েছিল সে স্পৃহা আর তার চেহারায় ভেসে উঠছে না। নিজেও সংসারের কাজে এত ব্যস্ত যে জিজ্ঞেস করা হয়ে উঠছে না। স্বামীকে ইদানিং বেশ ক্লান্তও দেখাচ্ছে। শরীর ভালো আছে কি-না জানতে চাইলে ঈমান আলী আশ্বস্ত করে বলে, সে ভালো আছে।

আজ ঈমান আলী নিজেই তার কথা বলতে চাইল। রাহেলা একজন শিষ্যের মগ্নতা নিয়ে তার দিকে চেয়ে, সামনে বসলো।

এত বছরের সংসারে ঈমান আলী শুধু বলেই গেছে। গল্পের ছলে। তার আপিসের গল্প, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে কথা, ক্লাবের আড্ডার গল্প, বাজারে গিয়ে কী-কী দেখল—এমন অনেক কথা। রাহেলা বসে স্বামীর কথা শুনেছে। কখনোই ক্লান্ত হয়নি। স্বামীর সাথে সে কোনোদিনই ক্লাবে যায়নি, ঈমান আলীর স্ত্রীকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও জোর করেনি। রাহেলা ক্লাব নিয়ে অনেক কথা শুনেছে, তাই জায়গাটি তাকে কোনোদিন টানেনি। ক্লাব নিয়ে যে নেতি-কথা সমাজে চালু আছে তার কোনো প্রভাব তার স্বামীর চরিত্রে সে কখনও দেখে নি। ঈমান আলীর একাগ্রতা চিরকালই রাহেলার দিকেই ছিল।

ঈমান আলী একদৃষ্টিতে তার বউয়ের দিকে চাইল, যেন বুঝতে চাইছে সে যা বলতে চাইছে তা শোনার জন্য তার স্ত্রী তৈরি কি-না।

‘রাহেলা, আমার হজে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি সবাই সহজভাবে নিতে পারছে না’

‘কেন? কী বলছে সবাই? এই সবাইটা কারা?’

‘আমারই বন্ধু-সহকর্মী। কেউ-কেউ ঠাট্টা করছে, কেউ ঈর্ষা করছে, কেউবা বলছে আমার মাথা খারাপ হয়েছে।’

রাহেলা চাইছে তার স্বামী নিজেই কথাগুলো বলে হালকা হোক। বলল, ‘তারপর?’

ঈমান আলী স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বুঝল তার মনোযোগ আছে।

‘জানো, শোনামাত্রই ছেলেবেলার বন্ধুদের মধ্যেই অনেকে রা-রা করে উঠল। একজন তো বলেই বসল—হজে যাবি মানে! তুই কেন হজে যাবি? আরে, সেখানে গিয়ে যে পয়সা খরচ করবি তা দিয়ে তামাক মুড়ে বিড়ি খা, তাও ভালো। আচ্ছা বলো তো, আমার মনে চেয়েছে, আমি যাব; হজ করে তো কারো ক্ষতি করতে যাচ্ছি না।’

‘কয়েকজন তো এমনটা বলতেই পারে। এরা নিশ্চয়ই খোদা বিশ্বাস করে না? তারা তোমায় তাদের দলেরই ভাবত—এখন দেখছে তুমি ওদের মতো নও। এটা তাদের একটা নিরাপত্তাহীনতাও হতে পারে।’

‘হতে পারে, রাহেলা; তবে তাদের এই ব্যবহারে আমি কষ্ট পেয়েছি। শুধু এরাই নয়—যারা আল্লাহ-খোদা মেনে চলে, তারাও চোখ কপালে তুলে কী বলল জানো? বলে—তুই হজে যাওয়ার জন্যে তৈরি না—আমাদের সাথে বস, হজের নিয়ম-কানুন আমরা শিখিয়ে দেবো; আমরা হজশিক্ষার জন্যে ছোট একটা আয়োজন করি প্রতি শুক্রবার জুম-আর পর। মহিলাদের আলাদা বসার ব্যাবস্থা আছে। ভাবিকে নিয়ে চলে আসিস।’

রাহেলা বলে উঠল, ‘আমাদের তো আসলেই হজশিক্ষা নেয়া উচিত। তুমি বিরক্ত হচ্ছ কেন? এঁরা তো ঠিকই বলেছেন; আমার নিজেরও শেখা দরকার।’

ঈমান আলীকে একটু উত্তেজিত দেখাল। ‘তুমিও না, রাহেলা! এরা হঠাত্ করেই আমায় হেদায়েত করার জন্য উতলা হয়েছে, আর তুমি বলছ ওদের কাছে গিয়ে আমার শেখা উচিত। শোন, অনেক বছর আগেই আমার বাবার কাছ থেকে যা শিখেছি, তাতেই চলবে। আমি হজ নিয়ে দুুটো বইও পড়ে ফেলেছি—তোমার জন্যেও এনেছি, এবার তুমি পড়—ওই যে টেবিলের ওপর রেখেছি।’

তার স্ত্রী বইগুলো এতক্ষণ খেয়াল করেনি। বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে বই দুটো হাতে নিয়ে আবার ফিরে এল। ঈমান আলী মনে করেছিল তার বউ বইগুলো নিয়েই পাতা ওল্টাতে শুরু করবে। রাহেলা তা করল না, বরং বইগুলো হাতে নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বলল, বলো।’

‘আরেক দল কী বলে জানো? বলে—ভাই সাহেব, হজে যাচ্ছেন, বুঝে-শুনে যাচ্ছেন তো? হজের পর ক্লাবের চারতলায় আর যেতে পারবেন না! আল্লাহ-রাসুলের কাছে যাচ্ছেন—মনটাকে একটু মজবুত করেন।’

রাহেলা জোরে হেসে ওঠে। সে জানে চারতলায় কী আছে। ‘শুধু হজ কেন? ধর্মমতে হজ না করলেও তো চারতলায় যাওয়ার কথা নয়।’

‘সেই তো! আমিও তো তা-ই বলি। তোমরা যদি এতই জানো-বোঝ, তাহলে তোমরাইবা কেন তা না মেনে গিলেই যাচ্ছ? বলে কি জানো? বলে—আমি নাকি হজে যাচ্ছি শখের বসে; তারা যখন যাবে তারা সত্যিকার অর্থেই ট্রান্সফর্মড হতে যাবে। আরে, তোমরা যদি ট্রান্সফর্মড হতেই চাও,

এখনই হও না দেখি!’

রাহেলা কথা বলে না। ঈমান আলী তার মতো করে বলে যায়। সে শোনে।

‘রাহেলা, তোমায় কি কখনো বলেছি যে ছেলেবেলায় আমার বন্ধুরা নামের কারণে আমায় মাঝে-মাঝে বেঈমান আলী বলে ডাকত?’

স্কুলে পড়াকালীন নিজের নাম নিয়ে খেদ ছিল। বাবার সরকারী চাকরির কারণে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় স্কুলে-স্কুলে পড়তে হয়েছে। সব জায়গায় একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। ম্যাট্রিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের সময় বাবার কাছে জানতে চেয়েছিল তিনি কেন এই নাম রাখলেন। বাবা বলেছিলেন তাঁর বাবা চলে যাওয়ার পর তাঁর এক মামার কাছে কিছুদিন শহরে থাকতে হয়েছিল পড়াশোনার জন্য। সেই মামা অনেক বিদ্বান ব্যক্তি ছিলেন—ভালো মানুষ ছিলেন। মামার নামেই তিনি ছেলের নাম রেখেছিলেন। বাবা বলেছিলেন, ‘দেখিস, এই নামই তোকে মানুষ হিসেবে অনেক দূর নিয়ে যাবে।’

এর পর থেকে নাম নিয়ে ঈমান আলীর আর কোনো খেদ ছিল না।

না; রাহেলা একথা শোনে নি। সে না-সূচক মাথা নাড়ল। তবে ঈমান আলী নামটি শুনে তারও ‘বেঈমান’ শব্দটি একেবারেই মনে আসেনি তা নয়। তবে চিন্তাটি প্রকাশ করা বা এ নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে হয়নি কখনো। এটা আলোচনার বিষয় হতে পারে বলে তার মনে হয়নি।

সে তার স্বামীকে বলে, ‘এ বিষয়টা আমার শোনার খুব একটা ইচ্ছা নাই; তুমি যা বলছিলে, বলো।’

ঈমান আলী তার বউয়ের কাঁধ আলতো করে ছুঁয়ে দেয়। চোখে মুখে তার হাসির একটি ঢেউ খেলে যায়। গত ক-দিন ধরে নিজেকে একটি ছিপিবদ্ধ বোতলে বন্দি মনে হচ্ছিল। আজ মনে হচ্ছে রাহেলা তাকে মুক্তি দিয়েছে।

‘আমার বলার আর খুব বেশি বাকি নেই, রাহেলা। গত ক-দিনে আমার আশেপাশের মানুষগুলোর কিছু চরিত্রায়ণ করতে পেরেছি, সেটিই একটি বড় শিক্ষা। এর মধ্যে কিছু ভালোলাগার ব্যপারও আছে—ক-জন আমায় কোনো উপদেশ দেয়নি বা কোনো কথা শোনায়নি। শুধু বলেছে—তোর ডাক পড়েছে, তুই যাচ্ছিস, কারো কথায় কান না দিয়ে চলে যা, হজ করে আয়; আর এত শিক্ষা-দীক্ষার দরকার নেই, ওখানে গেলেই সব শিখে যাবি।’

কথাগুলো বলে ঈমান আলী একটু থামে। স্ত্রীকে প্রশ্ন করে, ‘কই, তুমি তো আমার কাছে জানতে চাইলে না আমি কেন যাচ্ছি? তোমার অবাক লাগে নি?

‘লেগেছে—তবে অবাক হওয়ার চেয়ে খুশি হয়েছি বেশি। আমার কাছে হজ একটা ফরজ কাজ। আমার কোনো প্রশ্ন নেই, তবে বলতেই যখন চাও, বলো কেন এ সিদ্ধান্ত নিলে?’

ঈমান আলী বড় একটি নিঃশ্বাস নেয়।

‘যে মানুষগুলোর কথা তোমায় এতক্ষণ বললাম, এদের নিয়েই আমার বসবাস, এদের নিয়েই আমার জীবন-যাপন। তোমার কথাও বলছি। আমার মৃত্যু হলে এদেরই ছেড়ে যেতে হবে। ওপারে কী আছে আমি জানি না—কিন্তু যেতেই হবে। তাই মৃত্যুর কাপড় গায়ে পরে তার প্রস্তুতির কথা ভাবতেই আমি কাবার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে চাই। এটুকুই আমার চাওয়া।’

ঈমান আলী কথা শেষ করলে, রাহেলা তার হাত বাড়িয়ে স্বামীর হাতে হাত রেখে চুপ করে বসে থাকে।

http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/eid-magazine/2017/06/21/203925.html

৫,৩৭৭ বার দেখা হয়েছে

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।