ফরিদ শুক্রবার ঘুম থেকে দেরী করে উঠলো। গ্রীষ্ম কাল, তাই জানালা খুলে ঘুমিয়েছিল। ভাল ঘুম হয়েছে। রাতে ট্যাব্ খুলে পড়তে-পড়তে ঘুমিয়ে গিয়েছিল। প্রায় ন’টার সময় ঘুম ভাঙ্গলো। ভেবেছিল চোখ মেলেই রৌদ্রকরজ্জল একটি সকাল দেখবে। নাহ! কেমন যেন একটি সন্ধ্যে-সন্ধ্যে ভাব। চোখ মুছে ঘড়ির দিকে তাকালো। হ্যা, ন’টাই বাজে। তাহলে?!
তার বিছানার ডান দিকে টেলিভিশন সেট। রিমোট দিয়ে চালিয়ে দেশী কয়েকটি চ্যানেলে কিছু না দেখে বিদেশী চ্যানেলে দাঁড়ালো। সিএনএন। লাইভ দেখাচ্ছে। পৃ্থিবীর আকাশ কালো হয়ে আছে তাই দেখাচ্ছে। এদিকে দিন, ওদিকে রাত। দিনের আকাশ আঁধার, রাতের আকাশে অনেক আলোর মেলা। লাইভে দেখলো প্রতিবেদক বলছে যে পৃ্থিবীর আকাশে ভিনগ্রহের মহাকাশযান এসে ছেয়ে গেছে। তাদের সাথে পৃ্থিবীর নেতাদের কথা হয়েছে। লাইভে পৃ্থিবীর নেতাদেরও দেখা যাচ্ছে। পৃ্থিবী থেকে তারে কি যেন নিতে এসেছে।
চট্ করে দৃশ্য বদলে গেল। পৃ্থিবীর কয়েকজন নেতা একসাথে দাঁড়িয়ে আছেন। প্যালেস্টাইন-ইসরাইল সংলাপ চলছিলো ওয়াশিংটনে। তখনই এ ঘটনা ঘটেছে। তাই উপস্থিৎ নেতারা সারা বিশ্ব থেকে অনুমতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দাঁড়িয়েছেন।
তারা বলছেন, ভিনগ্রহের যান থেকে তাদের জানানো হয়েছে যে তারা পৃ্থিবীর রেডিও ফ্রিকুয়েন্সী নিতে এসেছে। তাদের গ্রহের রেডিও ফ্রিকুয়েন্সী আর কাজ করছে না এবং তারা দেখেছে যে পৃ্থিবী থেকে রেডিও ফ্রিকুয়েন্সী নিয়ে গেলে তাদের গ্রহের প্রয়োজন কিছুদিনের জন্যে মিটবে। তাদের এই রেডিও ফ্রিকুয়েন্সী লাগবেই। না দিলে তারা যুদ্ধের হুমকি দিয়েছে। পৃ্থিবীর নেতারা ভেবে দেখেছেন সেই যুদ্ধ লড়ার সামর্থ পৃ্থিবীর কোন দেশের নেই। তাই তারা ফ্রিকুয়েন্সী দিয়ে দিতে বিনা রক্তপাতে রাজি হয়েছেন।
তারা শেষে বললেন, আর কিছুক্ষনের মধ্যে বিশ্বের মানুষ আর টেলিভিশন দেখতে পাবে না, মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। পৃ্থিবীর মানুষকে এ’কথা জানানোর জন্যে তারা এই সংবাদ সম্মেলন করছেন।
টেলিভিশন চলবে না! মোবাইল ফোন চলবে না!
ফরিদ ভাবে, ‘কি হবে তাহলে?’ টেলিভিশনও বন্ধ থাকবে, মোবাইল ফোনও বন্ধ থাকবে!