বিভক্তি

আমাদের সীমাবদ্ধতা, আমরা সবকিছুতেই দুটি দিক খুজে পাই।
ঠিক যেন মুদ্রার দুই পিঠ, মাথা আর লেজ।
মানুষ খোঁজতে যাই, নারী আর পুরুষ।
ধর্ম বুঝতে যাই, আস্তিক আর নাস্তিক।
আস্তিকতার কথা বলবেন, একইশ্বর কিংবা বহুইশ্বর, অইত মুসলমান আর হিন্দু।
কেবল একইশ্বরের কথা শুনাতে চাচ্ছেন, হুম তাও জানি ইসলাম এবং ক্রীশ্চান।
বাদদিন ধর্মের কথা, বর্ণের কথা বলেন, অহ্ সাদা আর কালো।

এভাবে আমরা বিভক্ত করেই চলি, একটা পৃথিবীকে ভেঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন মহাদেশ, মহাসাগর।
আবার মহাদেশ গুলোকে ভেঙ্গে, ছোট বড় দেশ কিংবা ভিন্ন ভিন্ন জাতি ।
সেই দেশ গুলোকে ভেঙ্গে, অঙ্গ রাজ্য, বিভাগ, জেলা, উপজেলা, গ্রাম, পাড়া, পরিবার….. কত কি?

আমরা একটি বর্নের আলোকেও প্রিজম দ্বারা ভেঙ্গে সাতটি বর্নে পরিনত করতে পারি।
আমরা পারি একটি বস্তুকে ভেঙ্গে খন্ড বিখন্ড করতে, পারি বস্তু কণায় পরিনত করতে।
সেই ক্ষুদ্র কণাকেও ভেঙ্গে অনু পরমানুতে বিভক্ত করতে পারি।
পারি সেই অদৃশ্য পরমানুকে ভেঙ্গে ইলেকট্রন, প্রোটন আর নিউট্রনে পরনিত করতে।

এই সবকিছুর মাঝে একাধিক দিক খুজে পাওয়া, আজ আর আমাদের সীমাবদ্ধতা নয় ।
আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, চুল চেরা বিশ্লেষনের মাধ্যমে কর্মের নিপুনতা শতভাগ হচ্ছে।
মুদ্রার দুই পিঠের মতন আমরা ইটের মাঝে ছয়টি পিঠ খুজে নিই।
আরো কিভাবে কত শত উপায়ে জিনিস গুলোকে আলাদা করা যায় তাই খুজে যাচ্ছি।

তাইতো আমরা আর নারী পুরুষকে, এক মানুষ হিসেবে ভাবতে পারি না।
ধর্ম গুলোকে বিভক্ত না করে, এক মানব ধর্মে ভাবতে পারি না।
পারি না দেশ মহাদেশ গুলো কে একত্র করে নিয়ে, একটি সবুজ পৃথিবী হিসেবে ভাবতে।
তাই একটি গোলকের মতন কেবলমাত্র একটি পিঠ আর আমাদের কল্পনায় আসে না।

৪ টি মন্তব্য : “বিভক্তি”

  1. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    আমি কিন্তু আজকাল ঘটতে থাকা এই বেশি ভাগাভাগির একটা পজেটিভ দিক দেখি।
    সেটা এরকম:
    ১) আক্রান্ত হবার সম্ভবনা মাথায় নিয়েও উদাররা কিন্তু প্রশ্ন করেই যাচ্ছেন।
    ২) রক্ষণশীলরা প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তৃতীয় পন্থা ধরছে। শর্টরানে তা একধরনের সাইলেন্সিং ইফেক্ট রাখলেও প্রশ্নগুলা যে নিরুত্তর থেকে যাচ্ছে, লংরানে সেটা কিন্তু রক্ষনশীলদের ভিত্তি ও অবস্থান নাড়িয়ে দিচ্ছে। আপাতত রক্ষনশীলরা হালে কিছু পানি পাচ্ছে ঠিকই কিন্তু পরবর্তি জেনারেশনের সামনে আন-এনসারড প্রশ্নের বা উত্তরাতিত প্রশ্নের যে বিশাল এক প্যান্ডোরার বাক্স নিয়ে জীবন শুরু করার একটা সুযোগ তৈরী হচ্ছে, তাদের মনের উপর খবরদারি করাটা কিন্তু আজকের দিনের মতো অতো সহজ হবে না।
    ৩) বিভক্তি টিকিয়ে রাখার এই আপ্রান চেষ্টা যে বিভত্তি-প্রচেষ্টার উপরে ক্রমাগত পেরেক ঠুকে যাচ্ছে, আর তার দুর্বলতা প্রকাশ করে দিচ্ছে বারবার, সেটাও একটা বাড়তি লাভ।
    তাই না???


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  2. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    তাইতো আমরা আর নারী পুরুষকে, এক মানুষ হিসেবে ভাবতে পারি না।
    ধর্ম গুলোকে বিভক্ত না করে, এক মানব ধর্মে ভাবতে পারি না।
    পারি না দেশ মহাদেশ গুলো কে একত্র করে নিয়ে, একটি সবুজ পৃথিবী হিসেবে ভাবতে।
    তাই একটি গোলকের মতন কেবলমাত্র একটি পিঠ আর আমাদের কল্পনায় আসে না।
    - চমৎকার বলেছো। :thumbup:

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।